কতোটা চাই তোকে পর্ব-১৫

0
4331

#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—15
.
.
🍁
“দরজার কলিং বাজাতেই মামুনি এসে দরজা খুলে দিলো’!!আমরাও হেঁসে মামুনিকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ

———“কেমন আছো মামুনি………

———“হুম ভালো তোরা,,!!

——–“হুম আমরাও ভালো আছি…..

“তারপর আমরাও বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়লাম’!!কাব্য বাড়ির ভিতর ঢুকে সোজা রুমে চলে গেল’!!আর আমি আর মামুনি বসে পরলাম সোফায়’!!এমন সময় দরজার কাছ থেকে চেঁচিয়ে বলে উঠল তানিশাঃ

———“উরে ভাবি,উরে বান্ধুপী,উরে বোইনা তুই আসছোস’!!(দৌড়ে)

“হর্ঠাৎ করে এমন চেঁচানো শুনে আমি অবাক হয়ে সামনে তাকালাম’!!আমি তাকানোর সাথে সাথেই তানিশা দৌড়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরল’!!আমিও খুশি মনে ওকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ

———-“এই তো আসছি বোইন,বান্ধুপী……

———“উম্মা জানু তোরে এওতো মিস করছি……

———“আমিও……

——–“আচ্ছা তুই বস আমি ফ্রেশ হয়ে এক্ষুনি আসছি তারপর এওতো এওতো গল্প করবো’!!

——–“ওকে……..তারপর তানিশা চলে গেল……..

“এর ভিতর মামুনিও বলে উঠলঃ

——–“তুই ও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়…..

——-“ওকে মামুনি..তারপর আমিও চললাম সিড়ি বেয়ে উপরে…….

_____________________

“রুমে ঢুকতেই দেখলাম কাব্যক আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে’!!আমি কোনোকিছু না বলে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম’!!তারপর সারাদিন এটা ওটা করে সময় চলে গেল’!!

“রাতে ডিনার সেরে তানিশার রুমে গল্প করছি আমি আর তানিশা’!!এতদিন কি কি হলো সব বলতে হবে না’!!এই ভেবে গল্প শুরু করে দিলাম’ আমি'”!আর তানিশা অতি আগ্রহের সাথে বসে আমার কথা গুলো শুনতে লাগলো’!!

.

“এদিকে কাব্য রুমের ভিতর পায়চারি করছে’!!কারন মাইশা এখনো রুমে আসছে না’!!না জানি এতক্ষণ কি করছে’!!বোকা মেয়েটা আবার সব বলে দিবে নাকি তানিশাকে’!!এসব না না ভাবনায় ভেবে যাচ্ছে কাব্য’!!

“রাত ১ঃ০০টা…….

“মাইশা এখনো রুমে আসেনি’!!কাব্য এবার প্রচন্ড বেগে রেগে গেছে’!!এতক্ষণ করছি কি তানিশার রুমে’!!এক পর্যায়ে কাব্য রাগান্বিত অবস্থায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে বিছানায়’!!হয়তো মাইশা আর আসবে না রুমে…….

.

“চুপি চুপি করে কাব্যের রুমের দিকে পা বাড়াচ্ছি আমি’!!এই তানিশার সাথে বক বক করতে যে এতটা সময় হয়ে যাবে বুঝতেই পারি নি’!!কখন এতটা বেজে গেল বুঝতেই পারলাম না’!!এসব ভাবনার মাঝেই হেঁটে চলে গেলাম রুমে’!!

“রুমে ঢুকতেই দেখলাম ভাইয়া অলরেডি ঘুমিয়ে পরেছে’!!আমিও আর কোনো কিছু না ভেবে চুপি চুপি কাব্যের পাশে গিয়ে শুয়ে পরলাম’!!কতোক্ষন এপাশ করেও ঘুম আসলো’ না!!আশ্চর্য ঘুম আসছে না কেন??হর্ঠাৎই কেন জানি না এই দশ দিনে কাব্যকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোটা খুব মিস করছি’!!হর্ঠাৎ কাব্যের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম আমি’!!কি সুন্দর লাগছে কাব্যকে’!!আগে কখনো এতটা গভীর ভাবে কাব্যকে দেখা হয় নি আমার’!!অবশ্য দেখবো কি ভয়ে তো আমি ঠিক করে তাকাতামই না’!!তাকে দেখলেই বুকের ভিতর দক করে উঠতো’!!কিন্তু এখন আর ভয় করছে না’!!খুব ভালো লাগছে কাব্যকে’!!আচ্ছা আমি কি কাব্যকে ভালোবেসে ফেলেছি নাকি’!!আচ্ছা বুঝবো কি করে যে কাব্যকে ভালো বাসি আমি’!!এসব আলতু-ফালতু চিন্তা ভাবনা করতে করতে মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল আমার’!!কেন জানি না বার বার শুধু ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে ইচ্ছে করছে আমার’!!কিছুক্ষন বিষয়টা নিয়ে ভেবে মাঝখান থেকে কোলবালিশ সরিয়ে কাব্যকে জড়িয়ে ধরলাম আমি’!!অন্য কাউকে তো জড়িয়ে ধরি নি আমার জামাইরেই তো ধরছি…..’!!এতটুকু ভেবে চোখ বন্ধ করে ঘুম……..

__________________________________________

_____________________

“সকালে আগে ঘুম ভাঙল কাব্যের’!!চোখ খুলে পাশে মাইশাকে দেখে অবাক’!!তার চেয়েও বেশি অবাক হয়েছে মাইশাকে জড়িয়ে ধরাতে’!!বিষয়টা একটু কেমন লাগলো কাব্যের কাছে’!!অবশ্য কাব্য এতে অনেক খুশি হয়েছে’!!হয়তো সে তার ভালোবাসার মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি কাছে পেয়ে যাবে’!!কাব্য মাইশাকে তার বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বললোঃ

——–“তুই যে কবে বুঝবি আমি তোকে কতোটা ভালোবাসি’!!আর #কতোটা_চাই_তোকে!!আমার বিশ্বাস একদিন তুই সত্যি বুঝতে পারবি’!!একদিন হয়তো তুই ও আমায় নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসবি আমাকে’!!শুধু সেদিন আবার খুব বেশি দেরি না হয়ে যায়’!!এই ভেবে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কাব্য মাইশার কপালে একটা চুমু দিয়ে ওকে ছাড়িয়ে চলে যায় ওয়াশরুমে……..

.

“এদিকে কাব্য যেতেই চোখ মেলে তাকালো মাইশা’!!কারন সে কাব্যের বলা সব কথাই শুনতে পেয়েছে’!!আসলে কাব্য যখন মাইশাকে তার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরেছিল তখনি খুব ভেঙে যায় মাইশার’!!তারপর কাব্যের বলা কথাগুলো সবই শুনেছে মাইশা'”!!! তার মানে কাব্য আমায় ভালোবাসে’!!আর ভালোবেসেই কি তাহলে আমায় বিয়ে করেছিল’!!তাহলে কি আপু জানতো এই বিষয়টা’!!তাহলে আমায় কেন বললো না'”! মাথার ভিতর হাজারটা প্রশ্ন এসে মাথায় বাজলো’!” তার সাথে কাব্য বলা শেষের কথাটা” “শুধু সেদিন আবার খুব বেশি দেরি না হয়ে যায়”!!

“হর্ঠাৎই ওয়াশরুমের দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে আবার চোখ বুঝে ঘুমিয়ে পরার একটিন করলাম আমি’!!কেন জানি না এই মুহুর্তে সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে’!!এমন সময় কারো ডাক এসে কানে বাজছে আমার’!!কারন কাব্য ডাকছে আমায়’!!আমিও ওনার ডাক শুনে আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম’!!আমার তাকানো দেখে কাব্য বলে উঠলঃ

——–“উঠ তাড়াতাড়ি ভার্সিটি যেতে হবে না নাকি……..

“আমিও কাব্যের কথা শুনে তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম’!!তারপর বলে উঠলামঃ

——–“হুম যাবো তো…..

——-“ওকে তাড়াতাড়ি তৈরি হ তোদের নামিয়ে দিয়ে আমি অফিসে যাবো’!!

——–“ওকে এই বলে তাড়াতাড়ি চলে গেলাম আমি ওয়াশরুমে’!!হর্ঠাৎই মনে হলো না আজকে ভার্সিটি যাওয়া যাবে না’!!আজকে সব সত্যি জানবো আপুর কাছ থেকে’!!না হলে পরে হয়তো দেরি হয়ে যাবে’!!এই ভেবে তাড়াতাড়ি মুখে পানি দিয়ে হালকা ফ্রেশ হয়ে ভাইয়াকে গিয়ে বললামঃ

———“আজকে আমি ভার্সিটি যাবো…….

“আচমকা আমার এমন কথা শুনে কাব্য বলে উঠলঃ

———-“কেন এই মাএই তো বললি যাবি……

——–“না আসলে কালকে তানিশা বলে ছিল আজকে ভার্সিটি বন্ধ’!!আমি ভুলে গেছিলাম’!!তাই আমাদের আর আজকে ভার্সিটি যেতে হবে না'”!!!

“কাব্য কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলঃ

———-“ঠিক আছে………’!!

“তারপর কাব্য বেরিয়ে গেল’!!আমিও কিছুক্ষন পর নিচে গিয়ে সবার সাথে ব্রেকফাস্ট করতে’!!নিচে নামতেই দেখলাম কাব্য,তানিশা,মামু আর মামুনি বসে ব্রেকফাস্ট করছে’!!আমায় দেখে মামুনি বলে উঠলঃ

——–“আয় তাড়াতাড়ি তারপর খেতে বস’!!

“আমিও আর কিছু না ভেবে খাবার খেতে শুরু করলাম’!!তারপর আমরা সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম’!!ব্রেকফাস্ট শেষে মামু তার রুমে চলে গেল’!!কাব্য অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্য বেরোনোর আগেই তানিশাকে জিজ্ঞেস করলো আজকে তোদের কিসের বন্ধরে ভার্সিটি’!!

———-”আজকে ভার্সিটি বন্ধ ক
……
এই রে খাইছে এখন যদি তানিশা সব সত্যি বলে দেয়’!!আমি তানিশার পায়ে একটা খোঁচা মারলাম’!!সাথে সাথে তানিশা চেঁচিয়ে উঠলঃ

“তানিশার চেঁচানো শুনে কাব্য বলে উঠলঃ

——-“কি হলো তোর…..

——–“না আসলে একটা মশা কামড় দিলো তাই…..

——–“মশার কামড়ে কেউ এতো জোরে চিৎকার দেয়’!!

———“আসলে কি বলো অনেক বড় মশা তো তাই…..

———“মানে….

——–“না কিছু না……

——–“ওসব বাদ দে কিসের বন্ধ তোদের ভার্সিটি……

———“ওই তো ভার্সিটির স্যারেরা বলছে বন্ধ তাই তাই বন্ধ…..

———“কি ওটা কিছু না আর তুমি এতো কিছু জেনে কি করবা তুমি যাও না তোমার কাজে……তোমার অফিসের লেট হচ্ছে না……..

“কাব্য আর কোনো কিছু না ভেবে চলে গেল তার কাজে’!!কারন সত্যি তার দেরি হয়ে যাচ্ছে’!!

“কাব্য বাসা থেকে বেরোতেই একটা শ্বাস ফেললাম আমি’!!এমন সময় তানিশা আমায় মাথায় একটা বারি মেরে বললোঃ

———-“তুই ভাইয়াকে মিথ্যা কেন বলেছিস……..

———-“না আসলে আজকে ভার্সিটি যেতে ইচ্ছে করছিল না তাই আরকি মিথ্যা বললাম’!!

——–“সত্যি বলছিস (সন্দেহ ভাবে তাকিয়ে)

———“আশ্চর্য এভাবে তাকানো কি আছে আর আমি মিথ্যা কেন বলবো তোকে’!!এই বলে পাশ কেটে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে আসলাম আমি’!!তারপর রুমের দরজা বন্ধ করে ফোনটা হাতে নিয়ে সোজা আপুর নাম্বারে ফোন’!!

“প্রথম কলে ধরলো না আপু'”!!!তারপর আরেকবার কল দিলাম আমি’!!

.

“কিচেনে কাজ করছে রিয়া’!!সবাই মিলে ব্রেকফাস্ট করে এখন সেগুলো গোছানোতে ব্যস্ত সে’!!এমন সময় ফোনের কল আসার শব্দ ভেসে আসে রিয়ার কানে’!!তারপর তাড়াতাড়ি তার কাজটা গুছিয়ে চলে যায় তার রুমে’!!রুমে ডুকে ফোনে হাত দিতেই পুরো ১০টা কল করেছে মাইশা’!!হর্ঠাৎ করে মাইশার এতগুলো কল দেখে অবাক হয় রিয়া’!!তারপর তাড়াতাড়ি সে আবার কল বেক করে মাইশা’!!

_____________________

“প্রায় ১০বার কল করছি আপুকে কিন্তু একবারও ধরলো না’!!তাই একরাশ বিরক্ত নিয়ে বসে পরলাম সোফায়’!!কিছুতেই নিজেকে শান্ত করতে পারছি না আমি’!!কাব্য ভাইয়া কি সত্যি আমায় ভালো বাসে’!!আমাকে কি ভালোবেসেই তাহলে বিয়ে করে ছিল’!এসব প্রশ্নের উত্তর শুধু আপুই দিতে পারবে’!!এসব ভাবনার মাঝে হর্ঠাৎ করে ফোন আসাতে কিছুটা কেঁপে উঠলাম আমি’!!তারপর তাড়াতাড়ি ফোনটা হাতে তুলে নিতেই আপুর নাম দেখে তাড়াতাড়ি ফোনটা তুলে বললামঃ

——–“হ্যালো আপু…….

———“হুম বল এতবার ফোন কেন দিয়েছিস তুই…….

——–“আজকে তুমি আমায় সব সত্যি বলবে আপু’!!কাব্য কেন সেদিন আমায় বিয়ে করেছিল শুধুই কি তোমার কথা রাখতে নাকি অন্যকিছু……

“হর্ঠাৎ করে মাইশার এমন কথা শুনে অবাক হয় রিয়া’!!এই মুহূর্তে কি বলবে সে বুঝতে পারছে না’!!

———-“কি হলো আপু চুপ করে আছো কেন??

“মাইশার কথা শুনে কিছুটা ঘাবড়ে যায় রিয়া’!!তারপর মাইশাকে বলে উঠলঃ

———“আসল সত্যি ওটা ছিল না…….

———“মানে……..

———“কাব্য আমার কথা রাখতে তোকে বিয়ে করে নি’!!

———তাহলে……

———“তাহলে শোন আজকে সব সত্যি বলবো তোকে……

———“বলো আমায়…….

———“কাব্য তোকে ভালোবাসে তাই বিয়ে করেছে’!!

“আপুর কথা শুনে রীতিমতো অবাক আমি’!!আপু আবারো বলে উঠলঃ

———“কাব্য তোকে সেই ছোট বেলা থেকে ভালোবাসে’!!কিন্তু কখনো বলে নি কারন ও চেয়েছিল তুই ওর ভালোবাসা বুঝতে পারিস’!!কিন্তু বোঝার আগেই যখন আমরা আমাদের বিয়ের কথা শুনতে পারি যে আমার আর কাব্যের বিয়ে সেই ছোট বেলা থেকে ঠিক করা ছিল’!!তখন আমি কাব্য দুজনেই প্রচন্ড বেগে ভেঙে পড়ি’!!কারন আমি যে ভালোবাসতাম রাসেলকে আর কাব্য তোকে’!!আর আমাদের এই বিষয়টা আমরা তিনজনই জানতাম’!!তারপর কাব্যের প্লান মতোই আমরা সেদিন এমনটা করেছিলাম’! কারন আর যে কোনো উপায় ছিলো না’!!জানি তোর সাথে অন্যায় হয়েছে কিন্তু বিশ্বাস কর ওই মুহূর্তে এমনটা না করলে না কাব্য তোকে পেতো আর না আমি রাসেলকে’!আমাদের তিনজনের লাইফটাই নষ্ট হয়ে যেত তাই বাধ্য হয়ে এমন টা করেছি আমার’!!সরি রে…….এতটুকু শুনেই ফোনটা কেটে দিলাম আমি’!!

“আপুর সব কথা যেন আমার কানে বাজছে’!!তার মানে কাব্য ভাইয়া সত্যি সত্যি আমায় ভালো বাসে তাও আবার সেই ছোট বেলা থেকে…….
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে……….
#TanjiL_Mim♥️

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে