কলঙ্ক পর্ব-২৬

0
1611

#কলঙ্ক
#২৬_তমো_পর্ব
#অনন্য_শফিক

‘মেহরাব আজ থেকে গিয়েছে শিশির ভাইয়া দের বাসায়। মেহরাবের সাথে শিশির ভাইয়াদের সম্পর্কটাও জানা হয়েছে আমার।ওরা কাজিন। অর্থাৎ শিশির ভাইয়ার বড় খালার ছেলে মেহরাব। বয়সে ওরা সমান।তাই তুই তুকারি করেই একজন অপরজনকে ডাকে।
আর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো আমার কাছ থেকে মেহরাবের নাম শুনে, তার পরিচয় শুনে মা মেহরাবের সাথে সেদিনই কথা বলেন।তারা গোপনে যোগাযোগ রাখেন ঠিকই কিন্তু আমায় কিছুই জানতে দেননি!

সে রাতে আরেকটা অদ্ভুত কান্ড করেন মা।মেহরাব আমি আর শিশির ভাইয়া মিলে ড্রয়িং রুমে বসে গল্প করছিলাম। তখন মা এসে হাজির। তিনি এসে বললেন,’মেহরাব,কিরে এখন কী মনে হয় তোর হবু বউ একটু চেঞ্জ টেঞ্জ হয়েছে?মানে ইমোশানটা কমেছে একটু?’
মেহরাব হেসে বলে,’একটু না অনেকটাই কমেছে !’
‘বাহ্। তাহলে দায়িত্ব দেয়া যায় কী বলিস তুই?’
‘এটা তোমার ইচ্ছে। তোমার হবু ভাগ্নে বউ, তুমি দায়িত্ব ফায়িত্ব কী দিবে এটা তুমি জানো, আমায় জিজ্ঞেস করছো কেন আবার?’
মা তখন ধমকে দেন মেহরাবকে।বলেন,’আমার ভাগ্নে বউ না ও।ও আমার মেয়ে।আমি তার মা।তুই আমার মেয়ের হবু বর।আমি তোর শাশুড়ি মা বুঝলে? এখন সালাম কর আমার পা ছুঁয়ে!’
শিশির মেহরাবকে গা ধাক্কা দিয়ে বলে,’কর শালা কর। মাকে সালাম কর।’
মেহরাব তখন শিশির ভাইয়ার গায়ে জোরে সুরে এক ধাক্কা দিয়ে বলে,’শালা তো তুই আমার রে।তোর বোনকে আমি বিয়ে করছি। তো তুই আমায় শালা শালা করছিস কেন রে?’
শিশির ভাইয়া তখন বলে,’শালা, পর জনম টনম বলে কিছু একটা থাকতো যদি রে তবে তখন তোর একটা এরকম বোন থাকতো দেখতি।আর আমি তোর ওই বোনটাকে বিয়ে করে শোধ নিতাম শালা!’
মেহরাব তখন হাসে। হেসে বলে,’আরে পর জনম টনম লাগবে না।তুই যে মেয়েকে বিয়ে করবি ওই মেয়েকে আমি বোন বানিয়ে ফেলবো। তখন কাটাকুটি হয়ে যাবে।ব্যস!’
শিশির ভাইয়া আরো কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে চাইছিলো। কিন্তু মা সেই সুযোগ না দিয়ে বললেন,’অনেক বকাঝকা হয়েছে। এবার আসল কথায় আসি।এই তূর্ণা, এদিকে উঠে আয়!’
আমি মেঝেতে পাটির উপর বসে ছিলাম।মার কথায় তার দিকে এগিয়ে গেলাম। এবার তিনি আমায় বললেন,’তোকে একটা বুক শপ খুলে দিচ্ছি।প্লেইসটা হেভি হবে। একেবারে কলেজ আর স্কুলের গা ঘেঁষে। সাথে বই খাতা আর পড়াশোনায় লাগে এমন সব সরঞ্জামাদি রাখবি!আপাতত ক্যাশটা আমি দিচ্ছি। তুই তিন বছর ব্যাবসা করে আমার ক্যাশ আমায় ফিরিয়ে দিবি। তারপর থেকে সব তোর।বুঝলে?’
আমি মার কথা শুনে থতমত খেয়ে যাই! পড়াশোনা রেখে এখন বিজনেস টিজনেসের কথা বলছে কী করে মা! তিনি না একজন শিক্ষক! তিনি কী করে পড়াশোনা রেখে এসব করতে বলেন?
আমি কিছু বলি না।চুপ করে থাকি।
শিশির ভাইয়া তখন হেসে বলে,’এ তো শুনেই ভয়ে ইঁদুরের মতো গর্তে ঢুকে গেছে। এই মেহরাব শোন,তোর বউকে কান ধরে টেনে গর্ত থেকে বের করে আন!’
শিশির ভাইয়ার কথা শুনে ঘরের সবাই হেসে উঠে। আমিও হাসি।
মা তখন বলে,’তূর্ণা ব্যাপারটা মোটেও বোঝেনি!না বোঝারই কথা।আমি বুঝিয়ে বলছি। পড়াশোনা নষ্ট করে তুই বিজনেস করবি না। বরং পড়াশোনা ঠিক রেখেই করবি।তোর মতো এমন অনেক অনেক স্টুডেন্ট ছিল যারা ছাত্র অবস্থায় বিজনেস শুরু করেছিল এবং তারা সাকসেসফুল হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য যদি ঠিক থাকে তবে সবকিছুতেই আমরা সাকসেস হতে পারি!আর তুই একা যদি এটা করতে সাহস না পাস তবে শিশির তোকে কয়দিন সময় দিবে।দু তিন মাস ও তোর সাথে খাটবে।ও তো এমনিতেও এখন ফ্রি টাইম পাস করছে!’
আমি বলি,’আচ্ছা।’

পরদিন সকাল বেলা মেহরাব চলে যায়। যাওয়ার সময় বলে,’লক্ষ্যে অটুট থেকো।জেদটা মনের ভেতর পোষে রেখো। তুমি কখনোই ওদের কথা ভুলে যেওনা যারা তোমায় কলঙ্ক দিয়েছিল। ওইসব কথা ভুলে গেলে জেদ গলে জল হয়ে যাবে। তখন আর সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে না!’
আমি বলি,’আচ্ছা।’
যাওয়ার সময় মেহরাব আমার হাতটা শক্ত করে ধরে। তারপর কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলে,’এখন তোমাকে আমি অর্ধেক ভালোবাসি। একদিন পুরোপুরি ভালোবাসবো ইনশাআল্লাহ!’
আমি ওর দিকে তাকিয়ে লজ্জায় লাল হই।ওর থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ঘরের দিকে দ্রুত পা ফেলে চলে যায়। এমন ভাব করি যেন আমি ওর প্রতি খুব অভিমান করেছি।রাগ করেছি।
আসলে বিষয়টা ঠিক এমন না।মেয়েরা এমনই হয়। রহস্যময়।পুরুষেরা কোনদিন এদের পুরোটা জানতে পারে না!

পড়াশোনা করছি। পাশাপাশি বুকশপে সময় দিচ্ছি। প্রথম দু সপ্তাহ খুব মন খারাপ গিয়েছে।বিক্রিভাট্টা হয় না। শিশির ভাইয়ার অবশ্য এতে কিছুই যায় আসে না।তার কাজ দোকানে এসে বইয়ের ভেতর ঢু মেরে থাকা।আর আমি বসে বসে শুধু দুশ্চিন্তা করি। এবার আমি বোধহয় হেরে যাবো!তিন বছর না তিরিশ বছরেও বোধহয় ক্যাশ তুলে মাকে দিতে পারবো না!
মন খারাপ করে একদিন বাসায় ফিরি।মা মন খারাপ দেখে বলেন,’কিরে কী হলো?মুখ গোমড়া কেন এমন?’
আমি ধরা গলায় বলি,’মা, এইসব বিজনেস টিজনেস আমায় দিয়ে হবে না!সারাদিনে দু চারটা কাস্টমারও আসে না! ভালো লাগে না আর!’
মা আমার মাথায় তখন হাত বুলিয়ে দেন। বলেন,’অধৈর্য্য হোস না। মাত্র দুই সপ্তাহ হলো দোকান দিয়েছিস।আরো কটা দিন যাক। এরপর দেখবি ঠিক ব্যবসা হচ্ছে। আসলে এখনও তো তুই নতুন। নতুন বেলা এমন হয়ই!’
মার কথা মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নাই।আমি মেনে নিতে বাধ্য হই।দিনের বেলা যতোক্ষণ ক্লাস হয় ততোক্ষণ ভার্সিটি থাকি।বাকী সময়টা দোকানে দেই।রাত আটটায় বাসায় ফিরি। তারপর রাতের খাবার খেয়ে পড়তে বসি। অনেক রাত অবধি পড়ি।হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করি। কিন্তু দুশ্চিন্তা আমার পিছু ছাড়ে না কিছুতেই।মনে হয় আমি হেরে যাবো!

মার কথা সত্যি হলো।মাস খানেক যেতেই দোকানে কাস্টমারের খুব আনাগোনা হতে লাগলো।উঠতি বয়সী ছেলে মেয়েরা আসতে শুরু করলো। স্কুল কলেজের বইয়ের বাইরেও তারা নানান ধরনের উপন্যাসের বই চায়।আমি দোকানে তখন ভালো মানের লেখকদের চমকপ্রদ নতুন নতুন বই তুলি।খাতা কলম আর পড়াশোনায় আর যতো উপকরণ লাগে তার সবকিছুই প্রচুর বিক্রি হতে শুরু করে।আমি ওদের সাথে মোলায়েম আচরণ করি।ওরাও আমাকে ভালোবাসে। অনেকেই এসে আমার সাথে আড্ডা জমায়। কিন্তু বেশিরভাগ মেয়েদের দেখা যায় শিশির ভাইয়ার সাথে সময় কাটাতে।ওরা এসে শিশির ভাইয়াকে ধরে গল্প বলার জন্য। শিশির ভাইয়া গল্প বলে না। সুন্দর সুন্দর জোকস্ বলে।তার জোকস্ শুনে ওরা হাসতে হাসতে শেষ!

দিনগুলো দ্রুত ছুটে চলে।ব্যবসার তিনমাস অতিক্রম হয়। শিশির ভাইয়া চাকরিতে জয়েন করে। এখন সে শুধু শনিবারেই সময় দিতে পারে।কারণ শুক্রবার আর শনিবার দু’দিন তার সপ্তাহে ছুটি থাকে। কিন্তু শুক্রবারে তো দোকান বন্ধ থাকে।তাই সে শনিবারে দোকানে বসে। সারাদিন সময় দেয়।আর এইদিন সবচেয়ে বেশি মানুষের আনাগোনা হয় দোকানে।বিক্রিভাট্টা হয় দ্বিগুণ।

মানুষ বলে সময় এবং স্রোত কারোর জন্য অপেক্ষা করে না। এরা দ্রুত গতির।একটা বছর হুট করে চলে যায় কীভাবে যেন!আর এই একবছরেই আমি ক্যাশটা দোকান থেকে তুলে ফেলি!
অবশ্য আমি খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম টাকাটা তুলতে পারি কি না তিন বছরেও। কিন্তু আল্লাহর রহমতে একবছরেই ক্যাশ উঠেও অবশিষ্ট কিছু হাতে থাকে।মায়ের হাতে আমি ক্যাশটা তুলে দেই।মা তখন টাকাটা হাতে নিয়ে খানিক সময় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন। তারপর আমার হাতে আবার টাকাটা দিয়ে বলেন,’এই টাকাটা আমি তোকে উপহার দিলাম।তুই এই টাকা দিয়ে তোর দোকানের সাথে আরেকটা ঘর নে।আমি খবর নিয়ে জেনেছি তোর পাশের ঘরে গার্মেন্টসের যে দোকানী আছে সে তার দোকান ছেড়ে দিবে।ব্যবসা বুঝে না বেচারা।শুনেছি কুয়েত চলে যাবে!’
আমি তখন বলি,’ওখানে আমি আবার কিসের ব্যবসা করবো?’
‘কাপড়ের। গার্মেন্টসের কাপড়।হেভি ব্যবসা হবে।মাঝের পার্টিশন খুলে দুই দোকান এক করে ফেলবি।ব্যস হয়ে গেল!’
‘আমি একা একটা মানুষ অতকিছু কীভাবে সামলাবো?’
মা হেসে বলেন,’তবে আমাদের প্রাইম মিনিস্টার কীভাবে একা অত বড়ো একটা দেশ সামলান?’
আমি অবাক হয়।প্রাইম মিনিস্টাটের কাজের সাথে আমার দোকানের কী তুলনা হলো!
মা আবার হাসেন। হেসে বলেন,’তুই খোঁজ খবর নিয়ে দেখ তোর আমার মতো কোন কোন মেয়ে এমন আছে যাদের অতীত আমাদের সাথে মিলে যায় এবং যারা এখনও তাদের এই সমস্যা নিয়ে ধুঁকছে। বাঁচার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। এদেরকে ধরে এনে পথ দেখিয়ে দে।তোর এখানে কাজ দে।কাজ করে ওরা স্বাবলম্বী হোক।তুইও স্বাবলম্বী হ।’
আমি তখন বলি,’ওদের খুঁজে বের করলাম,কাজ দিলাম এটা ঠিক আছে। কিন্তু দোকান চলবে তো?ওই লোকই তো লসে পড়ে দোকান ছেড়ে দিচ্ছে!’
মা বলেন,’মনে জোর রাখ। লক্ষ্যে অটুট থাক।তুই সাকসেস হবে!’
আমি মার কথা মেনে গার্মেন্টসের দোকানটা শুরু করি।তিনটে নতুন মেয়েকে এনে কাজ দেই। একজনকে লাইব্রেরীতে আর দুজনকে গার্মেন্টসের দোকানে। এবার ভাগ্য এতোটাই কাজে দেয় যে নতুন ব্যবসায় সফলতার জন্য আমাকে একমাস তাকিয়ে থাকতে হয়নি।কারণ এখানে বুকশপ দিয়ে আমি এমনিতেই পরিচিত।স্কুল কলেজের বেশির ভাগ ছেলে মেয়ের সাথেই আমার খুব ভাব। তাছাড়া শিশির ভাইয়া এখনও মাঝেমধ্যে দোকানে আসে।সে আসলেই মেয়েদের ভিড় বেড়ে যায়।আর দোকান এমন এক জায়গা যেখানে ভিড় হলেই ক্রেতারা উৎসাহ পায়।ভিড় ঠেলে পণ্য কিনতেই তারা উৎসাহী।কারণ ক্রেতাদের এই বিশ্বাস, যে দোকানে ভিড় বেশি সে দোকানের পণ্য সবচেয়ে ভালো এবং স্বস্তাও হয় কিছুটা!

পড়াশোনা আর ব্যবসা এখন আমার জীবন সঙ্গী হয়ে গেছে।আমি এখন এসবেই অভ্যস্ত। মেহরাব এর মধ্যে একবার ঢাকায় এসেছিল। আমার সাথে দেখা করে গেছে।সে আমার সফলতা দেখে খুব উৎসাহ দিয়ে গেছে।
আর আমায় বলে গিয়েছে,’তুমি সফলতার স্বর্ণ শিখরে খুব শীঘ্রই পৌঁছাবে। কিন্তু মনে রেখো কিছুতেই পিছপা হওয়া যাবে না!’

আরো দুটো বছর চলে যায় হুট করে। অনার্স শেষ হয়ে যায় আমার। আমার পরিশ্রম আমার সাথে প্রতারণা করেনি।অনার্সে সব মিলিয়ে আমার রেজাল্ট ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট হয়।বন্ধুরা কানাঘুষা শুরু করে যে আমিই নাকি বছর দুয়েকের ভেতর ইউনিভার্সিটির লেকচারার হবো।যে ইউনিভার্সিটিতে পড়েছি সেই ইউনিভার্সিটিরই টিচার।শুনে আমার গা শিরশির করে।মনে মনে বলি, আল্লাহ এদের এই কানাঘুষা সত্যি করে দাও না প্লিজ!

আরো একটি বছর চলে যায়।মাস্টার্স শেষ হয় আমার।এখানেও ভালো রেজাল্ট করি। এবার শুনতে পাই ইউনিভার্সিটিতে নতুন টিচার নিয়োগ দিবে। আমাদের ডিপার্টম্যান্টে দুজন লেকচারার প্রয়োজন।স্যার ম্যামদের মধ্যেও আমায় নিয়ে একটা কানাঘুষা চলছে। কারণ আমাদের ডিপার্টম্যান্টের আমার সিনিয়র গ্রাজুয়েটদের চেয়ে আমার সিজিপিএ অনেক ভালো!
আর ওদিকে ব্যবসাও ফোলে ফেঁপে বড় হচ্ছে। আমার দোকানের উপরের তলায়ও দুটো ঘর নেয়া হয়েছে।লোক নেয়া হয়েছে আরো পাঁচজন।সবাই আমার মতো ভোক্তভোগী মেয়ে। ওদেরকে আমি সারা জীবন আমার দোকানেই কর্মচারী করে রেখে দিতে চাই না।আমি শুধু ওদেরকে একটা পথ দেখিয়ে দিতে চাই। যেভাবে মেহরাব,ম্যাম (মা) আর শিশির ভাইয়া আমায় পথ দেখিয়ে সফলতার ময়দানে পৌঁছে দিয়েছে!

আগামী মাসের এক তারিখ ইউনিভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টম্যান্টে একটা ইন্টারভ্যু আছে আমার।লেকচারার নিয়োগের ইন্টারভ্যু।আমি জানি আমার যোগ্যতা আছে লেকচারার হওয়ার।কারণ আমার রেজাল্ট আর সব প্রার্থীদের চেয়ে ভালো। কিন্তু সমস্যা একটাই। ভাগ্যে থাকতে হবে তো। তাছাড়া আরেকটা ভয় আছে। আমার সাথে যারা প্রতিযোগিতা করছে তাদের মধ্যে দুজনকে নিয়ে আমার বেশি চিন্তা। এদের একজন আমাদের বিভাগীয় প্রধানের ছোট ভাই।আর অন্যজন আমাদের ইউনিভার্সিটির ভিসি স্যারের ভাগ্নে।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে