#এক_পশলা_বৃষ্টি
#লেখনীতে-ইশরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-১৭
পরদিন সকালে সাদ এলো। একা এলো না, ওর মা রোমেলাও এলো। শোভা যা ভাবার ভেবে নিয়েছে। ওনাদের খুব আপায়্যন করলো। সাইফদের মেহমানরা সবাই ব্রেকফাস্টের পরে চলে গিয়েছিল। শুধু সাইফের মা-বাবা, সাইফ-মিলি রয়ে গেলো। মূলত সাদের জন্যই। আর সাইফদের বাসাও বেশি দূর নয়। পাশের এলাকা। যাইহোক, চা-নাস্তা সহ অন্যান্য খাবার ওদেরকে দেওয়া হলো। সাদ মনে মনে বেজায় খুশি। পরিস্থিতি ঠিকই আছে।
রোমেলা শোভার কাছে গেলেন। শোভা খুব ইতস্তত বোধ করলো। ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো। স্বামী-সন্তানের করা অন্যায় ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাইলো।
‘ শোভা মা, তুমি ওনাকে মাফ করে দিও। তুমি মাফ না করলে আল্লাহ ওনাকে মাফ করবেনা।’
‘ আমি ওনাকে মাফ করে দিয়েছি আন্টি।’
‘ আন্টি বলো না, আমাকে একবার মা বলে ডেকো তুমি। পুত্রবধূর সুখ তো কপালে জুটেনি, তোমার মতো ভালো একটা মেয়েকে হারাতে চাইনা।’
শোভা চুপ করে রইলো। রোমেলা ইতস্তত করে বলল,
‘ ইয়ে আমি আমার নাতি-নাতনিদের দেখতে পারি?’
‘ কেন নয়! আপনি তো কোনোকিছু করেননি।’
‘ বিশ্বাস করো মা, সংসারে আমি শুধু একটা কাঠের পুতুল। যার কোনো দাম নেই। আমি কখনোই এই অন্যায়টা মেনে নিতাম না। ছেলেকে নিয়ে কতশত স্বপ্ন বুনেছিলাম, ভাবিনি এমন হবে।’
রাফু আর তুতুলকে শোভা নিয়ে আসলো। রোমেলা শিশু দুটির দিকে তাকিয়ে চোখ মুছলো। জড়িয়ে নিলো বুকের মধ্যে। তাঁর নাতি-নাতনি। তাঁর বংশের প্রদীপ। রাফু মাকে জিজ্ঞেস করলো,
‘ ওনি কে আম্মু?’
‘ তোমার দাদুমা।’
‘ আমাদেরও দাদুমা আছে?’
‘ হুম, ওনিই তোমাদের দাদুমা। সালাম দাও!’
দুই ভাইবোন রোমেলাকে সালাম দিলো। ওনি মিষ্টি হেসে উত্তর দিলেন। তারপর ওদের হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিলেন। শোভা অবাক হয়ে বলল,
‘ কীসের কাগজ ওটা?’
‘ একটা চেক মা।’
‘ চেক? কীসের চেক?’
‘ আসলে আমার কিছু টাকা আছে ব্যাংকে, সেগুলো আমি আমার নাতি-নাতনিদের দিতে চাই।’
‘ ওসব লাগবেনা। আপনি এটা ফিরিয়ে নিন।’
‘ এরকম বলোনা। আমিতো তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারিন, তাই এটা তোমায় রাখতেই হবে।’
‘ আমি টাকা নিতে চাচ্ছিনা।’
‘ জানি কেন নিতে চাচ্ছোনা।’
শোভা চকিতে তাকালো। রোমেলা মৃদু হেসে বললো,
‘ ওটা সাদ বা ওর বাবার টাকার অংশ নয়। এটা আমার বাপের বাড়ির টাকা, অঙ্কটা মোটামুটিই। আমার আর ক’দিন। টাকাগুলো এমনিতেই পড়ে থাকবে ব্যাংকে।’
‘ কিন্তু..!’
‘ কোনো কিন্তু করোনা মা। কেউ না জানলেও আমি জানি তুমি আমার ছেলের কাছে কখনোই ফিরে যাবেনা। যদিও ছেলেটা আশা নিয়ে এসেছে। এখন তুমি যদি আমার মতামত জানতে চাও, তাহলে আমিও বলবো ওর কাছে ফিরে না যাওয়াটাই ভালো।’
শোভা রোমেলার কথায় অবাক হলো। মহিলাটা ভালো। শ্বাশুড়ি হিসেবে মন্দ ছিলোনা। কিন্তু ভাগ্য তাদের এক হতে দেয়নি। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো শোভা। রোমেলা রাফু আর তুতুলের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। ওনার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে বুকের ভেতর পাথর চাপা দিয়ে রেখেছেন। এই কষ্ট কাউকে দেখানোর নয়, বোঝানোর নয়।
সাদ বসার ঘরেই। ওর মনটা বড্ড উসখুস করছে। শোভা রোমেলার জন্য চা নিয়ে এলো। ঘরে এসে রোমেলার হাতে চায়ের কাপ দিলো। রোমেলা হাসলো। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলল,
‘ আমার ছেলেটা খুব খারাপ তাইনা?’
‘ হয়তো!’
‘ ওর কিন্তু এমন হবার কথা ছিলোনা। মূলত পূর্ব শত্রুতার জন্যই সাদের বাবার মনে একটা বিদ্বেষ তৈরি হয়েছিলো। জানিনা কী থেকে কী হয়ে গেলো।’
‘ এসব কথা থাক।’
‘ শোভা! তুমি কী আবার বিয়ে করবে?’
ও চমকে উঠে বলল,
‘ কখনোই না।’
‘ জীবনটাকে আরেকটা সুযোগ দিতে পারবেনা?’
‘ কখনোই না। যে সুযোগটা দিয়েছে সেটাই অনেক। এর বেশিকিছু চাইনা।’
‘ তোমার তো একটা কাঁধের খুব প্রয়োজন!’
‘ স্বামী ছাড়া নারীরা দুর্বল নয়। দ্বিতীয় পুরুষ কখনোই আসবেনা আমার জীবনে।’
এভাবেই বেশ কিছুক্ষণ কথা হলো দুজনের মধ্যে। এমন ভালো মহিলাটাকে সাদ কীভাবে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে চাইতে পারে, স্বার্থপর একটা! এভাবেই দুপুর হয়ে গেলো। শোভা শান্ত মেজাজে সবাইকে খাবার সার্ভ করে দিলো। অতঃপর যখন সেই সময়টা এলো তখন সাদ জিজ্ঞেস করলো,
‘ কী ঠিক করলে শোভা?’
‘ কীসের কথা বলছেন?’
‘ আমাদের ছোট্ট সংসার!’
‘ ওহ।’
‘ তুমি কী বলো?’
‘ এমন হবেনা।’
‘ কেন?’
‘ কারণ আমি আপনার সাথে কোথাও যাচ্ছিনা।’
সাদের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে এলো। কী বলছে শোভা? যাবেনা? ওর সাথে সংসার করবেনা?
‘ কী বলতে চাইছো তুমি?’
‘ উত্তেজিত হবেন না।’
‘ হওয়াটা কী অস্বাভাবিক নয়?’
‘ জানিনা। তবে এখন নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পারছেন আমি আপনার কাছে ফিরে না গেলে কী হবে?’
‘ বুঝতে পারছিনা।’
‘ ওয়েল! বুঝার দরকার নেই, কারণ আপনার সেই বোধ এখনো হয়নি।’
‘ তুমি কিন্তু হেয়ালি করছো!’
‘ হেয়ালি আমি করছিনা। আপনি পুতুল খেলা খেলছেন।’
‘ কী করেছি আমি?’
‘ ডিভোর্স হয়ে যাওয়া স্বত্ত্বেও আপনি কী করে ভাবলেন আমি আপনার কাছে ফিরে যাবো? মানে বুদ্ধি লোপ পেয়েছে আপনার?’
‘ শোভা!’
‘ শুনুন। মানছি আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়েছিলো, কিন্তু ডিভোর্স মানে বুঝেন তো? আমাদের আর একসাথে থাকা সম্ভব নয়।’
‘ তুমি আমাকে ভালোবাসো না?’
‘ না। যে ছেলে নিজের গর্ভধারিণী মাকে একটু সুখের জন্য বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে চায়, সেই কাপুরুরকে আমি চাইনা।’
সাদ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো।
‘ ইসলামি শরীয়ত মতে, আমি যদি আপনার কাছে ফিরে যাই তাহলে আমাকে আরেকটা লোকের সাথে বিয়ে করে ঘর করতে হবে, সেই লোকের সাথে যদি আমার ডিভোর্স হয়ে যায়। তাহলে আপনাকে আমি বিয়ে করতে পারবো। তো আপনি কী এটা চান?’
শোভার মুখে রহস্য খেলা করছে। অসম্ভব শীতল গলায় দারুণ একটা ডিসিশন।
‘ এটা বাদ দিন। আমি যদি আপনার কাছে ফিরে যাই, তাহলে আমার আত্মসম্মান খর্ব হবে। সারাজীবন আপনার কাছে ছোট হয়ে থাকতে আমি পারবোনা। আপনিই বলুন, মেয়েদের আত্মসম্মান কী এতোই ঠুনকো?’
‘ তাতে কী আসে যায়?’
‘ আমাকে দেওয়া শাস্তিগুলোর কথা মনে করুন আপনি। কী কী করেছিলেন?’
সাদ প্রথম থেকে করা সব অন্যায়ের কথা মনে করার চেষ্টা করলো। যেদিন অফিসে ফোন করে শোভা ওকে বাবা হওয়ার খবরটা দিয়েছিলো, তারপর ও কী বলেছিলো। একবাক্যে সন্তানদের বাবার পরিচয় অস্বীকার করেছিলো। টিনার মতো সুন্দরী মেয়ের লোভে পড়ে ওকে বিয়ে করেছিলো। এমনকি মৃতপ্রায় শোভাকে হসপিটালে দেখতে পর্যন্ত আসেনি। পথেঘাটে কতশত লোক শোভাকে নিয়ে ঠাট্টা করতো। রমজান সাহেব, শাফিন ওর পায়ে পর্যন্ত ধরতে রাজি ছিলো কিন্তু ও ফেরেনি। সমাজে ওদের অবস্থান এতোটাই নেমে গিয়েছিল যাতে করে কেউ ওদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। একদিন ফোন করে খবর নেয়নি। টিনাকে নিয়ে সুইজারল্যান্ড হানিমুনে গিয়েছিল। বাচ্চার হওয়ার কথা শুনে জেদের বশে ওদের কেড়ে নিতে চাইছিলো, মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলো ওই মাসুম দুটো বাচ্চাকে। ওর জন্য শোভারা ঢাকা থেকে গোপনে এসে চট্টগ্রামে আশ্রয় নিয়েছলো। এতোবছর কত কষ্ট করেই না চলেছে ওরা। আর ওর জন্য ওর বাবা-মা বৌমার সুখ পায়নি। টিনার জন্য ওর বাবা মারা গিয়েছে, মা বিধবা হয়েছে। তারপর যখন সবকিছু ঠিক হওয়ার একটা আভাস দেখা দিলো তখনই রাফুকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জঘন্যতম ষড়যন্ত্র করে বসলো। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কতকিছুই না ঘটে গেলো। এরপর কী করে ও ভেবেছিলো শোভা ওর সাথে সংসার করবে? যেখানে পাঁচ বছর আগেই ওদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে!
আজ এতোদিন পর সাদ নিজের অন্যায়গুলোর কথা মনে করে অনুতপ্ত হতে লাগলো। নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগছে। শোভা হেসে বলল,
‘ কিছু মনে পড়েছে কী?’
এই কোণের ঘরটাতে সবাই ওদেরকে একা কথা বলার জন্য ছেড়ে দিলো। এমন সময় মিলি এলো। বলল,
‘ এখন আপনিই বলুন আপনার মতো দুমুখো সাপের কাছে ফিরে যাওয়া উচিৎ?’
সাদ বলল,
‘ আমাকে ক্ষমা করা যায়না?’
শোভার অট্টহাসিতে পুরো ঘর কেঁপে উঠলো। বলল,
‘ শোভা এতোটাও দয়াহীন নয়। ও সবাইকে অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছে।’
‘ তাহলে কেন আমরা এক হতে পারবোনা?’
‘ কারণ আমার আত্মসম্মানবোধ আছে। আমি আপনার মতো দুর্বল মানুষ নই।’
‘ তাহলে কী আমার বাচ্চাদেরও তুমি দিবেনা?’
‘ আমি দেওয়া না দেওয়ার কে?’
‘ তাহলে আমি ওদের নিয়ে যাবো।’
শোভা কেঁপে উঠলেও কিছু বললোনা। চোখেমুখে স্বকীয়তা বজায় রেখে বলল,
‘ ওরা যদি আপনার সাথে যেতে চায় তাহলে নিয়ে যাবেন!’
সাদ মনে মনে স্বস্তি পেলো। কিন্তু রাফু আর তুতুলকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো যে, ওরা ওর সাথে যেতে চায় কিনা তখন ওরা চুপ করে রইলো।
কিছুক্ষণ গালে হাত দিয়ে ভাবলো। রাফু আড়ালে তুতুলকে জিজ্ঞেস করলো,
‘ বাবার সাথে যেতে চাস বোন?’
‘ আম্মু যাবে?’
‘ না!’
‘ তুমি যাবে?’
‘ তুই আগে বল।’
‘ আমরা গেলে তো আম্মু কষ্ট পাবে। তুমি শোনোনি কাল রাতে আম্মু আমাদের একটা গল্প বলেছে। আচ্ছা গল্পের ঘটনাগুলো কী আম্মুর সাথে ঘটেছে?’
‘ হুম, ছোটআম্মুও বলেছিলো আমাকে একবার।’
‘ বাবাটা ভালো না। আমি যাবোনা।’
‘ ঠিক বলেছিস। আম্মু জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছে, আমিও যাবোনা।’
‘ আমরা আম্মুকে ভালোবাসি।’
‘ হুম।’
তারপর সাদের দিকে তাকিয়ে রাফু বলল,
‘ আমরা আপনার সাথে যাবোনা। মায়ের সাথে থাকবো।’
সাদ রেগে গেলো। চিৎকার করে বলল,
‘ সব তোমাদের মা আর ওই মিলি শিখিয়ে দিয়েছে যাতে আমার সাথে না যাও!’
‘ না। আমি আর বোনই তো ঠিক করেছি আংকেল।’
রাফু যখন সাদকে আংকেল ডাকলো তখন ওর বুকে কাঁটা বিঁধলো যেন। নিজের ছেলে বাবাকে আংকেল ডাকছে এটা কতোটা কষ্টের শুধু সে-ই জানে।
‘ আংকেল আপনি আমাদের আম্মুকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। ভালো হলে কখনোই দিতেন না। আপনি ভালো লোক হলে আমরা আপনার সাথে যেতাম, কিন্তু আপনি খারাপ।’
সাদ খুব কষ্ট পেলো। কোনোমতে বলল,
‘ আমাকে ক্ষমা করে দিতে পারবেনা? বাবা বলে ডাকবেনা তোমরা?’
রাফুর মনটা শোভার মতোই নরম। বোনকে জিজ্ঞেস করলো,
‘ তুই ডাকবি?’
‘ তুমি বললে।’
রাফু সাদকে বলল,
‘ আপনাকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি বাবা।’
তুতুলও স্বগোতক্তি করলো। বলল,
‘ কিন্তু আপনার সাথে যাবোনা আমরা।’
শোভা ছেলেমেয়েদের মুখে এরকম একটা কথা শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলোনা। ভেবেছিলো ওরা বুঝি ওকে সত্যিই ছেড়ে চলে যাবে। কিন্তু ওরা ছেড়ে যায়নি। শোভা আরকিছুই না বলে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। ওর খুব কান্না পাচ্ছে। নিজেকে সামলাতে না পেরে কেঁদেই দিলো।
সাদের চোখ বেয়ে এবার পানি পড়তে লাগলো। বাবা হলে নাকি ছেলেদের জীবন পাল্টে যায়। কিন্তু সাদ পাল্টালো। অনেক পরে, যখন সময় হারিয়ে গিয়েছে। যখন ওর নিজের সন্তানরাই আর ওকে চায়না। কতোটা পাপ করলে কারো এমন শাস্তি হতে পারে। খুব সহজেই যে জীবনটা কাটাতে পারতো সুখে শান্তিতে, সেই জীবনটাই নরকের মতো হয়ে গেলো সাদের।
সাদ আর কথা বাড়ালোনা। মাকে ছাড়াই বেরিয়ে এলো শোভার বাসা থেকে। টলমল পায়ে হাইওয়ে ধরে হাঁটতে লাগলো। সন্ধ্যা নেমে এসেছে। পথঘাট চুপচাপ। ঝরঝর করে নামতে লাগলো বৃষ্টিধারা। ভিজে চুপসে গেলো ও। সাদ ভাবতে লাগলো ওর আর কী আছে এই জগতে? ও কী করছে এখানে! বেঁচে থাকার অধিকারটাও নেই ওর। জীবনে এতগুলো ভুল কীভাবে কীভাবে করে ফেললো ও? কোন মোহের টানে ছুটছিলো যে এত পাপ করে ফেলেছে? অথচ কলেজ জীবনে ও কত মানুষেরই না সাহায্য করতো। ওই শোভাটাই ওর জীবনে একটা বাদলধারার মতো নেমেছিলো। আবার হঠাৎই চলে গেলো সাদের একটা ভুলের জন্য। এক পশলা বৃষ্টির মতোন। প্রথম দেখাও হয়েছিলো এক পশলা বৃষ্টির মধ্যে। আচ্ছা, এখন যদি পথের ধুলোর সাথে মিশে যায় তাহলেও কী ওর পাপের পাহাড় ঘুচবে? জীবন এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। ওর আর ভালো লাগছেনা কিছু ভাবতে। জীবন থেকে পালিয়ে যেতে চায় ও! কিন্তু কীভাবে পালাবে? মৃত্যুর মধ্যে দিয়েই কী ওর শান্তি মিলবে?
ভাবনার মাঝেই একটা গাড়ি ওর ওপর দিয়ে চলে গেলো। ছিঁটকে একটা পাথরে বারি খেলো সাদের মাথাটা। কিছু বলার চেষ্টা করে শুধু বলতে পারলো, “ভালো থেকো আমার শুভি!” নিঃশ্বাস ঘন হয়ে এলো, বুকটা কয়েকবার উঠানামা করে একসময় স্থির হয়ে গেলো। বৃষ্টিতে ধুয়ে মুছে যেতো লাগলো কালচে-লাল রক্ত। পিষে গেলো নিথর দেহটা পথের ধুলোর সাথে। এক পশলা বৃষ্টিতে ওর জীবনটা নিঃশেষ হয়ে গেলো।
গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। কিছুই হয়তো ফুটিয়ে তুলতে পারিনি। ভুল ত্রুটি মাফ করবেন।
চলবে….ইনশাআল্লাহ!