কতোটা চাই তোকে পর্ব-০৫

0
5065

#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—05
.
.
🍁
“সিগ্ধতার বিকাল বেলা জানালা ভেদ করে সূর্যের হালকা তাপ এসে পড়ছে কাব্য ভাইয়ার মুখে’!!কি অপূর্ব না লাগছে তাকে’!!ঘুমের ঘোরে ভাইয়াকে এতটা সুন্দর লাগে আগে জানা ছিল না আমার’!!বাড়ি এসে দুপুরের খাবার শেষ করে ভাইয়া আমার রুমে এসে ঘুমিয়ে পরল’!!সারাদিন এটা ওটা করার ফলে খুব একটা আসা হয় নি ভাইয়ার কাছে’!!আপুর সাথেও কথা বলে নি কাব্য ভাইয়া’!!হয়তো অভিমান করেছে’!!আমি কথা বলে ছিলাম একটু-আধটু’!!খারাপ লাগার বিষয়টা যেটা হলো আব্বু আমার সাথে কথা বলে নি’!!যেটা আমাকে সত্যি খুব কষ্ট দিচ্ছে’!!রাসেল ভাইয়ার সাথেও কথা বলেছি’!!খুবই ভালো ব্যবহার তার’!!দেখতেও সুন্দর’!!বিয়েতে তো তার দিকে তাকানোই হয় নি’!!অবশ্য তখন তেমন কোনো পরিস্থিতি ছিল না’!!হর্ঠাৎই আমার ভাবনার মাঝে ভাইয়ার ঘুম থেকে উঠে বললোঃ

———“কি হলো ওইখানে দাঁড়িয়ে থেকে কি ভাবছিস…….

“আচমকা এমনটা হওয়াতে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠলামঃ

———-“তোমায় আব্বু ডাকছে তাই আম্মু তোমায় ডাকতে বললো তাই আসছিলাম’!!

———-“ওহ তাহলে ডাকতে এসে পেঁচার মতো তাকিয়ে ছিলি কেন??

“ভাইয়ার কথা শুনে মুহূর্তে মেজাজ বিগড়ে গেল’!!

———“কি আমি পেঁচা,,তুমি কি তুমি তাহলে একটা হনুমান,

——–“কি বললি তুই……এই বলে ভাইয়া বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো’!!

“যা দেখে ভয় পেয়ে ঘাবড়ে গেলাম আমি’!!এই রে এটা তুই কি বললি মাইশা’!!এখন কি হবে তোর,,তোকে কে বাঁচাবে এখন শয়তান এই হনুমানের কাছ থেকে’!!এসব ভেবে আমতা আমতা করে বললামঃ

——–“না না কি বলিনি ভাইয়া কিছু বলে নি,,আমি তো মজা করছিলাম, মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে(জোর পূর্বক হেঁসে)

——–“ও মজা করছিলি দিনে দিনে দেখছি তোর সাহস বেরে গেছে এই বলে ভাইয়া আমার দিকে এগোতে লাগলো’!

“যা দেখে আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললামঃ

——–“দেখো ভাইয়া,,তুমি কথায় কথায় এইভাবে এগিয়ে আসো কেন,,আমরা তো দূরে বসেও কথা বলতে পারি নাকি,, (পিছন দিকে যেতে)

——–“হুম পারি তো কিন্তু তুই কেন পিছনে যাচ্ছিস সেটা বল…..

“একপর্যায়ে কাব্য ভাইয়া আমায় দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বললঃ

——–“হুম কি যেন বলছিলি তুই……..

——–“দেখো ভাইয়া তুমি আমায় পেঁচা বলেছো আমি তোমায় হনুমান বলেছি তাই শোধবোধ,,(ভয় পেয়ে ঘাবড়ে গিয়ে)

———“ওহ শোধবোধ,,, আর তুই এখনো আমায় ভাইয়া ডাকছিস কেন??……..

———“ইয়ে না মানে কি বলো তো ভাইয়া………..

——–“আবার ভাইয়া……

———“ইয়ে না মানে থুক্কু অনেক দিনের অভ্যাস তো ভাইয়া,, এক দিনে কি যায় বলো……

——–“তোর তো দেখছি মুখে শুধু ভাইয়া ভাইয়া আসছে ওয়েট আমি কিছু করছি আজকের পর আর তুই ভাইয়া ডাকবি না…….

———“সেটা কি করে…….

“বলতেই ভাইয়া ঝুঁকে গেল আমার দিকে’!!যা দেখে ভয় পেয়ে খিচে চোখ বন্ধ করে ফেললাম আমি…..

“আচমকা কাব্য ভাইয়া আমার ঘাড়ে তার ঠোঁট স্পর্শ করল,,সাথে সাথে বরফের মতো শক্ত হয়ে গেলাম আমি,,ভাইয়ার ঠোঁটের স্পর্শে আমি পুরো কেঁপে উঠলাম’!!হর্ঠাৎই ভাইয়া আমার ঘাড়ে জোরে কামড় বসিয়ে দিল’!!মুহূর্তেই ঘাড়ে ব্যাথা অনুভব করলাম আমি’!……

“কিছুক্ষণ পর ভাইয়া আমায় ছেড়ে দিয়ে বললোঃ

——-“এটা হলো তোর শাস্তি আজ থেকে যতবার ভাইয়া ডাকবি ততবার তোকে এই শাস্তি পেতে হবে এই বলে ভাইয়া ওয়াশরুমে চলে গেল’!!আর আমি এখনো হাবলার মতো তাকিয়ে রইলাম ভাইয়ার যাওয়ার পানে……যেন যা বলে গেল সব মাথার উপর দিয়ে গেল’!!

“আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘাড়ের দিকে তাকাতেই চোখ রসগোল্লার মতো হয়ে গেল’!” শয়তানটায় এত জোরে কামড় দিসে যে রক্ত বেরিয়ে আসল’!!জায়গাটা জ্বলছে ভীষণ,,এইরে এখন বাহিরে যাবো কিভাবে’!!সবাই দেখলে কি ভাববে,,ধুর কেন যে সারাদিন শুধু ভাইয়া ভাইয়া করি,,এখন থেকে মুখে লাগাম দিতে হবে মাইশা,,না হলে শয়তানটা আবার ব্যাথা দিবে…….এই বলে চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে,,ঘাড় ঢেকে দিলাম যাতে কেউ না দেখে এমন সময় ভাইয়া বেরিয়ে আসলো,,আমি কিছু বললাম না,,

“তারপর দুজনেই চলে আসলাম নিচে……..

__________________________________________

_____________________

“আব্বুর রুমে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি আমি,,আর আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে কাব্য ভাইয়া'”!!! রুমে এই মুহুর্তে আমি আব্বু আর কাব্য ভাইয়া আছি’!!আব্বু কাব্য ভাইয়াকে দেখে বললোঃ

———“কাব্য ওখানে দাঁড়িয়ে কেন এদিকে আয়…….

“ভাইয়াও আব্বুর কথা শুনে গেল সামনে,,আমি এখনো চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছি’!!কাব্য ভাইয়া সামনে যেতেই আব্বু কাব্য ভাইয়ার হাত ধরে বললঃ

———“আমি জানি কাব্য আমরা যেটা করেছি সেটা হয়তো একদমই করা উচিত হয় নি’!!জানি তোর হয়তো রিয়ার জায়গায় মাইশাকে মেনে নিতে অসুবিধা হচ্ছে’!!বিশ্বাস কর আমি আগে জানলে মাইশাকে কখনোই তোর সাথে বিয়ে দিতাম না’!!কিন্তু তখন তোর বাবা এতটা জোর করলো আর তুইও রাজি ছিলি তাই দিয়েছিলাম না হলে দিতাম না’!!

“আমি আর শুনতে পারলাম না আব্বুর কথা,, আমার জন্য আব্বু কাব্য ভাইয়ার সামনে মাথা নিচু করে কথা বলছে যেটা মটেও ভালো লাগছে না আমার কাছে’!!আমি আর দাঁড়ালাম না ওখানে দৌড়ে নিজের রুমে চলে আসলাম’!!

“এদিকে কাব্য খেয়াল করেছে মাইশা ওখান থেকে চলে গেছে,,এই মুহূর্তে কাব্যের নিজের কাছেও বিষয়টা খারাপ লাগছে’!!বিনা দোষে মাইশা কষ্ট পাচ্ছে,,কিন্তু কিছু তো করার ছিলো না,,এমনটা না করলে তো একসাথে তিনটে মানুষ কষ্ট পেত’!!এই ভেবে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো কাব্য তারপর আব্বুর হাত ধরে বললঃ

——–“দেখো বাবা যেটা হওয়ার সেটা হয়ে গেছে আর আমার কোনো অসুবিধা নেই মাইশাকে মেনে নিতে,,’!!

“আব্বু কাব্যের কথা শুনে ওর মাথায় হাত দিয়ে বললোঃ

———-“তোর কথা শুনে মনটা হালকা লাগছে কাব্য,,’!!তারপর আব্বু আর কাব্য এটা,ওটা বলে গল্প করতে লাগলো’!!

_____________________

“বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছি আমি’!!আর শুধু দীর্ঘ শ্বাস ফেলছি,,অসম্ভব কষ্ট হচ্ছে আমার’!!আমার জন্য আব্বু মাথা নিচু করে কাব্য ভাইয়ার সাথে কথা বলছে সেটা মটেও ভালো লাগছে না আমার’!!এমন সময় পিছন থেকে আমার কাঁধে হাত রাখলো’!!পিছন ঘুরে আপুকে দেখে এই মুহুর্তে প্রচন্ড রাগ হচ্ছে আমার’!!আমি পিছন ঘুরে আপুর হাত সরিয়ে বললামঃ

——–“তুমি আমার সাথে কথা বলবে না’!!তোমার জন্য আজকে আব্বু কাব্য ভাইয়ার সাথে মাথা নিচু করে কথা বলছে……

“আমার কথা শুনে আপু বললোঃ

——–“তাই আমার উপর রাগ করছিস…….

“বিনিময়ে আমি কিছু বললাম না’!!আমায় চুপ থাকতে দেখে আপু বললোঃ

———“আমি জানি বোন এই মুহুর্তে তোর আমার উপর খুব রাগ হচ্ছে ঘৃণা হচ্ছে’!!কিন্তু বিশ্বাস কর এটা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না’!!তুই জানিস আব্বু প্রেম-ভালোবাসা কোনোদিনও পছন্দ করে না আর এটাও জানিস আমি আব্বুকে কতোটা ভয় পাই,,তার সাথে সেই ছোট বেলা থেকেই কাব্যের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে ছিল আব্বু তাই তো কিছু করতে পারছিলাম না’!!তাই বাধ্য হয়ে তোর কথা বলা লাগলো’!!

——–“তাই বলে আপু………..

——–“তুই তো কাউকে ভালোবাসিস নি তাই এখন এমন হচ্ছে যেদিন কাউকে সত্যি কারের ভালোবেসে ফেলবি সেদিন দেখবি তোর মনে হবে আমি কোনো ভুল করে নি’!!আর আমি যেমন কাব্যকে ভালোবাসি না,,আর তার সাথে কাব্যও তো আমায় ভালো এতটুকু বলতেই এমন সময় আপুর ফোনটা বেজে উঠল’!!আপু ফোনটা হাতে নিয়ে আমার গালে হাত দিয়ে বললোঃ

——–“প্লিজ বোন কষ্ট পাস না দেখবি সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে…….’!!এই বলে আপু চলে গেল’!!

“আর আমি ভাবছি আপু বলা কথাটা তুই যখন কাউকে ভালোবাসবি তখন বুঝবি,,ভালো আর বাসতে পারলাম কই তার আগেই তো বিয়ে হয়ে গেল’!!ধুর………..

_____________________

“পরের দিন সকালবেলা………

“কাব্য ভাইয়ার অফিসে জরুরি কাজ থাকার কারনে আমাদের চলে আসতে হলো’!!অবশ্য ভাইয়া বলেছে খুব তাড়াতাড়ি আমায় নিয়ে আবার আসবে’!!আপুরা থেকে গেল হয়তো আরো কিছুদিন থাকবে তারা তারপর যাবে………..

“গাড়িতে বসে আছি আমি ভালো লাগছে না’!!এইভাবে ধুম করে বিয়ে হয়ে যাবে সেটা আমি কল্পনাও করতে পারি নি’!!জানালার দিকে তাকিয়ে আছি বাহিরে’!!সবাই যে যার মতো কাজে ব্যস্ত’!!এমন সময় কাব্য ভাইয়া বলে উঠলঃ

——–“কি ভাবছিস………..

——–“না কিছু ভাবছি না তো এমনি……

——–“মন খারাপ করছে……

——-“না তেমন কিছু নয় ভা…এতটুকু বলে ঠোঁটে কামড় দিলাম আমি…….’!!তারপর তাকালাম ভাইয়ার দিকে না কিছু শুনে নি…উফ বাঁচলাম বাবা শুনলে হয়তো এখানেই……..

“এরপর গাড়িতে আমাদের আর কোনো কথা হয় নি’!!পুরো রাস্তাটাই নীরবতায় কাটিয়ে দিলাম’………

“বাড়ি ফিরে মামুনির সাথে কিছুক্ষণ কথা চলে সোজা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম ওয়াশরুমে……
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

❤️[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন’!!]😊😊

#TanjiL_Mim❤️

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে