#ওয়ারদূন_আসরার
#লাবিবা_ওয়াহিদ
“০৭”
———————————
কমলা দেবী চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে আর তার সামনে দুহাতে হাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে রিকেশ আর জাইফ। রিকেশ অসহায় সুরে বলে,”জাইফ”
– বলে ফেল।
– আমাদের আদরের ঠাম্মির কি করা যায় বলতো?
আমার সাথে ১ম, ১ম যেই মেয়েরর বিয়ে ঠিক হয়েছিলো সেদিন ওই মেয়েকে রামধোলাই খাইয়ে বিদায় করসে। নইলে এতোদিনে বউ বাচ্চা নিয়ে সুখে থাকতাম।
কমলা ভ্রু কুচকে জাইফ আর রিকেশের দিকে তাকায়।তারপর চিল্লিয়ে বলে,”এই এই তোরা কি কইতাসোস রে? আর এই গান থামা আমার মাথা ডা মনে হইতাসে ছিড়া গেলো। কানের থেকে এই তাড়ের মতো এইডি সরা ধুর ধুর!”
বলেই কমলা দেবী নিজের বাধা হাত খোলার চেষ্টা আছে। যীনাত আরেকবার নিচে নামতেই কমলা দেবী তার পোড়া হাত দিয়েই যীনাতকে খুব জোরে চড় মেরেছিলো তাই কমলা দেবীকে দেবনাথ দেব রেগে সার্ভেন্ট দিয়ে হাত পেছনের দিকে নিয়ে বেধে দেয়ার আদেশ দিয়েছে। আর জাইফ রিকেশ এক্সট্রা ভাবে কিছু হিন্দি গান ছেড়ে হেয়ারফোন কমলা দেবীর কানে লাগিয়ে দিয়েছে তাও অনেকটা সাউন্ড বাড়িয়ে যাতে করে তার কানের সামনে কেউ চিল্লিয়ে কথা বললেও যেনো শুনতে না পায়। আর যেই গান ছাড়া হয়েছে তা কমলা দেবী একদম সহ্য করতে পারে না। তাই রিকেশ আর জাইফ কি বললো কমলা দেবী তা শুনতে অক্ষম। রিকেশ গালে হাত দিয়ে বলে,”চিল্লাও ঠাম্মি চিল্লাও তুমি আমাদের কথা আগাও বুঝতে পারবা না আর গোড়াও না। তুমি আমার বোনের গায়ে হাত তুলসো না এখন বুঝো ঠ্যালার নাম বাবাজি কারে কয়।”
– আচ্ছা ঠাম্মিকে নাকি এর আগেও এমন কয়েক ধরণের শাস্তি দেয়া হয়েছে তবুও কেন উনি এমন?
– আর বলিস না ভাই! তুই যখন দেশের বাইরে ছিলি তখন তো কাকামনিরা ছিলো। মানে কি বলবো ওনার অত্যাচারে কাকীমনির নাজেহাল অবস্থা ছিলো। তাই কাকামনি দেশের বাইরে যেতে বাধ্য হইসে। আর একবার তো ঠাম্মিকে শশ্মান ঘাটেও রেখে আসছিলো যেনো কিছুটা হলেও ঘাড়ে থাকা ভূত নামে তবুও কাজ হয়নি। আর জানিস একবার তো স্বর্ণার গায়ে এত্তোগুলা তেলাপোকা ছেড়েছিলো তাইতো স্বর্ণা ভুলেও এই বাড়িতে পা দেয়না।
এবার জাইফ না হেসে পারে না হো হো করে হেসে দেয় তাও অনেকটা জোরে। জাইফের হাসি দেখে কমলা দেবী চোখ মুখ ফুলিয়ে বলে,”ওই ছ্যাসড়া তুই ওরে কি কইসোস যার লাগি হেয় এমনে হাসতাসে? সত্যি কইরা ক নইলে তোরে জুতা দিয়া উষ্টামু!”
কমলা দেবীর কথায় জাইফ আরও হেসে দেয়। হাসির বাধ যেনো মানে না তার। এতোটা ঘাড়ত্যাড়া আদৌ কি কোনো মানুষ হতে পারে তাও এই শেষ বয়সে?
– আর তোর হবু স্ত্রী-র সাথে কি করেছে!
রিকেশ অসহায় সুরে মুখটাকে প্যাচার মতো করে বলে,”মা ওকে বলেছিলো একদিন এসে থেকে যেতে তো একদিন আসলো সেদিনই ঠাম্মি ওরে ষাড়ের মতো খাটাইসে! ঠাম্মিকে থামতে বললেও বলে, আগে দেখে তো নিবো যে আগো নাতবউ কিরাম কামের নইলে যে ফু দিলে উইড়া যাইবো। সারাদিন কাজ করে বেচারী কোনোরকমে পালাইসে। পরের দিন তাদের বাসা থেকে তার বাবা এসে বিয়ে ভেঙে দেয়।”
জাইফ হাসতে হাসতে কমলার দিকে তাকিয়ে বলে,”বুড়ি তোমার কথার জোর আছে বলতে হবে।(আমার বউটারেও আজ জম্মের কাজ করাইসে! আমার কি টাকার অভাব? উফফফদ এখন ওই মেয়েটাকে কি জবাব দিবো? ঠাম্মি তুমি আমার মান-সম্মান আর রাখলা না! মেয়েটা কতো বিপদের মাঝে দিয়ে গেছে সেটা নিজ চোখে দেখেছি ঠাম্মি তুমি দেখলে তোমার রিয়েকশন কি হতো তবে দাভাইয়ের হেস্তনেস্ত করতে হবে)
– দাভাই শুন!
– হুম বল!
– এক কাজ করি ঠাম্মি এখানে থাকুক আর তুই বিয়েটা সেরে ফেল নইকে সারাজীবন তোরে সিঙ্গেলই মরতে হবে।
– উমম… মনের মতো কথা বললি ভাই! এনার জন্য কি আমার সাত জম্ম নষ্ট করুম নাকি?
জাইফ হাসে তারপর বলে,”ঠাম্মি এখানেই থাকুক চল আমরা গিয়ে ব্যাপার টা বাবা মাকে জানাই।”
– তা মন্দ বলিস নি চল!
তারপর দুইভাই মিলে চলে গেলো। কমলা দেবী চেঁচাতে চেঁচাতে কখন কাত হয়ে ঘুমিয়ে গেলো বুঝতে পারেনা। জাইফ সকলকে রিকেশের বিয়ের ব্যবস্থার কথা বলে উপরে চলে আসে। নিজের রুমে যাওয়ার আগে যীনাতের রুম একবার চেক করে নিলো। রুম অন্ধকার দেখে জাইফের মনে কেমন কু ডাকলো তাই আর দেরি না করে ভেতরে চলে যায় কারণ যীনাতকে সে একা রাখতে চায়না। সারাঘরে খুজেও যীনাতকে পায়না হঠাৎ বেলকনিতে একটা ছায়া চোখে পড়তেই সেদিকে যায় এবং বেলকনিতে গিয়ে দেখে যীনাত এক কোণে চুপচাপ বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। যীনাত কারো উপস্থিতি বুঝতে পেরে দরজার দিকে তাকায় এবং জাইফকে দেখে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। তারপর আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে,”আপনি এখানে?”
– হুম এভাবে একা কেন বসে আছেন বলেছিলাম না মা অথবা অন্য কারো সাথে সময় কাটাতে।
– আমি বেশিরভাগ সময় একা থাকতেই পছন্দ করি। একাই পৃথিবীতে এসেছি আবার একাই চলে যাবো। এর মাঝে মায়া বাড়িয়ে কি লাভ বলুনতো?(আনমনে)
জাইফ শান্ত দৃষ্টিতে যীনাতের দিকে তাকিয়ে রয় তারপর বলে,”ঠাম্মির জন্য রাগ করছেন?”
– মোটেই না। তিনি আমার গুরুজন হন তাই তিনি কি করলেন তা নিয়ে আমার কোনোরকম মাথা ব্যথা নেই। আর কি কারণে চড় মারলেন তা জেনেও আমার কোনোরকম কাজ নেই।
– সব মানুষকে এভাবে প্রশ্রয় দেয়া ঠিক না যীনাত।
– প্রশ্রয় নয় সম্মান। তাকে সম্মান করি আর সম্মান, প্রশ্রয় এক নয়। আর উনি অন্যরকম সেটা আমি প্রথমদিনই বুঝেছি।
– আপনি মানুষটা সত্যিই অদ্ভুত যীনাত। কি করে পারেন এতো কষ্ট মুখ বুজে সহ্য করতে? আপনাকে দেখে মনেই হয়না ভেতরে পাহাড়সম যন্ত্রণা বেদনা লুকিয়ে রেখেছো।
যীনাত ছলছল চোখে একটা হাসি দিয়ে বলে,”কষ্টটা সবাইকে দেখাতে নেই এতে করে অন্যরা দুর্বলতা খুঁজে পায় এবং আরও আঘাত দেয়। তাই নিজেকে সংগত রাখার চেষ্টা করি।”
জাইফ কি বলবে বুঝতে পারছে না। যীনাতের প্রতিটা কথার মাঝে আলাদা যুক্তি আছে যা তাকে চুপ করতে বাধ্য করে। তবে জাইফের মনে একটা প্রশ্ন থেকে গেলো তবে সে এখন সেই প্রশ্ন টা করে যীনাতকে দ্বীধায় ফেলতে চাইছে না। তাই কিছু না বলে জাইফ নিজের ঘরে চলে যায় ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে আলমিরাতে হাত দিতেই দেখে একটা শপিং ব্যাগ। জাইফের এতোক্ষণে মনে পড়ে। তারপর একটা টিশার্ট পরে ব্যাগ টা নিয়ে যীনাতের কাছে আবার আসে এবং যীনাতের দিকে শপিং ব্যাগ টা এগিয়ে দেয়। যীনাত চোখের সামনে শপিং ব্যাগ দেখে পাশে তাকায়। জাইফ মুচকি হেসে ব্যাগটা যীনাতের হাতে দিয়ে বলে,”আপনার জন্য।”
যীনাত শপিং ব্যাগ এপিট ওপিট করে বলে,”কি আছে এটায়?”
– নিজেই খুলে দেখুন।
যীনাত কিছুটা অস্বস্তিবীধ করে তারপর ব্যাগটা জাইফকে ফিরিয়ে দিয়ে বলে,”আমি পারবো না এটা নিতে।”
– কেন?(অবাক হয়ে)
– এমনি।
জাইফ যীনাতের হাতে আবার ব্যাগটা ধরিয়ে দিয়ে বলে,”কেউ কাউকে কিছু উপহার দিলে সেটা ফেরাতে নেই তাই চুপচাপ খুলে দেখুন।”
– আমি পারবো না প্লিজ বুঝুন।
– উহু কিছু বুঝতে চাইনা।
একপ্রকার জোর করে শপিং ব্যাগে থাকা গিফট বক্সটা খুলালো। যীনাত প্যাকেট টা খুলে অবাক হয়ে তাকায় কারণ জাইফ যীনাতকে একটা ফোন দিয়েছে। যীনাত ফোনটা এপিট ওপিট করে দেখে বেশ ভালো করে বুঝে যায় যে এটা অনেক দামী ফোন। যীনাত বলে,”এতো দামী ফোনের কি দরকার ছিলো?”
– উমহ! আমার বউকে কি কমদামি ফোন দিবো নাকি?
জাইফের মুখে ‘বউ’ শুনে যীনাত অবাক হয়ে তাকায়। যীনাতের তাকানো দেখে জাইফ বেশ বুঝে সে কি আবোলতাবোল বলেছে। জাইফ বেচারা নিজেও অস্বস্তিতে পড়েছে। মাথায় হাত দিয়ে কিছুটা বোকামি সুরে বলে,”ইয়ে মানে আপনাকে কমদামি উপহার কেন দিতে যাবো?”
যীনাত এবার ফিক করে হেসে দেয়। যীনাতের হাসিতে যেনো মুক্ত ঝড়ছে। জাইফ চুপচাপ যীনাতের হাসি দেখছে। যীনাত হাসি থামিয়ে বলে,”আপনি না একটা পাগল।”
-“আপনার হাসিটার জন্য পাগল হয়েছি।”(বিড়বিড় করে)
– কিছু বললেন?
