#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—16
.
.
🍁
“চোখে কালো চশমা গায়ে কাব্য ভাইয়ার একটা ব্লাক শার্ট আর তার সাথে প্লাজু পড়া অবস্থায় মিউজিক সিস্টেমে পুরো লাউডস্পিকারে দিয়ে “কুর্তা পাজামা কালা কালা” গানটা ছেড়ে উড়াধুরা নাচতে আছি আমি’!!কেন নাচছি জানা নেই, তবে আমি খুব খুশি’!!ফুল লাউডে গান চলছে বিছানার উপর উঠে উড়াধুরা বালিশ নিয়ে নাচতে আছি আমি’!!এই মুহূর্তে আমি ভুলেই গিয়েছি যে এটা কাব্যভাইয়ার রুম’!!হর্ঠাৎই দরজার নক করলো কেউ সাথে সাথে মিউজিক অফ করে দিলাম আমি’!!এই রে এর ভিতর কাব্য ভাইয়া চলে আসলো নাকি’!এখন আমায় এই অবস্থায় দেখলে কি বলবে তারওপর রুমটারও অবস্থা খারাপ করে দিয়েছি’!!এসব ভাবনার মাঝেই দরজার ওপাশ তানিশা বলে উঠলঃ
——–“মাইশা তুই রুমে মধ্যে বসে কি করছিস……
“ওর কথা শুনে আমি এক শ্বাস ফেলে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিয়ে ওকে ভিতরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম’!!ও আমার এমন অবস্থা দেখে বলে উঠলঃ
———“এগুলো কি করছোস তুই……
——–“আরে চুপ কর তো কিছু হবে “জামাই” আসার আগেই আবার সব আগের মতো করে ফেলবো আর কাব্য আসতে এখনো অনেক দেরি আছে’!!তাই চালো বেবি Let’s dance এই বলে আবার গান ছেড়ে দিয়ে দু’জনেই বিছানার উপর দাঁড়িয়ে উড়াধুরা নাচতে আছি,,প্রথমে তানিশা রাজি হলেও পরক্ষণেই শুরু হলে গেলো দুই বোইনের নাগিন ড্যান্স’!”
“পাক্কা এক ঘন্টা ধরে পুরো বিছানার চাদর থেকে শুরু করে বিছানার উপর থাকা বালিশ নিয়ে উড়াধুরা নাচতে আছি আমরা’!!এই মুহূর্তে বলতে গেলে দু’জনেই পুরো পাগলী হয়ে গেছি একেই বলে পাজামা পার্টি’!!😂এমন সময় তানিশা বলে উঠলঃ
——–”খালি মুখে পার্টি জমে বোইন তুই এখানে থাক আমি গিয়ে ফ্রিজ থেকে কোক – টোক নিয়ে আসি……
———-“ওকে তাড়াতাড়ি আসিস……
“এতটুকু বলতেই তানিশা চলে গেল’!!আর আমি বিছানার উপর দাঁড়িয়ে উড়াধুরা নাচছি’!!
“কিছুক্ষনের মধ্যেই তানিশা চলে আসলো হাতে তার দুটো কোকের বোতল’!!তানিশা রুমে ঢুকেই সোজা বিছানায় এসে একটা বোতল আমার হাতে আর একটা ওর হাতে নিলো’!!তারপর আমি বলে উঠলাম দাঁড়া একটা বাঙালি ডিজে গান ছাড়ি’!!এই বলে তাহেরী আঙ্কেলের গাওয়া ডিজে গানটা ছেড়ে উড়াধুরা হাসি আর সাথে মাইশা তানিশার ডিজে নাচ…😂
“হর্ঠাৎ করে আমাদের নাচের মাঝখানে কেউ এসে গানটা অফ করে দিলো’!!সাথে সাথে আমরা দুজনেই অবাক হয়ে সামনে তাকালাম’!!সামনে কাব্যকে দেখে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার’!!ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে’!!হর্ঠাৎ করে এমন একটা পরিস্থিতিতে পরতে হবে তা আমি কল্পনাও করতে পারি নি’!!দরজাটা খুললো কে??আমি তানিশার দিকে বড় বড় করে তাকিয়ে চুপি চুপি করে বললামঃ
———“তুই দরজা কেন বন্ধ করিস নি কেন???
———“দোস্ত উওেজনায় ভুলে গিয়েছিলাম…..
