#একটা_পরীর_গল্প
#সাদিয়া_আহমেদ_রোজ
#পর্ব_০২
।
বিগত একঘন্টা যাবৎ আমি অভীক ভাইয়ার পা টিপে যাচ্ছি। উনি কপাল বরাবর এক হাত উঠিয়ে, আরেক হাত ঘাড়ের নিচে রেখে আরামসে ঘুমাচ্ছেন। হাত ব্যাথায় শীতল হয়ে আসছে। মনে চাচ্ছে না আর একমুহূর্তের জন্যও ওনার পায়ে নিজের হাত রাখি। হাত উঠিয়ে দুহাতে ঘর্ষন করে আবার পায়ে হাত রাখতে যাবো ঠিক এই মুহূর্তে উনি বলে উঠলেন।
– ” কি রে পা টিপছিস নাকি সুড়সুড়ি দিচ্ছিস। কোনো কাজই দেখছি ঠিকমতো পারিস না। যা তো সড় পা মেলতে দে। আবার খানিকক্ষণ পর এসে টিপে দিস। বুঝতে পারছি আমার পা দেখে তুই হিংসায় জ্বলছিস। তোর নিজের তো এতো সুন্দর, মসৃণ পা নেই। যা এখান থেকে। ”
মেজাজটা আবার খারাপ হয়ে গেলো। আগে খুঁত ধরতো মেনে নিতাম কিন্তু এখন খুঁত ধরার পাশাপাশি উঠতে বসতে খোঁটাও দিচ্ছে। এই মানুষটা একেবারে অসহ্যকর। আমি দরজার সামনে গিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুতেই খুলছে না। বেশি টানাটানি করলে আবার কাঠের দরজা থেকে মড়মড় শব্দ হবে তখন সবাই ছুটে আসবে। না, না কিছুতেই এটা করা যাবে না। যে খাঁটাশ ব্যাটা ঘরে আছে। কেউ আসলে নির্ঘাত বানিয়ে বানিয়ে আমার নামে নালিশ করবে তখন সব বকা আমায় খেতে হবে। তার থেকে আমি বরং ঘরটা গুছিয়ে ফেলি। বুইড়ার বাড়ির মানুষ এসে আমার ঘরের দফারফা করে ছেড়ে দিয়েছে।
আমি ঘর গুছিয়ে জানালার কাছে এসে বসি। মাথা থেকে ওরনা নামিয়ে নিচে রাখলাম। ভারে, গরমে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। অসহনীয় মাথা ব্যাথায় চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করেছে। এখন একটু ঘুমের দরকার ছিলো। কিন্তু সে উপায় কোথায়? পুরো বিছানা দখল করে শুয়ে আছে খাঁটাশটা। রাক্ষসের মতো মস্ত শরীর পুরো বিছানায় লেপ্টে আছে। চোখ বুজে বিছানার পায়ার মাথা লাগিয়ে দিলাম।
আটবছর আগের কথা, তখন আমার বয়স মাত্র সাত বছর। সবে তৃতীয় শ্রেণীতে উঠেছি। দীপ্তি তখন সবে শব্দ লেখা শিখেছে। তেমন মেধাবী না হলেও যথেষ্ট ভালো ছিলাম পড়াশোনায়। আমার গায়ের রং কালো নয়, শ্যামলাও নয় আবার সাদা ফর্সাও নয়। মোটামুটি ফর্সা বললেই চলে। শুনেছি ডানপিটে স্বভাবের ছিলাম আমি। গাছে চড়ে বেড়ানো, পুকুর থেকে মাছ তোলা, ফল চুরি,ডাব চুরি সবকিছুতেই অল্পবয়সে বেশ অভিজ্ঞ হয়ে গিয়েছিলাম। সময়টা ডিসেম্বর মাস। স্কুল বন্ধ হওয়ায় আমরা দুবোন এবং আমার মোট কুড়ি জন ‘তো’ ভাই বোন মিলে খেলছিলাম আমাদের স্কুল মাঠে। মাঝে মাঝে খুব হাসি পেতো আমার চাচাদের নাম বলতে গিয়ে। আট, আট’টা চাচার নাম বলা কি চারটিখানি ব্যাপার? তারওপর আরও তিনটা ফুফু। সবার নাম মুখস্থ করতে গিয়েই আমার পড়াশোনা আমিও চিনি না, আমার টিচারও চেনে না। টিচার এসেই বলতো তোমার ওমুক দেখতে ভাই আমার ছাতা ধরে টেনেছে, ওমুক বোন পেয়ারা চিবিয়ে তার খোসা ছুড়ে মেরেছে। তখন আমারও প্রশ্ন থাকতো কোনজন,কেমন দেখতে,চুল কেমন, ফর্সা না কালো? এভাবে বেশ ভালোই দিন কেটে যাচ্ছিলো। কিন্তু ১২তারিখ। ডিসেম্বর মাসের ১২তারিখ আমার ওপর শনিদেবের কুদৃষ্টি পড়ে যায়। আমি আর দীপ্তি আলের পাশ ঘেসে হেটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ হোচট খেয়ে দুজনেই ভেজা সুরকি অর্থাৎ ইটের গুড়োর ওপর পড়ে যাই। সারা শরীর সুরকিতে মাখামাখি হয়ে গেলো। আমি একদলা সুরকি দীপ্তির গায়ে ছুড়ে মারতেই বেয়াদব মেয়ে আমার গায়ে কয়লার গুড়ো ছুড়ে মারে। ব্যাস কালিতে কালিমাময় হয়ে গেলো আমার মুখমন্ডল। আমি গাল ফুলিয়ে দীপ্তির দিকে তাকাতেই ও ভয়ে দৌড়।
আমি উঠে রাস্তার ধারে আসলাম। মটরের থেকে পানি নিয়ে মুখ ধুলাম। কিন্তু কালি উঠছেই না।।বরং আরও লেপ্টে যাচ্ছে। রাগ করে রাস্তার ওপর উঠে চলে আসলাম। একবারে বাড়ি গিয়ে মুখ ধৌত করবো। রাস্তার ধার ঘেসে হাটছি এমন সময় আমার পাশে একটা গাড়ি এসে দাড়ালো। এই প্রথম আমি শহুরে গাড়ি দেখছি। চারচাকার সাদা গাড়ি। গাড়ির কাঁচ সড়িয়ে একজন ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন।
– ” সোনামনি আলতাফ রহমানের বাড়ি কোনদিকে বলতে পারবে? ”
আমার আব্বুর নাম বলায় আমি চটজলদি উত্তর দিলাম।
– ” হ্যাঁ। আমাদের বাড়ি এই রাস্তা ধরে সোজা গিয়ে বামদিকে। ”
ভদ্রলোক আমার কথায় ভ্রু কুচকে তাকালেন। আমি লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেললাম ওরনা দিয়ে। তিনি মুচকি হেসে আমাকে কাছে ডাকলেন। আমি কাছে যেতেই উনি দরজা খুলে বেড়িয়ে এসে আমাকেও গাড়ির ভেতর নিয়ে বসালেন। আমি এখনও ওরনা দিয়ে নিজের মুখ আড়াল করে আছি। হঠাৎ চুলের বেনীতে টান পড়তে আমি পেছনে ফিরে তাকাই। পেছনের সিটে একটা সাদা ধবধবে ছেলে বসে আমার চুল টানছে। ওর পাশে ছোট একটা মেয়ে। মেয়েটাও ধবধবে সাদা। ছেলেটা আমার চুল টানতে টানতেই উচ্চস্বরে হেসে বললো।
– ” আব্বু দাদীর কাছে গল্পে শুনেছি গ্রামে কালো কুচকুচে পেতনি থাকে। এটা কি সেই পেতনি? ওকে গাড়িতে তুললে কেন? ওর ছোঁয়া লাগলে আমার মিষ্টিও কালো হয়ে যাবে। ”
ছেলেটা কথা শুনে সেদিন খুব রাগ হয়েছিলাম। ছেলেটার হাতে জোরে চিমটি দিয়েছিলাম। ব্যাথায় কেঁদে ফেলেছিলো ও। মুখে বলেছিলো ‘ আমাকে চিমটি দেওয়ার ফল তুই পাবি কালো ভুত। অভীক কোনো ঋণ রাখে রাখে। সুদে আসলে এই ব্যাথার দাম উসুল করবো আমি। ‘ তবে কি অভীক ভাইয়া বিয়েটা সেই দাম উসুল করার জন্য করেছে? আমার তন্দ্রাভাব নিমিষে কেটে গেলো। আমি উঠে গিয়ে অভীক ভাইয়ার দিকে তাকালাম।ভাইয়ার ঘুমন্ত মুখ দেখলেই কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায়। চোখের ঘনপাপড়ির আড়ালে বাদামী চোখের অধিকারী ব্যক্তিটি একজন গায়ক। বেশ কয়েকটা এলবামে গান গেয়েছেন উনি। দীর্ঘ দু’বছর পর দেখার সুযোগ পেলাম ওনাকে। এখনও আগের মতোই ধবধবে সাদা রয়েছেন, বুকে পশমভর্তি। কথিত আছে যাদের বুকে পশম বেশি তারা দয়াবান হয়, তাদের মায়া বেশি থাকে। কিন্তু এই খাঁটাশ সব বাণী মিথ্যা করে দিয়েছে। শুধু খাঁটাশ বলেও শান্তি হয়না ব্যাটা এক নাম্বারের খচ্চর। কিন্তু এই খাঁটাশটার মায়াবী মুখ বরাবরই আমার ভালোলাগে। যখন ঘুমিয়ে থাকে কিংবা নিশ্চুপ থাকে তখন মনে চায় সারাটা দিন বসে বসে তার শুভ্র মুখমন্ডল অবলোকন করি। তার গলার নিচে গাঢ় কালো একটা তিল আছে। মুখে চাপদাড়ি, হাতে সবসময় ঘড়ি পড়ে থাকেন। এটা নাকি তার ইউনিক বৈশিষ্ট্য। যতসব আজগুবি কথা। তার হাতের ওপর দুটো মশা এসে বসেছে। আমি মশা মারার জন্য সন্তর্পণে এগিয়ে গেলাম তার দিকে। মশা মারার জন্য হাত তুলবো এমন সময় উনি চোখ মেলে তাকালেন। ভয়ে টাল সামলাতে না পেরে হুমড়ি খেয়ে পড়ি অভীক ভাইয়ার বুকের ওপর। ভাইয়া নিজেও হকচকিয়ে যায়, দুহাতে আগলে ধরেন আমাকে। তার বুকের ওপর গিয়ে পড়ে আমার নয়নযুগল, অধরযুগল এবং নাক। নাকে ধাক্কা খায় তার শরীরের মিষ্টি ঘ্রাণ। কোনো পার্ফিউম নয়, একটা তীব্র মধুর ঝাঝ। তিনি ধমকের সুরে বললেন।
– ” গেলো বুকের পাঁজরগুলো বোধ হয় গেলো। হাতি পড়েছে বুকের ওপর পাঁজর কি আর আস্তো থাকে? ”
আমি ধড়ফড়িয়ে উঠে দাড়াই। চোখে মুখে অস্বস্তির ছাপ। কিন্তু উনি আমাকে হাতি বললেন? আমার ওজন কতো আর ওনার কতো? দু’দিন আগে মেপেছিলাম ৪৮। আর ওনার তো ৭৫এর নিচে না। তবুও বরাবরের মতো এবারও আমাকে কটাক্ষ করলেন। আমি মুখ ভেঙচি দিয়ে চেয়ারে বসে পড়লাম। উনি বিরক্তির সুরে বলে উঠলেন।
– ” আমার দিকে একধ্যানে মোটেও তাকিয়ে থাকবি না। আমি ঘুমাতে পারি না। চোখ দিয়ে তো গিলে খাচ্ছিলি আমাকে। আমি জানি যে আমি সুন্দর তাই বলে ঘুমন্ত মানুষের শরীরে নজর দিবি?লাজলজ্জা বলে কিছু নেই দেখছি তোর। ”
আমি বিষ্ময়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। হতবাক হয়ে চেয়ে আছি ওনার দিকে। উনি জানলেন কি করে আমি ওনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। উনি কি মানুষের চেহারা পড়তে পারেন? নাকি উনিও জেগে ছিলেন? পরীক্ষা করার জন্য গলায় তেজ ঢেলে বললাম।
– ” আমার কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই? যে আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবো? আমি আপনার দিকে তাকাইনি। তাছাড়া আপনি ঘুমিয়ে ছিলেন আপনি বুঝবেন কি করে কেউ আপনার দিকে তাকিয়ে আছে কিনা? ”
উনি চোখমুখ খিচে আমার দিকে ক্রোধান্বিত হয়ে তাকালেন। ক্ষিপ্ত সুরে কিছু বলতে গিয়েও বললেন না। গলার স্বর পাল্টে ব্যাঙ্গ করে বললেন।
– ” আগে জানতাম তুই কোনো কাজের না। এখন দেখছি তোর ঘটেও গ ব র ছাড়া কিছু নেই। এটা জানিস না তুই? যে একজন ঘুমন্ত মানুষ ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায়, কেউ যদি তাকে চোখ দিয়ে গিলে খায় তখন তার ঘুম স্বয়ংক্রিয় ভাবে ভেঙে যায়। ”
আমি ওনার দিকে আড়চোখে তাকালাম। উনি কি আদৌ সত্য বলছেন নাকি জেগে ছিলেন এতক্ষণ। উনি কাত হয়ে আমার বিপরীত পাশে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়লেন। আমিও নিজের ভাবনায় মগ্ন হলাম।আচ্ছা গ্রামের মানুষগুলো এমন হয় কেন? মেয়েরা কৈশরে পদার্পণ করলেই তাদের বিয়ে দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। সবক্ষেত্রে অবশ্য এ বচন সত্য নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন দেখা যায়। আমি পড়তে চেয়েছিলাম। বাড়ির সবাই রাজি ছিলো কিন্তু ওই বুড়ো, না বুড়ো ঠিক নয় যদি বয়স বিবেচনা করা হয় তবে ওনাকে বুড়ো বললে সেটা অগ্রহণীয়। তবে আমার মতে উনি বুড়োই, আমার থেকে আঠারো বছর বেশি বয়সী পুরুষ নিসন্দেহে, আমার মতে, বুড়ো। দশবছর অবধি ঠিক ছিলো তাই বলে আঠারো বছর? তবে বুড়ো নামটা আমার দেওয়া নয়। দীপ্তির দেওয়া। ওর থেকে বিশ বছরের বড় সে, সেজন্য। অনেকের অনেক ভিন্ন মত থাকতে পারে, থেকেছেও তবে আমার মত অনুসারে আমি ওনাকে বুড়ো বলে ঘোষনা করে দিয়েছি, এখন এই তকমা বদলানো যাবে না। তারওপর ওনার দুটো বাচ্চাও আছে। অভীক ভাই না থাকলে যে আমার কি দশা হতো, কিন্তু এই খচ্চর এমন এক প্রাণী যার কাছে শুকরিয়া আদায় করাও বৃথা। তবে বয়সের দিক থেকে যদি ভাবি তাহলে হয়তো ইনি ঠিকঠাকই আছেন। আমার থেকে আট বছরের বড়। প্লাস, মাইনাস করে ইকুয়াল বানানো যায়।
কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পর উনি উঠে বসেন। আমার দিকে ভাবলেশহীন চাহুনিতে তাকিয়ে কথায় টান দিয়ে বলেন।
– ” কি রে তোদের বাড়ির মানুষ কিপ্টা নাকি অতিথিপরায়ণ নয়। আরে যেভাবেই হোক, বিয়েটাতো হয়েছে, হ্যাঁ হয়তো আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছেন তাতে আমার আপত্তি থাকলেও আমি তো কিছু বলছি না। তোকে দয়া করে বউ এর স্বীকৃতি দিয়েছি। কৃতজ্ঞতা বোধ থেকেও তো আমাকে একটু খাবার দিতে পারে ওরা। সেই সকাল থেকে না খেয়ে আছি। ”
আমার মাথা ঘুরছে এই লোকের কথা শুনে। এমনি সময় চুপচাপ থাকেন আর এখানে আমায় একা পেয়ে আমার কানের পোকা বের করে দিচ্ছে।আচ্ছা কানে কি পোকা থাকে? আমি ঠিক জানি না, কারোর জানা থাকলে বলবেন আমাকে। এর খোঁটা শুনতে শুনতে আমার পেটের ভাত চাল হবার উপক্রম।
– ” আপনি বসুন আমি দীপ্তিকে ডাকছি। ”
উনি ক্ষিপ্ত সুরে বললেন।
– ” দীপ্তিকে ডাকবি কেন? তুই নিজে গিয়ে নিয়ে আয়। একটু নড়তে চড়তে শেখ। কাজ না করে করে, আজ তোর এই অবস্থা। অকর্মার ঢেকি। শোন সব খাবার গরম করে আনবি। আমি বাসি, ঠান্ডা খাবার খেতে পারিনা। প্রয়োজনে রান্না করে আনবি। ”
আমি অতিষ্ট হয়ে উঠলাম ওনার অহেতুক কথাবার্তায়। এমনিতেই বিয়েবাড়ি থেকে বর কিভাবে উধাও হলো সেটা বুঝতে পারছি না তারওপর এই ননস্টপ ভাঙা রেডিও বেজেই চলেছে। মন চাচ্ছে পঁচাবাসি খাবার ফুসলিয়ে খাইয়ে দেই। আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে উনি আবার চেচিয়ে উঠলেন।
– ” কি রে বর পালানোর শোকে কি আমায় না খাইয়ে মারবি? তোর বর পালিয়েছে তাতে আমার কোনো ফল্ট নেই। তাছাড়া যে বর তার জন্য আবার এতো চিন্তা। খেতিস তো সতীনের খুন্তির ছ্যাকা, কথার বিষ। তার জন্য এতো ব্যাকুলতা? কোনো চক্কর টক্কর ছিলো নাকি? ”
আমি অসহায় দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকালাম। উনি এই মুহূর্তে আমাকে যা বলছেন এটা যদি আমি বাইরে গিয়ে বলি নিঃসন্দেহে উনি পাল্টি খাবেন। অন্ততো এ’কবছরে ওনাকে এতটুকু আমি চিনতে পেরেছি। কিন্তু ওনার প্রতিটা কথা কেন জানি না বিষের জ্বালার অনুভূতিতে কাঁপিয়ে তুলছে আমাকে। ওনার মুখ থেকে এধরনের কথা আমার কর্ণ, মন কোনোটাই শুনতে চায় না। কিছুতেই না। উনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছেন উত্তরের অপেক্ষায় । অগত্যা আমি জানালা দিয়ে দীপ্তিকে জোরে ডাকলাম। দীপ্তি ভয় পেয়ে ছুটে এসে দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলতেই তৎক্ষনাৎ বেড়িয়ে যাই আমি। অভীক তখনও তার ভ্রুযুগল কুঞ্চিত করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দরজার পানে।
চলবে?