এসো শব্দহীন পায়ে পর্ব ১৮

0
1384

এসো শব্দহীন পায়ে
পর্ব ১৮
মিশু মনি

সাহিল শার্টের সাথে ঝুলিয়ে রাখা সানগ্লাস নিয়ে চোখে দিয়ে বসে রইলো। এই অসময়ে কারো সাথে কথা বলার সময় সানগ্লাস চোখে দিয়ে বসে থাকার রহস্য ধরতে পারছে না রূপসা। সে হয়তো ভেবেছে তাকে ডাশিং দেখাবে। কিন্তু না, তাকে হাস্যকর দেখাচ্ছে।

রূপসা মুখ টিপে হেসে বললো, ‘আপনি চশমা খুলে রাখুন। চোখ না দেখলে আমার অস্বস্তি লাগে।’
– ‘রোদ লাগছে তো। আমি আবার রোদে কোনোকিছুর দিকে তাকাতে পারি না।’
– ‘ওমা কেন? রোদে কোনোকিছুর দিকে তাকালে কি চোখে ফোস্কা পড়ে নাকি?’

সাহিল ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। রূপসা আবারও হেসে উঠলো শব্দ করে। প্রথমদিন সাহিলকে দেখে যেমন চালাক চতুর মনে হয়েছিল, আজকে তা মনে হচ্ছে না। কেমন যেন বোকা বোকা লাগছে। খিলখিল করে হাসছে রূপসা।

সাহিল হাত দিয়ে একটা দূর্বাঘাস ছিঁড়ে গোল করে একটা চুড়ি বানালো। রূপসার দিকে চুড়িটা এগিয়ে দিয়ে বললো ,’এটা তোমার জন্য।’
– ‘সুন্দর জিনিস বানাইছেন তো।’
– ‘আচ্ছা রূপসা একটা সত্যি কথা বলো তো। আমাকে তোমার কেমন লেগেছে?’

রূপসা চিন্তায় পড়ে গেলো। কেমন লেগেছে সেটা কি সহজে ব্যাখ্যা দেয়া যায়? মন তো এত সহজ জিনিস না। মন যেমন জটিল, মনের কাজ কারবারও তেমন জটিল। মনের যত রকমের ব্যাপার আছে, সবকিছুতেই একটা ঘোর প্যাঁচ লাগানোটা হচ্ছে মনের স্বভাব। যেমন তিতাসকে প্রথম দেখে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিল রূপসা। মনের বাগানটা ফুলের কলি দিয়ে ভরে গিয়েছিলো। কোনো এক অজানা সুর, অচেনা ব্যথায় হৃদয়টা কাঁপছিলো। তিতাস যখন ফোন ফেলে গিয়েছিল, রূপসার কেবলই মনে হচ্ছিল লোকটার কাছে গিয়ে ফোনটা দিয়ে আসি। এই সুযোগে একবার তার সাথে কথা হবে, এক নজর দেখা হবে। অচেনা এক পুরুষ কে দেখার জন্য মনের ভেতর যে বাসনা উদিত হয়েছিল সেটাকে এখন মোহ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। সবই হচ্ছে মনের খেলা। শালার মন মানুষের ভেতর বসবাস করে আবার মানুষকে নিয়েই খেলতে ভালোবাসে।

আনমনা হয়ে হাবিজাবি সব ভাবনার ঘোরে ডুবে গিয়েছিলো রূপসা। সাহিল এতক্ষণ কি বলেছে কিছুই শুনতে পায়নি। সাহিল বলল ,’কিছু একটা তো বলো?’
– ‘হ্যাঁ? কি বলবো?’
– ‘আমি এত কথা বললাম আর তুমি বলার মত কিছুই খুঁজে পাচ্ছো না?’

