#একটুখানি_সুখ
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১
“আপনি এতো রাতে আমার ঘরে কি করছেন স্বচ্ছ ভাই? কেউ দেখে ফেললে কি ভাববে? আর আমার দিকে এগিয়েই বা আসছেন কেন?আপনাকে দেখে আমার ঠিক লাগছে না। দূর থেকে যা বলার বলুন।”
কথাগুলো একনাগাড়ে বলে দম ছাড়তে গিয়েও পারল না মোহ। এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি! স্বচ্ছকে এতো রাতে নিজের বাড়িতে এবং নিজের ঘরে দেখে বিস্ময় যেন কাটছেই না তার। যেই মানুষটাকে মোহ বছরেও একবার তার বাড়ির আশেপাশেও অবধি আসে না সেই মানুষটা আচমকা তারই বেডরুমে? বিষয়টা মোহের কাছে যেমন আশ্চর্যজনক তেমনই ভয়াবহ। স্বচ্ছ ঢুলছে আর দুচোখ যেন কোনোমতে খুলে রেখেছে। স্বচ্ছকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয়ে বুকটা ধড়ফড় করে ওঠে মোহের। বেড থেকে তৎক্ষনাৎ নিচে নেমে আঙ্গুল উঁচিয়ে বলে,
“স্বচ্ছ ভাই? আর এগোবেন না আপনি। আপনার মাথায় একটুও কমন সেন্স নেই? এতো রাতে একটা মেয়ের ঘরে ঢুকে পড়েছেন। এটা যদি কারো চোখে পড়ে যায় কি ভাববে? কি হবে তখন ভেবে দেখেছেন?”
“কি আর হবে? খু…খুব বেশি হলে বি…বিয়ে দিয়ে দেবে আমাদের। তারপর কি টিপিক্যাল সংসার।”
হতবিহ্বল হয়ে পড়ে মোহ। কিসব আজেবাজে বলে চলেছে স্বচ্ছ? আর তার কথাবার্তায় এমন নির্লজ্জতা কবে থেকে এলো? মাথাটা বিস্ময়ের চোটে ভনভন করে ঘুরতে শুরু করল তার। নিজেকে কোনোমতে ধাতস্থ করে বলল,
“ছিঃ! এই মূহুর্তে বের হন। নয়ত চিৎকার করতে বাধ্য হবো আমি। প্লিজ বের হন।”
স্বচ্ছ কাঁপা কাঁপা হাতে নিজের দুচোখ কচলিয়ে মাতাল কন্ঠে বলে,
“বাট আই হ্যাভ সাম ইম্পরট্যান্ট ওয়ার্ক ইন ইউর রুম।”
“কি কাজ আমার রুমে আপনার?”
“আই ওয়ান্ট টু কিস…”
অর্ধেক কথা বলে অদ্ভুত হেঁসে তাকায় স্বচ্ছ। সে ঠিক করে তাকাতেও পারছে না। ওপরদিকে মোহ রাগ, লজ্জা এবং বিস্ময়ে চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে রইল স্বচ্ছের দিকে। এবার তার সন্দেহ হতে শুরু করেছে এটা আসলেই স্বচ্ছ তো? নাকি স্বচ্ছের মতো দেখতে অন্য কেউ। পরক্ষণেই চোখ নামিয়ে ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলল মোহ। দম আঁটকে আসছে তার। কি করবে বুঝতে পারছে না। রোবটের ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে সে। এক পর্যায়ে রাগ ও লজ্জায় লাল হয়ে ওঠে সে। মোহ এতদিন জানতো মানুষটা জঘন্য। এতোটা জঘন্য তার জানা ছিল না। বেশ কিছুটা সাহস জুগিয়ে যেই কিনা সে চিৎকার করতে যাবে তখনই স্বচ্ছ ঢুলতে ঢুলতে এগিয়ে আসে। মোহ তড়িৎ গতিতে পিছিয়ে নিজের কাবার্ডের সাথে সেঁটে দাঁড়ায়। বেড পেরোলেই কাবার্ড। স্বচ্ছ বেডের ওপারে।
স্বচ্ছ এগিয়ে আসতে আসতে মোহের ভেতরের কন্ঠস্বর যেন হারিয়ে যায়। আচমকা স্বচ্ছ বেডেই পড়ে যায়। মোহ হকচকিয়ে উঠে তাকায়। স্বচ্ছ উপুড় হয়ে পড়ে আছে। সাড়াশব্দ নেই। ভয়ে আত্মা শুঁকিয়ে এসেছে মোহের। পা টিপে টিপে গিয়ে বেডের কাছে দাঁড়ায় সে। স্বচ্ছের কোনো জ্ঞান আছে কিনা সেটা বুঝতে একটু ঝুঁকতে নিলেই স্বচ্ছ মাথা উঠিয়ে ঢুলুঢুলু চোখে তাকায়। মোহ উঠতে নিলেই এক হাতে মোহের এক হাত চেপে ধরে স্বচ্ছ। মোহের অবস্থা বর্তমানে, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। মোহ অতিমাত্রায় রেগে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“স্বচ্ছ ভাই, আপনি অসভ্যতা করছেন প্লিজ ছাড়ুন। আজকে এমন একটা দিনে কি করে পারছেন এসব? কিছুটা মানবতা তো বজায় রাখুন।”
তবুও স্বচ্ছের মাঝে কোনো রকম হেলদোল না দেখতে পেয়ে হতাশ হয় মোহ। সে স্বচ্ছের চোখজোড়ায় রক্তিম আভা দেখতে পায়। কোনোরকমে খুলে রাখা স্বচ্ছের চোখজোড়া। যেন সে স্বাভাবিক নেই। স্বপ্ন মোহের কানের কাছে এসে শান্ত গলায় বলে,
“তোমার এই ধ্বংসাত্মক সৌন্দর্য এবার আমাকেও ধ্বংস করে দিতে চলেছে। আই ওয়ার্নিং ইউ, আমি যদি ধ্বংস হয়ে যাই তোমাকেও ধ্বংস হতে হবে।”
কথাগুলো অতি শান্ত হয়ে বললেও মোহের কর্ণকুহরে হুমকি দেওয়া কথা হয়ে ঠেকল। সঙ্গে সঙ্গে নাকে এলো এক বিশ্রী গন্ধ। গন্ধটা স্বচ্ছের মুখ থেকে বের হচ্ছে। মোহের ফর্সা চোখেমুখে দেখা গেল লাল আভা। স্বচ্ছ থামল না। হাতের তর্জনী আঙ্গুল মোহের ডান গালে রাখল স্বচ্ছ। মাতাল কন্ঠে বলল,
“এইযে তোমার গোলাপি ফর্সা চেহারা, মোহনীয় মুখশ্রী, খাঁড়া নাক, ঘন পাপড়িতে আবৃত সেই হরিণীর চোখ, মাতাল করা হাসি, এতো পারফেক্ট ঠোঁটজোড়া আর…! থা…থাক পুরোটা না বলি। লজ্জা পাবে। কিন্তু তোমার সৌন্দর্যকে পুড়িয়ে ফেলতে ইচ্ছে হয় আমার। কোনদিন জানি তোমায় পুড়িয়ে ফেলব। তারপর সব ঝুট-ঝামেলা থেকে মুক্তি পাব আমি।”
চোখমুখ খিঁচে এক ঝটকায় ছিটকে দূরে সরে এলো মোহ। রাগে চেঁচিয়ে বলল,
“আপনার সাহস তো কম না স্বচ্ছ ভাই। আপনি অতি মাত্রায় বেয়াদপ একজন মানুষ। সেটা আমার জানতে বাকি নেই। আপনি আমার বাড়িতে আমারই রুমে বিনা পারমিশনে ঢুকে আসেন কি করে তাও ড্রিংকস করে? বেরিয়ে যান এখুনি নয়ত আমি কিন্তু হুলস্থুল কান্ড বাঁধিয়ে ফেলব। আপনার মতো বেয়াদপ মানুষটাকে আমি আমার বাড়িতে এলাও করব না। কিছুতেই না।”
কথাগুলো বলা শেষ করতেই মোহের নজরে আসে স্বচ্ছ বেডে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। আবার কি সে ঘুমিয়ে পড়ল? এর মানে মোহের বলা এতগুলো কথা সব জলে গেল? কত সাহস নিয়ে কথাগুলো বলেছিল সে। কথাগুলো বলার সময় তার মনে ছিল আকাশ সমান অস্বস্তি। অস্বস্তি হওয়া কি স্বাভাবিক নয়? স্বচ্ছের সাথে মোহের বুদ্ধি হবার পর একটা কথাও হয়েছে কিনা মনে পড়ে না মোহের। রাগে ফোঁস ফোঁস করে নিশ্বাস ফেলে মোহ। চোখ ভরে টলটল করতে থাকে পানি। নাক টেনে ছুট লাগায় ঘরের বাইরে।
মোহের পুরো নাম মোহ আনবীর। অনার্স ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট সে। বয়স ২১ বছর। করিম আনবীর এবং নিশাত আনবীরের একমাত্র মেয়ে হচ্ছে মোহ। মোহের বাবা খুব শখ করেই মোহের নামটা মোহ রেখেছিল। কেননা মেয়েটার মুখশ্রীতে যতটা মোহনীয় সেখানে মোহ ছাড়া অন্য কোনো নাম খুঁজে পাননি মোহের বাবা। মোহের বাবা ছিলেন একজন সফল বিজনেসম্যান। বলা বাহুল্য, মোহ সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছে। মা-বাবার আদরে, আহ্লাদে কোনো খামতি ছিল না তার। তবে গতকাল রাতেই মোহের বাবা করিম আনবীর এবং মোহের মা নিশাত আনবীরের মৃত্যু হয়েছে এক্সিডেন্ট করে। মোহের পুরো পৃথিবী বর্তমানে থমকে গিয়েছে। সে অচল হয়ে পড়েছে। তার বাবার স্পট ডেড হলেও তার মা কিছুক্ষণের জন্য বেঁচে ছিলেন। অনেক চেষ্টা করেও মাকে সুস্থ করতে পারেনি মোহ। তার মাও ফলস্বরূপ মারা যায়। সব মিলিয়ে একটা এতিম মেয়ের যেমন বিমর্ষ অবস্থা হয় ঠিক তেমনই অবস্থা তার। কোনোমতে নিজেকে সামলিয়ে রেখেছে সে। মুষড়ে গিয়েছে মোহের ভেতরটা। আজ দুপুরেই মা-বাবার শেষকার্য সম্পন্ন করা হয়েছে।
এতোক্ষণ মোহ যার সঙ্গে ঝগড়া করছিল সেই মানুষটা হচ্ছে স্বচ্ছ। আহিয়ান স্বচ্ছ তার পুরো নাম। আহিয়ান নেহাল সাহেব এবং মিসেস. রেবার একমাত্র বিগড়ে যাওয়া ছেলে। মোহের সম্পর্কে মামাতো ভাই হয় স্বচ্ছ। কিন্তু মোহ সেটা মানে না। মোহ কেন মোহের পুরো পরিবার মানে না। মোহের মা মিসেস. নিশাতের সঙ্গে স্বচ্ছের বাবা অর্থাৎ নেহাল সাহেবের সঙ্গে ছোটকাল থেকেই সম্পর্ক ভালো ছিল না। শুধু তাই নয়। নিশাতের পর আরেক ছোট বোনের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো ছিল না নেহালের। নেহাল সাহেব ছিলেন বড্ড একরোখা এবং বিগড়ে যাওয়া এক ছেলে। কেউ সামলাতে পারত না তাকে। দিনে দিনে চরম অসভ্য হয়েছিলেন নেহাল সাহেব। মা-বাবাকে অপমান করতেও ছাড়তেন না। সেই সময় থেকে ভাই-বোন অর্থাৎ নেহাল এবং নিশাতের সম্পর্ক নষ্ট হয়। নিশাত তার ভাইয়ের সঙ্গে শত্রুতা কমাতে চাইলেও নেহাল তা হয়ে উঠতে দেয়নি। নেহাল এবং তার স্ত্রী মিসেস. রেবার ব্যবহারে তিক্ত হয়ে উঠেছিল নিশাত। বুঝেছিল এদের মতো স্বার্থপর আর লোভী মানুষ দুনিয়াতে খুব কম আছে।
শত্রুতা থাকার কারণে মোহ ও স্বচ্ছের সম্পর্কটাও অদ্ভুত হয়েছে। কেউ কারো সামনে পড়লেও কখনো কথা বলেনি। মোহের মনে পড়ে না লাস্ট কোনদিন সে স্বচ্ছের সাথে কথা বলেছিল। কিন্তু হঠাৎ আজকে আচমকা মোহের রুমে স্বচ্ছকে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল মোহ। যেই ছেলেটা তার ফুপি-ফুপার শেষ জানাযাতেও উপস্থিত ছিল না সেই ছেলেটা আচমকা মোহের বেডরুমে তাও ড্রাংক অবস্থায়? মানতে অনেক সময় লাগে মোহের। মা-বাবার জন্য কাঁদতে কাঁদতে যখন মোহের চোখে ঘুম এসে পড়েছিল তখনই স্বচ্ছ হুড়মুড়িয়ে তার রুমে ঢুকে পড়ে। সেসময়ই ঘটে ঘটনাটি।
রুম থেকে বেরিয়ে নিচে এসে একটা রুমের সামনে দাঁড়ায় মোহ। কোনোরকমে কান্না আঁটকে নক করে রুমে। বেশ কিছুক্ষণ অনবরত দরজায় টোকা দেওয়ার পর খুলে যায় দরজাটি। ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন মিসেস. নিরা। মিসেস. নিরা হচ্ছে মোহের মায়ের ছোট বোন। সম্পর্কে মোহের খালামনি হন। বড় বোন চলে যাবার পর বেশ ভেঙে পড়েছেন মিসেস. নিরা। কিন্তু বোনের মেয়েকে সামলানোর জন্য এই বাড়িতে কয়েকদিনের জন্য থাকবেন উনি। মোহকে এতো রাতে দেখে খানিকটা বিস্মিত হন মিসেস. নিরা। মোহের মাথায় হাত রেখে ভয়ার্ত সুরে জিজ্ঞেস করেন,
“এতো রাতে তুই এখানে? সব ঠিক আছে তো মোহ? তুই ঠিক আছিস তো মা?”
“কি করে ঠিক থাকব মিমি?”
হতাশ হয়ে কথাটুকু বলে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে মোহ। মোহের পরিস্থিতি বুঝে মিসেস. নিরা তাকে স্নেহের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে আলতো করে পিঠ বুলিয়ে দিতেই মোহ কান্নারত অবস্থায় রাগে হিসহিসিয়ে বলে,
“আচ্ছা মিমি, মামা বা তার পরিবারের কোনো সদস্যের মনে কি দয়ামায়া নেই?”
“হঠাৎ এসব কথা বলছিস কেন?”
“কারণ আছে তাই বলছি। ওই বাড়ির সকলে কি একই রকম?”
মিসেস. নিরা কিছুটা আশ্চর্য হন। মোহকে বলেন,
“কি হয়েছে আমায় খুলে বল তো।”
মোহ কান্না থামিয়ে কোনোরকমে বলে,
“তোমার ভাইয়ের ছেলে আমার রুমে ঢুকে পড়েছে। তাও ড্রাংক অবস্থায়। আর কি করেছে আর বলেছে জানো? বলেছে যে…”
মোহ থামিয়ে দেয় নিজের কথা। লজ্জায় মিহিয়ে আসে তার মুখ। সম্পূর্ণ করতে পারে না তার কথা। মিসেস. নিরা তাড়াহুড়ো করে জিজ্ঞেস করেন,
“কি বলেছে? আর স্বচ্ছ এ বাড়িতে কেন? আগে তো কোনোদিন আসেনি!”
“আমি জানি না। তুমি উনাকে বের করো। আর আমি এটাই বুঝতে পারছি না উনাকে বাড়িতে ঢুকতে দিল কে? দারোয়ান মামা কি ঘুমোচ্ছিলেন?”
মিসেস. নিরা কি করবেন বুঝতে না পেরে মোহকে শান্ত করে বলেন,
“আচ্ছা তুই দাঁড়া দারোয়ানের সাথে কথা বল আমি উপরে গিয়ে দেখছি।”
বলে আঁচল টেনে ধীর পায়ে মোহের ঘরের দিকে হেঁটে যান মিসেস. নিরা। উনিও মোহের মতোই বেশ বিস্মিত হয়েছেন স্বচ্ছের এই ব্যাপারে। স্বচ্ছও তো এই বাড়ির কাউকে সহ্য করতে পারে না। তাহলে এই বাড়িতে কি করতে এসেছে সে?
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বাড়ির দারোয়ানকে বেশ ঝাড়ল মোহ। দারোয়ানের ভুল ছিল পেছনের গেট খোলা রাখা। করিম আনবীরের মতো একজন মানুষের মৃত্যুর কারণে অনেক ভীড় হয়েছিল মোহের বাড়িতে। তাই পেছনের গেট খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাতে পেছনের গেট লাগাতে ভুলে যাওয়ায় সেখান থেকেই বাড়িতে প্রবেশ করে স্বচ্ছ।
দারোয়ানকে বেশ ঝাড়ি দেওয়ার পর উপরে উঠে আসে মোহ। তার ঘরে ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়ে তার বেডে গা এলিয়ে উপুড় হয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকা সেই অসভ্য পুরুষটার ওপর। পরক্ষণেই রাগে-দুঃখ বেড়ে যায় মোহের। মিসেস. নিরার দিকে তাকায় সে। উনি সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন স্বচ্ছের দিকে। অতঃপর মোহের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“স্বচ্ছের ঘুম ভাঙছে না বুঝলি? আমার মনে হয় আজ রাত এখানে থাকুক। কাল সকালে চলে যাবে। অতিরিক্ত নেশা করে হয়ত ভুল করে এই বাড়িতে চলে গেছে। বেপরোয়া ছেলে বুঝিসই তো!”
“তাই বলে আমার রুমে থাকবে উনি?”
হতভম্ব হয়ে প্রশ্ন করে মোহ। মিসেস. নিরা শক্ত গলায় বলে ওঠেন,
“তাছাড়া উপায় কি? ডাক দিয়ে উঠানো তো যাচ্ছে না।”
আপত্তি করলেও হার মানতে হয় মোহকে। রেগেমেগে কটমট করে তাকায় ঘুমন্ত স্বচ্ছের দিকে। উপুড় হয়ে মোহের একটা স্কার্ফের ওপর শুয়ে অন্য হাতে স্কার্ফটা ধরে এলোমেলো হয়ে ঘুমাচ্ছে স্বচ্ছ। হালকা ফর্সা গড়নের সুন্দর এই মানুষের চেহারা দেখে মনেই হবে না লোকটা এতোটা বেপরোয়া!
বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হনহনিয়ে স্থান ত্যাগ করে সে।
চলবে…..??