ওয়াদা ৩

0
4665

ওয়াদা ৩
আমিতো ভাবতেই পারছিনা এই এতো সুন্দর পায়েসটা ঔ গোমড়ামুখো লাটসাহেব রান্না করেছে। ও কি জানতো যে পায়েসটা কাকিমা আমার জন্য রান্না করতে যাচ্ছিলো। না জানতো না জানলে কখনই ও রাধতো না। কাকিমাকে একবার জিজ্ঞাসা করে দেখি।
-কাকিমা বলছি যে তোমার ছেলে কি জানতো না যে তুমি পায়েসটা আমার জন্য রান্না করতে যাচ্ছিলে।(আমি)
-হুম। জানবে না কেন?(কাকিমা)
-বলো কি। উনি জানার পরও পায়েসটা রান্না করে দিলো। (আমি)
-নাশু তুই আমার ছেলেকে যেমন ভাবিস ও কিন্তু তেমন নয়।(কাকিমা)
-হুম। তোমার ছেলে কেমন সে আমি খুব ভালো করেই জানি। আমায় চেনাতে এসো না প্লিজ।(আমি)
-নাশু তুই সত্যিই মেঘকে ভুল বুঝছিস। (কাকিমা)
-কাকিমা আমি কাওকে ভুল বুঝছি না। বাদ দাও আমার এখন ওকে নিয়ে কোনো কথা বলতে ইচ্ছা করছে না।(আমি)
তারপর রাগ করে খাবার টেবিল থেকে উঠে এলাম। যদিও পুরো পায়েসটাই খেতে ইচ্ছা করছিলো। কিন্তু ওই লাটসাহেবের করা রান্না বলে খেলাম না। মেঘ হচ্ছে মাহাবুব আংকেলের একমাত্র ছেলে। ছোট বেলা থেকে আমরা একসাথেই বড় হয়েছি যদিও ও আমার থেকে চার বছরের বড় তবুও আমরা খুব ভালো ফ্রেন্ড ছিলাম। কিন্তু ও ইন্টার পাশ করার পর আঙ্কেল ওকে বাইরে পাঠিয়ে দেয় লেখা পড়া করার জন্য। বাবা মারা যাওয়ার পরপরই ও দেশে ফিরে আসে ওর লেখাপড়া শেষ করে। কিন্তু লন্ডন থেকে আসার পর থেকে ও অনেক বদলে গেছে। আমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে। যেখানে সেখানে অপমান করে। আমিতো প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে এটা সেই মেঘ যে আমায় সব সময় হাসি খুশি রাখার চেষ্টা করতো, আমার একটু কিছু হলে ও অস্থির হয়ে যেতো, আমি রাগ করে না খেলে ঔ না খেয়ে থাকতো। আর এখন কতো বদলে গেছে। বিদেশ থেকে বড় ডিগ্রী নিয়ে এসেছে তাই মনে হয় অহংকারে মাটিতে পা পরছে না। লাটসাহেব একটা। যাই হোক এখন ওই বদমেজাজি লাটসাহেবেরর কথা ভেবে মুড নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। শুভ আমার জন্য ওয়েট করবে তারাতাড়ি রেডি হয়ে ক্যাম্পাসে যেতে হবে। কিন্তু কি পরে যাবো সেটাই বুঝতে পারছি না। একটা কাজ করি শুভর কাছ থেকে জেনে নি। কল দিলাম শুভর কাছে।
-হ্যালো
-জ্বি বলুন মেডাম
-একটু হেল্প করো না প্লিজ
-কি হেল্প বলুন মেডাম। আমি আমার মহারানীর জন্য এই জীবন দিতেও প্রস্তুত।
-জীবন দিতে হবে না আপাতত এটা বলো আমি আজ কি পরে আসবো।
-কি পরে আসবে মানে। অবশ্যই শাড়ি পরে আসবে।
-কিন্তু আমিতো শাড়ি পরতে পারি না।(একটু মন খারাপ করে)
-ওয়াও। ভালই হলো। (একটু দুষ্টমি হাসি দিয়ে)
-কেন?
-শোনো তুমি কখনো শাড়ি পরা শিখবা না।
-কিন্তু কেন শিখবো না?
-বিয়ের পর আমি তোমায় শাড়ি পরিয়ে দিবো??
-সব সময়ই দুষ্টাৃমি না? (একটু লজ্জা পেয়ে)
-এই তুমি কি লজ্জা পাচ্ছো?
-আ,,,রে না। লজ্জা পেতে যাবো কেন।
-তোমার কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছে তুমি লজ্জা পাচ্ছো।
-ধ্যাত।
বলেই ফোন কেটে দিলাম। সব সময় শুধু দুষ্টামি করবে। পাগল একটা। কিন্তু আমি এখন শাড়ি পরবো কিভাবে। আর আমারতো কোনো শাড়িও নেই। কি আর করার এখন আম্মুর কাছে যেতে হবে। তারপর মায়ের রুমে গিয়ে দেখি
চলবে,,,
#মেহজাবিন_নাশরাহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে