#এলিয়েন।
#তিতিশ্মা_মুসাররাত_কুহু।
#২য়_পর্ব।
উফফ ইচ্ছে করছে মোবাইলটা এবার আছাড় মেরে অন্য গ্রহে পাঠিয়ে দেই।
এলিয়েন টা বার বার আমাকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে।
আম্মু এবার হাসতে হাসতে চলে গেলেন।
ফোন টা রিসিভ করলাম আমি,
বার বার লাইন কেটে দেয়ার পরও ফোন দিচ্ছে বিধায় ফোনটা রিসিভই করা লাগলো।
-হ্যালো জরিনা স্কিপিং।
-স্কিপিং?
-হয় স্কিপিং।ইংলিশও বুজেন না?
-স্কিপিং না,স্পিকিং।
কিন্তু জরিনা?জরিনা কে?
-জরিনা আবার কে,আমি জরিনা কইতাছি।আপনে কেডায়?
কারে চান কোথায় ফোন দিছেন?
-না মানে আমি তো আরফাকে ফোন দিয়েছি।
এটা আরফার নাম্বার না?
-জ্বে না,এইখানে কোনো আরফা টারফা থাকেনা।
এইডা আমার নাম্বার।
-আচ্ছা সরি।রং নাম্বার।
-জ্বে রাখেন তয়।
উফফ বাঁচলাম।এবার অন্তত বাঁচা যাবে এলিয়েন টার কাছ থেকে।
রাতে আম্মু আব্বুকে বলে দিলাম,ওই এলিয়েনকে আমার পক্ষে বিয়ে করা কোন ভাবেই সম্ভব না।
তোমরা আমাকে অনার্সে ভর্তি করবে কিনা বলো?নইলে আমার দু চোখ যেখানে যায় আমি চলে যাবো।
তখন আমাকে কোন দোষ দিতে পারবেনা।
আম্মু আব্বু দুজন তখন কিছুই বললেন না।
সকালে নাস্তার টেবিলে দুজনই বললেন,
আমাকে অনার্সে ভর্তি করে দিবে।
বিয়ের ব্যাপারে আর কোন কথা বলবেন না আপাতত তারা।
আমি তো মনে মনে খুব খুশি।
বাহ্ এক রাতেই সব চেঞ্জ।
সব আমার ইচ্ছে অনুযায়ীই হচ্ছে।
কিন্তু রাতেতো তারা কিছু প্ল্যান করেছে এটাতো কনফার্ম।
করুক যা খুশি তাই।আমার কি।
কিছু দিন পর আম্মু আব্বু আমাকে অনার্সে ভর্তি করে দিলেন।
এরপর হঠাৎ একদিন আফসানা আন্টি এসে হাজির,
সে পারে তো আমাকে কোলে নিয়ে বসে।
-মারে,খুব ভালো করে মন দিয়ে পড়াশোনা করবি।
তুইতো আমাদের গর্ব।
তুই ভালো রেজাল্ট করলে আমরা সবাই খুশি।
ভালো ভাবে অনার্স শেষ কর।
আমাদের দোয়া সব সময় তোর সাথে আছে।
কিছু ক্ষণ পর আমি সরে যেতেই আম্মু আর আন্টি কি যেন ফুসুরফাসুর করছে।
করুক যা খুশি তা।
আমি শুধু কলেজে গিয়ে নেই,ওখান থেকেই কাউকে পছন্দ করে দিবো গলায় মালা পরিয়ে।
কাহিনী খতম।
এর মাঝে প্রায়ই হৃদ আমাকে ফোন দেয়,আর আমি ওর সাথে জরিনা সেজেই কথা বলি।আর তারপর সে রেখে দেয়।
বেচারা আবার ফোন দিয়েছে,
আমি রিসিভ করে আবার জরিনা সেজে কথা বললাম,
এবার ওপাশ থেকে হৃদ আমাকে বল্লো,
-জরিনা,তুমি কি আমার বন্ধু হবে?
আমি তো এবার শকড।
কি বলে এই ছেলে।
চুপ করে আছো কেন জরিনা?
মানলাম রং নাম্বারেই আমাদের পরিচয়।
কিন্তু পরিচয় তো হলো,যেভাবেই হোক।
আর তুমি ছাড়া আর কোন মেয়ের সাথে আজ পর্যন্ত আমি ফোনে কথা বলিনি।
তুমিই প্রথম।
তাই বলছিলাম,তুমি যদি আমার বন্ধু হতে।
আমার কোন মেয়ে বন্ধুও নেই।
তুমি হলে তুমিই হবে আমার প্রথম মেয়ে বন্ধু।
-আমার লগে আপনে বন্ধুত্ব করবেন?
আমার সম্পর্কে আপনে জানেন কিছু?
-না জানি তাতে কি,
তুমি না হয় বলবে সব।
উফফ কি যন্ত্রণায় পড়লাম রে বাবা।
তবুও তো জরিনা সাজার কারণে আরফা বেঁচে গেলো।
মনে মনে বুদ্ধি আটলাম।
করেই ফেলি বন্ধুত্ব।
পরে এলিয়েন টাকে ব্ল্যাকমেইল করা যাবে।
আর আম্মু আব্বুকে বলে বিয়ের ভূত টাও তাড়ানো যাবে।
-আইচ্ছা,আইজ থাইকা আমরা বন্ধু।
তয় আমারে আপনে যেকুনো টাইমে ফোন দিতে পারবেন না।
আমি যেহেতু মাইনষের বাড়ী কাম করি,আমার কাম যহন শেষ হইবো আমি আপনারে মিসকল মারুম আর আপনে ফোন দিবেন।
মাগার এস এম এস করা পারবেন যেকোনো টাইমেই।
কিন্তু আমি বুঝলাম না,আপনার মত একজন শিক্ষিত মানুষ আমার মত একটা কামের ছেমড়ির সাথে কেন বন্ধুত্ব করলেন।
-তুমি একজন মানুষ এটাই তোমার বড় পরিচয়।
আর সেই জন্যই আমি তোমার সাথে বন্ধুত্ব করলাম।
-আইচ্ছা অহন রাখি।
আপায় ডাকে মোরে।
-আচ্ছা ভালো থেকো।
আজ খুব হাসি পাচ্ছে,এলিয়েনটা এত বোকা ভাবা ই যায়না।
আজ কলেজে আমার প্রথম ক্লাস,আম্মু আব্বুর কাছ থেকে দোয়া নিয়ে গিয়ে পা রাখলাম কলেজে।
খুশি মনে গেলাম কলেজের ভেতর।
কিন্তু কলেজে ঢুকতেই হঠাৎ আমার হাসি ভরা মুখটা কালো মেঘে ঢেকে গেলো।
চলবে…