রূপসা খুকখুক করে কেশে গলাটা পরিষ্কার করে নিয়ে বললো, ‘ আপনাকে আমার টসটসে পাকা কমলার মত লাগে।’
– ‘যাহ, কি বলো এসব?’
– ‘হ্যাঁ। কমলার যা সুগন্ধ! ভিটামিন সি।’
– ‘তুমি তুলনা করার মত কিছুই আর পেলে না?’
– ‘ আমি কমলা কালার শাড়ি পরেছি তো। এটা ছাড়া আর কিছু মাথায় আসছে না।’
– ‘এটা কোনো যুক্তি হলো?’

রূপসা মাথাটা ঝাঁকিয়ে বললো ‘হ্যাঁ। ধরুন আমি যদি সবুজ রঙের শাড়ি পরতাম, তাহলে বলতাম আপনাকে আমার সবুজ ঘাসের মত লাগে। আর যদি বেগুনি রঙের শাড়ি পরতাম তাহলে বলতাম আপনাকে আমার বেগুনের মত লাগে।’
– ‘হা হা হা।’

সাহিল সবগুলো দাঁত বের করে হাসছে। রূপসার ভাষায় বিচ্ছিরি রকমের হাসি। সব মানুষকে হাসলে সুন্দর দেখায় এটা মিথ্যা কথা। কেউ কেউ হাসলে নিজেরই হাসি বন্ধ হয়ে যায়।

সাহিলের বানানো চুড়িটা নিয়ে রূপসা হাতে ঢুকানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু ঢুকছে না। আরেকবার চেষ্টা করতেই সেটা খুলে গেলো। রূপসা দুইহাত দিয়ে ঘাসের দুই মাথা ধরে ঘাসটা টেনে ছিঁড়ে ফেললো। সাহিল বলল , ‘তুমি কিন্তু সত্যি সত্যি অনেক ফাজিল একটা মেয়ে।’
– ‘আপনি কি আমার কথায় মাইন্ড করেন? জানেন আমার কথা বলার কেউ নাই। আমার জন্মের পর আপনিই একমাত্র মানুষ যার সাথে আমি কথা বলার সুযোগ পাইছি। তাই এত দুষ্টুমি করি।’
– ‘আমি খুব এনজয় করছি। আমার ভালো লাগছে অনেক।’
– ‘আমাদের বাগান দেখবেন? আসেন দেখাই।’

রূপসা সাহিলকে নিয়ে বাগানের দিকে চলে এলো। শাড়ির নিচের অংশে বারবার পা আটকে যাচ্ছে। শাড়ি পরার অভ্যেস নেই রূপসার। শাড়ি পরলে নিজেকে ওর যাত্রাদলের নায়িকার মত লাগে। কারণ মায়ের ভালো কোনো শাড়ি নেই। সব শাড়ি ই সিল্কের। একবার যাত্রা দেখার সুযোগ হয়েছিল ওর, সেই থেকে মায়ের শাড়ি গুলোকে ওর যাত্রাদলের নায়িকাদের পোশাক মনে হয়। কি বিচ্ছিরি ব্যাপার।

বাগানে অসংখ্য লিচু গাছ। ফাঁকে ফাঁকে বেশ কিছু আম গাছও আছে। ছায়াঘেরা একটা বাগান। পাতার ফাঁক ফোঁকর দিয়ে রোদের ঝিলিক নেমে আসে ভেতরে। লিচুর মৌসুমে প্রচুর লিচু ফলে। সব বিক্রি করে দেন বাবা। খাওয়ার সুযোগ হয় অল্প। মাঝেমাঝে সেই সুযোগটুকুও পাখিরা কেড়ে নেয়। লিচুতে ঠোকর দিয়ে আধা খাওয়া করে রাখে। পাখির হাত থেকে বাঁচার জন্য পুরো বাগানে লিচু গাছে মশারী টাঙিয়ে রাখতে হয়। বিষয়টা রূপসার কাছে অনেক মজার। মশারিতে প্রতিদিন ই বেশ কিছু লিচু ঝরে পড়ে। রূপসার ভাগ্যে সেগুলোই খাওয়ার জন্য জোটে। বাবা অনেক হিসেবি মানুষ। একটা ভালো লিচুও যেন বাড়ির কারো পেটে না যায় সে ব্যাপারে অতি সচেতন।

সাহিলকে বাগানটা হেঁটে হেঁটে দেখানোর পর বাড়ির দিকে পথ ধরলো রূপসা। সাহিল বলল, ‘এত তারাতাড়ি চলে যাবে? আর কিছুক্ষণ থাকি?’
– ‘না। আম্মায় রাগ দেখাবে। চলেন।’
– ‘রাগ দেখাক। আমি তো তোমার হবু স্বামী। আমাদের শহরে বিয়ের কথাবার্তা পাকা হলে ছেলেমেয়েরা একসাথে ডেটে যায় জানো?’
– ‘কই যায়?’
– ‘ঘুরতে।’

রূপসা একটা লিচু গাছের পাতা ছিঁড়ে দাঁত দিয়ে কামড়ে কামড়ে পাতা গুলো টুকরো করে মাটিতে ফেলে দিচ্ছিলো। সাহিলের কথায় কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই ওর। সাহিল বলল, ‘আমাদের তো একজন আরেকজনকে চেনাজানা হতে হবে তাইনা?’
– ‘আমি কি এখনো আপনার অচেনা আছি?’
– ‘জানার কত কিছু আছে। একসাথে চলতে দুজনের কতরকম সমস্যা হতে পারে। আমাদের সবকিছু সহজ করে নিতে হবে না?’
– ‘বিয়ের পরে অনেক ঘোরাঘুরি করতে পারবো।’

সাহিল কাছাকাছি চলে এলো। ওকে ভীষণ উত্তেজিত দেখাচ্ছে। রূপসা হাত থেকে লিচুর পাতা ফেলে দিয়ে অবাক হয়ে তাকালো। মুখে এখনো এক টুকরো লিচুর পাতা। ফুহ করে সেটাও ফেলে দিলো। সাহিল বলল, ‘বিয়ে ঠিক হবার পর থেকে আমি ঘুমাতে পারি না।’
– ‘কেন পারেন না?’
– ‘তোমাকে এখানে রেখে গিয়ে.. আমার সারাক্ষণ মনে হয় কখন তোমাকে আপন করে পাবো। কখন আমার ঘরে বউ হয়ে আসবে তুমি।’

রূপসা নির্বাক। লোকটা তো দেখি একেবারে প্রেমের রসে ভিজে জবজবা হয়ে আছে! চোখে, মুখে, নাকে, ঠোঁটে সবখানে প্রেম কিলবিল করছে। প্রেমের মহাসাগরে নিমজ্জিত হতে আর বেশি বাকি নেই। এই রস থেকে তাকে টেনে তুলবে কে? রূপসা ইতস্তত করতে করতে বললো, ‘তাহলে বিয়ের তারিখটা দ্রুত এগিয়ে আনুন।’
– ‘তোমাদের জন্যই তো আটকে আছে। রূপসা, আমি সত্যিই তোমাকে ছাড়া একমুহূর্ত অন্যকিছু ভাবতে পারি না। আমার ভাবনা জুরে সারাক্ষণ শুধু তুমি। আমার এই শুষ্ক মরুভূমির মত হৃদয়ে হঠাৎ করে প্রেমের জোয়ার উঠেছে। এ ব্যথা আমি কারে দেখাই?’

রূপসা মুখ টিপে হাসলো। সাহিল ক্রমশ কাছে এগিয়ে আসছে। সাহিলের কণ্ঠে আবেগ ঝরঝর করে ঝরে পড়ছে। রূপসা মজা পাচ্ছে ভীষণ। ও ঘোমটা অনেক লম্বা করে টেনে নিয়ে বললো, ‘আমি ভূত… হালুউউউম…’

মনে হচ্ছে কাজ হয়েছে। প্রেমের মহাসাগর থেকে উঠে এলো সাহিল। ওকে খুব লজ্জিত দেখাচ্ছে। রূপসাকে সে প্রেম নিবেদন করছে আর রূপসা সবকিছুকে হাস্যরসের ছলে নিচ্ছে। বিষয়টা রূপসার কাছে আনন্দদায়ক হলেও সাহিলের ভালো লাগছে না।

সাহিল বলল, ‘রূপসা। তুমি কি আমার সাথে শুধু মজাই করবে?’
সাহিলের রাগত স্বর শুনে এবার খানিকটা ভীত হয়ে পড়ে রূপসা। মৃদুস্বরে বলে, ‘আসুন বাসায় যাই।’
– ‘না যাবো না। তুমি আমার ভালোবাসাকে তুচ্ছ করে দেখতে পারো না। আমি আসার পর থেকে দেখছি তুমি আমার সাথে শুধু ইয়ার্কি করে যাচ্ছো।’
– ‘ভুল হয়ে গেছে। মাফ করে দেন। দয়া করে মাফ করে দেন। আর ভুল হবে না।’

সাহিলকে এবার আরো বেশি লজ্জিত দেখালো। সে রূপসার হাতটা খপ করে ধরে বললো, ‘রূপসা বিশ্বাস করো আমি প্রথমদিন দেখেই তোমার প্রেমে পড়ে গেছি। ধীরেধীরে তোমার সম্পর্কে যত জেনেছি ততই আমার প্রেম গভীর হয়েছে।’
– ‘বিশ্বাস করলাম। হাত ছাড়ুন। কেউ দেখলে কেলেংকারী হয়ে যাবে।’
– ‘কেউ দেখার জন্য এখানে বসে নেই রূপসা। তাছাড়া আমি তো তোমার হবু স্বামী।’
– ‘হবু স্বামী, স্বামী তো আর নন। তারাতাড়ি বিয়ের দিন তারিখ পাকা করতে বলুন। তারপর যত ইচ্ছে প্রেম করবেন।’

সাহিলের হাত থেকে রূপসা নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে হাঁটা ধরলো। সাহিল রূপসার নাম ধরে ডাকতে ডাকতে পিছুপিছু এগোচ্ছে। রূপসা একবারও পিছনে তাকাচ্ছে না। প্রেম নিবেদন করবে ভালো কথা, এর জন্য হাত ধরতে হবে কেন? শুধু মুখের কথা দিয়ে একজনকে অনুভূতি জানানো যায় না? নাকি অনুভূতি প্রকাশের জন্য হাত ধরে কাব্য রটাতে হবে? সাথে কেলেংকারীও..

রূপসা বাসায় ফিরে সোজা নিজের ঘরে চলে গেলো। মা দ্রুত এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি রে মা সাহিল কই?’
– ‘সাহিলকে কাহিল বানাইয়া দিয়া আসছি।’
– ‘ছিহ, স্বামীর নামে কি কস এসব?’
– ‘উনি কি আমার স্বামী লাগে মা?’
– ‘হ। তোর স্বামী লাগে না?’
– ‘তাহলে আমি ওনার হাত ধরে ঢলাঢলি করি?
– ‘ছি, কি তাজ্জব কথা!’
– ‘তুমি তো বললা উনি আমার স্বামী।’

রূপসার মা স্তম্ভিত হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন। ওনার চোখের পলক পড়ছে না। যে রূপসার মুখ দিয়ে সহজে একটা কথা বের হয় না, সে আজ মাকে এসব কি বলছে। মেয়েটার লজ্জাশরম সব বানের জলে ভেসে গেছে নাকি?
রূপসা বলল, ‘এইরকম ড্যাবড্যাব কইরা তাকাইয়া থাকোনের মত কিছু কই নাই মা। উনি চাইতেছে তারাতাড়ি আমারে তার ঘরে নিয়া যাইতে। আমারে ছাড়া রাইতে ঘুমাইতে পারে না। আমারে নিয়া সিনেমা হলে যাইতে চায়।’

রূপসার মায়ের চোখে এখনো পলক পড়ছে না। কি অদ্ভুত! এতক্ষণ পলকহীন ভাবে কেউ তাকিয়ে থাকলে তো চোখে পানি চলে আসার কথা। অথচ মায়ের চোখে পানি আসছে না। রূপসা আর কিছু না বলে একটা বালিশ নিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লো। মা এখনো স্তম্ভিত।

সাহিল বারান্দায় এসে বসেছে। রূপসার বাবা সাহিলকে দেখে আলাপ আলোচনা শুরু করার জন্য চেয়ারে এসে বসলেন। কিন্তু কথা বলার আগেই রূপসার মা ডেকে বললেন, ‘ওগো আপনি একটু ভেতরে আসবেন?’

উনি ভেতরে চলে গেলে সাহিল টেবিলের উপর রাখা পানির গ্লাস নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেলো। ওর অনুশোচনা হচ্ছে। হাত ধরার কারণে রূপসা রেগে গেছে কি না সেটা নিয়েই চিন্তিত সাহিল। পানিও হজম হবে না ওর। রূপসাকে একবার ‘সরি’ জানাতে হবে।

রূপসার বাবা ঘরে এলে ওনার স্ত্রী ফিসফিস করে বললেন, ‘সর্বনাশ তো হইয়াই যাইতেছে। সাহিল নাকি রূপসারে ছাড়া ঘুমাইতে পারে না। এইগুলা শুইনা রূপসারও মন উতলা হয়া গ্যাছে। সে লাজলজ্জা সব ভুইলা আমারে বলতেছে ছেলের সাথে ঢলাঢলি করবে, সিনেমা হলে যাবে। ছি ছি, কি দিনকাল আসলো। লজ্জাশরম শেষ হয়া গেলো দুনিয়া থাইকা।’

রূপসার বাবা রেগে বললেন, ‘তোমার মেয়ে এসব বলতেছে?’
– ‘আরে মেয়ার দোষ দিলে লাভ নাই। তারাতাড়ি আপনি সাহিলের বাড়িত কথা বলেন। বিয়ার ব্যাপারে সব ঠিকঠাক করেন। ওদেরকে আর আলাদা রাখার দরকার নাই।’
– ‘আচ্ছা আমি দেখতেছি।’

রূপসার বাবা সাহিলকে এসে সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন, ‘বাবা তুমি বিয়েটা কবে করতি চাও?’

সাহিল লাজুক ভঙ্গিতে মাথা নামিয়ে রইলো। মৃদু স্বরে উত্তর দিলো, ‘সেসব তো আপনারা ঠিক করবেন।’
– ‘বলছিলাম কি, তোমার বাপ মা রাজি থাকলে আগামী মাসের শুরুতেই কাজটা সম্পন্ন হোক। হাতে দিন দশেক সময় পাওয়া যাবে।’
– ‘জ্বি আংকেল। আপনি আব্বার সাথে কথা বলুন।’
– ‘এইসব কথাবার্তা তো মোবাইলে হয় না। তোমার বাবা যদি আসতে পারতেন..’
– ‘আংকেল আগামীকাল আপনি আমার সাথেই চলুন। আমাদের বাড়িতে সেই কবে গিয়েছিলেন। আর যাওয়াও হয়নি। আপনি সব দেখেশুনে ফাইনাল আলাপ করে আসবেন।’

অবশেষে সেই কথাই সই। রূপসার বাবা পরেরদিন সকালে রওনা দেবেন সাহিলের সাথে। সবকিছু ভালো থাকতেই ভালোভাবে সম্পন্ন করা ভালো। এদিকে রূপসার মায়ের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। তিনি শুধু একটা কথাই ভাবছেন যে, রূপসা কি করে এত লাজশরম হীন মেয়ে হয়ে গেলো! কি সর্বনাশ!

রূপসা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে বালিশ। ওর হৃদয়ে চাপা একটা বেদনা। কেমন যেন নীল একটা কষ্ট এসে ভর করেছে। বুকের উপর থেকে আর সরতেও চাইছে না। তীক্ষ্ম একটা ব্যথা!

চলবে..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে