কতোটা চাই তোকে পর্ব-১৭

0
4502

#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—17
.
.
🍁
“স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি’!!আর আমার সামনে কাব্য আর একটা মেয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আছে’!!বিষয়টা হয়তো আমার কল্পনার বাহিরের ছিল’!!ভেবেছিলাম কাব্যকে চমকে দিবো আমি’!!কিন্তু এখানে এসে যে আমি নিজেই চমকে যাবো তা বুঝতেই পারি নি’!!কেন জানি না শরীরের সব শক্তি অবস হতে লাগল’!!মুহূর্তের মধ্যে হাত থেকে খাবারের ব্যাগটা নিচে পড়ে গেল”!!শব্দ হলো কিছু’!!

.

“এদিকে কাব্য আচমকা কোনোকিছুর শব্দ পেয়ে পিছনে ঘুরে মাইশাকে দেখে অবাক হয়ে যায়’!!পরক্ষণেই তার মনে পরলো সে তো লাবন্যকে জড়িয়ে ধরে আছে’!!কাব্য তাড়াতাড়ি লাবন্যকে ছেড়ে দিতে নিলে লাবন্য বলে উঠলঃ

——–“প্লিজ আমায় ছেড়ে যাস না,তোকে ছাড়া যে আমি বাঁচতে পারবো না’!!

“মেয়েটির কথা শুনে আর কিছু শোনা বা বলার মধ্যে ছিলাম না আমি’!!এমন সময় মেয়েটিকে ছেড়ে কাব্য আমার সামনে এসে বললোঃ

——–“তুই এখানে…..

——–“আমি চুপ’!!এমন সময় ওই মেয়েটা বলে উঠলঃ

——–“কোনো আদব-কায়দা শিখো নি,কারো রুমে ঢুকলে পারমিশন নিয়ে ঢুকতে হয় জানো না’!!

“মেয়েটির কথা শুনে ঘৃণা লাগলো আমার’!!এমন সময় কাব্য লাবন্যের দিক তাকিয়ে বললোঃ

——-“তুই থাম’!!

“তারপর আবার আমার দিকে ঘুর বললোঃ

——-“কি হলো তুই কথা বলছিস না’!!আমি কোনো কথা না বলে ব্যাগ আর নিচে পড়া থাকা গোলাপ ফুল গুলো ওইভাবে রেখেই আস্তে করে পিছন ঘুরে চলে আসতে নিলাম’!!এমন সময় কাব্য আমার হাত ধরে বললোঃ

——-“চলে যাচ্ছিস কেন??

——–“হাত ছাড়ো……

———“আগে তুই বলবি তো……

“কাব্যের কথা শুনে মুহূর্তের মধ্যে মেজাজ বিগড়ে গেল আমার আমি চেঁচিয়ে বললামঃ

———“হাত ছাড়ো আমার’!!

———-“তুই যেটা ভাবছিস সে….

“আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না আমি’!!টান মেরে হাত এনে আমি সোজা বেরিয়ে গেলাম’!!কষ্ট হচ্ছে প্রচুর’!!এতো কিছু ভাবলাম এত স্বপ্ন দেখলাম সব মিথ্যে হয়ে গেল’!!বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে আমার তারপরও চোখের পানি যথা সম্ভব কন্ট্রোলে রেখে রুম থেকে রেরিয়ে এসে আসলাম’!! তারপর লিফটে উঠলাম চোখের সামনে শুধু কাব্য আর ওই মেয়েটার একে অপরকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্য ভেসে আসছে’!!কোনোভাবে অফিস থেকে বেরিয়ে এসে গাড়ির কাছে আসতেই ড্রাইভার চাচা বলে উঠলেনঃ

———“কি হলো মাইশা মামুনি এত তাড়াতাড়ি চলে আসলে’!!তুমি তো বলেছিলে দেরি হবে……

——–“ভালো লাগছে না বাসায় চলো…..

“আমার কথা মতো চাচাও গাড়িতে বসে পড়লেন’!!আমিও গিয়ে বসে পরলাম গাড়িতে’!!গাড়ি চলতে শুরু করল আপন গতিতে’!!চোখের পানি আর আঁটকে রাখতে পারলাম না আমি’!!টপ টপ করে পানি পরতে লাগলো আমার’!!আজ বুঝতে পারছি ভালোবাসার মানুষের কাছে অন্য কাউকে দেখলে সত্যি কতোটা কষ্ট হয়’!!আমার সব ইচ্ছে ভাবনা এই ভাবে ভেঙে চুরে যাবে তা হয়তো ভাবতেও পারি নি’!!তাহলে কি কাব্য সেদিন এই দেরি হয়ে যাওয়ার কথা বলে ছিল’!!

__________________________________________

_____________________

“নিচে বসে আছে কাব্য আর তার হাতে মাইশার আনা গোলাপ’!!গোলাপগুলো দেখে অবাক হয় কাব্য’!!এমন সময় লাবন্য এসে কাব্যের কাঁধে হাত
রেখে বললোঃ

———“মেয়েটা কে রে অসভ্যের মতো বিভেব করলো তোর সাথে…….

“লাবণ্যের কথা শুনে কাব্যের মাথা আগুনের মতো গরম হয়ে গেল’!!কাব্য নিচ থেকে উঠেই ঠাসস করে একটা থাপ্পড় মেরে দিলো লাবন্যের গালে’!!

”কাব্যের এমন কাজে লাবণ্য হা হয়ে তাকিয়ে রইল’!!কাব্য চেঁচিয়ে বলে উঠলঃ

——–”তোর সাহস কি করে হলো ওকে অসভ্য বলার’!!ও আমার বউ আমার ভালোবাসা’!!শুধু মাএ তোর জন্য আজকে ও আমায় ভুল বুঝলো’!!তুই আমার সামনে থেকে চলে যা তোকে আমি আর আমার সামনে দেখতে চাই না’!!

———“কাব্য আমি যে তোকে ভালো…..আর কিছু বলতে পারলো না লাবন্য তার আগেই আরেক গালে থাপ্পড় দিয়ে দিল’ কাব্য’!!তারপর বললোঃ

———“তুই এখান থেকে চলে যা,,(দমক দিয়ে)

“কাব্য চরম বেগে রেগে গেছে’!!যা দেখে লাবন্য ভয় পেয়ে যায়’!!আর কিছু না বলেই কাঁদতে কাঁদতে লাবন্য রুম থেকে বেরিয়ে যায়’!!

“এই মুহুর্তে কাব্য নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে’!ইচ্ছে করছে সব ভেঙেচুরে তছনছ করে দিতে’!!তার ভালোবাসার মানুষ তাকে ভুল বুঝলো ভাবতে পারছে না কাব্য’!!কাব্য কিছু একটা ভেবে কেভিন থেকে বেরিয়ে যাবে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল’!!কাব্য থেমে যায় ফোনটা তুলে উপরে রিয়ার নাম দেখে তাড়াতাড়ি ফোনটা তুলে বললোঃ

———-“হ্যালো……

“কাব্যের হ্যালো শুনে ওপাশ থেকে খুশি মনে রিয়া বলে উঠলঃ

———“আরে কংগ্রেস কি অবস্থা বল’!!সব ক্লিয়ার হয়ে গেল’!!তোর মনের বাসনা আজ তাহলে পূরণ হলো’!!কেমন লাগছিল বল তোর বউ কে……

——–”কিসব বলছিস তুই…….

———“তুই বুঝতে পারছিস না……(অবাক হয়ে)

——–”না……

———“মজা করছিস তুই…….

———-“আরে মজা করবো কেন(ক্ষিপ্ত হয়ে)

———”আরে তুই রেগে যাচ্ছিস কেন মাইশা তোকে কিছু বলে নি…….

——–“কি বলবে……..

——–“কেন ও তো তোকে আজ প্রপোজ করতে আসছিল’!!পৌঁছায় নি এখনো অফিসে কিন্তু মাইশা তো তখন বললো”!!

“কাব্যর আর বুঝতে বাকি রইল না’!!মাইশা তাহলে কেন এত সেজেগুজে এসেছিল’!!সব এলেমেলো হয়ে যাচ্ছে কাব্যের’!!এত বছরের ইচ্ছে এইভাবে নষ্ট করে ফেললো তাও আবার নিজের দোষে…….!!কাব্য বলে উঠলঃ

——–“অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে রিয়া…….

——–“কি হয়েছে মাইশা এখনোও ……

——–“মাইশা এসেছিল লাল শাড়ি পড়ে খুব সুন্দর করে সেজেগুজে

——-তাহলে…..

“তারপর কাব্য বলতে শুরু করলঃ

.

“অফিসে নিজের রুমে বসে কাজ করছিল কাব্য’!!আজকে তাদের লাঞ্চের পর একটা বড় মিটিং আছে’!!যেটা তাদের জন্য খুবই জরুরি’!!তাই সেটা নিয়েই কিছু কাজ করতে ছিল কাব্য’!!এমন সময় রুমে ঢুকলো লাবন্য’!!লাবন্য ভিতরে ঢুকে সোজা কাব্যের সামনে চেয়ারে এসে বসলো’!!কাব্য লাবন্যকে দেখে বলে উঠলঃ

——-“তুই এখানে এই সময়……

“লাবণ্য কিছুটা নরম গলায় বললোঃ

——–“তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে…….

“কাব্য লাবন্যের কন্ঠ শুনে ওর তাকাতেই কিছুটা অবাক হয়ে যায়’!!কারন লাবণ্যের চেহারা পুরো শুকিয়ে গেছে’!!চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে দেখে বোঝাই যাচ্ছে কতোরাত ঘুমায় নি সে’!!লাবন্যের এমন অবস্থা দেখে কাব্য বলে উঠলঃ

———“কি হয়েছে তোর চোখে মুখের এমন অবস্থা কেন??

“হুট করেই লাবন্য বলে উঠলঃ

———-“আমি তোকে ভালোবাসি,তোকে বিয়ে করতে চাই…….

“লাবণ্যের হর্ঠাৎ করে এমন কথা শুনে কাব্য তার চেয়ার থেকে উঠে পড়ে তারপর উচ্চ স্বরে হেঁসে বলেঃ

———-“তোর কি মাথা আজ আবার খারাপ হয়ে গেছে’!!

“লাবন্য কাব্যের কথা শুনে কেঁদে দেয়’!!লাবণ্যের এমন কান্ডে কাব্য পুরো অবাক হয়’!!কাব্য লাবণ্যের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলেঃ

———“আরে তুই কাঁদছিস কেন??

“লাবণ্য কোনোকিছু না বলেই হুট করে কাব্যকে জড়িয়ে ধরে সে’!!কাব্য আচমকা এমনটা হওয়াতে পুরো হা হয়ে যায়’!!এদিকে লাবন্য কাব্যকে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকেঃ

——–“আমি সত্যি বলছি আমি তোকে খুব ভালো বাসি’!!এই কয়েকদিনে অনেক চেষ্টা করেছি তোকে ভুলে যাওয়ার কিন্তু কিছুতেই কিছু পারছি না……..

“কাব্য জাস্ট লাবণ্যকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য ওর মাথা হাত দিয়ে ছিল’!!আর এমন সময় মাইশা চলে আসে……

“এতক্ষণ কাব্যের সব কথা শুনে রিয়া বলে উঠলঃ

——–“এটা তুই কি করলি মাইশা অনেক আশা নিয়ে গিয়েছিল তোর কাছে আর তুই এত কাছে এসেও আবার সেই দূরে ফিরিয়ে দিলি……

———“বিশ্বাস কর আমি ইচ্ছে করে কিছু করে নি আমি তো শুধু…….

———“সে যাইহোক কিন্তু এখন মাইশাকে গিয়ে আগে সব বল’!!ও তো অনেক কষ্ট পেয়েছে তোর জন্য নিজ হাতে রান্না করে নিয়ে গিয়েছিল আর সেজেছিল তোর জন্য কিন্তু তুই……

“এতটুকু বলে মন খারাপ করে ফোনটা কেটে দেয় রিয়া’!!

.

“আর কাব্য মন খারাপ করে বসে পরে চেয়ারে’!!এমন সময় কাব্যের পিএ এসে বলে তাকে মিটিং এ যেতে হবে’!!কাব্য তাকে বলে উঠলঃ

——-“তুমি যাও আমি আসছি……

“কাব্যের কথা শুনে তার পিএ চলে যায়’!!কাব্য মন খারাপ করে কিছুক্ষন বসে থেকে এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চললো মিটিং এ ‘!!আর মনে মনে ভাবলো রাতে গিয়েই মাইশাকে সব কথা তার মনের কথা সব বুঝিয়ে বলে’!!বুঝিয়ে বললে সবই বুঝতে পারবে মাইশা’!!এই বলে নিজেকে শান্ত করল কাব্য’!!তারপর চললো তার গন্তব্যে……..

__________________________________________

_____________________

“রাত_৮ঃ০০টা……..

“কাব্য দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি পৌঁছাচ্ছে’!!আজ যে সে তার মনের সব কথা বলবে তার ভালোবাসার মানুষকে’!!তার সাথে সব ভুল বুঝাবুঝিও মিটিয়ে ফেলবে সে’!!এসব পরিকল্পনা করে চলছে বাড়ি কাব্য’!!

“বেশকিছুক্ষনের মধ্যেই কাব্য বাড়ি চলে আসে’!!বাড়ি ঢুকেই সোজা উপরে চলে যায় কাব্য’!!সারা রুমে মাইশাকে খুঁজতে থাকে’!!কিন্তু কোথাও খুজে পায় না মাইশাকে’!!কাব্য অস্থির হয়ে পড়ে’!!তারপর নিচে নেমে কাব্য চেঁচিয়ে তানিশাকে ডাকতে থাকে’!!কাব্যের চেঁচানো শুনে তানিশা আর মামুনি আর মামু তিনজনেই বেরিয়ে আসল’!!তারপর মামুনি বলে উঠলঃ

———“কি হলো তুই চেঁচাচ্ছিস কেন???

———“মাইশা কোথায়……

——–“ওহ মাইশা তো ওদের বাড়ির গেছে……

——–“হুম…….

——–“তোর অফিস থেকে ফেরার সময় তোর মামার সাথে মাইশার দেখা হয়ে যায় তারপর নাকি তার সাথেই চলে যায়’!!আমায় ফোন করে বলেছিল কিছুদিন থাকবে নাকি’!!কাব্য মামুনির কথা শুনে আর কিছু না বলে সোজা উপরে চলে যায়’!!কারন সে বুঝতে পেরেছে মাইশা রাগ করেই চলে গেছে……

“এখন কি করবে কাব্য………

_____________________

“নিজের বাড়িতে নিজের রুমেই বসে কেঁদে চলেছি আমি’!!অসম্ভব রকম কষ্ট হচ্ছে আমার’!!বার শুরু কাব্য আর ওই মেয়েটার জড়ানোর দৃশ্য ভেসে আসছে আমার’!!রাতে আর কোনোকিছু না খেয়েই ওইভাবেই ওই সাজেই ঘুমিয়ে পরলাম আমি’!!মা অনেকবার খাওয়ার জন্য ডাকতে এসেছিল কিন্তু আমি যাই নি’!!ভালো লাগছে না কিছু’!!চুপচাপ কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরলাম আমি’!!ফোনটাও বন্ধ করে রেখেছি মনে মনে পন করেছি আর যাবো না কাব্যের কাছে’!!থাকুক সে তার মতো…….
.
.
.
.
🌼

“সকালে দরজা টাকানোর শব্দের ঘুম ভাঙল আমার’!!এমনভাবে দরজায় নক করছে মনে হচ্ছে দরজা ভেঙেই ফেলবে এখন দরজা না খুললে’!!একরাশ বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলে দিয়ে বললামঃ

——-“এত জোরে দরজায় নক করার কি আছে……

“বিনিময়ে সামনের ব্যক্তি কিছু না বলেই হুট করে কোলে তুলে নিয়ে হাটা শুরু করলো’!!আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি পুরো ভয় পেয়ে তার হাত ধরে সামনে তাকাতেই দেখলাম কাব্য……
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

❤️❤️❤️[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!আর গল্প কেমন হচ্ছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন]😊😊😊😊

#TanjiL_Mim♥️

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে