একগুচ্ছ কদম?
পর্ব : ১
আহমেদ রিপা
বেলকনির কোণ ঘেঁষে শরীর এলিয়ে দিয়ে মাথা ঠেকিয়ে দাঁড়ালো রিদিতা । বুক ভরা চাপা কষ্ট তার । আর কাউকে কাছে না পাওয়ার আর্তনাদ।ছটফটে মনে তাকে বারবার মনে করা । চোখের কোণে কালো দাগ স্পষ্ট।আধ ভেজা ঠোটটাতে মনের আবেশে গান গেয়ে চলেছে সে !
তুমি যাকে ভালোবাসো,
স্নানের ঘরে বাস্পে ভাসো,
তার জীবনে ঝড়।
তোমার কথার শব্দ দূষণ,
তোমার গলার স্বর।
আমার দরজায় খিল দিয়েছি,
আমার দারুন জ্বর।
তুমি অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর,
তুমি অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর।
তোমার নৌকোর মুখোমুখি আমার সৈন্যদল
বাঁচার লড়াই,
আমার মন্ত্রী খোয়া গেছে একটা চালের ভুল
কোথায় দাঁড়াই।
কথার ওপর কেবল কথা,
সিলিং ছুতে চায়।
নিজের মুখের আয়্না আদল,
লাগছে অসহায়।
তুমি অন্য কারোর ছন্দে বেঁধো গান,
তুমি অন্য কারোর ছন্দে বেঁধো গান।
বুকের ভেতর ফুঁটছে যেন মাছের কানকোর লাল, এতো নরম,
শাড়ীর সুতো বুনছে যেন সেই লালের কঙ্কাল
বিপদ বড়ো,
কথার ওপর কেবল কথা,
সিলিং ছুতে চায়।
নিজের মুখের আয়না আদল,
লাগছে অসহায়।
তুমি অন্য কারোর ছন্দে বেঁধো গান,
তুমি অন্য কারোর ছন্দে বেঁধো গান।
তুমি যাকে ভালোবাসো,
স্নানের ঘরে বাস্পে ভাসো,
তার জীবনে ঝড়।
তোমার কথার শব্দ দূষণ,
তোমার গলার স্বর।
আমার দরজায় খিল দিয়েছি,
আমার দারুন জ্বর।
তুমি অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর,
তুমি অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর।
( অনুপম রায় )
গান গাইতে গাইতে চোখের কোণে পানি ঝড়ে পড়লো । দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল ” ভালো থেকো আমার ভালোবাসা” ।
আজকে যে রাদিতার ভালোবাসার মানুষটির বিয়ে ছিল। সৌহার্দ্য কিভাবে করলো এটা ওর সাথে কেনো আমাকে ভেঙ্গে দিলে সৌহার্দ্য কেন বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো রিদিতা আজকেই যে ওর শেষ কান্না।
দূর থেকে একজন রিদিতার বেলকনির দিকে তাকিয়ে আছে আর বলছে “ভালোবাসা না পাওয়ার কি জ্বালা তাই না রিদিতা” বলেই হাসতে লাগলো অপরিচিত লোকটি । বলেছিলাম আমাকে প্রত্যাখ্যান করার জবাব দিতে হবে আমার জায়গা অন্য কাউকে দেয়ার শাস্তি যে পেতেই হবে তোমাকে । এখন জমবে খেলা যতো টা কষ্ট আমি পেয়েছি তুমিও পাবে এবার বলেই রিদিতার নাম্বারে ম্যাসেজ টাইপ করলো ‘
“কাঁদছ কেন রিদিতা কষ্ট হচ্ছে
আমারো হয়েছিল কেমন লাগছে বলো তো
খুব কষ্ট হচ্ছে কি
‘ রিদানশ ‘
ফোনে ম্যাসেজ আসতেই ফোন টা হাতে নিল রিদিতা । ম্যাসেজ টা দেখে চিংকার করে বলতে লাগলো ‘আমি তোমাকে কখনই ভালবাসবো না রিদানশ । তুমি একটা বদ উন্মাদ । তুমি জানোয়ার হয়ে গেছো কখনোই ভালোবাসবো না তোমাকে। মরে যাবো আমি মরে যাবো আমি’ বলতে বলতে পড়ে মাথা ঘুরে উঠলো রিদিতার
সকালের আলোতে জেগে উঠলো রিদিতা । ঘুম ভাঙ্গতেই নিজেকে বেলকনিতে আবিষ্কার করলো। তখনি উঠে রুমে চলে আসলাম। ভাইয়া আমাকে এই অবস্থায় দেখলে কষ্ট পাবে যে । তৈরি হয়ে নেই ভার্সিটি যেতে হবে
ভার্সিটির গেটের সামনে আসতেই তিন বান্দর মিলে ঝাঁপিয়ে পড়লো আমার উপর।
মোহো : এখন আসার সময় হলো ম্যাডামের
জান্নাত : ঠিক আছিস তুই ( আমার গালে হাত দিয়ে ) ।
সাজি : চুপ কর তোরা । ওকে বলতে দে
আমি : ঠিক আছি আমি তোরা চিন্তা করছিস কেন। এখন চল ভেতরে যাই !
ক্লাসে যেতে যেতে মনে হলো কেউ একজন পিছনে কিন্তু পিছন ফিরে তাকাতেই কাউকে দেখতে পেলাম না হয়তো আমারই মনের ভুল।
আর এদিকে কেউ একজন বলতে লাগলো ‘তুমি যে আর ঠিক থাকবে না আমার কদম ফুল’ ( বলেই শয়তানি হাসি দিলো )
ক্লাসরুমে আসতে দেখলাম সবাই গল্পে ব্যস্ত। ভিতরে গিয়ে বসতেই মোহো বলে বসলো !
মোহো : কার জন্য কেঁদেছিলি ? তোর চোখমুখের এই অবস্থা কেন তুই এখনো কান্দিস ওই কুত্তার জন্য ! কি কথা বলিস না কেন কথা বল।
জান্নাত : মোহো চুপ কর ওকে কিছুদিন সময় দে ও স্বাভাবিক হোক ।
সাজি : হ্যাঁ মোহো ওকে সময় দে আর আমরা তো আছিই তাই না।
মোহো : শোন রিদি “একটা সময় আসবে যখন তুই বুঝতে পারবি এই জীবনে যারা তোকে ফেলে চলে গেছে তারা চলে যাওয়াতেই তোর মঙ্গল হয়েছে”
আমি : তোরা চুপ ক….( বলতে বলতেই স্যার চলে আসলো আর তার দিকে তাকিয়ে যেন আমার দুনিয়া ঘুরে গেল দাঁড়িয়ে গেলাম আমি আর মুখ দিয়ে একটা কথাই বের হলো “রিদানশ”
চলবে…….