কুহেলিকা পর্ব-০৭

0
837

#কুহেলিকা (পর্ব-৭)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ

মেইল বক্স ওপেন করতেই প্রভার সিক্রেট কিছু ছবি তার সামনে অপ্রত্যাশিত ভাবে ভেসে উঠে। ছবি গুলো দেখার পর আকাশের ঘোলাটে চোখ জোড়া বড় বড় হয়ে যায়! অদ্ভুত দৃষ্টিতে আকাশ ছবি গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে! ছবির মধ্যে প্রভা আপত্তিকর ভাবে অন্য একটা পুরুষের সাথে বসে আছে। আকাশের কলিজায় মোচড় দিয়ে উঠে তার প্রিয়তমাকে এভাবে অন্য একটা লোকের সাথে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখতে পেয়ে। কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না আকাশ! ছবি গুলোর দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে নিজে নিজে বলে,

–‘প্রভা কেন করলে তুমি এমনটা! আমি তোমার জন্য কি করিনি! নিজের সাধ্য মতন সব কিছুই করেছি। আমার পৃথিবীর সমস্ত সুখ আমি তোমার নামে করে দিয়েছি। যেই আমি আকাশ কারোর পরোয়া করতাম না, মানুষ আমার চোখের সামনে মরে গেলেও আমি তার দিকে ঘুরে তাকাতাম না, সেই আকাশ তোমার জন্য পাগল হয়ে ছিলাম। আর তুমিই কিনা শেষমেশ আমার সাথে এভাবে খেলা করলে। প্রভা আমার লাইফে অনেক মেয়ে আসতে চেয়েছে, কিন্তু আমি কারোর সাথেই কমিটমেন্টে যেতে নারাজ ছিলাম। কারন প্রেম মানেই আজাইরা প্যারা। তবে তুমি আমার সেই চিন্তা-ভাবনাকে পরিবর্তন করে দিয়ে আমার লাইফে এন্ট্রি করলে, এবং পরিশেষে তুমিই আমার লাইফ টাকে জাহান্নাম বানিয়ে দিলে। আমি তো চাইনি এসব প্রেম ভালোবাসা। প্রভা তুমি নিজেই তো এসে সব কিছু করলে আমার সাথে। তাহলে আজ তুমি অন্য পুরুষের সাথে কি করছো! আর তাছাড়া আমিও তো সেই নিষিদ্ধ নগরীতে প্রবেশ করেছি, কিন্তু কই আমি তো কারোর সাথে অনৈতিক কোনো কিছু করিনি। তাহলে তুমি কেন সেই নগরীতে প্রবেশ করে অন্য লোকের সাথে ঘনিষ্ঠ হলে! তার থেকে আমার কোন দিকে বা কোন অংশে কম রয়েছে! প্রভা কাজটা তুমি ভালো করোনি। আমি জানিনা এসব দেখার পর আমি কি ফয়সালা করবো! তবে তোমার সাথে হয়তো এবার আমার লাইফের সব চাইতে বড় বোঝাপড়াটা হবে। আগামীকাল আসুক। তারপর অফিস শেষ করে তোমার সাথে বোঝাপড়া করবো। এখন আপাতত তুমি নামক অধ্যায়টাকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা বাদ দিলাম। তুমি আমার প্রেমিকা হয়ে যদি পল্লীতে গিয়ে রংতামাশা করতে পারো, তাহলে আমিও সেই নিষিদ্ধ পল্লীর একটা নোংরা নারীর সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে তাকে নিজের স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবো। প্রভা তুমি নিজ ইচ্ছায় নিজের শরীরে দাগ লাগিয়েছো। আর পল্লীর সেই মেয়েটা নিজের দাগ মুছতে আমার কাছে আসবে। তোমার সাথে তার তফাৎ আকাশ পাতাল। কেউ সম্মান অর্জন করতে চাইছে, আর কেউ নিষিদ্ধ নগরীতে গিয়ে নিজের সম্মান নষ্ট করছে। তাই এখন আমি নিজের ভালোটাকেই প্রাধান্য দিব। প্রভাকে নিজের করে নিলে মানুষ বলবে এই মেয়ে নিজের ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে শারীরিক সুখ-শান্তির জন্য নিষিদ্ধ নগরীতে গিয়েছে। আর দিশাকে আপন করে নিলে মানুষকে দেওয়ার মতন অন্তত একটা উত্তর আমার কাছে থাকবে। আমি পল্লীর একটা নারীর মাঝে ভালোবাসার তালাশ করে তাকে বউ বানিয়েছি। আমার কাজটা ঠিক না হলেও আমি পল্লীর একটা অভাগা নারীকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছি। যাক গে এখন এতোসব ভেবে আর লাভ নেই। উঠে ফ্রেশ হয়ে মায়ের সাথে একটু গল্পগুজব করে আসি। বাকি যা হবে আগামীকাল দেখা যাবে।’

আকাশ বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে তার মায়ের রুমে চলে যায়। আকাশের মনের ভিতরে এখনো খুটখুট করছে। প্রভা তার সাথে প্রতারণা করায় প্রভাকে না হয় লাইফ থেকে আউট করে দিবে সে। কিন্তু দিশার বিষয়টা নিয়ে সে কি ভাবে কি করবে! আকাশ তার মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে এসব ভাবতে থাকে। আকাশের মা আকাশের ভাবুক চেহারা দেখে জিজ্ঞাস করে,

–‘কিরে তুই এতো মনোযোগ দিয়ে কি ভাবছিস?’

–‘আচ্ছা মা তোমায় একটা কথা জিজ্ঞাস করি?’

–‘হুম কর।’

–‘আচ্ছা মা মনে করো সমাজ একটা মেয়েকে খুব বাজে দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে, আর আমি সমাজের সেই বাজে দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা মেয়েটাকে বিয়ে করতে চাই, তাহলে তোমরা কি সেই বিষয়ে কোনো আপত্তি করবে?’

–‘আকাশ তুই যার মধ্যে নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পাবি, তুই যার মধ্যে নিজের ভালোবাসাকে উপলব্ধি করতে পারবি তুই সেটা কর। তোর বাবা আর বাকিরা কি করবে আমি জানি না! তবে আমি তোর সিদ্ধান্তকে হাসিখুশি মেনে নিব। আর তাছাড়া তুই সমাজের কথা বলছিস? শোন এতোকিছু ভেবে কখনোই পারবি না। কারন সমাজ তোকে খাওয়ায় পড়ায় না। আর তাদের কাজ এই হচ্ছে মানুষকে নিয়ে সমালোচনা করা। তাই তুই সমাজের কথায় কান না দিয়ে নিজের মনের টা শোন। এতেই তোর মঙ্গল।’

আকাশ তার মায়ের কথা শুনে খুশিতে তার মা’কে জড়িয়ে ধরে। ছেলের এমন আহ্লাদী আচরণ দেখে আকাশের মা রেহেনা পারভিন ও আকাশকে জড়িয়ে ধরে৷ মা-ছেলের মধ্যে ভালোবাসার লেনাদেনা হচ্ছে। এভাবে কিছুটা সময় কাটানোর পর আকাশের মা আকাশকে বলে,

–‘যা এবার গিয়ে বাকিদের ডেকে নিয়ে খাবার টেবিলো বস। আমি সবার জন্য খাবার লাগাচ্ছি টেবিলে।’

–‘আচ্ছা।’

আকাশ ঘরের সদস্যদের ডাক দিয়ে খাবার টেবিলে বসে পড়ে। আকাশের বাবা সোফায় বসে খবরের কাগজ পড়ছিল, তিনি আকাশের ডাক শুনতে পেয়ে খেতে চলে আসে। আকাশের মা কিছু সময়ের মাঝে টেবিলে খাবার লাগিয়ে তিনিও খেতে বসে পড়ে। সবাই একসাথে মিলে রাতার খাবার খাচ্ছে। খাওয়ার মাঝামাঝি অবস্থায় আকাশের বাবা আকাশকে বলে,

–‘আকাশ তোকে কিছু বলার আছে আমার।’

–‘কি কথা বাবা?’

–‘আগে খাবারটা শেষ কর পরে বলছি।’

–‘আচ্ছা।’

এরপর আকাশ নিজের খাওয়া দাওয়া জলদি সেরে নিয়ে তার বাবার কথা শোনার জন্য খাবার টেবিলেই বসে থাকে। দেখতে দেখতে আকাশের বাবার ও খাওয়াও শেষ হয়েছে। তিনি খাওয়া দাওয়া শেষ করে আকাশকে বলে,

–‘আচ্ছা শোন তোকে যেটা বলতে চাচ্ছিলাম…

–‘হুম বাবা বলো।’

–‘তুই আর বউমা থাকার জন্য আমি একটা ফ্ল্যাট কিনেছি। তোরা বিয়ের পর দু’জনে নতুন ফ্ল্যাটে থাকবি। আর আমি আর তোর মা এবং মিলি এই বাড়িতে থাকবো।’

–‘বাবা এসবের কি প্রয়োজনে ছিল বলো?
এতো বড় বাড়ি থাকতেও আলাদা করে ফ্ল্যাট নিতে গেলে কেন তুমি?’

–‘কারন আমি বহু আগেই ভেবে রেখেছিলাম তোকে একটা বাড়ি গিফট করবো। তাই তোর জন্য সেটা নিয়ে নিলাম। এখন বল তুই বিয়ে কবে করছিস? তোর মা তো আমার মাথা খেয়ে ফেলছে তোকে বিয়ে করানোর জন্য। তোর কি কোনো মেয়ে টেয়ে পছন্দ আছে নাকি? না হয় আমরা মেয়ে দেখছি তোর জন্য। এবার বিয়েটা করে নে।’

–‘বাবা আমি এতো জলদি গিয়ে করতে চাচ্ছিনা। তোমরা আমায় আর কিছুদিন সময় দাও। এখনো আমি বিয়ের জন্য তৈরি না।’

–‘তৈরী না মানে কি? এতো বড় অফিসের মালিক। তার উপরে এতো বড় একটা ফ্ল্যাট রয়েছে তোর নামে, তাহলে বিয়ে করতে আপত্তি কোথায়?’

–‘বাবা আমার সবই আছে। তোমরা আমায় সবই দিয়েছো। টাকা পয়সার দিক থেকে আমার কোনো কমতি নেই, কিন্তু আমি মানসিক ভাবে তৈরী না। আমাকে তোমরা আরো কিছুটা সময় দাও। আমি নিজের মনমানসিকতাকে ঠিক করে তারপর বিয়েসাদী করবো।’

–‘ঠিক আছে তোর যেমন ইচ্ছে। তবে শোন জলদিই করবি যা করার। আর আগামীকাল অফিস শেষ করে তোর নতুন ফ্ল্যাটে গিয়ে সারা বাড়ির ডেকোরেশন করতে যা যা লাগে সব অর্ডার করে দিয়ে আসবি। আমি নতুন ফ্ল্যাটের চাবি তোর মায়ের কাছে দিয়ে রাখবো। আগামীকাল অফিসে যাওয়ার সময় তোর মায়ের কাছ থেকে নিয়ে যাস সেটা।’

–‘আচ্ছা।’

–‘এবার গিয়ে ঘুমিয়ে পড়। সকালে আবার তোর অফিস আছে।’

–‘হ্যাঁ বাবা।’

আকাশ তার বাবার সাথে কথা শেষ করে নিজের রুমে চলে আসে। রুমে এসে চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ে।
পরেরদিন সকাল বেলায় যথাযথ ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে তার মায়ের কাছ থেকে তার নতুন ফ্ল্যাটের চাবি নিয়ে নেয়। আকাশের মা চাবি দেওয়ার পাশাপাশি নতুন ফ্ল্যাটের কাগজপত্র ও আকাশকে দিয়ে দেয়। আকাশের পরিবারের লোকদের এই একটা বিশেষ গুন। তারা পরের জন্য বা হেলায় খেলায় কোনো কাজকে ফেলে রাখে না। যা বলবে সব ক্লিয়ার কাট এবং যা করবে সব তৎক্ষনাৎ। আকাশ তার মায়ের কাছ থেকে নতুন ফ্ল্যাটের কাগজপত্র এবং ফ্ল্যাটের চাবি নিয়ে বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে।
ড্রাইভার গাড়ি ড্রাইভ করছে৷ আকাশ পিছনের সিটে বসে আছে। গাড়ি নিষিদ্ধ নগরীর সামনে আসতেই ড্রাইভার আকাশকে অদ্ভুত ভাবে বলে উঠে,

–‘স্যার আজ কি পল্লীতে যাবেন? আমি কি গাড়ি সাইড করবো?’

ড্রাইভারের কথা শুনে আকাশ কিছুটা থতমত খেয়ে যায়। তবে সে পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে ড্রাইভারকে বলে,

–হ্যাঁ গাড়ি সাইড করুন। বহু সময় হয়েছে মানুষটার চেহারা আমি দেখিনি। তার উপরে মনটাও কেমন কেমন করছে মানুষটার জন্য।’

–‘স্যার আমি এজন্যই আপনাকে জিজ্ঞাস করেছি। আমি আগেই ভেবেছিলাম এই জায়গায় আসলে আপনার মন কেমন কেমন করবে।’

–‘আচ্ছা এবার গাড়ি সাইড করেন আমি চট করে নিজের কাজটা সেরে আসি।’

ড্রাইভার আকাশের কথা মতন গাড়ি সাইড করে। আকাশ গাড়ি থেকে নেমে মনে সাহস নিয়ে সোজা পল্লীর ভিতরে চলে যায়। আজ কেন জানি তার মনে কোনো ভয় লাগছে না। প্রথমদিন কেমন নার্ভাস ছিল সে, তবে আজ মনের ভিতরে হুট করে কোথা থেকে যেনো সাহস চলে এসেছে। তার মনে হচ্ছে এই নিষিদ্ধ নগরীটা তার জন্য পুরাতন হয়ে গিয়েছে। আকাশ নিজের মতন হেঁটে পল্লীর একদম ভিতরে চলে যায়। পথের মাঝে কোনো রমণীও আজ তাকে আটকায়নি। পল্লীর ভিতরে গিয়ে একজনকে দিশার কথা বলতেই সে গিয়ে দিশাকে ডেকে আনে। দিশা আসার পর আকাশকে দেখা মাত্রই তার মলিন চেহারায় হাসি ফুটে উঠে। কিন্তু অপরদিকে আকাশের প্রচন্ড রাগ উঠে যায় দিশাকে দেখে। দিশা আকাশের সামনে আসতেই আকাশ দিশার দুই গালে দু’টো থাপ্পড় লাগিয়ে দেয়। দিশা আকাশের এমন কান্ড দেখে অবাক চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। সে যেনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না! সবেই তো মাত্র মানুষটা তার সাথে দেখা করতে আসলো। তার জানা মতে সে তো কোনো ভুল করেনি। তাহলে হুট করেই মানুষটা তার দুই গালে দু’টো থাপ্পড় মারলো কেন! কি এমন করেছে সে। দিশার নিজের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে না পেয়ে চুপচাপ আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। এমন সময় আকাশ দিশাকে চেঁচিয়ে বলে উঠে,

–‘তোর সমস্যা কি দিশা?’

–‘আমি কি করেছি?’

–‘কি করিস নি সেটা বল?’

–‘বিশ্বাস করুন আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না! আপনি প্লিজ আমায় বুঝিয়ে বলুন কি করেছি আমি। আমায় না খুব ভয় করছে।’

–‘তুই এভাবে শাড়ী পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিস কেন?
তুই জানিস তোকে অনেক সুন্দর লাগলে। এই অবস্থায় যদি কোনো খদ্দের তোর উপরে আকৃষ্ট হয়ে তোর সাথে কিছু করতে চায়, তখন তুই কি করবি?’

দিশা আকাশের কথা শুনে কিছু বলবার মতন সাহস করতে পারে না। কারন আকাশের সারা শরীর ভর্তি যে রাগ সেটা দিশা ভালো করেই জেনে গেছে। তাই সে চুপ করে আছে কোনো উত্তর না দিয়ে। দিশার চুপসে থাকা দেখে আকাশ আবারো তাকে বলে উঠে,

–‘এভাবে আর কখনো শাড়ী পড়বি না তুই। কারন শাড়ীতে অনেক সুন্দর লাগে তোকে। আমি চাইনা কেউ তোর উপরে নজর দিক। তুই আমার সামনেই খালি শাড়ী পড়বি। এছাড়া সারাদিন থ্রি-পিস পড়ে ঘুরে বেড়াবি। মনে থাকবে?’

–‘হুম।’

–‘এবার গিয়ে শাড়ী খুলে থ্রি-পিস পড়ে নে। আমি চললাম। তোর সাথে এক নজর দেখা করার জন্যই এসেছি। এখন আমার যেতে হবে।’

–‘সাবধানে যাবেন।’

–‘হুম সাবধানেই যাবো। আর শোন তিনটা নাগাদ শাড়ী পড়ে রেডি হয়ে বসে থাকবি। আমি তোকে নিয়ে একটা জায়গায় যাবো।’

–‘আচ্ছা।’

–‘এখন চলে গেলাম।’

আকাশ দিশার সাথে কথা বলে যাওয়ার জন্য কদম বাড়ায় সামনে দিকে, এমন সময় পিছন থেকে দিশা আকাশকে ডাক দিয়ে বলে,

–‘এই এই এভাবে চলে যাচ্ছেন যে? যাওয়ার আগে কি আমায় একটু কাছে টানবেন না?’

আকাশ দিশার কথা শুনে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলে,

–‘আসো কাছে আসো।’

দিশা আকাশের ডাকে দৌড়ে এসে আকাশের বাহুতে ঝাপটে পড়ে। আর আকাশ দিশার কপাল দু’হাত দিয়ে উঠিয়ে কয়েকটা চুমু একে দিয়ে দিশাকে বলে,

–‘ক্ষমাপ্রার্থী তোমায় থাপ্পড় দেওয়ার জন্য। ক্ষমাপ্রার্থী তোমার সাথে তুইতোকারি করার জন্য। আসলে তোমায় খুব সুন্দর লাগছিল। তাই তোমার উপরে আমি রেগে গিয়েছিলাম।’

–‘আমি আর কখনো শাড়ী পড়বো না। আমি চাই না আপনি আমার উপরে রেগে থাকুন।’

–‘হুম একদম শাড়ী পড়বে না তুমি পল্লীতে থাকলে। তবে আমার সাথে কোথাও ঘুরতে বের হলে তখন অবশ্যই শাড়ী পড়তে হবে তোমাকে।’

–‘হুম আপনার সঙ্গে গেলে তখনিই শাড়ী পড়বো।’

–‘আচ্ছা এখন আমার দেরি হচ্ছে। তুমি দুপুরে রেডি হয়ে থেকো। আমি তোমায় এসে নিয়ে যাবো।’

–‘আচ্ছা।’

–‘চললাম।’

আকাশ দিশাকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসে। আর দিশা জলদি গিয়ে আকাশের কথা মতন শাড়ী খুলো থ্রি-পিস পড়ে নেয়। আকাশ পল্লী থেকে বেরিয়ে গাড়ি করে অফিসে চলে আসে। অফিসে এসে কাজে মনোনিবেশ করে। দেখতে দেখতে দুইটা বেজে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি করে কেবিন থেকে বের হয়ে ম্যানাজারকে বলে অফিস থেকে বেরিয়ে পড়ে আকাশ। অফিস থেকে বেরিয়ে ড্রাইভারকে ইশারায় বলে গাড়ি নিষিদ্ধ নগরীর সামনে নিয়ে যেতে। ড্রাইভার আকাশের ইশারা মতন গন্তব্যের সামনে এসে গাড়ি দাঁড় করায়। আকাশ গাড়ি থেকে নেমে দিশাকে আনার জন্য হেঁটে পল্লীর ভিতরে প্রবেশ করে। কিছুটা রাস্তা হাঁটার পর দিশার অপেক্ষায় একটা জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়। এমন সময় হুট করেই আকাশ দেখে প্রভা গতকালের সেই অচেনা লোকটার সাথে হাসিতামাশা করতে করতে পল্লীর ভিতরের একটা দালান বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছে…..

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে