#একথোকা_কৃষ্ণচূড়া_এবং_আপনি
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ৩৮
অন্ধকার চারদিকে অন্ধকার।এতো অন্ধকার সহ্য হচ্ছে না প্রাহির। ভয় করছে ভীষন।ভীষন ভয় করছে ওর।অন্ধকারে ভয় পেলে তো ওর আম্মু ওর কাছে ছুটে চলে আসে।তবে আজ কেন আসছে না ওর আম্মু।প্রাহি চিৎকার করতে লাগলো,
-‘ আম্মু! আম্মু্! কোথায় তুমি?আমার ভয় করছে আম্মু।তুমি তো জানো আমি অন্ধকারে ভয় পাই আম্মু!’
হঠাৎ তীব্র কিছু আলোক রশ্মি চোখে এসে লাগলো প্রাহির।প্রাহি সাথে সাথে ওর চোখে হাত দিয়ে দেয়।এতো আলো কোথা থেকে আসছে?প্রাহি পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায়।তাকাতেই ওর ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে।ওইতো! ওইটো ওর আব্বু আর আম্মু দাঁড়িয়ে।প্রাহি দৌড়ে এরশাদ সাহেব আর রাবেয়া বেগমের কাছে ছুটে গেলো।তারপর দুহাতে তাদের দুজনকে ঝাপ্টে ধরে।এরশাদ আর রাবেয়াও তাদের মেয়েকে জড়িয়ে নেন নিজের সাথে।প্রাহি কাঁদো কন্ঠে বলে,
-‘ কোথায় গিয়েছিলে তোমরা?তোমরা জানো নাহ?আমার অন্ধকারে কতো ভয় লাগে?এতো ডেকেছি তোমাদের আমি।এতো সময় লাগলো কেন আসতে?’
এরশাদ সাহেব মেয়েকে বুক থেকে উঠিয়ে মেয়ের কপালে চুমু খেলেন।হাসিমুখে বলেন,
-‘ আমরা জানি তো আমার আম্মুটা অন্ধকারে ভয় পায়।তাই তো আমরা ছুটে এসেছি।আর সেই ব্যবস্থাই করতে এসেছি যেখানে আর কোনদিন অন্ধকার তোমাকে গ্রাস করতে না পারে।’
প্রাহি বুঝলোনা ওতোটা বাবার কথা।রাবেয়া বেগম প্রাহির গালে হাত রেখে বলেন,
-‘ তুমি আমাদের দুজনের কলিজা আম্মু।তোমার বাবা আর আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।’
প্রাহি হাসি হাসি মুখ করে বলে,
-‘হ্যা সেটা আমি জানি তো।আমিও তোমাদের খুব ভালোবাসি!’
এরশাদ সাহেব বললেন,
-‘ আমাদের ভালোবাসা তাইতো?’
-‘ হ্যা আব্বু!’
রাবেয়া বেগমের চোখজোড়া ছলছল করছে।তাও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
-‘ তাহলে তোমার আব্বু আর আমাকে ওয়াদা করো আমরা চলে গেলে তুমি একটু কাঁদবে না।তোমার কান্না যে আমাদের সহ্য হয়না মা।তুমি কাঁদবে না ওয়াদা করো।’
মুহূর্তেই প্রাহি হাসি মুখটার রঙ পালটে যায়।ভড় করে সহস্র ভয়েরা।কি বলছে কি ওর আব্বু, আম্মু।তারা কোথায় যাবে?প্রাহির চোখ ভরে আসে।কান্না ভেজা গলায় বলে,
-‘ এভাবে কেন বলছো আব্বু, আম্মু।তোমরা কোথায় যাবে না।আমি তোমাদের কোথায় যেতে দেবো না।’
এরশাদ সাহেবেরও চোখে পানি।তিনি মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন,
-‘ তা হয়না মা।আমরা যে এখন আর এখানে থাকতে পারবো না।আমরা ইহকালে আর থাকতো পারবো না।আমরা দুজন এখন উপরওয়ালা’র প্রিয় হয়ে গিয়েছি মা।আমাদের এখন তার ডাক শুনতে হবে মা। এটাই যে চিরন্তন সত্য।আমি জানি আমার মা অনেক বুঝদার সে ঠিক বুঝবে।’
প্রাহি হেচঁকি তুলে কাঁদছে।বললো,
-‘ নাহ তোমরা যাবে না।আমাকে একা রেখো যেও না আব্বু আম্মু।’
রাবেয়া বেগম প্রাহির হাত দুটো ধরে বলেন,
-‘ একা কোথায় তুমি?তোমার সাথে অর্থ আছে নাহ?তোমার আব্বু আর আমি জানি অর্থ তোমাকে কোনদিন একা ছাড়বে না।যেমনটা তোমার আব্বু আমাকে এতোটা বছর আগলে রেখেছিলেন! ঠিক সেইভাবেই অর্থও তোমাকে আগলে রাখবে আমি জানি মা।তাইতো আমরা দুজন নিশ্চিন্তে চলে যেতে পারবো।’
প্রাহি মাথা দু নাড়িয়ে না বুঝালো।কাঁদতে কাঁদতে বলে,
-‘নাহ আম্মু আব্বু আমার তোমাদের দুজনকেই লাগবে। তোমরাও আমার সাথে থাকবে।’
এরশাদ সাহেব বলেন,
-‘ আমরা চলে যাবো ঠিকই।তবে আবার আসবো।তোমার মাধ্যমে।তখন তুমি খুব খুশি হবে। ‘
প্রাহি বুঝলো না।প্রশ্ন করলো,
-‘ মানে?’
রাবেয়া বেগম এগিয়ে আসলেন।প্রাহির পেটে আলতো করে হাত ছুইয়ে দিয়ে বলেন,
-‘ আমার মাধ্যমে যেমন তুমি দুনিয়ায় এসেছো।এইবার তোমার মাধ্যমে তোমার আব্বু আর আমি আবারও আসবো।তুমি যেমন আমার গর্ভে ছিলে।ঠিক তেমনই।এইবার তোমার আব্বু আর আমি তোমার গর্ভে থাকবো।’
প্রাহির ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো।সত্যি ওর আব্বু আম্মু আবার আসবে।প্রাহি তাকালো ওর আব্বু আম্মুর দিকে।এরশাদ সাহেব আর রাবেয়া বেগম প্রাহির কপালে চুমু খেয়ে বলেন,
-‘ এবার আমাদের যেতে হবে আম্মু।আমাদের সময় শেষ।তুমি কাঁদবে না আম্মু। একটুও কাঁদবে নাহ!’
এরশাদ সাহেব আর রাবেয়া বেগম হাওয়ায় মিলিয়ে গেলেন।এইদিকে প্রাহি অস্থির হয়ে তাদের পিছন যাচ্ছে।কেঁদে কেঁদে তাদের যেতে নিষেদ করছে।একসময় চিৎকার করে উঠলো,
-‘ তোমরা যেও না আব্বু আম্মু।’
লাফ দিয়ে উঠে বসলো প্রাহি।সারা শরীর ঘেমে নেয়ে একাকার।অস্থির হয়ে গিয়েছে ও।জোড়েজোড়ে শ্বাস নিচ্ছে।এদিকে প্রাহির চিৎকারে ঘাবড়ে যায় অর্থ।এতোক্ষন ওর পাশেই বসেছিলো! চোখ লেগে এসেছিলো ওর।প্রাহির চিৎকারে ধরফরিয়ে উঠে বসে অর্থ।দ্রুত নিজের বাহুডোরে আগলে নেয় স্ত্রীকে।উদ্ধিগ্ন কন্ঠে বলে,
-‘ কি হয়েছে?চিৎকার করলে কেন প্রাহি?ভয় পেয়েছো?বলো না।কোথায় কষ্ট হচ্ছে?’
প্রাহি দুহাতে অর্থকে জড়িয়ে ধরে ধুকরে কেঁদে উঠলো।
-‘ আমার আব্বু আম্মু চলে গেছে অর্থ।চলে গেছে।আমি এতো করে বললাম তারা থাকলো না আমার কাছে।তারা কেন আমাকে একা করে রেখে চলে গেলো অর্থ।আমি কিভাবে থাকবো অর্থ।’
অর্থ’র গলা ধরে আসলো।ভীতরটা জ্বলেপুড়ে খাঁক হয়ে যাচ্ছে কষ্টে।তাও প্রাহিকে সামলানোর জন্যে বলে উঠে,
-‘ কাদেঁনা তো। কাঁদেনা।বাবা আর মা এতে কষ্ট পাবেন তুমি কাঁদলে।কে বলেছে তুমি একা আমি আছি না তোমার সাথে?’
হঠাৎ প্রাহির মনে পরলো।ওর আব্বু আম্মু ওকে কাঁদতে বারন করেছে বারবার।সত্যিই তো ওর আম্মু আব্বু এতে কষ্ট পাবেন।পরক্ষনেই আবারও মনে পরলো তারা তো বলেছেন তারা আবারও আসবে প্রাহির কাছে।প্রাহির মাধ্যমে।তারা প্রাহির গর্ভে থাকবে।চমকে উঠে প্রাহি।এতোক্ষনে বুঝতে পারলো ওর বাবা মা কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছিলো।আবারও কেঁদে ফেলে প্রাহি।অনেকক্ষন অর্থ’র বুকে পরে কাঁদলো।অর্থ থামালো না।কাঁদলে মন হালকা হয়।কিন্তু আর সহ্য করলো না অর্থ বললো,
-‘ হয়েছে তো আর কাঁদেনা।অসুস্থ হয়ে যাবে।দেখি ছাড়ো একটু অসুস্থ হয়ে যাবে।তোমার চেক-আপ করতে হবে।তোমার শরীর প্রচুর দূর্বল প্রাহি।গাইনী বিভাগের ডাক্তার ছিলেন না তখন তাই তোমার চেক-আপ করতে পারেনি।এখন বোধহয় এসেছেন তোমার জ্ঞান ফিরলে তাকে ডাকতে বলেছেন।আমি একটু ডেকে নিয়ে আসি।’
প্রাহিকে সুইয়ে দিয়ে ওর কপালে চুমু খেয়ে বেড়িয়ে যায় অর্থ।প্রাহি নিশব্দে সুয়ে চোখের পানি ফেলতে লাগলো।মনে মনে বার বার প্রার্থনা করতে লাগলো ওর বাবা মা যা বলেছেন তা যেন সত্যি হয়।কিছুক্ষন পর ডাক্তার আসলো রুমে।অর্থ বাহিরে থেকে গেলো।ভীতরে ডাক্তার প্রাহির চেক-আপ নিচ্ছেন।অর্থ’র মাথাটা থপথপ করছে।এতো এতো ঘটনা একসাথে ও আর নিতে পারছে না।একটা না একটা কিছু হয়েই যাচ্ছে ওদের সাথে।প্রাহি একটু ঠিক হলে কাল রাবেয়া বেগমের জানাযা দেওয়া হবে।এমনিতেই অনেক রাত হয়ে গিয়েছে তাই এই সিদ্ধান্ত।রাবেয়া বেগমকে মর্গে রাখা হয়েছে।কাল জোহর বাদে জানাযা দেওয়া হবে। অর্থ’র বারবার নিজেকে ব্যর্থ মনে হচ্ছে।ও চেয়েও পারলো না নিজের স্ত্রীর শেষ ভরসাটুকু রক্ষা করতে।কিভাবে ও চোখ মেলাবে ও প্রাহির সাথে?আজ অর্থ নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে।বাড়ির প্রতিটা মানুষ এখানেই দাঁড়িয়ে আছে।সবাই চিন্তিত প্রাহির জন্যে।রায়হানা বেগম ছেলের মুখ থেকে ওর মনের অবস্থা বুঝতে পারলেন।চোখের ইশারায় আশ্বাসবাণী দিলেন ছেলেকে যে সব ঠিক হয়ে যাবে।কিয়ৎক্ষন পর ডাক্তার বেড়িয়ে আসেন।অর্থ দ্রুত অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করে,
-‘ ডক্টর ইজ সি ওকে?’
ডাক্তার হাসি মুখে বলেন,
-‘ ইয়াহ সি’জ ফাইন।বাট শরীর খুব দূর্বল।আর মেন্টালি অবস্থায়ও ভালো না।উনাকে চিন্তামুক্ত রাখতে হবে।এই সময়ে যতোটা রিলাক্সে থাকবে ততোটাই উনার জন্যে ভালো।আর এখন থেকে বেশি বেশি করে খাওয়াবেন আপনার স্ত্রীকে।তার শরীর কিন্তু ভীষন দূর্বল।’
অর্থ সব বুঝলেও।একটা জিনিস বুঝলো না।তাই জিজ্ঞেস করলো,
-‘ এই সময় মানে ডক্টর বুঝলাম?আমার ওয়াইফের কি কিছু হয়েছে?’
ডাক্তারটি হেসে যা বললেন তার জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিলো না অর্থ।সাথে পরিবারের বাকিরাও।
-‘ আপনাকে অভিনন্দন।কারন আপনার স্ত্রী মা আর আপনি বাবা হতে চলেছেন।ইনফেক্ট আপনাদের সবাইকেই অভিনন্দন।’
#চলবে__________
#একথোকা_কৃষ্ণচূড়া_এবং_আপনি
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#বোনাস_পর্ব
-‘ আপনাকে অভিনন্দন।কারন আপনার স্ত্রী মা আর আপনি বাবা হতে চলেছেন।ইনফেক্ট আপনাদের সবাইকেই অভিনন্দন।’
ডাক্তার কথাটা বলেই চলে গেলেন।তিনি যাওয়ার সাথে সাথে অর্থ থপ করে চেয়ারে বসে পরলো।বাড়ির সকলের প্রচন্ড পরিমানে খুশি হয়েছে কথাটা শুনে।কিন্তু আবার কষ্টও লাগছে রাবেয়া বেগমের জন্যে।ইসস,নাহ পারলো মেয়ের বিয়েটা দেখে যেতে না পারলো মেয়ের ঘরের সন্তানদের জন্ম দিতে।একদিক সুখ তো আরেকদিকে দুঃখ।অর্থকে বিধস্ত দেখাচ্ছে।কেমন যেন হাত পা ছেড়ে দিয়েছে ও।হেমন্ত সিক্ত চোখে ভাইকে দেখে তারপর ধীর পায়ে এগিয়ে যায় অর্থ’র দিকে।অর্থ’র কাছাকাছি আসতেই হেমন্ত বলে,
-‘ কি হয়েছে ভাই?তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?তুমি খুশি হওনি?’
অর্থ কিছুই বললো না।কেমন কেমন যেন এলোমেলো দৃষ্টিতে হেমন্ত’র দিকে তাকিয়ে উঠে দাড়ালো।ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো প্রাহির কেভিনের দিকে।হেমন্ত হাসলো।সে জানে তার ভাই কেন এমন করছে।
..
‘ আপনি মা হতে চলেছেন মিসেস প্রাহি! ‘ ডাক্তারের কথাটা যখনই কর্ণপাত হয়েছে তখন থেকে বিমূঢ় হয়ে বসে রয়েছে প্রাহি।কাঁপা কাঁপা হাতজোড়া ওর পেটে রাখলো প্রাহি।ও মা হবে।ওর মাঝে আরেকটা প্রান আছে।অবশ্য এই খবরটাতো ওর আব্বু আম্মু আগেই ওকে স্বপ্নে এসে ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছে।প্রাহির চোখ হতে টপটপ করে অশ্রুকণা ঝড়ে পরছে।প্রাহি বড়বড় শ্বাস নিয়ে নিজেকে সামলালো।নাহ কাঁদলে হবে না।তাকে এখন স্ট্রোং হতে হবে।হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে সেদিকে তাকায় প্রাহি।অর্থকে দেখে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকায় প্রাহি।অর্থ ধীরপায়ে প্রাহির কাছে এগিয়ে আসে।কাছে এসে বসে প্রাহির। তাকিয়ে থাকে প্রাহির দিকে।নিষ্পলক,নির্নিমেষ।তারপর হুট করে প্রাহিকে জড়িয়ে নেয়ে নিজের বাহুডোরে।প্রাহিও দুহাতে খামছে ধরে অর্থ’র পিট।প্রাহি স্পষ্ট টের পেলো অর্থ’র পুরো শরীর কাঁপছে।তার কিছুক্ষন পরেই ঘারে ভেজা অনুভব করলো প্রাহি।তবে কি অর্থ কাঁদছে?প্রাহি অর্থ’র চুলের ফাকে হাত গলিয়ে দিলো।ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকাবার চেষ্টা করে বলে,
-‘ কাঁদছেন কেন আপনি?’
-‘ আমি বাবা হবো প্রাহি!’ বলেই প্রাহিকে দিয়ে ওর পেটে মুখ গুজে দেয় অর্থ।কেঁপে উঠে প্রাহি।তবে কিছু বলেনা।আজ এই প্রথম অর্থকে প্রাহি কাঁদতে দেখলো।এইভাবে কাঁপতে দেখলো।অতি আনন্দে বুঝি মানুষ কাঁদে?সে জানে অর্থ এখন মুখে বলে নিজের আনন্দটা প্রকাশ করতে পারছে না।তবে প্রাহি জানে অর্থ ঠিক কতোটা খুশি হয়েছে যতোটা খুশি হলে এমন কঠিন হৃদয়ের একজন পুরুষ কাঁদে।
..
পরেরদিন রাবেয়া বেগমের জানাযা দেওয়া হয়।খুব কেঁদেছিলো প্রাহি।চেয়েও নিজেকে শক্ত রাখতে পারেনি।কাঁদতে কাঁদতে বার দুয়েক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি। শরীর এতোটাই দূর্বল হয়ে পরেছিলো যে ওকে দু’দিন হাসপাতালে ভর্তি করে রাখানো হয়েছিলো।প্রাহি এমন অবস্থায় অর্থ যেন পুরো পাগল হয়ে গিয়েছিলো।কি থেকে কি করবে ওর পুরো হুশ হারিয়ে ফেলেছিলো।অর্থ’র অবস্থা দেখে প্রাহি নিজেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলো।তবে ডাক্তার প্রাহিকে বুঝিয়েছে এই সময় এমন কান্নাকাটি,দুশ্চিন্তা করা যাবেনা।তাহলে বাচ্চা মিসক্যারেজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।প্রাহি বুঝতে পারে ডাক্তারের কথা।তাই সেদিন হতে আর কান্নাকাটি করেনি প্রাহি।ওর ভাগ্যে এইটাই লিখা ছিলো বলে ভাগ্যকে মেনে নেয় প্রাহি বিনা বাক্যে।এদিকে বাড়ির প্রতিটি মানুষ যেন বাচ্চা আসার কথা শুনে তারা নিজেই বাচ্চা হয়ে গিয়েছে।রাবেয়া বেগম চলে যাওয়ায় দুঃখতো সবার মনেই আছে।কিন্তু তাদের হাতে তো আর কিছু করার ক্ষমতা নেই।যে যাওয়ার সে চলে যাবেই।তবে যে আসতে চলেছে তাকে তো সাদরে গ্রহন করতে হবে তাই নাহ?প্রাহি তাদের এমন হাসিখুশি দেখে ও নিজেও আর এমন বিষন্ন মুখে থাকতে পারলো না।যথাসম্ভব নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো।কিন্তু রাত হলেই মা বাবার জন্যে বুকটা খা খা করে উঠে।কিন্তু অর্থ এসে ওকে নানানভাবে সামলে নেয়।আবার নিজের সন্তানের কথা ভেবেও প্রাহি নিজেকে সামলে নেয়।সে যে এখন মা হতে চলেছে।মায়েদের যে এতো ভেঙ্গে পরতে নেই।মায়েরা হয় পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি স্ট্রোং।যে নিজের সন্তানের জন্যে সব কিছু করতে পারে।সব মানে সব।
#চলবে_________
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।