কাছে_আসার_গল্পবপর্ব ৭
লেখা আশিকা
বাসায় পৌছে গাড়ি থেকে নামার সময় সবাই হিমেলকে বলল, আমাকে কোলে নিয়ে নামাতে। এইটা নাকি তাদের বংশের নিয়ম।
এইটা বলতেই হিমেল আমাকে কোলে তুলে নিলো…
ও যেভাবে হুট করে কোলে তুলে নিলো আমিতো রীতিমতো ভয় পেয়ে গেলাম…
হিমেলের বন্ধুরা বলে উঠল
_একটু ধীরে, ভাবী তো পুরা ভয় পেয়ে গেলো।
হিমেলের স্পর্শে আমার মনে হচ্ছে একটা লো ভোল্টেজে ইলেক্ট্রিক শকড খেলাম।
হিমেল বলে উঠল..
— কি ফেলে দেই….
অনেক্ষন তো ভ্যা ভ্যা করলা, আর আমার হাড় মাংস জ্বালাই খেলা, এইবার তোমাকে ফেলাই দিবো আর এইটাই তোমার শাস্তি….
— আমি পুরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম ওর মুখে এমন কথা শুনে।
না হিমেল আমাকে ফেলে দিলো না।
আমাকে বাসর ঘরে ঠিক ফুলের মাঝখানে খাটে বসাই
দিলো।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
ঘরটা অনেক সুন্দর করে সাজানো হইছে।
মিথিলাকে উদ্দেশ্য করে হিমেল বলতে লাগল…
মিথি তুই তোর ভাবী র এই ভুত্নি মার্কা মেকাপ তুলে আসল চেহারা বের করে দে তো…
কেমন ভুত লাগছে…
ডিসগাস্টিং…
লাগছে..
— তুই কি বুজিস, যা তো এখান থেকে…
— সব তোরাই বুঝিস…
থাক আমার বোঝা লাগবেও না।
ফ্রেশ হয়ে এসে আমি একটা থ্রি পিস পড়লাম।
মিথি অবশ্য আমাকে শাড়ি পড়তে বলেছিলো…
আমি রাজী হয় নাই। কারন শাড়ী পড়লে
সকালে আর খুজে পাবোনা। এইটা অবশ্য মিথিকে বললাম না।
রুমে একা বসে আছি।
কেমন যেন আনইজি লাগছে…
মা ফোন করেছে…
ফোন ধরে কোন কথা বলতে পারছি না…
খালি কান্না আসছে।
ভালোভাবে আসছি কিনা??
কেমন লাগছে?? এইসব মা জিজ্ঞাস করছে…
আমার কান্নার জন্য কথা বলতে পারছি না।
একসময় কান্না আর আটকাতে পারি নাই…
কেদেই দিলাম..
মাও পরে ফোন রেখে দিলো…
আমার পিঠে কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করলাম।
হিমেল আমার মুখটা তার দিকে ঘুরিয়ে দিলো..
— কি আবার শুরু করছ??
বলেই আমার চোখ মুছে দিলো…
কিন্তু আমি আরো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলাম…
কিছুতেই থামছিলাম না।
হিমেল এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে..
— প্লিজ কান্না থামাও। আমি তোমার কান্না সহ্য করতে পারি না। তুমি কি সেটা বুঝো না..
আমি হিমেলকে ধাক্কা দিয়া সরাই দিয়া আবার কান্না শুরু করি..
হিমেল খাট থেকে নিচে নেমে পড়ে…
— আচ্ছা আমি তোমাকে না করব না। তোমার যত খুশি কাদো, আর কান্না শেষ হলে আমাকে ফোন করো। আমি গেলাম…
যাওয়ার সময় দরজাটা এমন জোরে লাগালো যেন আমার উপর সমস্ত রাগ দরজার উপর ঝাড়ছে।
১/২ আওয়ার হয়ে গেলো সে রুমে নাই, আমি একা।
কই যে গেলো…
আমার চোখ দিয়া তখনো পানি পড়ছিলো…
একটু পর হিমেল রুমে ঢুকে…
আমাকে দেখেই বলে উঠে..
— তোমার এই রুপবান পালা কখন শেষ হবে বলতে পারো..??
আমি কি তুমার এই রুপবান পালা দেখার জন্য বিয়ে করছি??
আশ্চর্য তুমি কি বাচ্চা নাকি??
আর তোমাকে কি আমার সব শিখাতে হবে??
হিমেল রাগে অন্য পাশে শুয়ে পড়লো।
আমারো মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো.
আমিও শুয়ে পড়লাম অন্য পাশে..
সকালে উঠে দেখি আমি হিমেলের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছি…
আমি নড়াচড়া করলাম কিন্তু উঠতে পারছি না। হিমেল আমাকে তার দুই হাত দিয়া জড়াই ধরে শুয়ে আছে…
যখনি উঠতে যাবো তখনি হিমেল আমার কপালে একটা কিস দিয়ে বলে গুড মর্নিং ছিঁচকাঁদুনী…
–কী??
আমি ছিঁচকাঁদুনে…
বলেই হিমেলের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতেই, সে আমার দুই বাহুতে তার দুই হাত দিয়া শক্ত করে ধরে আমার উপুড়ে উঠে…
আমি লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ছিলাম…
আমার নাক চেপে ধরে বলে হু ছিঁচকাঁদুনীই তো…
আমি হিমেলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে উঠে পড়ি…
— আরে কই যাও??
— সকাল হইছে, এখন উঠতে হবে।
আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
দরজা খুলতেই মিথিলা হাজির। আমাকে ধাক্কা দিয়ে রুমে ঢুকে…
তার ভাইয়ের কান ধরে বলে
কি রে তুই উঠছিস না ক্যান…
— তুই তো এখনো ডাকতে এলি না তাই….
— সেটা ঠিক আছে.
কিন্তু এখন তো আমার ভাবি ই আছে তোমাকে মানুষ বানানোর জন্য.
যা বাদর তুমি ইই…
— কিইই আমি বাদর বলেই মিথির চুল টেনে ধরল..
এইবার বল কি বলছিলি…
— ভাবি আমাকে বাচাও
এইবার সব বিচার তুমি করবা।
আমি তাড়াতাড়ি মিথিকে টান দিয়া ছাড়িয়ে
বললাম এই তুমি এমন বাচ্চাদের মত মারামারি করছ ক্যান, আর মিথি যা বলেছে একদম ঠিক বলেছে..
মিথিলা হেসে উঠে
এইবার আমার ভাবি এসে গেছে আমার কোনোই টেনশন নাই।
বাই দ্যা ওয়ে
ভালোইতো প্রমোশন হইছে এক রাতেই আপনি থেকে তুমিইই.
বলেই একটা দুষ্টু হাসি দিলো মিথি
— এই তুই যাবি এখান থেকে যাহতো..
যাচ্ছি তবে ভাবী সহ..
বলেই আমাকে টান দিয়া নিয়া গেলো।
আমার শাশুড়ি মা টেবিলে খাবার দিচ্ছে..
আমাকে দেখেই বলে উঠল
তুমি একা কেনো??
হিমেল কে ডাকো…
— মা ফ্রেশ হয়ে আসছে…
আচ্ছা তুমি বসো…
আমরা খেতে বসলাম..
একটু পরই হিমেল এসে আমার পাশে বসলো..
— মা দেখছো কেমন তোমার বৌমা আমাকে রেখে একা একাই খেতে বসছে…
আমি কি বলবো বুঝতেছিলাম না। তাই তার দিকে বেকুবের মত তাকালাম।
আর সে বলে উঠে ” অই আমার দিকে কি??
তুমি খাও….
মুখেতো মশা ঢুকবে যে বড় হা করছো।
আমার রাগে শরীর জ্বলতেছে…
এই ছেলেটা এমন সময় এমন এমন কথা বলে আমি পুরা
ভ্যাবাচেকা খেয়ে যাই।
ভালো করে খেতে পারছিলাম না। তাই দেখে বলে উঠল..
মা তোমার রান্না মনে হয় পছন্দ হয় নাই।
আমি রাগে তার দিকে আবার তাকালাম…
এইবার শাশুড়ি মা বললেন
— এই তুই কি মেয়েটার পিছে লাগা বন্ধ করবি??
আমার হিয়া মা খুব লক্ষি তোদের মত বাদর না।
— দেখছিস ভাইয়া আমাদের আদর এখন থেকেই কমতে শুরু করছে…
কয়েকদিন পর কি হবে ভেবেছিস কখনো…
— হুম সেটাই তো দেখছি।
খাওয়া শেষ হবার পর মা আমাকে সব কিছু দেখিয়ে দিলেন কোথায় কি আছে না আছে এইসব। আর বললেন এখন থেকে এগুলো সব আমার….
আমার সবাইকে ভালোই লাগলো ।
রুমে এসে দেখি হিমেল টিভি দেখছে…
আমাকে দেখেই বলে উঠে…
এতক্ষনে তোমার আসা হল??
আমি ওর কথার উত্তর না দিয়েই বলে উঠলাম..
— শোন আমার না একটা ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে। ভার্সিটিতে যেতে হবে…
— থাকুক…
তাই বলে আজকেই যেতে হবে, না যাওয়া লাগবে না।
বলেই আমার হাতটা টান দিয়া বলে আসো মুভি দেখি..
যেতে না পারায় আমার খুব রাগ লাগলো, কিন্তু মুখে কিছু বললাম না। হাত টা সরিয়ে নিলাম
— আমি মুভি দেখি না।
আর হ্যা হুট হাট এইরকম টান দিয়া হাত ধরবা না। আমার অসহ্য লাগে।
টিভি টা মিউট করে…
এই কি বললা তুমি??
— যা শুনেছো তাই বলেছি
বলেই চলে আসলাম।
চলবে।।।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/