এবং_স্ত্রী
#পর্ব_১১
#Jannatul_Ferdos(Esporshi Espriha)
বাইরের শীতল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।প্রচন্ড শীত করছে নিরুপমার। হঠাৎ করে এমন ঝড় কেন এলো বুঝতে পারছে না নিরুপমা। সে বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছে।উৎস কি এখনো ছাদে?এই বৃষ্টিতে ভিজলে তো তার ঠান্ডা লেগে যাবে।সে কি যাবে উৎসকে ডাকতে?দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছে নিরুপমা। তার ভাবনার পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে উৎস রুমে প্রবেশ করে।কিছু না বলেই ওয়াশরুমে প্রবেশ করে উৎস।নিরুপমা গিয়ে তাওয়াল বের করে ওয়াশরুমে দরজা নক করে।
“উৎস তাওয়ালটা নিন।
উৎস কোনো কথা না বলে দরজাটা হালকা খুলে তাওয়াল নিয়ে আবার দুম করে দরজা আটকে দেয়।
নিরুপমা পানি পড়ার শব্দ পায়।উৎস হয়তো শাওয়ার নিচ্ছে।
ওয়াশরুমে পানি ছেড়ে উৎস নিচে বসে হাটু গেড়ে বসে আছে।দুমুখ হাটুতে গুজে কাঁদছে সে।তার এতো যন্ত্রণা কেন সে বুঝতে পারছে না।অরিত্রাকে হারানোর ব্যথা নতুন করে জেগে উঠায়?নাকি নিরুপমাকে অযথা এতো অপমান, লাঞ্চনা অবহেলার করায় সে অনুতপ্ত? মাথার উপরে ঝিরি ঝিরি পানি পড়ছে।উৎস কেদেই চলেছে।তার কেমন কানি অসহ্য কষ্ট হচ্ছে।
নিরুপমা ওয়াশরুমের বাইরে পায়চারি করছে।২ ঘন্টা হয়ে গেছে উৎস বের হই নাই।নিরুপমা ভয়ে ডাকতে ও পারছে না।উৎস ওয়াশরুম থেকে বের হতেই নিরুপমার মুখোমুখি হয়। সে পাশ কেটে যেতে গেলে নিরুপমাও সেদিকে যায়।মুলত সে উৎসকে যাওয়ার রাস্তা দিতে চেয়েছিল।এরপর উৎস অন্যদিকে যেতে লাগলে নিরুপমা ও সেদিকে যায়।কাকতালীয় ভাবে দুজনের বার বার একি দিকে যাচ্ছে।নিরুপমা এবার দাঁড়িয়ে উৎসকে যেতে দেয়।উৎসকে দেখে বোঝা যাচ্ছে খুব কেঁদেছে।ফরসা মুখটা লাল হয়ে গিয়েছে।চোখ মুখ ফুলে গিয়েছে।নিরুপমার বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠে।মানুষটাকে কি সে বেশিই বলে ফেলেছে?চড়টা মারাটা কি উচিত হয় নি?আমি হয়তো নিজেকে তার জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেখতে পারতাম।সে তো ভুল না।আজ আমি উৎসকে সে ভালোবাসি।উৎস যদি তার জীবনে না থাকে ৩ মাসের মধ্যে কি সে কাউকে ভালোবাসতে পারবে?চাইলেই কি উৎসকে সে ভুলে যেতে পারবে?এই কথা গুলো হয়তো তার আগে ভাবা উচিত ছিল।কিন্তু পরোক্ষনেই তার মনে ভাবনা আসে উৎস তাকে ভালোবাসতে না পারে অন্তত সম্মানটুকু তো দিতে পারত?এতো কেন খারাপ ব্যবহার করতো সে?সে যে একটা মানুষ সেই মানুষ বলেই গন্য করে নি উৎস।তার জন্য এগুলা প্রাপ্য।যে দহনে সে জ্বলেছে সেই দহনে উৎসকে ও জ্বলতে হবে।
“নিরুপমা
নিরুপমা একটু কেঁপে উঠে।সে এতোক্ষণ গভীর ভাবনায় ছিল।উৎসের ডাকে সে বাস্তবে ফিরে আসে।উৎস কখনো এমন সুন্দর করে তাকে ডাকে নি।কেমন জানি এক শুভ্র ভালো লাগা কাজ করছে।
” হ্যা বলেন
“আজ মুসকানকে নিয়ে তুমি একটু অন্য রুমে ঘুমাবে?আমি একটু নিরিবিলি ঘুমাতে চাই।মুসকানতো রাতে অনেকবার কেঁদে উঠে।আমি নিজেই অন্যরুমে ঘুমাতাম কিন্তু এই রুমটা আমার অনেক আপন আজ এই রুমটাই আমার একা থাকতে ইচ্ছা করছে।প্লিজ?
উৎসের এমন ম্লান সুর ভালো লাগছে না তার।
” আচ্ছা আমি প্রেমার রুমে গিয়ে মুসকানকে নিয়ে থাকব।ও কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলব আপনার শরীরটা একটু খারাপ এজন্য।
উৎস আর কিছু বলে না।চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে।মুখটা কেমন ম্লান হয়ে আছে।
মুসকান প্রেমার কাছে আছে।নিরুপমা আলো নিভিয়ে রুম থেকে প্রস্থান করতে গেলেই উৎসের ফোনে ফোন আসে।নিরুপমা ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে নিরুপমা বড় ননোদ উর্মি কল করেছে।উর্মি উৎসের ছোট আর প্রেমার বড়।কিন্তু নিরুপমার থেকে উর্মি বয়সে বড় হওয়াই নিরুপমা উর্মিকে আপু বলে।নিরুপমা ফোন রিসিভ করে সালাম দেয়
“ওয়ালাইকুম আসসালাম। ভাবি বলছো?
” হ্যা আপু।কেমন আছো
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তোমরা কেমন আছো?
” আলহামদুলিল্লাহ।
“সেদিন তুমি সকাল সকাল বের হয়ে গেলে বিধায় তোমাকে আর বলা আসা হলো না।আসার পর থেকেই এতো বিজি ছিলাম যে কল দেওয়া হয় নাই।
” না আপু ব্যাপার না।আমার উচিত ছিল তোমাকে কল দেওয়া।কিন্তু বুঝোই তো মুসকানকে নিয়ে সারাদিন খুবই খাটনির উপর দিয়ে যায়।
“আরে ঠিক আছে।আচ্ছা ভাইয়া কোথায় ওকে দাও তো
” তোমার ভাইয়া তো ঘুমোচ্ছে
“এতো তাড়াতাড়ি?
” আপু কয়টা বাজে দেখেছো?সাড়ে ১১ টা
“অহো আমার একদমই খেয়াল ছিল না।আচ্ছা আমি কাল কল করবোনে।মুসু কি করে?
” ও প্রেমার কাছে হয়তো ঘুমোচ্ছে
“আচ্ছা রাখি ভাবি খোদাহাফেজ
” খোদাহাফেজ।
নিরুপমা ফোনটা রেখে প্রেমার রুমে চলে যায়।প্রেমা মুসকানকে কোলে নিয়েই আধ শোয়া হয়ে ঘুমিয়ে আছে।
নিরুপমা আস্তে ডাক দেয় তাকে..
“প্রেমা এই প্রেমা
” উহ হু ভাবি এসেছো
“এভাবে কেন ঘুমিয়ে আছো?আমাকে ডাক দিলেই পারতা
” ডাকতে গিয়েছিলাম ভাবি দেখলাম ওয়াশরুমের বাইরে চিন্তিত হয়ে পায়চারি করছো। এজন্য আর ডাকি নাই হয়তো ভাইয়ার সাথে কিছু হয়েছে এটা ভেবে।
“আরে না কিছু হয় নাই।আজকে আমি তোমার সাথে ঘুমাবো।
” কিন্তু কেন?
“তোমার ভাইয়ের শরীরটা একটু খারাপ। মুসু তো রাতে কেঁদে উঠে ওনার ঘুমোতে কষ্ট হবে।
” সেকি কি হয়েছে?
“না তেমন কিছু না। একটু মাথা ধোরেছে।
” তাহলে মুসু আমার কাছে থাক। ভাইয়ার কাছে যাও তুমি
“না সমস্যা নেই।আসো ঘুমোই।
প্রেমাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই নিরুপমা মুসুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে।অগ্যতা প্রেমা ও শুয়ে পড়ে।রাত বাড়ছে নিরুপমার চিন্তা বাড়ছে।বার বার এ কাত ও কাত হচ্ছে কিন্তু তার ঘুম আসছে না।উৎসের জন্য খুব বেশি চিন্তা হচ্ছে।মানুষটা ঠিক আছে তো?ঘড়িতে ১টা বেজে ১২ মিনিট। নিরুপমা খুব সর্তকভাবে উঠে চুপি চুপি উৎসের রুমে যায়।উৎসকে দেখে তার স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না।কাঁপতেছে খুব।নিরুপমা শরীরে হাত দিয়ে দেখে শরীর প্রচন্ড গরম।কপালে হাত রাখতেই চমকে উঠে।উৎস জ্বরে ফুটে যাচ্ছে।খুব বেশি জ্বর এসেছে।নিরুপমা দ্রুত করে জলপট্টি নিয়ে আসে।উৎসকে জলপট্টি দিতে থাকে।নিরুপমার হাতের ছোঁয়া পেয়ে উৎস হাত আঁকড়ে ধোরে আর পাগলের মতো বলতে শুরু করে…
” অরি তুমি এসেছো?আমি জানতাম তুমি আসবে।অরি আমি কি খুব খারাপ বলো?আমি যে নিরুপমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে চাই না কিন্তু করে ফেলি।তুমি ভালো করেই জানো আমি তোমার প্রতি কতোটা আসক্ত। কতোটা ভালোবাসি তোমাকে।তোমার জায়গাই অন্য কাউকে সহ্য করতে পারি না অরি।কিন্তু ওই মেয়েটার ও তো দোষ নেই।জানো ও ঠিক তোমার মতো করে মুসকানকে ভালোবাসে।তুমি থাকলে যেভাবে মুসকানকে ভালোবাসতে।অরি ফিরে আসো প্লিজ।তোমাকে ছাড়া আমার অনেক বেশি কষ্ট হয়।আমি নিরুপমাকে ভালোবাসতে পারব না।কিন্তু আরেক মন বলে একটা বার তাকে সুযোগ দিয়ে দেখি।কিন্তু পারি না।তখন মনে হয় ও যদি আর ৫/১০ টা সৎ মায়ের মতো হয় তখন?তখন তো আমার মুসুকে ও আর ভালোবাসবে না।কিন্তু তাও একটা বার সুযোগ দিতে চাই কিন্তু আমি যে তোমাকে ভুলতে পারি না।কিভাবে সুযোগ দিব বলো?
ঘুমের ঘোরেই উৎস এসব প্রলাপ বকতে থাকে।নিরুপমা শুধু ভাবছে একটা মানুষ এতোটা কিভাবে ভালোবাসতে পারে?নিরুপমা উৎসের দিকে তাকিয়ে ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমের রাজ্যে পাড়ি দেয়।
চলব!
এবং_স্ত্রী
#পর্ব_১২
#Jannatul_Ferdos
খুব ভোরে উৎসের ঘুম ভাঙ্গে।মাথাটা কেমন ভাড় ভাড় লাগছে।পাশে তাকিয়ে দেখে নিরুপমা নিচে বসে বিছানার উপরে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে।উৎসের মাথায় এখনো জলপট্টি দেওয়া।উৎসের ভিতরে অনুতপ্ত বোধটা চড়া দিয়ে উঠেছে।যে মেয়েটাকে সে এতোটা অপমান করলো সেই মেয়ে সারারাত জেগে তার সেবা করেছে।অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছে।মেয়েটার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।নিরুপমার ঘুম ভাঙ্গতে দেখে উৎস আবার ঘুমের ভান করে।নিরুপমা উঠে উৎসের কপালে হাত দিয়ে দেখে জ্বর নেই শরীরে।মাথা প্রচুর ব্যথা করতেছে।রাতে ঘুম হয় নাই।তাই সে আর বসে না থেকে প্রেমার রুমে যায় একটু ঘুমিয়ে নেবে।
নিরুপমা যেতেই উৎস উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়।শরীরটা এখন ও দুর্বল। কালকে বৃষ্টিতে ভেজার জন্য বোধ হয় জ্বর এসেছে।ফ্রেশ হয়ে আবার শুয়ে পড়লো।এক হাত কপালে রেখে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে উৎস।চোখের কোনা দিয়ে নোনা জল গড়িয়েছে পড়ে।তার মনের ভিতরে কেমন জানি করছে।মন চাচ্ছে নিরুপমাকে সুযোগ দিতে কিন্তু আবার মনে পড়ে না তাকে সুযোগ দিলে যদি মুসকানকে অবহেলা করে?কি করবে উৎস বুঝতে পারবে না।নিজেকে খুব অসহায় লাগছে তার।
সকাল ৮ টা বাজে।নিরুপমা এখনো ঘুমোচ্ছে।প্রেমা গিয়ে তনিমা বেগমকে বলেছেন নিরুপমাকে যেন না ডাকে।প্রেমা ভালো করেই জানে নিরুপমা কাল উৎসের রুমে ছিল।নিরুপমা উঠে গেলে প্রেমার ঘুম ভেঙ্গে যায় আর সে নিরুপমার পিছনে গিয়ে দেখতে পায় উৎসের জ্বর আর নিরুপমা সেবা করছে।সে একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে তার ভাই নিজের ভালো নিজে বুঝতেছে না।
সকালের নাস্তা করতে বসেছি নয়ন রাহমান,পারুল বেগম,লতিফ আর ঝুমুর। নিরুপমাকে না দেখে নয়ন রাহমান জিজ্ঞেস করলেন..
“নিরুকে দেখতাছি না সকাল থেকে
” রাতে উৎসের জ্বর ছিল।রাত জেগে ওর সেবা করেছে তো একটু ঘুমাচ্ছে…তনিমা বেগম প্রবীর খানকে ভাত দিতে দিতে বললেন।
“সেকি জামাইয়ের জ্বর আইলো কেমনে?
” বলতে পারি না ভাই।প্রেমা উৎস উঠলো?
“হ্যা আম্মু আসতেছে বললো
” খাবার দিয়ে আসতাম গিয়ে
“বলেছিলাম ও বললো যে ও নিজেই আসবে
” ঠিক আছে
খাওয়া দাওয়া শেষ করে পারুল বেগম পান চিবুতে লাগলেন।এই বাড়ি থেকে এতো সহজে তিনি যেতে নারাজ।কিন্তু বলতে ও পারছে না।কিন্তু এখন একটা কারন পেয়েছেন তিনি।
“বলছিলাম ঝুমুরের বাপ জামাই তো অসুস্থ আমরা বিকেলে যাই গা?
” তুমি কি লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছো?জামাই বাড়িতে নিজে সেধে থাকব?
“আহা লজ্জার কি হলো গো । জামাইডা অসুস্থ মনডা তো চাইতেছে না যাই গা
” তোমার থাকতে ইচ্ছে হলে থাকো আমি থাকতে পারুম না
নয়ন রাহমান উঠে চলে গেলেন।পারুল বেগম তখন মুখ বাকা করে বললেন-
“যা যা আমি যাইতাম না। নিরুপমার ঘর না ভাইঙ্গা যাইতাম না আমি।বড় ঘরে বিয়া কইরা আছে ভাবছিলুম আমারই লাভ হইবো কিন্তু বেয়াদব মাইয়াডা আমারে গুনে না।
নিরুপমা ঘুম ভাঙ্গে ১০ টার দিকে।এতোক্ষণ মুসকানকে প্রেমা সামলিয়েছে।নিরুপমা উঠে ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নেয়।এরপর একবার উৎসের রুমে উঁকি মারে উৎস ঘুমাচ্ছে।মুখটা কেমন মলিন হয়ে আছে।তখন আচমকা নিরুপমা হাতে টানে খায়।পারুল বেগম তাকে হেঁচকা টান দিয়েছে।
” আহ কি করছো মা আর একটু হলেই তো পড়ে যেতাম
“আহালো তোর তো ঘুম যায় না।বলি বাড়ি যামু না নাকি?তোর লাইগা বেলা ১০ টা অব্দি বইয়া আছি
” তোমারে কেউ বসে থাকতে বলছে?চলে যেতে
“আহ কথা তো শুনবি
” কি বলবা বলো কাজ আছে আমার
“শোন এইদিকে আয়…তিনি নিরুপমাকে একটু আড়ালে নিয়ে গেলেন
” বলো
“জামাই তো তোরে ভালোবাসে না আমি জানি।বিয়ার প্রথমের থেইকাই তো রাজি না।আসার পর ও দেখলুম তোর লগে কথা কয় না।কাল তো তোরা আলাদা রুমে ও ঘুমালি দেখলাম
” না জেনে কথা বলো না মা।কাল উনি অসুস্থ ছিল তাই মুসকানকে নিয়ে অন্যরুমে ছিলাম
“তুই বাপু যতো যাই কইস না ক্যান জামাই কিন্তু তোর আঁচলের তলায় নাই।পোড় কপালি তোর কপালে তো জামাইয়ের সোহাগটা ও নাই।আমি বলি কি শোন একজন হুজুর আছে।তাবিজ দেয় ৭ দিনের মধ্যে জামাই বশ হয়ে যায়।তখন তোরে ছাড়া কাউরে চিনবো না দেহিস।যতো যাই হোক তোর কি জামাইয়ের আদর, ভালোবাসা,সোহাগ পাইতে মনডা চায় না?হুজুরের তাবিজে মেলা কাজ দেয়
নিরুপমার এতোট রাগ হচ্ছে যে তার শরীর কাঁপছে।এই মহিলা যে এতোটা বদ তার ভাবনা বাইরে ছিল।ইবলিশ শয়তান ও বোধহয় তার কাছে হার মানবে।সে তাকে উৎসকে তাবিজ করার কথা বলছে?
” তুমি আর একটা কথা ও বলবে না।ফালতু মহিলা। না তুমি একজন মা হওয়ার যোগ্য আর না তুমি একজন নারী হওয়ার যোগ্য।আমার স্বামীর ভালোবাসা আমি পাই কি না পাই বা কিভাবে পাই তোমাকে কেউ বলছে আমার ব্যাপারে নাক গোলাইতে?নাক গোলাইতে গোলাইতে তো একবারে নাকই নাই করে ফেলেছো।বদ মহিলা কোথাকার বের হও আমার বাসা থেকে।তোমার এই শয়তানি মুখ কখনো দেখাবে না আমাকে।আর আমার বাড়িতে ও আসবে না তুমি।উৎস বা মুসকানের থেকে ও দূরে থাকবে।
“তুই বেশি বাড়াবাড়ি করতাছোস নিরুপমা
” বাড়াবাড়ির দেখছোটা কি হ্যা?ফাজিল মহিলা।তোমাকে মা বলে আর কতো সম্মান করবো হ্যা?তুমি কি আদৌ সম্মান পাওয়ার যোগ্য?
নিরুপমা আর পারুলের চিল্লাচিল্লিতে বাড়ির বাকি সদস্য ছুটে আসে।পারুল বেগম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে।ভাগ্যিস প্রবীর খান বাড়িতে নেই তাহলে আজ আর সম্মান বলতে কিছুই থাকতো না।নিরুপমা রাগে কাঁপতেছে।প্রেমা আর তনিমা বেগম তাকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছেন।
“নিরু কি হয়েছে তোর মায়ের সাথে এমন কেন করছিস?
” কি হয়েছে তুমি তোমার পেয়ারের বউয়ের কাছে জিগাও।আমার সংসার ভাঙ্গতে এসেছে সে।তোমার বউ যেন আর কখনো আমার বাড়ি মুখো না হয় বলে দিলাম।অসভ্য মহিলা।
“মাকে কেউ এভাবে বলে নিরুপমা… তনিমা বেগম কিছু ধমক দিয়ে বললেন?
” কে মা আম্মু? এই মহিলা?এই মহিলা ডাইনির থেকে ও অধম। ছোট থেকে আমাকে তিলে তিলে মারতে মারতে এসেছে।আমার সুখ কখনোই তার সহ্য হয় নাই আজ ও হচ্ছে না।ওনাকে আমার চোখের সামনে থেকে সরাও।
নিরুপমা তনিমা বেগমকে জড়িয়ে ধোরে কান্না করতে থাকল।
নয়ন রাহমান পারুল বেগমকে নিয়ে যান। মহিলা কিছুতেই যাবে না গালিগালাজ করতেই আছে।নয়ন রাহমান তাকে জোর করে উৎসদের বাসা থেকে বের হয়।
চলবে!!