এ শহর মেঘলা ভীষণ
পর্ব – ১৮
জান্নাতুল ফেরদৌস মীম
আজ কাল তোহার সকালটা শুরু হয় রাজিবের বুকের উষ্ণ স্পর্শে। দিনের শুরুতে মিহি রোদের আলোয় সে রাজিবের মুখটা দেখতে পায়। সমস্ত ক্লান্তি শেষ করে রাতটা পার হয় দুজনার ভালোবাসায়। রাজিব অফিসে চলে যাবার পর বাসায় একাই বসে থাকে তোহা। মাঝে মাঝে ক্লাসে যায়। তা না হলে টুকটাক কাজে নিজেকে মগ্ন রাখে। বিয়ের পর রাজিব আর তার এক সঙ্গে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি। অফিসের কাজের জন্য সব সময় বিজি থাকতে হয়। বাসায় ফিরে ক্লান্ত শরীর নিয়ে। তোহাও রাজিবকে অভিযোগ করে না কোন বিষয়ে। অনেক বেশি সময় চায় না সে রাজিবের থেকে। রাতে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে যখন রাজিব তাকে বুকে জড়িয়ে নেয় তখন পরম আবেশে সে চোখ বুজে। শান্তি খুঁজে পায় এসব ছোট ছোট মুহূর্তের মাঝে।
শুক্রবার দিন রাজিবের অফিস বন্ধ হওয়ায় সে বাসায়ই ছিলো। দুজনের খুনশুটিতে সময় কাটছিলো। রাজিব সুযোগ পেলেই তোহাকে কাছে টেনে নিতে ব্যস্ত হয় পরে। তোহা মাঝে মাঝে বিরক্ত হয় রাজিবের এমন কান্ডে আবার ভালোও লাগে। তার প্রতি রাজিবের এমন আকর্ষণ তার মনকে ভালো করে তুলে। প্রতিটি স্ত্রীই তো চায় তাদের স্বামী স্ত্রীর মোহে ডুবে থাকুক। শুধু স্ত্রীকে ভালোবাসুক। তোহাও এর ব্যতিক্রম নয়। রাজিবের সান্নিধ্য সে সব সময় উপভোগ করে।
তোহা সকালে যখন ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচড়াচ্ছিলো রাজিব তখন পেছন থেকে তোহাকে জড়িয়ে ধরে। তার ঘাড়ে মুখ ঘঁষতে ঘঁষতে বলে,
– ‘ বিকেলে তৈরী থেকো। বের হবো। ‘
– ‘ কোথায় যাবো ? ‘
– ‘ বিয়ের পর তো আমার বউটাকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যেতে পারিনি। তাই ভাবছিলাম একটু বাহির থেকে ঘুরে আসি। দূরে কোথাও না কাছেই। ‘
তোহার চোখ জোড়া খুশিতে নেচে উঠলো। সে হাসি মুখে বললো,
– ‘ শাড়ি পড়ে যাবো ? ‘
– ‘ তোমার ইচ্ছা। ‘
ভারী ঘন কালো মেঘে ছেয়ে আছে আকাশ। একটু পর পর দমকা হাওয়া এসে গাছের পাতা গুলোকে নাড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে। মেঘের ডাকও শুনা যাচ্ছে। প্রচন্ড বৃষ্টি হবে হয়তো। মিলি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলো। সৌরভ তার সামনে এখন কম আসে। সে যে ইচ্ছে করেই এমনটা করছে তা বুঝতে পারে মিলি। কিন্তু সৌরভকে দেখা ছাড়া এখন মিলি একটা দিনও কাটাতে পারে না। সকাল কিংবা রাত যে কোন একটা সময় হলেও গিয়ে দেখা করে আসে সে সৌরভের সাথে। তবে সৌরভ তাকে এড়িয়ে চলে। বিষয়টা মিলির ভেতরে ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। রোজ এই ক্ষত একটু একটু করে বাড়ছেই। আকাশের মেঘের মতো তার মনের মাঝেও জমেছে ঘুটঘুটে মেঘের আস্তরণ। সেই মেঘ গুলো শুধু ছড়িয়ে যাচ্ছে ভেতরে। তবে উধাও হবার নাম নেই।
ধীর পায়ে সৌরভ মিলির রুমে এলো। ঘরে আলো নেই কোন। এদিকে মেঘের কারণে দিনের মাঝেও বাহিরে কোন আলো নেই। অন্ধকারে ছেয়ে গেছে চারপাশ। হালকা আবছা আলোয় সৌরভ দেখতে পেলো বারান্দায় মিলি দাঁড়িয়ে আছে। সে নিশব্দে মিলির পাশে দাঁড়িলো। ততোক্ষণে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। বৃষ্টির ছাঁট এসে লাগছে মিলির চোখে মুখে। ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে মিলির গোলাপি ওষ্ঠ জোড়া। তবে তার কোন ভাবান্তর নেই। সে যেন বৃষ্টির ছাঁটে নিজের দুঃখ গুলো মুছে ফেলতে চাচ্ছে। কাঁধে কারোর স্পর্শ অনুভব করার পর মিলির ঘোর কাটলো। পেছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলো সৌরভকে। কি যেন একটা হলো! মিলি হঠাৎ করেই সৌরভের বুকের উপর ঝাপিয়ে পরলো। ঢুকরে কেঁদে উঠলো সৌরভের শার্ট খামচে ধরে। আকস্মিক ঘটনায় চমকালো সৌরভ। মিলি কাঁদছে কেনো সে বুঝতে পারছে না। তবে কী তার থেকে দূরে বলেই মিলি অবুঝের মতো করছে ? তার থেকে কষ্ট পেয়েছে সে? সৌরভ কী বলবে বুঝতে না পেরে আলতো হাতে মিলিকে জড়িয়ে ধরলো।
বেশ কিছুক্ষণ সৌরভের বাহুডোরে থাকার পর মিলি হাত আলগা করে সৌরভকে ছেড়ে দাঁড়ালো। কিছুটা সরে গিয়ে মুখ নিচু করে রইলো। সৌরভ এগিয়ে এসে দুহাত দিয়ে মিলির মুখটা উপরে তুলে ধরলো। শান্ত স্বরে বললো,
– ‘ বাহিরে যাবে ? ‘
মিলি চোখ মেলে তাকালো সৌরভের চোখের দিকে। হালকা ভাবে বললো,
– ‘ এখন ? ‘
– ‘ হুম। ‘
– ‘ কিন্তু বাহিরে তো বৃষ্টি! ‘
– ‘ বৃষ্টিতে ভিজতে পারবে না ? ‘ সৌরভের ঠোঁটের কোণে দুষ্টুমির মৃদু হাসি।
মিলি অবাক হলো। বিষয়টা বুঝতে পেরে কিছুটা লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিলো। হালকা ভাবে উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে বললো,
– ‘ পারবো। ‘
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
বৃষ্টির কারণে বাহিরে ঘুরতে যাওয়া হলো না তোহা আর রাজিবের। গাড়ি নিয়ে বের হবার একটু পরই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। গাড়িতে বসেই তাই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। তোহা গাড়ির জানালা খুলে বৃষ্টিতে হাত ভেজাচ্ছে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বাহিরের দিকে। রাজিব সামনের দিকে তাকিয়ে ড্রাইভ করতে করতে বললো,
– ‘ ধুর বৃষ্টির জন্য সব প্ল্যান নষ্ট হয়ে গেলো। ভেবে ছিলাম বাহিরে ঘুরবে। খেতে যাবো কোন রেস্টুরেন্টে। কিছুই হলো না। ‘
তোহা মিষ্টি করে হেসে বললো,
– ‘ তাতে কী ? বৃষ্টির মাঝে গাড়িতে করে দুজন ঘুরছি বিষয়টাও কিন্তু খুব উপভোগ করার মতো। আমার তো খুব ভালো লাগছে।’
কথা শেষ করে তোহা গাড়ির জানালা দিয়ে মুখ বাহিরে বের করলো। বৃষ্টির পানি মেখে নিলো নিজের শরীরের সাথে। চোখ বন্ধ করে সে বৃষ্টি দিয়ে সাজাচ্ছে তার মুখমন্ডল। রাজিব লক্ষ্য করতেই বললো,
– ‘ আরে কী করছো ? ভিজে গেছো তো একদম। ‘
তোহা হাসলো। কিছু না বলে সে আগের মতোই বৃষ্টি ছুয়ে দেখতে লাগলো। রাজিব আবারও বললো,
– ‘ কাছেই আমার এক বন্ধুর রিসোর্ট আছে। সখ করে বানিয়েছে। ভাড়া টারা কিচ্ছু দেয় না। মাঝে মাঝে গিয়ে আমরা আড্ডা দিয়ে আসি। চলো সেখানে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিবে। ‘
তোহা আর অমত পোষণ করলো না। দুজন মিলে গেলো রিসোর্টে। রিসোর্টের গেইট দিয়ে গাড়ি ঢুকে কয়েকটা এক তলা কর্টেজের সামনে গিয়ে থামলো। গাড়ি থামতেই একজন কম বয়সি ছেলে ছাতা নিয়ে এগিয়ে এলো তাদের দিকে। রাজিব ছেলেটাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
– ‘ তোর ভাবী। রুমে নিয়ে যা। ‘
তোহা ছেলেটার সাথে ভেতরে চলে গেলো। তোহাকে একটা রুম দেখিয়ে দিলো ছেলেটা। তোহা রুমে গিয়ে বসার পর একটা টাওয়েল এনে দেয়া হলো তাকে। তোহা মুখটা মুছে ছেলেটাকে বললো,
– ‘ তোমার নাম কী ? ‘
ছেলেটার চোখ মুখ শুকনা। সে কিছুটা থমথমে দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তোহার দিকে। তার দৃষ্টিতে ভয় লুকানো। সেই সাথে কিছুটা সংকোচ। সে ঢোক গিলে বললো,
– ‘ কাওসার। ‘
তোহা ছেলেটাকে এভাবে দেখে তীক্ষ্ণ ভাবে তাকালো তার দিকে। ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো,
– ‘ তুমি ভয় পাচ্ছো আমাকে ? ‘
ছেলেটা দুদিকে মাথা নাড়িয়ে না করলো। তারপর দ্রুত চলে গেলো রুম থেকে। তার এমন কান্ডে তোহা কিছুটা অবাক হলো। তারপর ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো ফ্রেশ হতে।
সৌরভের গাড়ি এসে থামলো একশ ফিট ব্রিজের উপর। এদিকটায় এ সময় এমনিতেই গাড়ি কম থাকে। তার মাঝে এখন আবার বৃষ্টি। একটা লোককেও রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না। একটু দূরে দোকান আছে। সেখানে কিছু লোক বসে চা খাচ্ছে আর গল্পে মজে আছে। তাছাড়া তেমন কাওকে দেখা যাচ্ছে না এদিকটায়। সৌরভ গাড়ি সাইড করে থামালো। মিলি আর সে নেমে এলো। মিলি নীল শাড়ি পরেছে। কপালে তার ছোট একটা কালো টিপ। গাড়ি থেকে নেমেই সে দৌড়ে পুলের উপর গিয়ে দাঁড়ালো। পেছন পেছন গেলো সৌরভ। বৃষ্টির পানিতে দুটো মানুষ কাক ভেজা হয়ে আছে। নদীতে বৃষ্টির ফোঁটা টুপ টুপ করে পরছে। হালকা করে একটা ঢেউ বয়ে যাচ্ছে সেই পানিতে। চারদিক সতেজতায় পূর্ণ। পিচ ঢালা রাস্তায় কোন ধুলো নেই। সব নোংরা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে। যেন প্রকৃতির প্রতিটি সৃষ্টি নিজেদের ধৌত করে পবিত্র হয়ে নিলো।
হাতে কফির মগ নিয়ে তোহা কাওসারের সাথে কটেজটা ঘুরে দেখছে। বৃষ্টি কিছুটা কমে এসেছে। কর্টেজের লম্বা বারান্দা ধরে হাঁটছে তারা। কিছুটা দূরে রাজিব একটা ছেলের সাথে কথা বলছে। উল্টোদিকে ফিরে থাকায় তোহা দেখতে পাচ্ছে না তাদের তেমন ভাবে। তবে রাজিবের সাথের ছেলেটা কিছুক্ষণ পর পর উঁকি দিয়ে তোহাকে তীক্ষ্ণ ভাবে দেখছে। তোহার কাছে বিষয়টা অদ্ভুত লাগছে। তাছাড়া তার পাশের কাওসার ছেলেটাও কেমন ভয়ে ভয়ে কথা বলছে। যেন কিছু লুকাচ্ছে তার থেকে। ছেলেটা কথা যে জোড় করে বলছে তা তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে। তোহা ঘুরে দাঁড়িয়ে কাওসার কে বললো,
– চলো আমরা রুমে গিয়ে গল্প করি।
কাওসার শুধু উপর নিচ মাথা ঝাকালো। ওরা দুজন রুমে গিয়ে বসার পর তোহা বললো,
– ‘ তুমি কী ভয় পাচ্ছো আমাকে?’
কাওসার মাথা নিচু করে বললো,
– ‘ না। ‘
– ‘ তাহলে ঠিক ভাবে কথা বলছো না কেনো ? আমার থেকে অনেক ছোট তুমি। তোমার বড় বোনের মতো আমি। আমার সাথে সংকোচ থাকার তো কথা না। ‘
তোহাকে অবাক করে দিয়ে কাওসার বললো,
– ‘ আপনি কি সত্যি স্যারের বউ ? ‘
তোহা কপাল কুঁচকে বললো,
– ‘ হ্যাঁ। তবে এই কথা কেনো ? ‘
কাওসারের চোখ মুখে অস্থিরতা। সে ঢোক গিলে বললো,
– ‘ এমনি। ‘
– ‘ কি লুকাচ্ছো বলো তো। তোমাদের ব্যবহার অদ্ভুত লাগছে আমার। ‘
– ‘ আপনি যদি স্যারের বউ হন তাহলে সমস্যা নেই। আর যদি গার্লফ্রেন্ড হন তাহলে একটু সাবধানে থাকবেন। ‘ কথা শেষ করেই কাওসার দৌড়ে চলে যেতে নিচ্ছিলো। কিন্তু তোহা দ্রুত উঠে তার হাত ধরে ফেললো। চোখ পাঁকিয়ে বললো,
– ‘ কী হয়েছে বলো আমাকে। ‘
– ‘ কিছু না ম্যাডাম। ‘
তোহা ধমকে উঠে বললো,
– ‘ বলো বলছি। না বললে এখনই রাজিবকে গিয়ে বলে দিবো তুমি কি বলেছো আমাকে। তারপর কী হবে বুঝতে পারছো তো ?’
কাওসার ছেলেটা ভয়ে কাঁচুমাচু হয়ে গেছে। নিজেকে যেন গুটিয়ে ফেলতে চাচ্ছে। তোহা ছেলেটাকে আশস্ত করে বললো,
– ‘ আমাকে নির্ভয়ে বলতে পারো। ‘
কাওসার দরজার দিকে গিয়ে একবার দেখে নিলো আশেপাশে কেউ আছে কী না। তারপর ধীর পায়ে তোহার সামনে এসে দাঁড়িয়ে গলার স্বর নামিয়ে বললো,
– ‘ স্যারের সাথে আগেও একজন এখানে বহু বার এসেছে।’
তোহা চমকে গিয়ে তাকালো কাওসারের দিকে। রাজিব এমন কিছু করতে পারে তা সে স্বপ্নেও ভাবতে পারে না। তোহা রাগে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
– ‘ তুমি কী বলছো বুঝে বলছো তো ? ‘
– ‘ আমি যা দেখেছি তাই বলছি। তার থেকে খারাপ খবর যেটা সেটা হলো মেয়েটা যেদিন শেষ স্যারের সাথে এখানে এসেছিলো সেদিন সে মারা যায়। ‘
– ‘ কী বলছো তুমি! ‘ গর্জন করে বলে তোহা।
– ‘ আমার ধারনা সেদিন ওরাই মেয়েটাকে মেরে ফেলেছে। লাশ কী করেছে কিচ্ছু জানি না। তখনই সাথে সাথেই স্যার আমাকে কিছু টাকা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় ক দিনের জন্য। আমি আর জানি না কিছু। ‘
তোহা ধুম করে বসে পরে বিছানায়। তার মাথার উপর ফ্যান টা খুব দ্রুত গতিতে ঘুরছে। ভন ভন করে শব্দ তুলছে। বৃষ্টির দিনে ঠান্ডা পরিবেশেও তর তর করে ঘামছে তোহা। কিছু সময় এভাবেই সে স্তব্ধ হয়ে বসে থাকার পর বললো,
– ‘ এটা কতদিন আগের কথা ? ‘
– ‘ বেশি দিন না। কয়েক মাস হবে। ‘
– ‘ মেয়েটাকে চিনো তুমি ? বা তার বাড়ির ঠিকানা? ‘
– ‘ আমি জানি না কিছুই। তবে সেই আপুটা অনেক ভালো ছিলো। আমার সাথে সুন্দর করে কথা বলতো। তবে কিছুটা গম্ভির ছিলো। প্রয়োজন ছাড়া বেশি কথা বলতে দেখিনি। লাস্ট কিছুদিন তাদের মাঝে অনেক ঝগড়াও হয়েছে। ‘
তোহা ম্লান চোখে তাকালো কাওসারের দিকে। তার চোখ থেকে অবিরত পানি ঝরছে। মনের মাঝে এখন আরো কিছু প্রশ্ন চলে এসেছে। দুয়ে দুয়ে চার মেলানো শুধু বাকি। তোহা চায় না এটা যেন সত্যি হয়। সে নিজেকে খুব শক্ত করে রাখার চেষ্টা করে বললো,
– ‘ মেয়েটা কী লাস্ট দিন শাড়ি পরে এসেছিলো ? ‘
কাওসার নিজেও একটু অবাক হলো। সে শূন্য চোখে তাকিয়ে বললো,
– ‘ হ্যাঁ। নীল শাড়ি। ‘
নিজের মাথা চেপে ধরে বসে কাঁদতে লাগলো তোহা। মেঝেতে তার চোখের অশ্রু ঝরে পরছে। সে রাজিবকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতো। আর সেই রাজিব কী না তার নিজের বন্ধুর স্ত্রীকে খুন করেছে ! তাকে ঠকিয়েছে! এতো দিনের এতো গুলো মানুষের বিশ্বাস সব ভেঙে দিয়েছে। কী করবে এখন তোহা ? নিজেকে তার ভাইয়ের সামনে নিয়ে দাঁড়া করাবে কিভাবে ? কিচ্ছু বুঝতে পারছে না তোহা। নিজের মাথা চেপে ধরে কান্না করে যাচ্ছে শুধু।
চলবে….