– কই কিছু না তো। শুনুন আমি আমার নাম্বার সেভ করে দিয়েছি যখন আপনায় কল দিবো রিসিভ করবেন। আর হ্যাঁ এই ফোনের ব্যাপারে এখন কাউকে জানাওর দরকার নেই যতোটা পারেন লুকিয়ে রাখবেন কেমন? আমি দাদুকে পরে আপনাকে দেয়া ফোনের কথা জানিয়ে দিবো।
– আচ্ছা ঠিকাছে।(হঠাৎ কিছু একটা মনে পড়তেই) আচ্ছা হুজুরের নাম্বার টা কি আপনার কাছে আছে?
– আই থিংক নেই। দাদুর কাছে থাকলেও থাকতে পারে। কেন কিছু জরুরি?
– অনেকটা সেরকমই আচ্ছা আপনি কালকের মধ্যে নাম্বার টা জোগাড় করে দিতে পারবেন?
জাইফ কিছুক্ষণ ভেবে বলে,”ঠিক আছে এখন আপনি ঘুমান।”
বলেই জাইফ যীনাতের দরজা ভিজিয়ে চলে গেলো। যীনাত মুচকু হেসে দরজার দিকে তাকায় তারপর বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে।
পরেরদিন,
নাস্তা করার সময় যীনাত কমলা দেবীকে না দেখতে পেয়ে মল্লিকা দেবীকে বলে,”আচ্ছা আন্টি ঠাম্মি কোথায়?”
মল্লিকা দেবী কিছু বলার আগেই রিকেশ বলে উঠে,”তিনি তার সঠিক স্থানেই আছে।”
বলেই ফিক করে হেসে দেয়। তারপর আবার দেবনাথ দেবের দিকে তাকাতেই হাসি থামিয়ে ফেলে। দেবনাথ দেব কালকের বিষয়টার জন্য যীনাতের দিকে তাকাতে অব্দি পারছে না তার নিজেকে অনেকটা অপমানবোধ লাগছে তার বোনের জন্য। সে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলো যে যীনাতকে কোনোরকম কষ্ট পেতে দেবে না। যীনাত বিষয়টা খেয়াল করলো যে কাল থেকে দেবনাথ দেব কথা বলা তো দূর একবার ফিরেও তাকাচ্ছে না। এটা দেখে যীনাতের বেশ মন খারাপ হয়ে গেলো। কেন সে এমন করছে? সে কি কোনো কারণে যীনাতের উপর রেগে আছে?
ব্রেকফাস্ট শেষে যে যার রুমে চলে যায়। জাইফ অফিস যাওয়ার আগে যীনাতকে বলে চলে যায়। সারাদিন যীনাত মিনি সহ আরো কয়েকজনের সাথে সময় কাটায় তাদের একে অপরের কাজ দেখে। দুপুরে জাইফ যীনাতকে কল দেয় এবং খোঁজখবর নেয় কি করেছে, খেয়েছে কি না, কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা এগুলোই! সারাদিনে যীনাত একবারের জন্যেও কমলা দেবীকে দেখেনি। হঠাৎ কোন ঝড় এসে তাকে নিয়ে গেলো? পুরো বাড়ি সুনশান। মল্লিকা দেবী গেছেন রিকেশের জন্য মেয়েদের পিকস কালেক্ট করতে। দেবনাথ দেব নিজের ঘরে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন এমন সময়ই এক পা এক পা করে দেবনাথ দেবের রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়। তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,”আসবো দাদু।”
দেবনাথ দেব পত্রিকা রেখে বলে,”আরে যীনাত যে আসো।”
যীনাত ছোট ছোট পায়ে আসে।
– তা হঠাৎ এই অধমকে মনে পড়লো?
– এগুলো আপনি কি বলছেন দাদু আপনি তো আমার গুরুজন!(মুখ গোমড়া করে)
দেবনাথ দেব হাসলো তারপর যীনাত মাথা নিচু করে বলে,”দাদু আপনি কি কোনো কারণে আমার উপর রেগে আছেন?”
– কোথায় আর কেন-ই বা রাগ করবো?
– আমি তো জানিনা। আপনি কাল থেকে কথা বলা তো দূর তাকানও না।
দেবনাথ দেব শান্ত সুরে বলে,”তেমন কিছু নয় যীনাত। আসলে নিজের মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করছিলো তাই খারাপ লাগতো?”
– কিসের অপরাধবোধ দাদু?
– তোমায় এই বাড়িতে আনার আগে তোমার শিক্ষক কে কথা দিয়েছিলাম এই বাড়িতে কারো দ্বারাই তোমায় কষ্ট পেতে দেবো না। সেখানে নিজের বোনই চোখের সামনে তোমায় আঘাত করেছে, খাটিয়েছে।
বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দেবনাথ দেব। যীনাত কিছুটা মুচকি হেসে দেবনাথ দেবের পায়ের কাছে বসে বলে,”এখানে আমার কোনো অভিযোগ নেই দাদু। আপনি আপনার নাতি আমার অনেক উপকার করেছেন তার জন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আর ঠাম্মির কথা বলছেন? উনি কিছুটা অন্যরকম তবে তিনি মানুষটা ভালো। তার বিচার-বিবেচনা সবার থেকে আলাদা তো তাই আপনাদের কাছে তার অপরাধটাই চোখে পড়ে। চিন্তা করবেন না একদিন বুঝতে পারবেন আর ঠাম্মিকে এখন যেখানেই রাখুন না কেন ফিরিয়ে আনুন তাকে মিস করছি।”
– না যীনাত তুমি কমলাকে যতোটা সহজভাবে নিচ্ছো ও ততোটাও সহজ নয়। আর রিকেশের বিয়েটা আগে দেই তারপর ওকে আনবো এর আগে সম্ভব নয়।
– কেন উনি তো গুরুজন ওনার তো বিয়েতে থাকতে হবে।
– না যীনাত বিয়েতে থাকা মানে আবার রিকেশের বিয়ে ভাঙবে তাই আমি এবার এসব ঝামেলা চাইছি না। সে যাইহোক বাদ দাও ওর কথা, জাইফ কি কোনোরকম কটুকথা বলেছে তোমায়?
– এমা ছি ছি কি বলছেন দাদু। উনি মানুষটা আমার কাছে ফেরেশতার থেকে কম লাগেনা। বেশ ভালো আর অনেকটা দায়িত্ববান।
যীনাতের মুখে দেবনাথ দেবের মুখে হাসি ফুটলো। হ্যাঁ তার ভাবনা বিফলে যায়নি। জাইফ ছোট থেকেই দায়িত্ব জ্ঞান সম্পন্ন। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। দেবনাথ দেব বেশ আদর- যত্নেই জাইফকে বড় করেছে। জাইফের চিন্তা-চেতনা, ভাবভঙ্গির জন্য আজ সে একজন সফল বিজন্যাসমেন! তার সামনে, পিছে, আশে, পাশে বডিগার্ড থাকে। দেবনাথ দেব যীনাতের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,”ভাগ্য করে এমন একজন নাতবউ পেয়েছি। জানো আমি তোমার মতো করেই একজন খুঁজতাম আমার জাইফের জন্য দেখো উপরওয়ালা মিলিয়ে দিয়েছেন তাও রিকেশের আগে। এটা নিয়ে আমার কোনোরকম অভিযোগ নেই। আমার জাইফের দায়িত্ব এখন তোমার হাতে যীনাত এখন নিজের দায়িত্ব কিভাবে পালন করবে সেটা তোমার হাতে ছেড়ে দিলাম কারণ জাইফের প্রতি যতোটা আস্থা আমার আছে ততোটা তোমার প্রতিও আছে।”
দেবনাথ দেবের কথায় যীনাত নিচের দিকে তাকিয়ে শুধু একটু মুচকি হাসলো। আজ সত্যিই তার কাছে পুরোটা নিজের পরিবারের ছেলে লাগছে। হ্যাঁ তাকে পারতেই হবে এই পরিবারের সকলকে আপন করে নিতে।
———————————
চলবে!!!