——–“এখন কে বাঁচাবে আমাদের…??
——–“আমাদের হবে না আমাকে…..
——–মানে???
“এতটুকু বলতেই তানিশা দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল’!!ওর এমন কাজে আমি জাস্ট হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম কি শয়তান মেয়েরে বাবা আমায় একা ফেলে চলে গেল’!!এখন কি করবো আমি’!!এদিকে আমি তো ভাইয়ার জামা পড়ে আছি’!!এটা দেখে ভাইয়া রেগে যায় নি’!!আমি বিছানার উপর দাঁড়িয়ে বললামঃ
———“গুড মনিং জামাই…..হি হি (জোরপূর্বক হেসে)
———-“দুপুর ২ঃ০০টা বাজে এখন তোর জন্য গুড মর্নিং…….
“কাব্যের কথা শুনে রীতিমতো অবাক আমি’!!দুপুর দুটো বেজে গেছে’!!কিন্তু কখন বাজলো বুঝতেই তো পারি নি’!!
——–“ইয়ে না মানে সরি…..
——–“রুমের কি অবস্থা করছিস……বালিশ কোথায় কোথায় ফেলেছিস’!!
——–”সরি সরি আমি এখনি সব ঠিক করে দিচ্ছি এই বলে উওেজনা নিয়ে খাট থেকে নামতে গিয়ে প্লাজুর সাথে পা বেজে হুমড়ি খেয়ে বিছানা থেকে নিচে পড়ে যেতে নিলাম আমি’!!হর্ঠাৎ করে যে এমন কিছু হবে তা বুঝতেই পারি নি’!!ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলেছি আমি'”!!! এখনি হয়তো আমার কোমড় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে’!!হর্ঠাৎ মনে হলো কেউ আমায় ধরে ফেলেছে’!!আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম আমি'”! সামনে তাকিয়ে দেখলাম কাব্য অগ্নি চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে’!!আমি তো ভয়ে অর্ধেক হয় গেছি একি তো রুমের এই অবস্থা তারওপর এক্ষুনি পড়ে গিয়ে কোমড়টা যেত আমার’!! না জানি কাব্য এখন আমার সাথে কি করবে’!!আমি নরম গলায় কাব্যকে বললামঃ
——–“সরি প্লিজ কিছু বলো না আজকে আমি খুব খুশি এই বলে ভাইয়ার গলা জড়িয়ে ধরলাম’!!কারন কাব্য আমায় কোলে তুলে নিয়েছে……
———“খুশি কেন???
———“তোমায় বলবো কেন?নামায় আমায়’!!
“আমার কথা শুনে কাব্য নিচে নামিয়ে দিলো আমায়’!!তারপর কড়া গলায় বললোঃ
——-“খুশি থাক আর যাই থাক এক ঘন্টার মধ্যে পুরো রুম আবার আগের মতো দেখতে চাই আমি’!!
——–“ওকে মাই জামাই এই বলে কাব্যের গালে একটা ছোট্ট কিস করে দিলাম আমি’!!দিয়েই রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম’!!কারন ঝাড়ু আনতে হবে তো নাকি??
.
“এদিকে মাইশার এমন কাজে কাব্য শকট খেলো’!!কি করলো ও’!!মাথাটা খারাপ হয়ে গেল নাকি’!!এই বলে কাব্যও চলে যায় ওয়াশরুমে……
__________________________________________
_____________________
“পাক্কা দেড় ঘন্টা বসে পুরো রুম পরিষ্কার করলাম আমি’!!কোমড় সব ধরে গেছে’!!আর কাব্য এতক্ষণ আরামে বিছানায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছিল’!!আশ্চর্য প্রতিদিন রাতে বাড়ি আসে আর আজকে এত তাড়াতাড়ি চলে আসলো’!!ধুর আমার পুরো পাজামা পার্টিটাই নষ্ট হয়ে গেল’!!এই ভেবে পুরো রুম পরিষ্কার করে চলে গেলাম ওয়াশরুমে’!!তারপর গোসল করে সোজা নিচে গেলাম খাবার খেতে’!!সবাই আজকে আমায় ছাড়াই খেয়ে নিয়েছে অবশ্য দোষটা আমারই ছিলো’!!তাই দেরি হয়ে গেছে’!!নিচে নামতেই দেখলাম তানিশা আছে টেবিলে’!!তারপর আমরা দুজনেই একসাথে খাবার খেলাম তার সাথে বক বক ফ্রী……..
.
.
.
.
.
.
🌼
“মাঝখানে কেটে গেল দু-দিন!!এই দুই দিনে অনেক ভেবে দেখলাম আমি’!!যখন কাব্যের সাথে বিয়ে হয়ে গেছে তাহলে এখন আর কোনো ভেদাভেদ না করে ভাইয়াকে প্রপোজ করে দিবো আমি’!!সত্যি বলতে আমিও ভালোবেসে ফেলেছি কাব্যকে’!!!আর এতদিনে খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছি আমি’!!হর্ঠাৎই ফোনটা হাতে নিয়ে আপুকে ফোন করলাম’!!প্রথম কলেই আপু ধরে ফেললো’!!তারপর বলে উঠলঃ
———-“হুম বল……
——–“আপু আমি ভাবছি আমি নিজেই কাব্যকে প্রপোজ করবো…..
“আপু আমার কথা শুনে অবাক হয়ে চেঁচিয়ে বললোঃ
———“কি???
“আপুর চেঁচানো শুনে মনে হলো আমার কানটাই ফেটে যাচ্ছে’!!
———“আরে এইভাবে ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছো কেন??
———“তুই কি সত্যি বলছিস মাইশা……….
——–“তোমায় মিথ্যা বলে লাভ কি,,আর আমার মনে হয় না কাব্য এ যুগে কোনো দিন আমায় বলবে সে আমায় ভালোবাসে তাই আমি ভাবছি আমি নিজেই বলে দেই……
———“তুই কি ভালোবাসিস কাব্যকে…….
———“সেটা তোমায় বলবো কেন যাকে বলার তাকেই বলবো তুমি শুধু বলো কি করে কি করবো’!”
“আপু কিছুক্ষন ভেবে আমায় একটা জব্বর আইডিয়া দিলো’!!আমিও আপুর কথা মতো প্রথমে নিজ হাতে রান্না করলাম তারপর গিয়ে মামুনির কাছে’!!মামুনি ছাদে দাঁড়িয়ে গাছে পানি দিচ্ছিল আমি মামুনির সামনে দাঁড়িয়ে বললামঃ
——–“বলছি কি মামুনি…..
——–“হুম বল না শুনছি আমি’!!
——–“শুনো না…..
——–“হুম বল…
——-“আসলে মামুনি…..
——-“আসলে বাদ দিয়ে যেটা বলতে এসেছিস চট করে বলে ফেল…’!!
“মামুনির কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ থেকে চট করে বলে উঠলামঃ
———“আমি কাব্য ভাইয়ার জন্য অফিসে খাবার নিয়ে যাই……
“মামুনি আমার কথা শুনে অবাক হয়ে গাছে পানি দেওয়া বন্ধ করে বললোঃ
———“কি ব্যাপার বলতো,,আজকে নিজ হাতে খাবার রান্না করলি এখন আবার কাব্যের জন্য অফিসে খাবার নিয়ে যেতে চাইছিস কারনটা কি??ব্যাপার কি তোর……
“আমি মামুনির কথা শুনে পিছন থেকে মামুনিকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ
———-“আরে তেমন কিছু নয় মামুনি আসলে একটু অফিস থেকে ঘুরে আসতে চাইছিলাম’!!
———–“শুধু কি অফিস দেখতে যাবি নাকি অন্য কাউকে…….
———“কি যে বলো না তুমি যাই আমি প্লিজ…….
——–“ঠিক আছে গাড়ি করে যাবি আবার গাড়ি করেই ফিরে আসবি…….
———“ওকে থ্যাংকু মামুনি’!!এই বলে মামুনির গালে একটা চুমু দিয়ে আমি চলে আসলাম নিচে তৈরি হতে হবে তো…….
_____________________
“নিচে এসে একটা সুন্দর লাল রঙের শাড়ি বের করলাম আমি’!!শাড়ি পড়াও শিখে নিয়েছি আমি’!!এখন আর শাড়ি নিয়ে কোনো জামেলা নেই'”!!!সুন্দর করে শাড়ি পড়ে হাতে কিছু কাঁচের চুরি পড়ে নিলাম,চুলগুলো সুন্দর করে বিনুনি করে এক সাইডে রেখে দিলাম,,ঠোঁটে গাড়ো করে লাল লিপস্টিক, কানে এক জোড়া ঝুমকা পড়ে চোখে হালকা কাজল ব্যস মাইশা তৈরি’!!আজকে আমি খুব খুশি লাগছে’!!নিজেকে নিজেই আয়নায় দেখে পাগল হয়ে যাচ্ছি ভাইয়া নিশ্চয়ই হ্যার্টফেল করবে’!!এই ভেবে আনমনে হেঁসে দিলাম আমি’!!তারপর আস্তে আস্তে হাতে মোবাইলটা নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম আমি’!!নিচে নামতেই তানিশা আর মামুনি হা করে তাকিয়ে রইল আমার দিকে’!!আমি মুচকি হেঁসে তাদের বললামঃ
——-“আমায় কেমন লাগছে শাড়ি পড়া ঠিক আছে না মামুনি……..
“দু’জনেই হা হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে’!!তাই আমি আবারো বলে উঠলামঃ
——–“কি হলো মামুনি কথা বলছো না কেন??
“এমন সময় তানিশা বলে উঠলঃ
———“উড়ে দোস্ত তোরে কি সুন্দর লাগছে…….
“আমি তানিশার কথা শুনে একটু ভাব নিয়ে বললামঃ
——–“থ্যাংকু জানু……তারপর মামুনিকে বললামঃ
——-“আমায় ভালো লাগছে তো মামুনি……
——-“হুম খুব সুন্দর লাগছে’!!তাহলে এখন আমি যাই…..’!!
———“হুম যা আর গাড়িতে সব খাবার আমি উঠিয়ে দিয়েছি তুই গিয়ে বস…….
———-“ওকে মাই সুইড মামুনি’!!এই বলে সামনে এগোতে লাগলাম আমি’!!
“হর্ঠাৎই দরজা পর্যন্ত আসতেই তানিশা ডেকে বললোঃ
——-“All the best dosto……..
“বিনিময়ে আমিও মুচকি হাসলাম’!!গাড়ির কাছে আসতেই ড্রাইভার কাক্কু বললোঃ
——–“তোমায় খুব সুন্দর লাগছে মাইশা মামুনি……
——–থ্যাংকু চাচা……..তারপর মুচকি হেঁসে আমি বসে পরলাম গাড়িতে’!!আমি বসতেই ড্রাইভার কাক্কু গাড়ির চালাতে শুরু করল’!!তার আমিও এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চললাম কাব্যের অফিসে’!!কিছু দূর যেতেই সামনে কিছু গোলাপ ফুলের দোকান দেখতে পেলাম আমি’!!তাড়াতাড়ি ড্রাইভার চাচাতে গাড়ি থামাতে বললাম’!!তারপর কিছু লাল গোলাপ ফুল কিনে নিলাম আমি’!!তারপর আবারো চললাম কাব্যের অফিসের উদ্দেশ্যে’!!আজকে কাব্যকে জাস্ট চমকে দিবো…….
_____________________
“আধ ঘন্টা পর ড্রাইভার চাচা বললোঃ
——–“আমরা চলে এসেছি মাইশা মামুনি……
আমিও ওনার কথা শুনে মুচকি হেঁসে খাবারের ব্যাগ গুলো হাতে নিয়ে গাড়ি থেকে বাহিরে বেরিয়ে আসলাম’!!তারপর চাচাকে বললামঃ
———“কিছুক্ষন ওয়েট করো আমার একটু সময় লাগবে তবে গাড়ি ছেড়ে যাবে না কোথাও ঠিক আছে……
———“ওকে মাইশা মামুনি তুমি নিশ্চিতে যাও আমি আছি এখানে……
“তারপর আমিও আর কথা না বারিয়ে সোজা চলে গেলাম অফিসের ভিতরে’!!বুকের ভিতর অস্থিরতা কাজ করছে’!!!কি করে কি বলবো কে জানে’!!ধুর এতো ভাবার কি আছে সোজা গিয়ে গোলাপগুলো হাতে দিয়ে মনে কথা সব বলে দিবি’!!এই ভেবে লিফটে উঠে পড়ালাম’!!
“কিছুক্ষণের মধ্যেই কাব্য ভাইয়ার রুমের সামনে চলে আসলাম তারপর ভিতরে ঢুকেই যা দেখলাম মুহূর্তের মধ্যে সব ভাবনা চিন্তা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল আমার……..’!!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে……………..
#TanjiL_Mim♥️