#এক_বৃষ্টির_দিনে
#রাবেয়া_সুলতানা
#৪
___ সকাল বেলায় আয়ানের চোখে সূর্য্যের আলো পড়াতেই আয়ানের ঘুম ভেঙ্গে গেলো।রাতের কথা মনে পড়তেই তাড়াতাড়ি রুমে গিয়ে দেখে তানিশা নেই।তানিশাকে না দেখতে পেয়ে আয়ান ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
__এইদিকে তানিশাকে রান্নাঘরে দেখে আয়ানের মা অবাক হয়ে বললো
আয়ানের মা -তানিশা! রান্নাঘরে আসতে কে বললো তোমাকে? যাও রুমে যাও।
তানিশা -মা কিচ্ছু হবেনা। আমি শুধু চা বানাবো সবার জন্য।আর আপনাকে হেল্প করবো।
আয়ানের মা -তানিশার কথা শুনে আবেগময় হয়ে জানো আমি কখনওই ভাবিননি এতো লক্ষ্মী একটা বউ পাবো।আমার ছেলেটা একটু রাগী কিন্তু ওর মন অনেক ভালো। শুনো এখন তোমাকে আর কোনো কাজ করতে হবে না। এই ধরো আয়ানের জন্য চা নিয়ে যাও।
তানিশা -ঠিক আছে আমি চা দিয়েই আসছি।
আয়ান ফ্রেস হয়ে এসে দেখে ঘোমটা দিয়ে তানিশা চা হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
আয়ান -আরে আপনি কে এই রুমে কি করছেন? আমাকে না বলে এই রুমে ঢুকেছেন কেন?
তানিশা -চুপ করুন তো। নিজে কাল বিয়ে করেছে আজ বলছে আমি কে? নেকামি দেখে আর বাঁচিনা। এখন থেকে এই ঘরে আমার সমান অধিকার।
আয়ান -ছিনবো কি করে যে ঘোমটা দিয়ে এসেছেন। আমার কাছে ঘোমটা দিয়ে আসার কি আছে?
তানিশা -আপনার তো আমার মুখ দেখতে ভয় পান।যদি প্রেমে পড়ে যান।
আয়ান -তানিশার কথা শুনে হেঁসে বললো আমি যারতার প্রেমে পড়িনা।আর আপানার মুখ দেখলে কি সবাই প্রেমে পড়ে যায়।তাহলে ঘোমটা দিয়েই থাকুন।কারণ বলাতো যায় না কে কখন আপনার প্রেমে পড়ে যায়।আর আমার প্রেমের দরকার হবে না। জীবনে একজনের প্রেমে পড়ে সবকিছু শেষ হয়ে গেলো।
তানিশা -আর কারো প্রেমে পড়ার দরকার নাই।আমার প্রেমে পড়লেই হবে।এই নিন চা,খেয়ে নাস্তা করতে আসুন।আর হ্যাঁ বাজে অভ্যাস গুলো ছেড়ে দিবেন।
আয়ান -আমি আবার কি করলাম?
তানিশা -কাল থেকে খালিপেটে চা খাওয়া যাবে না আমি বলে দিলাম।
আয়ান -আমি আপনার কথা কেন শুনবো?
তানিশা -শুনতে হবে কারণ আমি আপানার বউ। কথাটা বলেই তানিশা রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
__আজ ১ মাস হয়ে গেলো তানিশা কে এই বাড়ির সবাই অনেক ভালোবেসে ফেলেছে শুধু আয়ান ছাড়া, আয়ান তানিশাকে ভালোবাসে কিনা সে জানে না কিন্তু তানিশাকে তার ভালোলাগে।
তানিশা সব কথায় আয়ান মেনে চলার চেষ্টা করে।আয়ান মনে মনে ভাবছে তানিশাকে সে মেনে নিবে।ককিন্তু কিভাবে তানিশাকে বলবে সে ভেবে পাচ্ছিলোনা।কারণ এখনো তানিশার মুখ দেখেনি।
কথা গুলো ভাবতে অভ্র এসে বললো অফিসে এসে কি বউরে কথা ভাবছিস।ভাব ভাব? এতো সুন্দরী বউ রেখে কি আর অফিসে মন বসে।
আয়ান -বউরে কথা ভাবছি এইটা ঠিক বলছিস।কিন্তু সুন্দর না কালো তা তো আমি জানি না।
অভ্র -আচ্ছা তুই এইরকম কেন বলতো।আমি যদি হতাম পুরোনো সব কিছু ভুলে নতুন করে শুরু করতাম।
আয়ান -ভাবছি আমিও তাই করবো।তানিশাকে তার স্বামীর অধিকার দিবো।
তবে আজ না কাল ওর জন্য কিছু gift কিনে তারপর বলবো।
অভ্র -তুই যা ভালো মনে করিস।
__আয়ান বাড়ি ফিরে এসে দেখে তানিশা রুমে নেই। অন্য কোনো রুমে আছে ভেবে আয়ান ফ্রেশ হতে গেলো।ফ্রেস হয়ে এসে দেখে তানিশা এখনো রুমে আসেনি।আয়ান তার মাকে ডাকতে ডাকতে ড্রইং রুমে এসে দেখা তার মা বসে ফোনে যেন কার সাথে কথা বলছে।
আয়ান -মা! তোমাকে এতো করে ডাকছি শুনো নাই।
আয়ানের মা -শুনবো কি করে আমি তো তানিশার সাথে ফোনে কথা বলছিলাম।
আয়ান -তানিশার সাথে মানে? ও কোথায় গেছে?
আয়ানের মা -বিয়ের পরতো ও তেমন বাপের বাড়িতে যাই নাই।এখন ওর বাবা অসুস্থ তাই তানিশাকে পাঠালাম ওই বাড়িতে কয়েক দিন থেকে আসতে।
আয়ান -ও তো আমাকে একবার জন্যও বললো না।
আয়ানের মা -আমি মানা করেছি তোকে না বলার জন্য।তুই তো মেয়েটাকে সহ্যই করিস না।( হঠাৎ আয়ানের মা জোরে একটা হাঁসি দিয়ে) আ,,য়া,,,ন,,, তোর কি তানিশার জন্য কি মন খারাপ হচ্ছে।তার মানে আমার ছেলে তানিশাকে ভালোবেসে পেলেছে।
আয়ান -মা তুমিও না,আমি এমনিতেই বলছিলাম আর তুমি কত কিছু ভেবে নিলে।বলেই আয়ান রুমে চলে গেলো।
আয়ানকে চলে যেতে দেখে ফোনটা আবার কানে নিয়ে আমি তোকে বললাম না আমার ছেলে তোকে ভালোবেসে ফেলেছে।এইবার তো সব শুনলি।আমাদের প্লানটা মনে হয় কাজে লেগেছে।
তানিশা -মা! আমার খুব ভয় হচ্ছে আয়ান যদি জানতে পারে আমারা এইসব করেছি দুইজন মিলে তাহলে ভাবতে পারছেন কি হবে?
আয়ানের মা -তুই চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।আর শুন তুই আয়ান কে একবারের জন্য ফোন দিবিনা।না হলে ও তোকে মিস করবে না।
তানিশা -আচ্ছা ঠিক আছে।
___আয়ান রুমে এসে খুব একা লাগছিলো নিজেকে।আর এতো দিনের কথা গুলো ভাবছে।তানিশাকে সে যতই দূরে রাখার চেষ্টা করতো তোতোই সে কাছে কাছেই থাকতো।আয়ানের অনেক খেয়াল রাখতো।কিন্তু আয়ানের সামনে বেশি ঘোমটা দিয়েই থাকতো আয়ান কে রাগানো জন্য।যতোই খারাপ ব্যবহার করতাম সব কিছু হাঁসি মুখে মেনে নিতো।কেন, ওর জন্য এতো খারাপ লাগছে?যাওয়ার থেকে আমাকে একটা ফোন ও দিলোনা।ঠিক আছে আমিও দিবো না।কাল ওদের বাড়িতে গিয়ে ওকে সারপ্রাইজ দিবো।কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই আয়ান ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল বেলা আয়ান তার মায়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠলো।
আয়ানের মা -কিরে আজকে অফিসে যাবিনা?
আয়ান -না! ভালোলাগছে না,অভ্রকে বলে দিয়েছি ও সব সামলে নিবে।
সকালের নাস্তা করে আয়ান বাহিরে চলে গেলো।
এইদিকে তানিশাকে দেখতে তার ফ্রেন্ডরা এসেছে। বিয়ের পর থেকে ওদের সাথে দেখা হয়নি তানিশার।তাই আজ সবাই মিলে তানিশাদের বাসায় আড্ডা দিচ্ছে
রিয়া -(তানিশা ফ্রেন্ড) এই সবাই চলনা আজ আমারা সাবাই শপিং করতে যাই।
তানিশা প্রথমে রাজি হয়নি তারপর সবার জোরাজোরিতে রাজি হলো।
আয়ান তানিশাদের বাড়িতে যাবে তাই তানিশার জন্য শপিং করতে গেলো। অভ্রকে ফোন দিয়েছে শপিংএ তার সাথে যাওয়ার জন্য।কিন্তু অভ্র কজের জন্য আসতে পারে নাই। তাই সে একাই চলে গেলো শপিং করতে।
চলবে,,,,,,