#একটা_পরীর_গল্প
#সাদিয়া_আহমেদ_রোজ
#পর্ব_০৬
খোজ নিয়ে জানতে পারি মিষ্টি বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী। আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতো কিছু ভাবতে, বলতে, বা করতে পারে না ও। তবে ওর একটা ভালো গুণ হলো ও খুব সহজে সবাইকে ভালোবাসতে পারে, বিশ্বাস করে। আর সবথেকে বেশি ভালোবাসে ওর ভাইয়াকে। অভীকও তেমনই ওর কাছে সবার আগে মিষ্টি তারপর বাকি সবাই। এতোবছরের পরিচয় আমাদের অথচ আমি এটা জানি না ভেবে ভীষন লজ্জা লাগছিলো আমার। কিন্তু এখানেও আমার কোনো দোষ নেই, দোষ সব অভীকের। বাড়ি আসলে আমাকে এমনভাবে বিরক্ত করতো যে আমি দম ফেলবারও সময়টুকু অবধি পেতাম না।
সারাদিন বাড়ি ফিরলেন না উনি। রাতে এসেই ব্যাগ গোছাতে শুরু করলেন। ওনার রেকর্ডিং আছে, দেশের বাইরে যেতে হবে। কথাটা শুনে আমার পা যেন আর নড়ছিলো না। নির্নিমেষ চোখে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি দড়জার আড়ালে দাড়িয়ে। আম্মু এসে বকাবকি শুরু করে দিলেন। বিয়ের পরেরদিনই কিসের রেকর্ডিং, যাওয়া যাবে না, এই সেই। কিন্তু উনি শুনলেন না কারোর কথা।চলে গেলেন।
কিছুদিন পর আমি চলে আসি ওনাদের বাড়ি, আমার শশুড়বাড়ি। সারাটাদিন মিষ্টির সাথে থাকি। ওর সঙ্গে খেলি, খাই, ঘুমাই। কিন্তু কেন জানি না ওনাকে বড্ড মিস করি, ওনার কথাগুলোকে মিস করি। আজ বুঝতে পারছি ওনার ওই কথাগুলো আমার জন্য কতটা মধুর ছিলো। কাছে থেকে যেটা অনুভব করিনি দূরে এসে সেটা অনুভব করছি।
আমার ম্যাট্রিক পরীক্ষা শেষ হলো এভাবেই। এ বাড়ি থেকেই পরীক্ষা দিয়েছি। দুমাস পর কলেজের এডমিশন। আব্বু বলেছেন এখানকার একটা কলেজে ভর্তি করিয়ে দিবেন। সবার বচন অনুসারে, দেখতে দেখতে দুটো বছর যে কখন কেটে গেলো কেউ বুঝতে পারলো না! অথচ আমার কাছে প্রতিটা সেকেন্ড এক একটা যুগের মতো কেটেছে। অভীক ইন্ডিয়াতেই একটা কলেজেই নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। আর একবছর পর ওনার পড়ার পাঠ চুকবে! এবং উনি ফিরে আসবেন এদেশে। এ ক’বছরে উনি একবারও আমার সঙ্গে কথা বলতে চাননি। আমিও মুখ ফুটে কিছু বলিনি। এখানে সবাই আমাকে আব্বু আম্মুর মেয়ে বলেই জানেন। আব্বু মানা করেছিলো অভীকের বউ’য়ের পরিচয় দিতে। কেন মানা করেছিলো সেটা আজ অবধি জানি না আমি। মিষ্টি আগের থেকে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। আমাকে ছাড়া ওর কোনো কাজই হয় না। আগে ভাবতাম দীপ্তি ছাড়া আমাকে কেউ বোঝে না কিন্তু আজ আনন্দিত হই এটা ভেবে যে মিষ্টি দীপ্তির থেকেও আমাকে বেশি ভালো করে বুঝতে পারে।
চেয়ারম্যানের ছেলে রহমত সাহেব, যার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিলো তার কথাও পরে জানতে পেরেছিলাম। সে নাকি আমাদের বাড়ির শরবত খেয়ে পেট খারাপের জন্য বাথরুমে ঢোকে। এরপর তার আর কিছু মনে নেই। দুদিন পর বিকালে ওনাকে আলের পাড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কেউ বা কারা বেধরম পিটিয়েছে তাকে। ব্যাপারটা কিছুটা রহস্যে ঢাকা পড়ে আছে। কিছু প্রশ্ন আছে তাকে ঘিরে, ১. কারা নিয়ে গিয়েছিলো তাকে? ২. কেন নিয়ে গিয়েছিলো? ৩. আমার বিয়ে ভেঙে তাদের কি লাভ?
কলেজের প্রথমদিন আজ। আব্বুর সঙ্গে এসেছি আমি। মিষ্টিও এসেছে আমাদের সাথে। আমাকে আর মিষ্টিকে ফুচকার দোকানে, ফুচকা খেতে বলে আব্বুর তার কিছু পরিচিত স্যারদের সঙ্গে কথা বলতে যান। মিষ্টি ফুচকা খেতে খেতে হঠাৎ ভীষম খেলো। আমি পানির বোতল এগিয়ে দিলাম ওর দিকে। ও পানি খেয়ে আমাকে মিষ্টি করে বললো ‘ থ্যাংকইউ আপু ‘। মিষ্টি এখন আর আমাকে ভাবি বলে ডাকে না। এটাও আব্বুর সিদ্ধান্ত। অভীকজড়িত সকল শব্দ, সবার বলা বন্ধ। কিছুক্ষণ পরে শিপুল নামে একটা ছেলে এগিয়ে আসে আমাদের দিকে। আমাদের পূর্বপরিচিত সে। আব্বুদের বাড়ির সামনের বাড়িটাতেই ওরা থাকে। এর বেশি কিছু জানি না আমি। শিপুল এগিয়ে এসে ‘ হাই ‘ বলতেই মিষ্টি ‘হ্যালো’ বলে চুপ হয়ে যায়। আমাকেও ইশারায় চুপ থাকতে বলে। মিষ্টির এমন আচরণে হতবাক হয়ে যাই আমি। শিপুল আমার দিকে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো।
– ” তুমি কি এই কলেজে ভর্তি হয়েছো পরী? ”
মিষ্টি চট করে উত্তর দিলো।
– ” হ্যাঁ কেন? ”
শিপুল মৃদু হেসে এক প্যাকেট চকলেট এগিয়ে দেয় মিষ্টির দিকে। মিষ্টি মুখ কালো করে বলে উঠলো।
– ” আমি কিংবা আপু যার তার দেওয়া চকলেট খাইনা। কোন মলতবে চকলেট দিচ্ছেন কে জানে? ”
মিষ্টির এমন বাক্যে ভড়কে গেলাম আমি। উনি হয়তো ভালো ভেবেই বাচ্চা মেয়েকে চকলেট দিচ্ছেন কিন্তু মিষ্টি এমন অদ্ভুত আচরণ কেন করছে? আমাকেও কিছু বলতে দিচ্ছে না। শিপুল আমার দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে আসতেই মিষ্টি চেচিয়ে ওঠে।
– ” এই আপনি আমার আপুর দিকে যাচ্ছেন কেন? দূরে যান, যান বলছি। নাহলে কিন্তু আমি চিৎকার দিবো। ”
শিপুল রেগে মিষ্টির দিকে তাকায়। আমি এবার মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরলাম। মিষ্টি কেঁদে ফেলেছে। তবুও আমাকে জড়িয়ে ধরে বলছে।
– ” তুমি শুধু আমার সাথে খেলবে আপু, আমার সাথে কথা বলবে, আমি শুধু তোমার বন্ধু হবো। ”
আমি মিষ্টির মাথায় হাত বুলিয়ে শিপুলের দিকে তাকালাম। সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে বললাম।
– ” কিছু মনে করবেন না ভাইয়া। ও ভাবছে আমার অন্যকারোর সাথে বন্ধুত্ব হলে ওর থেকে দূরে চলে যাবো আমি। ভয়ে আপনার সাথে এমন আচরণ করে ফেলেছে। দুঃখিত। ”
উনি নিজেকে স্বাভাবিক করে ” আচ্ছা ” বলে চলে গেলেন। আমি মিষ্টির চোখ মুছিয়ে ওকে কাছে টেনে নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
– ” তুমি এমন কেন করলে মিষ্টি? দেখ তো লোকটা কি ভাবলো। বড়দের সাথে এভাবে কথা বলতে হয়না সোনা। ঠিক আছে? ”
এরপর মিষ্টি যেটা বললো সেটা শুনে চমকে গেলাম আমি। ও বললো,
– ” তো কি বলবো? জানো ও তোমাকে ছাদে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখে। চুঁমু দেয় এভাবে ( ফ্লাইং কিসের ভঙ্গি দেখিয়ে বললো )। তারপর সেদিন আমরা বৃষ্টিতে ভিজছিলাম ও খারাপভাবে তোমাকে দেখছিলো। আমি বুঝেছি! আমার ভালো লাগেনি ওকে। তুমি ওর সাথে কথা বলবে না। ও ভালো ছেলে না। খারাপ ছেলে, পঁচা ছেলে।”
আমি মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরে ওর গালে চুঁমু খেলাম। আমার মিষ্টি বড় হচ্ছে, সব বুঝতে শিখছে। ও আর আগের মতো কথা বলবে না। স্বাভাবিক হবে আমাদের মতো। কলেজ থেকে ফিরে কথাটা আমি আম্মুকে বলি।আব্বু এটা শুনেই রেগেমেগে উঠে দাড়ান। এখুনি গিয়ে নাকি শিপুলদের বাড়িওয়ালাকে এগুলো বলবেন। কিন্তু আম্মু বাধা দিলেন। আমি আব্বুকে বুঝিয়ে বলি মিষ্টির কথা। আব্বু রাজি হলেন আবারও ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য।
পরদিন মিষ্টিকে দেখিয়ে আনি আমরা। ডাক্তার কিছু ঔষধ দিয়েছেন আর বলেছেন ওকে উৎসাহ দিতে সকল ভালো কাজে। ওকে টুকটাক করে সমস্ত কিছু শেখাতে। ওর যত্ন নিতে! তাহলে মিষ্টি আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠবে।বাড়িতে এসে আব্বু অভীককে জানায় সবটা। অভীকও কথার পিঠে কয়েকটা কথা বলে রেখে দিলো ফোন। রাতে ঘুমানোর সময় মিষ্টি হঠাৎ যেন কোথা থেকে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। আমি কিঞ্চিত ভয় পেয়ে গিয়েছি ঘটনার আকস্মিকতায়।
– ” আপু তুমি প্রতিদিন রাতে কেন কাঁদো? ”
ওর কথা শুনে আমি বিষ্ময়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ়! মিষ্টি আবার বললো।
– ” তুমি ভাইয়ার জন্য কষ্ট পাও? জানো আমিও কষ্ট পাই। ভাইয়া আমার সাথেও ঠিক করে কথা বলে না। ফোন দেয় অনেকদিন পরপর। কিন্তু আমি তো কাঁদি না। তুমি কেন কাঁদো? ”
আমি ওর প্রশ্নের ঠিক কি উত্তর দিবো বুঝে উঠতে পারলাম না। মিষ্টি উত্তরের অপেক্ষা না করে আমার হাত টানতে টানতে বিছানায় নিয়ে যায়। আমাদের দুজনের ফোন বের করে গেইম দেখতে থাকে। আমি নির্লিপ্ত নয়নে চেয়ে আছি জানালার অপরপাশে থাকা ল্যাম্পপোস্টের বাতিটায়। মিষ্টি ঘুমিয়ে যেতেই আমি জানালার পাশে এসে দাড়াই, আকাশপানে তাকিয়ে তার কাছে কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম, এই আশায় যে,যদি এই নীলাভ আকাশ,চাঁদের জোৎস্না তার কাছে পৌছে দেয় আমার এই জড়ো করা অভিমানের বার্তা। গাল ফুলিয়ে বলতে আরম্ভ করলাম।
★★ তুমি কি জানো রাত যত গভীর হয়,
তোমার শূন্যতা আমাকে ততই কুড়ে কুড়ে খায়।
তুমি কি জানো তোমার শেষ স্বৃতিটুকুর কথা.?
যে স্বৃতিগুলো বার বার জাগিয়ে দেয় আমার হৃদয়ের পুরাতন ব্যাথা।
তুমি কি জানো তোমার বাজানো সেই গিটারের সুর?
যেটা আমাকে তোমার কাছ থেকে নিয়ে গিয়েছে বহুদূর।
তুমি কি জানো তোমার কথা মনে পড়লে কি করি আমি?
রাত জেগে জানালার পাশে দাড়িয়ে একলা তারা গুনি।
তুমি কি জানো কতটা ভালোবাসি তোমায়?
যতটা ভালোবাসলে নিজের অস্তিত্ব তোমাতে মিশে যায়। ★★
।
।
আজ একাই কলেজে যাবো আমি। সকাল সকাল উঠে সব গুছিয়ে রেখেছি। এবার মিষ্টিকে ডেকে ওকে খাইয়ে দিয়ে, নিজে খেয়ে বেড়িয়ে পড়বো। কিছুটা শঙ্কিত আমি! প্রথম দিন! কলেজের কিছু চিনি না, জানি না। কিভাবে মানিয়ে নিবো? ওখানের ছাত্রছাত্রীরা কেমন? এতো কিছু ভাবতে ভাবতে রিক্সা ডেকে চড়ে বসলাম রিক্সায়। ফাঁকা রাস্তা। চায়ের স্টলে মানুষের আড্ডা, দু একজন কাধে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। আমি কলেজে এসে নিজের ক্লাসে চলে আসি। কয়েকজন আগে থেকেই বসেছিলো। আমি চার নম্বর বেঞ্চে বসে কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম মুছছি ওরনার এক কোনা উঠিয়ে। হঠাৎ আমার পাশে একটা মেয়ে ব্যাগ রাখে। হেসে বলে।
– ” হাই আমি আরোহী। ”
– ” আমি পরী। ”
দেখলাম আরোহী নামের মেয়েটা খুব চঞ্চল। সহজে সবার সাথে মিশে যায়। প্রচন্ড কথা বলে। ওর বেশ কয়েকজন বন্ধু আছে। আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। কিন্তু সবথেকে মজার বিষয় ওর বয়ফ্রেন্ডকে ‘ভাই’ এর পরিচয় দিয়েছে। সেটা শুনে একটা ছেলে প্রচন্ড শয়তানি শুরু করে, বুঝলাম বন্ধুমহলে এই ছেলেটাই সবথেকে বেশি মিশুকে, আড্ডাবাজ, ব্রিলিয়ান্ট এবং শয়তানের নানা।ওর নাম হামযা। সবার সাথে আমারও বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়। হামযা প্রায়ই আমাকে পড়া বুঝিয়ে দেয়। কলেজে না গেলে ফোন করে খোজখবর নেয়।
একদিন রাস্তায় কিছু ছেলে আমাকে বিরক্ত করছিলো ওরা দেখতে পেয়ে ছেলেগুলোকে কি মারটাই না মারলো। আরোহী আমায় ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি দিয়ে বললো।
– ” ছেড়ে দে। ওরা ওমনই। আর হামযা’টাতো একটু বেশিই। তোর গায়ে হাত টাত দিয়েছে নাকি? ”
– ” না শুধু মুখেই। ”
– ” ভাগ্য ভালো দেয়নি। নাহলে ওদের হাত ভেঙে দিতো হামযা। দেখছিস না তোকে সামান্য টিজ করায় কতটা রেগে গেলো। যদি হাত দিতো তাহলে তো! মনে কর শেষ।”
আমি সেদিন আরোহীর কথা বুঝতে পারিনি। সবটা স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছিলাম। বেশকিছুদিন ধরে হামযা আমাকে ফোন দিচ্ছে। মানে কিছুক্ষণ পরপরই ফোন দিচ্ছে। ফোন রিসিভ করলেই কবিতা বলে শোনাচ্ছে। ও ঠিক কেমন মানে কোন জাতের পাগল সেটা বুঝতে ব্যর্থ হলাম। ফোন রিসিভ করতেই হামযা বলে উঠলো।
– ” শুষ্ক কলিজায় ঠান্ডা পানি ঢেলে দিলে পরী। সাধে কি আর বলি তোমায় ছাড়া থাকতে পারি না আমি।”
আমি মজার ছলেই বলি।
– ” ইউ বান্দর। সারাদিন কানের কাছে করিস ঘ্যানর ঘ্যানর ”
– ” মন আমার বড়ই পিপাসা, শুনিবার তারে তোমার মুখের ভাষা। প্রিয়, কথা বলো ক্ষনিকের জন্যে, তোমার তরে বৈরাগী মন ঘুরতে পারে অরণ্যে। ”
আমি বিরক্ত হলাম ওর এমন ছন্দে।সারাদিন এমন বানিয়ে বানিয়ে হাবিজাবি বলে, আর আমার কানের দফারফা করে ছাড়ে।
– ” ফোন দিছিস ক্যান? ”
– ” কাল লাল রংয়ের একটা জামা পড়ে আসিস। প্লিজ। ”
– ” আমার লাল রংয়ের জামা নেই। এবার ফোন রাখ।”
– ” তো আমি এসে একটা দিয়ে যাই? ”
আমি হামযার কন্ঠস্বর শুনে অবাক হই। মাথায় ঘুরপাক খায় হামযাঘটিত ঘটনাগুলো। আমার প্রতি ওর যত্ন নেওয়া, আমার খেয়াল রাখা, সবমুহূর্তে আমায় চোখেচোখে রাখা। আমাকে নিয়ে ওর অধিকারসূচক কথাবার্তা। আমি দৃঢ় গলায় জিজ্ঞেস করলাম।
– ” তুই কি আমাকে পছন্দ করিস হামযা? ”
হামযা উৎফুল্ল কন্ঠে উত্তর দিলো।
– ” শুধু পছন্দ নয় ভালোবাসি তোকে। সেই প্রথমদিনের প্রথম দেখা থেকে। আমি জানি তুই আমাকে না বলতে পারবি না। কারন আমি দেখতে শুনতে ভালো, পড়াশোনায় ভালো, আমার আব্বুর টাকাপয়সা আছে। বাড়ির একমাত্র ছেলে আমি, আর আমার ভবিষ্যৎ রোদের মতো উজ্জ্বল। একেবারে চকচক করছে। ”
আমি এবার দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম।কি উত্তর দিবো ওকে? আমি যে বিবাহিত এটা কাউকে বলতে মানা করেছে আব্বু, আবার হামযা এমন ঘাড়ত্যাড়া ছেলে যে যথোপযুক্ত যুক্তি এবং প্রমাণ না পেলে আমার পিছু ছাড়বে না। আমি ফোন কেটে, ফোন বন্ধ করে রাখলাম। সকালে আম্মুকে বলবো হামযার কথা, তারপর তারা যা বলবে সেটাই করা হবে।
চলবে?