এবং স্ত্রী পর্ব-৩২

0
1217

#এবং_স্ত্রী
#পর্ব_৩২
#Jannatul_Ferdos

“হ্যা গো তোমার বইন মইরা তো মাইয়ার কপাল খুলে গেল…নয়ন রহমান বসে পত্রিকা পড়ছিলেন।পারুল বেগমের এমন কথায় তিনি পত্রিকা থেকে মাথা তুলে পারুল বেগমের দিকে তাকালেন।এমন কথায় তিনি বিরক্তের সাথে অবাক হলেন।
” তুমি কি বলতে চাচ্ছো পারুল?
“আরে হুনো হুনো দেহো উৎস নিরুরে মাইনা নেয় নাই ক্যান কও?আপার লাইগাই তো তাই না।আপা তারে বার বার মানা করতো যে নিরুরে যেন স্ত্রী না মানে তাই না।এহন তো তোমার বইন গেছে মইরা আর মইরা যাওয়ার আগে একখান চিঠি দিয়া গেল তাতে ও লেইখা দিল নিরুরে মাইনা নিতে।উনি যদি না মরতো তাইলে কি তোমার মাইয়ার কপালে স্বামীর সোহাগ হতো কও?মরছে ভালাই হইছে না তাইলে?
নয়ন রহমান খুব জোরে পারুল বেগমকে থাপ্পড় মারলেন।তিনি ভেবে পাচ্ছেন না একজন মানুষ কিভাবে একজন মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে এরকম কথা বলতে পারে ।রাগে তিনি ফসফস করছেন।পারুল বেগমের চোখ থেকে রাগের আগুন জ্বলছে।
” তোমার মতো বাজে মহিলা আমি জীবনে দুটো দেখি নি।কিভাবে পারো তুমি একজন মরা মানুষের ব্যাপারে এরকম কথা বলতে?আর উৎস নিরুপমাকে মেনে নিত অবশ্যই মেনে নিত সে আপা বলুক আর না বলুক। ও যদি নিরুপমা কে ভালো না বাসত তাহলে কখনো পাগলের মতো নিরুপমাকে খুঁজত না।আপা তার করা কর্মের ফল পেয়েছে।তুমি ও তোমার এই খারাপ কাজ গুলোর ফল পাবে অবশ্যই। আজ বুঝতে পারছি তোমাকে বিয়ে করা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ছিল।তুমি মানুষের মধ্যেই পরো না।অত্যন্ত জঘন্য মানুষ তুমি।
নয়ন রহমান রাগে গিজগিজ করতে করতে বাড়িতে থেকে বের হলেন।পারুল বেগম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকল নয়ন রহমানকে। ঝুমুর তার মায়ের কাজে বিরক্ত হয়ে বলল…
“বাবা যদি এই চড়টা তোমার করা প্রথম অন্যায়ের দিন করতো তুমি আজ এতোদূর পর্যন্ত আসতে না মা।তোমার জন্য আমি ও একজন খারাপ মানুষে পরিণত হয়েছিলাম।একটা কথা কি জানো মা?বাবা মায়ের করা ভুল গুলো সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে।আর তোমার করা এই অন্যায় গুলোর শাস্তি না আমাকে আর লতিফকে পেতে হয়।নিরুপার সাথে কথা বলেছি।আমি আর লতিফ হোস্টেলে থেকে পড়বো।তোমার মত মানুষের সাথে আসলে থাকা যায় না।
পারুল বেগম ঝুমুরকে মারতে আসলে ঝুমুর থাকে সুযোগ না দিয়েই চলে যায়। তিনি এবার ঝুমুরকে গালি দিতে থাকে।

উৎসদের বাড়িতে নিশান ও তার পরিবার বসে আছে।প্রবীর খান আর উৎস বাড়িতে নেই।তারা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে।নিরুপমা প্রেমাকে শাড়ি পড়াচ্ছে।নিরুপমা প্রবীর খান আর উৎসকে নিশানের কথা বলে।প্রথমে প্রবীর খান আপত্তি করলে ও পরে অনেক ভেবে তিনি রাজি হোন।যেহেতু তার মেয়ের ভালো থাকার কথা সেখানে তিনি আর আপত্তি করলেন না।প্রবীর খান নিজে ও ভালোবেসে তনিমাকে বিয়ে করেছিলেন।অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝা পাড় করে তিনি ভালোবাসাকে পেয়েছিলেন।তাই মেয়ের ভালোবাসায় তিনি আপত্তি করলেন না।এরপর তাদের সাথে কথা বলে আজ নিশানরা এসেছে।নিশানের বাবা -মা,দাদী আর ছোট একটা ভাই এই নিয়েই তার সংসার।প্রেমাকে দেখতে তার বাবা-মা ভাই আর দাদী এসেছে।তাদের ইচ্ছা আজ রিং পড়িয়ে যাবে।এরপর দিন ঠিক করে বিয়ে হবে।প্রেমাকে নিয়ে নিরুপমা হাজির হয়।প্রেমাকে বেশ নার্ভাস দেখাচ্ছে।প্রেমা গিয়ে নিশানের মায়ের সামন বসলো।তিনি উঠে এসে প্রেমা পাশে বসলেন।মুখে হাত বুলিয়ে চুমু খেলেন।
“মাশাল্লাহ মেয়ে তো অনেক সুন্দর।
” দেখি দেখি আমারে আমার নাতবউ দ্যাখতে দাও গো বউ।চোখে তো ভালা দেখি নারে বু।তই তুই মেলা সুন্দরী আমি বুঝবার পারতেছি।তা বু আমারে এট্টু হাইটা দেখা তো তুই। আলো তোর বড় চুল আছি নি?মাইয়া মানষির কিন্তু বড় চুল না হলে ভালা লাগে না।
প্রেমা আলতো করে হাসে।তব একটু অস্বস্তি বোধ করছে তা বোঝা গেল।
“আম্মা সব ঠিক আছে ওর। আপনি চিন্তা কইরেন না।আমার শ্বাশুড়ি আগের যুগের মানুষ। তুমি কিছু মনে করো না কেমন?
“না না আন্টি আমি কিছু মনে করি নাই…প্রেমা হেসে বলে
“ওমা মেয়ে বলে কি?আমাকে আন্টি বলছো কেন?দুদিন পর আমার মেয়ে হয়ে আসবে এখন থেকে আম্মু ডাকা শিখো।
” জ্বী আম্মু
নিশানের আম্মু হাসে।
সবার সাথে কথা বলে বোঝা গেল নিশানের পরিবারের মানুষজন যথেষ্ট ভালো মনের মানুষ। ইতোমধ্যে প্রবীর খান আর উৎস এসে হাজির হয়।নিশানকে দেখে উৎস অবাক হয়ে যায়।
“তুই?
নিশান এবার মাথা চুলকে বলে “ইয়ে মানে হ্যা ভাইয়া আমি।
নিশান হাসবে না কাঁদবে বুঝতেছে না।নিশানের মতো ছেলে যেকিনা কোনো মেয়ের সাথে কথা বলতো না খুব লাজুক প্রকৃতির মানুষ ছিল আর সবচেয়ে বড় কথা উৎসকে জমের মতো ভয় পেত সে কিনা উৎসের বোনের সাথে এতো বছর ধোরে প্রেম করছে?
” সালা তুই আমার বোনের সাথে এতোদিন ধোরে প্রেম করছিস আর আমি টের ও পাই নাই?
“ভাই লজ্জা দিয়েন না।বুঝেন তো ভালোবাসা বলে কয়ে হয় না…নিশান মাথা নিচু করে বলে
” থাক থাক আমাকে আর তোর জ্ঞান দিতে হবে না।তোর হাতে বোনকে দিয়ে আমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারব।
সকলে অবাক হয়ে ওদের কার্যকালাপ দেখছে।
“উৎস নিশান তোরা একে অপরকে চিনিস?…নিশানের বাবা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে
” চিনি না মানে। আমার ভার্সিটির ছোট ভাই।বিশ্বাস করবেন না আংকেল ওই ফাজিল এতো বোকা হয়ে থাকত কেউ ভাবতে ও পারবে না যে এমন কাজ করেছে।আর আংকেল জানেন আপনার ছেলে আমাকে এতো বেশি ভয় পেত বলার বাইরে।আর ওই ব্যাটা কিনা আমার বোনের সাথে প্রেম করছে ভাবা যায় বলেন?
“তা বেশ বলেছো উৎস।এই গাধার দ্বারা এটা সম্ভব তাতো আমি ও ভাবতেই পারি নাই।যখন শুনলাম ৫ বছর ধোরে প্রেম করছে অথচ আমরা কেউ জানতে ও পারি নাই আমি ও অবাক না হয়ে পারি নি।গাধাটা মানুষ হয়েছে….নিশানের বাবা হেসে বললেন
সবাই উচ্চস্বরে হেসে উঠে।নিশান বেশ লজ্জায় পড়ে যায়।রাতের খাওয়া খেয়ে নিশান ও তার পরিবার তাদের বাসার উদ্দেশ্যে বের হয়।আগামি মাসে তাদের বিয়ের কথা পাকা হয়েছে।দুই পরিবার বেশ খুশি।

২ দিন পরে নয়ন রহমানের ফোন পেয়ে নিরুপমা দ্রুত হাসপাতালে যায়।পারুল বেগম হাসপাতালে ভর্তি। কয়েকদিন যাবতই পারুল বেগম অসুস্থ ছিলেন।এর মধ্যে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘা দেখা যায়।দিনে দিনে অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে।নিরুপমা, প্রেমা আর তনিমা বেগম পারুল বেগমের কেবিনে যায় সেখানে নয়ন রহমান লতিফ আর ঝুমুর বসে আছে।নিরুপমাকে দেখে পারুল বেগম হুহু করে কেঁদে উঠে।নিরুপমার হাত ধরতে গেলে নয়ন রহমান নিষেধ করে।
” তুমি কি পাগল হয়ে গেছো পারুল?তোমার এই হাত নিয়ে ওকে ধরলে ওর ও যদি ইনফেকশন করে তখন?
পারুল বেগম কাঁদতে থাকলেন।নিরুপমা নয়ন রহমানের কথায় কান না দিয়ে পারুল বেগমকে বলল…
“আমার হাত ধোরবে মা?ধোর সমস্যা নেই….তিনি এবার অনুতপ্তের আর্তনাদ করে উঠলেন
“ওরে নিরুরে আমারে তুই মাফ কইরা দে মা।আমি জীবনে অনেক অন্যায় করছি পাপ করছি।সবসময় তোর সংসার ভাঙ্গার চেষ্টা করছি।তোরে খারাপ বুদ্ধি দিছি।ছোট থেকে অনেক অত্যাচার করছি।আমারে মাফ কইরা দে রে মা।আমি শাস্তি পাচ্ছি। এগুলান আমার প্রাপ্য আছিলরে মা।আজ নিজের মাইয়া আমারে ছুইয়া ও দেহে না।আমার কাছে আহে না।হাসপাতালে ভর্তি না হইলে ঝুমুর হইতো আইতো না হোস্টেল থেকে আর তুই তো পরের মাইয়া আমি তোরে কত কষ্ট দিছি কিন্তু তুই আমারে ফেলাস নাই রে নিরু।আমি ভুল কইরা ফেলছি রে।এই কষ্ট আমি নিতা পারতেছি না রে নিরু।
পারুল বেগম বাধহীন কান্না করতে লাগলেন।নিরুপমা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে..
” তোমার প্রতি আমার রাগ দুঃখ অভিমান কিছু নেই মা।আমি তোমাকে ক্ষমা করার কে বলো?আর মা হয়ে কেউ কখনো মেয়ের কাছে ক্ষমা চায়?আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি মা তোমার সাথে আমি খারাপ ব্যবহার করেছি।
পারুল বেগম এবার লজ্জিত হয়ে আরো বেশি কাঁদলেন।যে মেয়ের সাথে এতো অন্যায় করেছে সেই মেয়ে তার কাছে উল্টে ক্ষমা চাচ্ছে।নিরুপমার মতো এতো ভালো মনের মানুষকে সে এতো কষ্ট দিয়েছে।
নিরুপমা বেশ কিছুক্ষণ থেকে বাড়িতে ফিরে।বেড়িয়ে আসে বড় একটা দীর্ঘশ্বাস। জীবন কতোটা কঠিন।প্রকৃতি যে তার প্রতিশোধ ছাড়ে না তা আজ দ্বিতীয়বারের মতো সে প্রমাণ পেল।তার শুধু এখন একটাই চাওয়া পারুল বেগম এর সুস্থতা। সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে।তার এমন কষ্ট নিরুপমা সহ্য হচ্ছে না।

“মুসু মুসু দাঁড়াও বলছি….
” না না
নিরুপমা মুসকানকে খাওয়ানোর জন্য মুসকানের পিছনে দৌড়ে বেরাচ্ছে।আর মুসকান ওর গুটি গুটি পায়ে দৌড়ে বেরাচ্ছে।মুসকান এখনো গুছিয়ে কথা বলতে না পারলে ও কিছু কিছু কথা বলতে পারে।এতে দাও,ওতা চাই, বাবাই যাবো এরকম ছোট ছোট কথা সে বলতে পারে।নিরুপমা নিজেকে অনেকটা স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয়েছে।পারুল বেগমের অসুস্থতায় সে ভিষণ মন খারাপ করে ছিল।সারাদিন মুসকানকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে সে।উৎস আজ বেশ তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরেছে।উৎসকে আসতে দেখে মুসকান দৌড়ে উৎসকে জড়িয়ে ধোরে।উৎস মেয়েকে কোলে নিয়ে চুমু খায়।
“আমার মামনি কি দুষ্টামি করে?
মুসকান এবার হাত নাড়িয়ে না না করে। মেয়ের মুখে এমন আদো কথা শুনে হেসে উৎস।
” আপনার মেয়েটা বড্ড ফাজিল উৎস।সেই কখন থেকে খাওয়ানোর চেষ্টা করছি খাচ্ছেই না
“মাম্মা এগুলা কি বলে মুসু? তুমি খাচ্ছো না কেন?
” ততলেট খাবো ততলেট দাও
মুসকান কিছুটা টেনে টেনে বলে।
চকলেট আমি দিব কিন্তু তোমার যে এই খাবার টুকু শেষ করতে হবে।খাবার টুকু শেষ করো আমি চকলেট দিব ওকে?মুসকান হ্যা সূচক মাথা নাড়ায়।নিরুপমা ওর মুখে খাবার দেয়।খাওয়া শেষে করলে মুসকানকে উৎস চকলেট দেয়।তারপর নিজের রুমে যায়।নিরুপমা মুসকানকে তনিমা বেগমের কাছে দিয়ে প্রেমার রুমে গিয়ে প্রেমার সাথে গল্প করা শুরু করে।
“আচ্ছা ভাবি তোমার কাছে ভালোবাসা মানে কি?…প্রেমা নিরুপমাকে জিজ্ঞেস করে।
” আমার কাছে ভালোবাসা অনেকটা জোয়ার-ভাটার মতো।
“জোয়ার-ভাটা?সেটা কিরকম ভাবি?…প্রেমা বেশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো..
” নদীতে জোয়ার-ভাটা এটা কখনো বন্ধ করা যায় বলো?এটা মহান আল্লাহর সৃষ্টি এক অদ্ভুত জিনিস।দিনের নিদিষ্ট সময়ে জোয়ার-ভাটা হয়।এই জোয়ার-ভাটা আমার কাছে অনেকটা মান-অভিমানের মতো।ভালোবাসায় মান-অভিমান থাকে খুব।সেটা তোমার একতরফা ভালোবাসা হোক কিংবা দুইজনের দিক থেকে হোক।এখন বলবে একতরফা ভালোবাসায় আবার মান-অভিমান কিসের?নিরুপমা কিছুটা হেসে বলে…একতরফা ভালোবাসায় ও কিন্তু একটা সাজানো দুনিয়া থাকে। যে দুনিয়া থাকে কাল্পনিক। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে সেই কাল্পনিক দুনিয়ার সৃষ্টি।তুমি তাকে ভালোবাসো কিন্তু সে তোমাকে ভালোবাসে না।এক্ষেত্রে দুইটা জিনিস ঘটে। এক সে জানে তুমি ভালোবাসো দুই সে জানে না তুমি ভালোবাসো।সেক্ষেত্রে অভিমান ও দুই ভাবে হয়।এক সে জানে তুমি তাকে ভালোবাসো কিন্তু সে তোমাকে ভালোবাসে না।আর তোমার অভিমানটা এইখানেই কেন সে তোমাকে ভালোবাসে না?সেতো জানে তুমি তাকে ভালোবাসো তাও কেন তোমাকে তার হৃদয়ে স্থান দিচ্ছে না।আর দুই হলো তোমার এটা মনে হবে তাকে না হয় তুমি জানাও নি ভালোবাসো সে কেন বুঝে না?সে কেন তার প্রতি তোমার অনুভূতি বুঝতে সক্ষম না?এই দুই ক্ষেত্রে তুমি প্রতিদিন ভাবো সে তো আমাকে ভালোবাসে না কেন তাহলে আমি তাকে ভালোবাসব?একতরফা ভালোবেসে কেন পাগল উপাধিতে ভূষিত হবো?এই ভাবনা গুলো তোমার রাতের বেলার কিন্তু সকাল থেকে তুমি আবার তাকে ভালোবাসার কথা ভাব্বে।তার সাথে কথা বলতে চাইবে তাকে দেখতে চাইবে। আর এটাই আমার কাছে জোয়ার-ভাটার মতো লাগে।এই ভালোবাসা জোয়ারের মতো টইটুম্বুর এই আবার ভাটার মতো নিশ্চিহ্ন। এবার আসি যখন দুইজনই ভালোবাসে তখন কিভাবে জোয়ার-ভাটার মতো লাগে।ভালোবাসার মানুষটাকে ছাড়া তুমি থাকতে পারবে না,তাকে না দেখে থাকতে পারবে না,তার সাথে কথা না বলে থাকতে পারবে না।তার একটু ইগ্নোরে তুমি অনেক বেশি কষ্টে পাবে।এমন একটা মূহুর্ত প্রতিটি ভালোবাসার সম্পর্কে হয় যখন তুমি বার বার ভাব্বে না এবার যদি সে ক্ষমা না চায় রাগ না ভাঙ্গায় আমি তার সাথে কথা বলবো না কিন্তু না দিনশেষে তাকে ছাড়া তুমি থাকতে পারবে না।যদি কখনো ঝগড়া হয় ধোরো তুমুল ঝগড়া হলো তুমি হয়তো রেগে বাপের বাড়ি চলে গেলে যে না আর তার সংসার করবে না।দুইদিন পর যখন সে তোমাকে আনতে যাবে দেখবে রাগ নেই তুমি আবার ফিরে আসবে।যদি রিলেশনে থাকো ঝগড়ার ওই মোমেন্টে তুমি ব্রেকাপের কথা চিন্তা করবে কিন্তু পরিশেষে যখন রাগ চলে যাবে তুমি নিজেই ভাব্বে এইটুকুর জন্য তাকে আমি ছাড়তে চেয়েছিলাম?বড্ড পাগল তো আমি?এই আমাকে আর উৎসকে দেখো না। উৎস কতো অপমান করলো একবার গায়ে হাত তুলল পেরেছি তাকে ছাড়া থাকতে?ঠিকি সে ফিরিয়ে আনতে গেলে ফিরে এসেছি।এগুলা কি অনেকটা জোয়ার-ভাটার মতো হলো না?নদীতে জোয়ার-ভাটার পরে দেখবে নদী আবার তার আপন গতিতে চলছে।ভালোবাসায় ও ঝগড়া, মান-অভিমান হওয়ার পর ও আবার আগের মতো ভালোবাসায় চলবে।এজন্য আমার কাছে ভালোবাসা মানে জোয়ার-ভাটা…এইটুকু বলে নিরুপমা থামে।
ওই মুসকান বোধ হয় কাঁদছে আমি আসি তুমি থাকো কেমন?
নিরুপমা রুম ত্যাগ করল।প্রেমা তখন ভাবতে থাকে “আসলেই ভালোবাসার সংজ্ঞা বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন রকম।ভালোবাসা কত অদ্ভুত তাই না?কারোর কাছে জোয়ার-ভাটা তো কারোর কাছে অর্থহীন তার কাছে কোনো সংজ্ঞাই নেই।কতো রঙের ভালোবাসা দুনিয়াতে।দুনিয়া বড় আশ্চর্যজনক এক স্থান।
কথা গুলো ভেবে প্রেমা হাসে।

চলবে!!!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে