#কানামাছি
#পার্টঃ৯
#জান্নাতুল কুহু (ছদ্মনাম)
হাত-পা ভর্তি মেহেদী দিয়ে সাঁঝ স্ট্যাচু হয়ে বসে আছে। নড়তে পারছে না। এদিকে মশা এসে মনে হচ্ছে এখনই তুলে নিয়ে যাবে। বিরক্তির চরম সীমাতে পৌঁছে গেছে সাঁঝ। গত দুই ঘন্টা ধরে এক ভাবে বসে আছে। নিজের মনে মনেই বলল, ” কে বলে মানুষকে বিয়ে করতে? কে? বিয়ে করবে তার আবার এতো অনুষ্ঠান কেন? মানুষ বিয়েতে মেহেদী কেন পরে? আজব তোহ! এই মূর্তির মতো বসে থেকে মেহেদী পরার কোন মানে হয়?”
সাঁঝ রাগে গজগজ করতে করতে সামনের দিকে তাকালো। অনুষ্ঠান তাকে ঘিরে কিন্তু তার দিকে কারোর নজরই নেই! সবাই নিজেদের মধ্যে ব্যস্ত। সামনে ইহানকে হেসে কথা বলতে দেখে বলল নিজের মনে বলল, “এই ভাই সাহেব কে দেখুন! এখানে আমি এভাবে মেহেদী লাগিয়ে স্ট্যাচু হয়ে বসে আছি উনি কি সুন্দর আমার বাড়ির লোকের সাথে কুশল বিনিময় করছে!”
সাঁঝ নিজের হাত পায়ের দিকে তাকালো। বাম হাতে মেহেদী পরার পরে নড়ার কারণে মেহেদী নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে পরিষ্কার করে আবার মেহেদী দিয়েছে। দুই হাত টানটান করে ধরে আছে। এবার অত্যাচার চলছে দুই পায়ের উপর। একবার ইচ্ছা হলো মেহেদী পরানোর মেয়েটাকে বলবে যে আপনি চলে যান। লামিসা, ইশিতা আর ইহানের চাচাতো ভাই রিফাত হলো এই মেহেদী অনুষ্ঠানের নাটের গুরু। কি উনাদের শখ জাগলো গায়ে হলুদের আগের রাতে মেহেদীর অনুষ্ঠান হবে। আর সাথে সাথে সব ব্যবস্থা হয়েও গেলো! এখন নিজেরা কি হাসি খুশি মাঝখান থেকে সে ফেসে গেলো।
সাঁঝ চোখ বন্ধ করে পিছনের দিকে ঝুকলো। পিঠে ব্যথা হচ্ছে। চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে পারলো কিছু একটা আছে হেলান দেয়ার জন্য। কিন্তু পিছনের দেয়াল তো বেশ দূরে। সাঁঝ চোখ খুললো। দেখলো ইহান নিজের একটা বালিশ সাঁঝের পিঠের নিচে দিয়ে বালিশটা ধরে আছে। সে চোখ খুললে বলল,
—” ব্যথা হচ্ছে না পিঠে?”
—” শুধু পিঠে না হাতে, পায়ে, মাথায় সব জায়গায় ব্যথা হচ্ছে”
ইহান একটু অনুতপ্ত হয়ে বলল,
—” আসলে আজকে এখানে এসে কোন অনুষ্ঠান করার প্ল্যান আমাদের ছিলো না। কিন্তু ইশিতা, রিফাত, আর অন্য কাজিনরা এতো করে জেদ ধরলো আর তোমার বাসা থেকে মেনে নিলো তাই”
—” আচ্ছা”
সাঁঝ হেলান দিয়ে সুবিধা করতে না পেরে মনের অজান্তেই আলতোভাবে ইহানের কাঁধে মাথা রেখে দিলো। সাথে সাথে ঘুমে চোখ বুজে আসলো।
আজ দুপুর অব্দি সে জানতো না সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠান আছে। দুপুরে ঘুমিয়েছিলো। মা আর ফুফু কয়েকবার ডেকে গিয়েছিলো কিন্তু কোন গুরুত্ব দেয়নি। পরে অনেকের গলা শুনে উঠে ড্রইংরুমে গিয়ে দেখে ইহান দাঁড়িয়ে আছে। আর বাকিরা বসে। তখন ইহান তাকে দেখে হেসে বলেছিলো,
—” ঘুম ঘুম চোখে তোমাকে একদম বাচ্চাদের মতো লাগছে। ইচ্ছা হচ্ছে গাল গুলো টেনে দিই”
সাঁঝ কিছু না বলে ভিতরে চলে গিয়েছিলো।
তন্দ্রার মধ্যে সাঁঝ একটা মিষ্টি মিষ্টি সুবাস পেলো। সুবাসটা ক্রমেই কড়া হয়ে নাকে লাগতে শুরু হলো। সাঁঝ বিরক্ত হয়ে চোখ খুলে দেখলো সে ইহানের কাঁধে মাথা রেখেছে। ঝট করে সরে গিয়ে সামনে তাকালো কেউ দেখেছে কিনা। কেউ দেখেনি। নিজের মেহেদীর দিকে তাকালো। নষ্ট হয়নি। নাহলে আবার দেয়া লাগতো। ইহান বলল,
—” তোমার ঘুম আসছে? অনেক ধকল যাচ্ছে তো। আগে থেকে বলা উচিত ছিলো আমাদের। আসলে আমার ভাইবোনগুলো এমন জেদ ধরলো যে”
ইহানের কথার মাঝেই সাঁঝ বলল,
—” ব্যাপার না। এসব বাচ্চাদের আমি দেখে নিবো। সব গুলোকে ড্রেনের সামনে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে ধাক্কা দিবো। তাহলে এদের শিক্ষা হবে 😒”
ইহান কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে হাসা শুরু করলো। সাঁঝের চোখ ইহানের হাতের মেহেদীর দিকে গেলো। ইহানও মেহেদী পরেছে। কিন্তু শুধু বাম হাতে। তার আর ইহানের হাত মিলে একটা পূর্ণ হার্ট শেপ আঁকা হয়েছে। তার ডান হাতের অর্ধেক হার্টের মধ্যে ইহান লেখা। আর ইহানের হাতের অর্ধেকের মধ্যে লেখা সাঁঝ। দুজনের হাত পাশাপাশি আনলে একটা পূর্ণ হার্ট সহ “সাঁঝইহান = সাঁঝিহান” হয়। ইহানের হাতে কেবল এটুকুই আছে। ইহান হাসি থামিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
—” কিছু খাবে? আনবো?”
সাঁঝ একটু ভেবে বলল,
—” কোল্ড ড্রিংকস”
—” আচ্ছা আমি আনছি”
ইহান চলে গেলে সাঁঝ গলা নামিয়ে মেহেদী যে মেয়েটা পরাচ্ছে তাকে জিজ্ঞেস করলো,
—” আপনি কি নাস্তা করেছেন?”
মেয়েটা উত্তর দিলো,
—” হ্যা আপু নাস্তা করেছি”
—” আপনার পেমেন্ট করা হয়েছে?”
—” হ্যা”
—” আচ্ছা বাকি যে দুইজন এসেছিলো মেহেদী দিতে উনাদের তো দেখছি না। উনারা কোথায়?”
—” উনারা তো আমার সাথে আসেননি। আমি স্পেশালি শুধু ব্রাইডাল মেহেদী দিই। উনারা চলে গেছেন”
—” আচ্ছা। এবার আপনিও চলে যান”
মেয়েটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
—” মানে? আপনার মেহেদী দেয়া এখনো শেষ হয়নি। এক পায়ে তো পুরোই বাদ আছে”
সাঁঝ হেসে বলল,
—” নাহ আর দরকার নেই। যা দিয়েছেন সেটাই অনেক। আপনার পেমেন্ট হয়ে গেছে। এবার তো আর কোন সমস্যা নেই”
—” কিন্তু আপু….”
—” আর কোন কিন্তু না আপু। আপনি এখান থেকে ওই যে দরজা ওখান দিয়ে চলে যাবেন। খেয়াল রাখবেন কেউ যেন না দেখে”
সাঁঝের জোরাজুরিতে মেয়েটা চলে গেলো। বেশ কিছুক্ষণ পরে ইহান এসে জিজ্ঞেস করলো,
—” মেয়েটা কোথায়? মেহেদী দেয়া শেষ? ”
সাঁঝ বিজয়ীর ভঙ্গিতে হেসে বলল,
—” চলে গেছে। উনার কাজ শেষ”
ইহান নিচু হয়ে সাঁঝের পায়ের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো। হাসতে হাসতে বলল,
—” শেষ না বলো তুমি তাড়িয়ে দিয়েছো। এক পায়ে মেহেদী আছে অন্য পায়ে নেই। Weird!”
ইহান হাসতে থাকলো। সাঁঝ সরু চোখে তাকিয়ে বলল,
—” এক পায়ে পায়েল পরা যদি স্টাইল হয় তাহলে এটা কেন স্টাইল হবে না?”
—” সেটাই। এটা নিউ স্টাইল”
ইহান সাঁঝের সামনে গ্লাস ধরলো। সাঁঝের একটু অস্বস্তি হলো। তারপর একবারে পুরোটুকু খেয়ে নিলো। এরপর ইহান গ্লাস নিয়ে চলে গেলো। আর আসলো না। সাঁঝ সামনের দিকে তাকালো। বেশ মানুষ আছে। তার নিজের অনেক লতানো প্যাচানো ভাইবোন এসেছে যাদের কোনদিন দেখেছে কিনা সন্দেহ। তার এই ভাইবোন আর ইহানের কাজিনরা মিলে একজায়গায় আড্ডা দিচ্ছে। আন্টিরা একজায়গায় বসে গল্প করছে। আর আঙ্কেলরা আরেক জায়গায়। ইহানকে কোথাও দেখতে পেলো না।
সাঁঝ উঠে পড়লো। একা একা বসে থাকার কোন মানে হয়না। সবার সাথে হাই হ্যালো বলে ছাদে হাঁটতে লাগলো। তাদের ছাদটা বেশ বড়। একটু দূরে ফাকা জায়গায় ইহান আর বড় চাচা একজায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। সাঁঝ হাঁটতে হাঁটতে ওদিকে গেলো। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শুনলো ইহান বলছে,
—” চাচু তুমি চিন্তা করো না। আমি আছি তো। আমার উপর বিশ্বাস নেই?”
বড় চাচা মিনমিন করে বলল,
—” আমার কি যাওয়া উচিত ছিলো? সব ম্যানেজ করতে পারবে তো ওরা?”
ইহান চাচার কাঁধে হাত দিয়ে বলল,
—” বিশ্বাস রাখো আমার উপর। সব ঠিক হবে। আমি ব্যবস্থা করছি। এখন ওসব চিন্তা বাদ দিয়ে আমার বিয়ে এঞ্জয় করো”
সাঁঝ চলে আসলো। তার মনে প্রশ্ন জাগলো কি হয়েছে? ইহান কিসের কথা বলছে? বড় চাচাই বা এভাবে কি বলছিলো? অন্য সবাইকে তো ঠিকঠাক লাগছে। শুধু বড় চাচাকেই বিষন্ন লাগছে। সাঁঝ আন্টিদের গ্রুপের দিকে গেলো। ওখানে ইহানের মা, চাচী, বাড়ির ভাড়াটিয়া আন্টিসহ অনেকে আছে।
সাঁঝ যেতেই ইহানের মা বলল,
—” দেখি মেহেদী”
সাঁঝ হাত সামনে নিয়ে দেখালো। ইহানের মা বলল,
—” এখনো শুকায়নি তো। তবুও সুন্দর লাগছে”
ইহানের চাচীও তাল মেলালো। বলল,
— ” আসলেই অনেক সুন্দর লাগছে”
সাঁঝ চাচীকে জিজ্ঞেস করলো,
—” চাচী অনিক কোথায়?”
চাচী জিজ্ঞেস করলো,
—” অনিক কে মা?”
সাঁঝ আমতাআমতা করে বলল,
—” ইহানের চাচাতো ভাই মানে.. আপনার ছেলে”
চাচী হেসে বলল,
—” ওর নাম তো অনিক না। ওর নাম রিফাত। ওই যে ওখানে কথা বলছে”
সাঁঝ একটু হেসে বলল,
—” আসলে নাম ভুলে গিয়েছিলাম। আমি খেয়াল করিনি ওখানে আছে”
—” ব্যাপার না মা”
সাঁঝ আবার জিজ্ঞেস করলো,
—” চাচী আপনার আর ছেলে মেয়ে নেই?”
চাচী একটু আফসোস করে বলল,
—” না একটাই ছেলে আমার”
—” ও আচ্ছা”
সাঁঝ চলে আসলো ওখান থেকে। ইহানের বলা কথাগুলো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এদিকে মৃদু সুরের একটা গান বাজছে। সাথে মানুষের কথার শব্দ তো আছে। সাঁঝের মাথার ভিতর দপদপ করতে শুরু হলো। তাই হেঁটে হেঁটে ছাদের অন্য পাশে চলে আসলো। এদিকে শব্দ আসছে না। বাতাসও আছে। সাঁঝ ইহানের বলা কথাগুলো মনে মনে আওড়াতে থাকলো। পিছন থেকে কেউ বলল,
—” আরে সাঁঝ যে!”
সাঁঝ পিছন ঘুরে দেখলো নাহিদ দাঁড়িয়ে আছে রাস্তা ব্লক করে। সাঁঝ বলতে গেলে দেয়ালেফ সাথে আটকে আছে। সাঁঝ বলল,
—” আপনার সাহস দেখছি দিন দিন বেড়েই চলেছে।”
—” তোমার সাথে হিসাব ক্লিয়ার না করে তো যেতে দিতে পারিনা”
—” সেদিন রাতে কি বলেছিলাম ভুলে গেছিস? এটা আমার…”
সাঁঝকে কথা শেষ করতে না দিয়েই নাহিদ বলল,
—” জানি জানি এটা তোমার এলাকা। কিন্তু আর কতদিন? দুদিন পরই তো চলে যাবা অন্য বাড়িতে। তখন এতো তেজ থাকবে না তোমার। মাথা নিচু করে চলতে হবে। এখন এমন বাঘের মতো গর্জন করছো তখন ভেজা বিড়াল হয়ে থাকতে হবে”
সাঁঝ কঠিন স্বরে বলল,
—” বাঘিনী যে জঙ্গলেই যাক সে বাঘিনীই থাকে। আর সময় আসলে গর্জনও করে। আর বিড়াল জঙ্গলে গেলেও বাঘ হয় না। বিড়ালই থেকে যায়। অবশ্য ইদুরকে বিড়ালের কথা বলাও ভুল। বুঝবে না”
নাহিদ সাঁঝের দিকে এগিয়ে এসে হেসে বলল,
—” এতো যে কথা বলছো তুমি নিজেই এখন মেহেদী পরে বউ সেজে দাঁড়িয়ে আছো। কি করবে তুমি আমার?”
—” এতো এগিয়ে আসছেন কেন পেছান। আমার রাস্তা ছাড়ুন”
নাহিদ পেছানোর বদলে আরো একপা এগিয়ে আসলো। সাঁঝ দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
—” আমি নিজের মেহেদী নষ্ট করতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু অমানুষদের শিক্ষা দেয়ার জন্য এটা করতেই হবে”
সাঁঝ নাহিদকে মারার জন্য হাত তুললো। লাস্ট মোমেন্টে সাঁঝের হাত ধরে ফেললো। দেখলো ইহান দাঁড়িয়ে আছে। ইহান বলল,
—” ইদুর মেরে নিজের হাতের মেহেদী কেন নষ্ট করবা?”
এরপর ইহান নাহিদের কাঁধে হাত দিয়ে বলল,
—” আপনার নাম তো নাহিদ না? Lets talk man to man”
ইহান নাহিদকে একপ্রকার ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে গেলো। আর সাঁঝ রাগে ফুসতে থাকলো। একটা শিক্ষা নাহিদকে দেয়াই লাগবে।
,
,
,
🌿
সাঁঝ রাতে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো আশিকের ভয়েস মেসেজ এসেছে। সেটা অন করে শুনলো আশিক বলছে,
” সাঁঝ আমি অনিক আর ইহান স্যারের মধ্যে কোন যোগসূত্র খুঁজে পাইনি। দুজনের স্কুল কলেজ আলাদা ছিলো। আর তুই এগুলো নিয়ে ভাবা বন্ধ কর। পরশু তোর বিয়ে সেটাতে মনোযোগ দে”
সাঁঝ এটা শোনার পরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। এরপর সাকিবকে ফোন দিলো। ওপাশ থেকে ধরে বলল,
—” হ্যা সাঁঝ আপু বলো”
—” ব্যস্ত আছিস?”
—” ব্যস্ত মানে তোমার বিয়ের কাজেই ব্যস্ত”
—” আচ্ছা একটা কাজ করতে হবে”
—” কি কাজ?”
—” ওই নাহিদ আছে না? আমাদের বাসায় থাকে? ওকে শিক্ষা দিতে হবে”
—” নাহিদ মানে রোমেসা আন্টির দেবর তো? কি শিক্ষা?
—” হ্যা ওই নাহিদ। ওর হাত আর পা ভাঙতে হবে। আজ রাতেই। পিছন দিকে যে পুরানা মাঠ আছে ওখানে মারবি।ওকে কিভাবে ওখানে ডাকবি আর কি পরিচয় মানে ডাকাত না ছিনতাইকারী কি সেজে মারবি সেটা তোদের ব্যাপার। আমি জানি তোরা এসব কাজ করিস না কিন্তু এই অমানুষটাকে শিক্ষা দেয়া লাগবে। আর কাজ শেষে আমাকে ফোন দিস”
—” আচ্ছা আপু আমি দেখছি কি করা যায়। এমনিই লোকটার নজর খারাপ। আমি কাজ শেষে ফোন দিবোনে।”
সাঁঝ ফোন রেখে ইহানের কথাগুলো ভাবতে থাকলো। একসময় ঘুমিয়ে পড়লো। ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙে দেখে ১ টা বাজে। সাকিব ফোন করেছে। সাঁঝ ফোন তুলে বলল,
—” হ্যা বল কাজ শেষ? ”
—” কাজ শেষ কিন্তু আমরা করিনি।”
—” মানে কে করেছে?”
—”আমি নাহিদকে বললাম যে কাজ আছে আসতে হবে। নাহিদ নিজেই বলল উনি ওই মাঠের দিকে থাকবে। তারপর আমার ছেলেদের নিয়ে গিয়ে দেখলাম তিনজন আগে থেকেই মারছে। আমরা দূর থেকে দেখলাম। তারপর চলে গেলাম। পরে আবার গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে এসেছি। নাহলে আমাদের উপর সন্দেহ করতো। তোমার বাড়িতেও খবর গেছে”
—” আচ্ছা ভালো করেছিস। কিন্তু কারা মেরেছে?”
—” জানিনা আপু। দূর থেকে দেখতে পাইনি। মুখ ঢাকা ছিলো”
—” যেই মারুক ভালো কাজ করেছে। তোরা বিয়ের দিন এসে ভালো করে খাবি কিন্তু”
—” আচ্ছা আপু কবজি ডুবিয়ে খেয়ে আসবো”
সাঁঝ ফোন কেটে দিলো। যেই মারুক নাহিদকে ভালো কাজ করেছে। একটা শান্তির ঘুম দিতে পারবে সে। (চলবে)