ওয়াদা ২
বাবা খুব ভালো পায়েস রান্না করতে পারতো। কিন্তু আজ আমার জন্মদিনে বাবা আমায় একবারোও বললো না মামনি হ্যাপি বার্থডে। বাবা তুমি কোথায় চলে গেলে আমাদের ছেড়ে। তোমার কি আমাদের কথা মনে পড়ে না। আমরা সবাই যে তোমায় খুব মিস করি। নিশাত এখনো মাঝে মাঝে রাতে তোমার কথা ভেবে কান্না করে। তুমি ফিরে এসো বাবা প্লিজ ফিরে এসো। এসব ভাবতে ভাবতে চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি গড়িয়ে পরলো। হঠাৎ মনে হলো কেউ দরজা ধাকাচ্ছে। আমার ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসলাম।
-কে?
-নাশু তুই ঠিক আছিস তো,,,?
-হ্যা মা আমি ঠিক আছি। কেন?
-কখন থেকে ডাকছি কোন উত্তর দিচ্ছিস না আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
-সরি মা আসলে শুনতে পায়নি।
-আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি খাবার টেবিলে আয়।
-ওকে মা।
তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে গেলাম। মা আর নিশাত বসে আছে। আমি নিশাতের পাশের চেয়ারটা টেনে বসলাম। খাবারের আইটেম গুলো দেখে আমার জ্বীবেতে পানি চলে আসলো। আজ অনেক রকমের খাবার রান্না হয়েছে। কোনটা রেখে কোনটা খাবো বুঝতে পারছি না। সব গুলাই আমার পছন্দের খাবার। একটাও বাদ দিতে পারবো না তাই আমি সব গুলা আইটেম থেকেই অল্প অল্প করে তুলে নিলাম আমার প্লেটে। কিন্তু একটা জিনিস খুব মিস করছি। মা পায়েসটাই রান্না করেনি।
-মা তুমি পায়েস রান্না করোনি?
-আম্মু তো পায়েস রান্না করতে যাচ্চিলো কিন্তু সকালে অনু কাকিমা এসে বলে গেছে আজ পায়েস উনি রান্না করে আনবেন। আম্মু যেন রান্না না করে।(নিশাত)
-ওহ আচ্ছ।
অনু কাকিমা হলো মাহাবুব আংকেলের স্ত্রী। কাকিমা আমায় খুব ভালোবাসেন নিজের মেয়ের মতো। হয়তো নিজের কোনো মেয়ে নেই তাই আমায় এতো ভালোবাসেন।
-শুভ জন্মদিন নাশু।(কাকিমা)
-থ্যাংক ইউ কাকিমা।(আমি)
-এই নে তোর জন্য পায়েস এনেছি।
-ওয়াও, খুব সুন্দর গন্ধ বেরোচ্ছ।
আমি পায়েসটা মুখে দিলাম খেতেও তো দারুন হয়েছে। কিন্তু এটাতো কাকিমার হাতের রান্না বলে মনে হচ্ছে না। আমি এর আগেও কাকিমার রান্না করা পায়েস খেয়েছি। তাই কাকিমাকে জিজ্ঞাসা করলাম
-কাকিমা পায়েস টা কে রেধেছে?
-কেন খেতে ভালো হয় নি?(কাকিমা)
-না খেতে খুবুই ভালো হয়েছে কিন্তু এটা তোমার রান্না বলে মনে হচ্ছে না।(আমি)
-বলতো কে রান্না করতে পারে।(কাকিমা)
-ঝুমা?( কাকিমাদের বাড়ির কাজের মেয়ে)
-না হয়নি।(কাকিমা)
-তাহলে কে? তোমাদের বাড়িতে তো রান্না করবে এমন আর কেউ নেই। বলো না কাকিমা কে রান্না করেছে?(আমি)
-আর বলিস না সকালে তোর মাকে এসে বলেছিলাম যে আজ আমি তোর জন্য পায়েস রাধবো কিন্তু বাড়ি ফিরে রান্না ঘরে ডুকতেই পা পিছলে পরে গেলাম। (কাকিমা)
-কি বলছেন ভাবি কোথাও লাগেনি তো আপনার?(মা)
-না তেমন কিছু হয়নি শুধু কমোড়ে একটু লেগেছে। ঔষধ লাগানোর পর এখন ঠিক আছি। শুধু বসতে একটু সমস্যা হচ্ছে। (কাকিমা)
-কাকিমা এই শরীর নিয়ে তুমি আবার আসতে গেলে কেনো। ঝুমা কে দিয়ে তো আমায় ডেকে পাঠাতে পারতে আমি যেতাম। (আমি)
-কিন্তু কাকিমা রান্নাটা কে করলো? (নিশাত)
-হুম কে কাকিমা।(আমি)
-কে আবার মেঘ করেছে।(কাকিমা)
-কিহ্( আমি অনেক অবাক হয়ে বললাম)
চলবে,,,,
মেহজাবিন নাশরাহ