এই_সাঝঁবেলাতে_তুমি_আমি পর্ব-০৮

0
1686

#এই_সাঝঁবেলাতে_তুমি_আমি🍁
পার্ট ৮
#সারা_মেহেক
🍀🍁

ছাদে গিয়ে মুখ গোমড়া করে বসো আছে মুসকান। না না রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তার।অবশ্য নিজের মাথা ফাটার আগে এই সব কয়টার মাথা ফাটানোর দরকার আগে।

মুসকানে মাথায় শুধুই এটা ঘুরছে যে আফনান কি মনে করছে। এটা তে নিশ্চিত যে সে ডেয়ার হিসেবে এটা করেছে এটা আফনান জানে না। মনে তার নিশ্চয় লাড্ডু ফুটছে।আরে লাড্ডু ফুটুক অথবা খই ফুটুক।তার কি আসে যায়।ওর লাড্ডু,খই ও নিজেই খাবে।কালকেই সে বলে দিবো যে এসব ডেয়ারের মধ্যে পরে। তার মনে কোনো ফিলিংস নেই। কিন্তু আবার মনে হচ্ছে এটা মিথ্যা বলা হবে কারন তার মনে তো একটু ফিলিংস আছেই আফনানের জন্য।ধ্যাত এসব কি ভাবছে সে। ইটস অনলি এ ডেয়ার।

হঠাৎ করে মায়া সবার উদ্দেশ্যে বললো,

“মেয়ে কি ডেয়ার করতে গিয়ে সত্যিই প্রেমে পরে গেলো নাকি?”

মায়ার এ কথা শুনে সেখানে হাসির রোল পরে গেলো। আর মুসকান এসব শুনে রাগি চোখে তাকালো সবার দিকে।

মুসকান অতি আত্মবিশ্বাসের সাথে বললো,

“এমন কিছুই হয়নি।এটা একটা ডেয়ার ছিলো যেটা আমি খুব ভালোভাবে শেষ করেছি। দ্যাটস ইট।”

মায়া অভিযোগের সুরে বললো,

“কিন্তু ননদিনী আমার না তোমার প্রপোজ করার স্টাইল টা একদমই শুকনো মরা মরা লেগেছে।

মায়ার এ কথার সাথে সবাই একমত পোষণ করলো।
এ কথা শুনে মুসকান রেগে বললো,

“কিসের শুকনা,কিসের মরা।যা করেছি তাই যথেষ্ট।
শুকনো মরা লাগে কেনো শুনি??আমি কি ঐ বান্দরটার চোখে চোখ রেখে অতি রোমান্টিক ভাবে প্রপোজ করবো নাকি??পেয়েছো টা কি আমাকে হুম??”

সুমনা বললো,

“আরে আইডিয়াটা বেশ ছিলো তুই এমন করলি না কেনো??”

মুসকান হাল ছেড়ে বললো,

“তোমাদের সাথে পারা যায় না আর।
আর ভাবি, এটা কি ধরনের ডেয়ার ছিলো??এটা কোনো ডেয়ারের তালিকায় পরে বুঝি??এতোদিন এই খেলাটা বেশ ইনজয় করতাম কিন্তু আজকের পর থেকে তো আর তা হবে না। ”

মাহিরা বললো,

“আহারে আমার বেচারা বুনুটা।।।তোমরা সবাই ওর সাথে এমন করো কেনো??ছোটো মেয়ে একটা।”

মায় তৎক্ষণাৎ বললো,

“কিসের ছোটো।অনার্সে পরে। আর তোমার বিয়ের কিছুদিনের মাথায়ই দেখো ওর বিয়েটাও সেরে ফেলবে মামা।”

মুসকান বিরক্ত হয়ে বললো,

“আচ্ছা, এসব বিয়ে শাদি বাদ। দাও। প্রায় ১২টা বাজতে চললো।আপুর তো ঘুমাতেও হবে। নাহলে ডার্ক সার্কেল পরে যাবে চলো খাওয়াদাওয়া করে যে যার রুমে যাই।

সুমনা বললো,

“হুম চলো সবাই।”

এরপর সবাই খাওয়াদাওয়া শেষ করলো।কিছুক্ষণ গান বাজিয়ে যে যার রুমে চলে গেলো।
শুধু বাকি রইলো মুসকান আর সুমনা।মুসকান ইচ্ছা করেই ছাদে বসে রইলো। আর সঙ্গী হিসেবে সুমনাকে বসতে বললো।

দুজনই চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে।পূর্ণিমা নয়, তবুও বেশ আলো ছড়াচ্ছে চাঁদমামাটা।

আকাশের দিকে তাকিয়েই সুমনা বললো,

“আজকে নিজের হবু বরের কথা বেশি মনে পরছে নাকি রে??”

আকাশের দিক থেকে মুসকান সুমনার দিকে বিরক্তিভরা দৃষ্টিতে তাকালো।আর বললো,

“ছাদে বসে সুন্দরভাবে এই পরিবেশটা ইনজয় করবি তা না,বিয়ে, বর নিয়ে পরলি।”

সুমনা হেসে বললো,

“আমার জায়গায় আফনান ভাইয়া থাকলে সেই হতো।”

আফনানের কথা শুনে বুকের মধ্যে ধক করে উঠলো মুসকানের।আফনানের কথা সে ভুলেই গিয়েছিলো। আজকে যে সে ডেয়ার এর জন্য আফনানকে প্রপোজ করে সেটা এসব হাসি মজায় ভুলেই গিয়েছিলো। সুমনা আবার মনে করিয়ে দিলো তাকে।মুসকান রেগে বললো,

“তোকে না আমার এখন ইচ্ছামতো ধোলাই দিতে মন চাচ্ছে।একটু শান্তি করে কি বসতে দিবি না??একবার বর,একবার আফনান।”

মুসকানের কথায় যেনো কিছু মনে করলো না সুমনা।সে আবারো বললো,

“আচ্ছা তোর বর হিসেবে আফনান ভাইয়াকে কেমন মানাবে??আমার তো মনে হয় বেশ মানবে।একদম পারফেক্ট।”

“সুমনার বাচ্চা সুমনা,তুই চুপ করবি??মুখে লাগাম নাই??আফনান ভাইয়া কোন দুঃখে আমার বর হতে যাবে??”

“কেনো হবে না???আল্লাহ চাইলে সবই সম্ভব।
আচ্ছা সত্যি করে একটা কথা বলতো,আফনান ভাইয়াকে কি তোর ভালো লাগে না??পছন্দ করিস না??একদম সত্যি সত্যি বলবি।”

সুমনার প্রশ্ন শুনে মুসকান একদম চুপ হয়ে যায়।কি বলবে সে সুমনাকে??সত্যি??সত্যিটা তো সে জানেও হয়তো। কিন্তু নিজেও মানবে না সে সত্যটা আর অপরকেও বলবে না সে।
কিন্তু এখন সুমনাকে আবার সে মিথ্যা বলবে নাকি??কিন্তু মিথ্যা বলার দরকার কি। মনের একটা কোনায় তো আফনান আছেই, সে মানুক আর না মানুক।

মুসকানের চুপ থাকা দেখে সুমনা বললো,

“কি মিথ্যা বলবি তাই চিন্তা করছিস নাকি??দয়া করে মিথ্যা বলিস না।”

মুসকান অনেক চিন্তা ভাবনা করে ধীর গলায় বললো,

“হয়তো পছন্দ করি।”

মুসকানের কথায় সুমনা বেশ খুশি হলো। সে হাসি মুখেই বললো,

“পছন্দ যেহেতু করিস,আর একসেপ্ট ও করলি তার মানে ভালোবাসতে বেশি দেরী নেই। হয়তো তোর মনে উনার জন্য ভালোবাসা আছে কিন্তু সেটা তুই একসেপ্ট করতে চাচ্ছিস না। সে যাই হোক,আমি শুনে খুব খুশি হলাম যে তুই আফনান ভাইয়াকে লাইক করিস।এন্ড আমি ডেম শিউর আফনান ভাইয়াও তোকে লাইক করে।”

আফনানও যে তাকে পছন্দ করে এ কথাটা শুনে আপনাআপনি ই মুসকানের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে এলো।

সে কোনোরকমে নিজেকে সামলো বলে,

“আচ্ছা চল এখন ছাদ থেকে।বেশ রাত হয়ে গিয়েছে।আজকে না ঘুমালে আপুর বিয়েটা ইনজয় করতে পারবো না।”

সুমনা আর কথা না বাড়িয়ে মুসকানের সাথে রুমের দিকে হাঁটা ধরলো।

এদিকে আফনানের চোখে বিন্দুমাত্র ঘুম নেই।আকাশ বেচারাকেও সে জাগিয়ে রেখেছে নিজের সাথে।আকাশ আর উপায় না পেয়ে মোবাইলে গেমস খেলছে আর আফনান সারা রুমময় পায়চারি করছে।তার মাথায় শুধু মুসকানের বলা কথাগুলো ঘুরছে।
মুসকানের ভয়ার্ত চেহারা,লজ্জা পাওয়া চেহারা শুধু ভাসছে আফনানের সামনে। মুসকানই আজকো তার ঘুম হারাম করে দিয়েছে।
আফনানের নিজেকে এখন অনেক লাকি লাগছে।মনে হচ্ছে মুসকানের ভালোবাসাটাই এতোদিন তার জীবনে আসা বাকি ছিলো। এখন লাইফটাকে কিছুটা কম্পলিট মনে হচ্ছে তার। মনে মনে আজ সে অনেক বেশি খুশি। এ খুশির যেনো কোনো সীমানা নেই।

মুসকানকে প্রথম দেখাতেই একটু একটু করে পছন্দ করতে শুরু করে আফনান।ধীরে ধীরে এ পছন্দটা বাড়তে থাকে মনের অজান্তেই।ভালোবাসাটাও সুপ্ত ছিলো এতোদিন।কিন্তু আজকে মুসকানের কথা শুনে ভালোবাসাটা নিজেকে প্রকাশ করলো।
কাউকে একটু পছন্দ করলে, পরে যদি জানা যায় যে সে মানুষটাও তোমাকে পছন্দ করে তাহলে এ পছন্দটা ধীরে ধীরে বেড়ে যায়।ভালোবাসার ক্ষেত্রেও তাই।

মুসকান শুয়েছে প্রায় আধ ঘন্টা হলো।কিন্তু ঘুম আজকে কোনোমতেই যেনো চোখে ধরা দিচ্ছে না। শুধু আফনানের চেহারা,তার হাসিটা চোখের সামনে ভেসে আসছে।চাইলেও যেনো সে আফনানকে নিয়ে ভাবা বন্ধ করতে পারছে না।
এ দুইরাতে সেই সুমধুর গিটার বাজানো শুনা যেনো একটা অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। গভীর রাত হলেই সেই গিটারের আওয়াজ না শুনলে যেনো ভালো লাগে না।
কিছু খারাপ লাগাও ভালো লাগাতে পরিনত হয়।
কানগুলোও যেনো অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে কখন সে আওয়াজ শুনবে।

মুসকানের কথা হয়তো সে শুনতে পেরেছে।আবার সেই গিটারের আওয়াজ কানে ভেসে আসতে লাগলো মুসকানের।শুনে মাঝে মাঝে মনে হয় কোনো প্রফেশনালস গিটার প্লে করছে। এগুলো শুনে যে কেউ সেই ব্যক্তির প্রেমে পরতে বাধ্য।মুসকানও তার ব্যতিক্রম নয়।

“বলতে চেয়ে মনে হয়
বলতে তবু দেয়না হৃদয়
কতোটা তোমায় ভালোবাসি…..
চলতে গিয়ে মনে হয়
দূরুত্ব কিছু নয়
তোমারই কাছেই ফিরে আসি….
……………(গানের লিরিক্স কিছু ভুল থাকতে পারে😛)

খুব আরামের ঘুম ঘুমালো সবাই।
সকাল হতে না হতেই পুরো বাড়ীতে সে এক হুলস্থল কান্ড।সবাই মনে হয় দেখাতে চাচ্ছে যে তার চেয়ে ব্যস্ত আর কেউ নেই।

সকাল ৯.৩০এর দিকেই পার্লারের মেয়েরা বাসায় উপস্থিত হলো।সাজাগুজা নিয়েও সবার মধ্য ব্যাপক ব্যস্ততা লক্ষ করা যাচ্ছে।

বরযাত্রী এসে পৌঁছালো ১২টার একটু আগে। এর মধ্যে মোটামুটি সব মেয়েরা প্রায় রেডি হয়ে গিয়েছে।অনেকে নিজ থেকে মেকআপ করেছে অনেকে আবার পার্লারের মেয়েদের থেকে করিয়ে নিয়েছে।
সবাইকেই অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে।

সকাল থেকে এ পর্যন্ত মুসকান আর আফনানের একবারো দেখা হয়নি।কারন মুসকান আজকে বেশ ব্যস্ত একজন মানুষ।

মাহিরা লাল,গোল্ডন রংয়ের ভারী কাজ করা শাড়ী পরেছে আর শাওন গোল্ডেন রংয়ের শেরওয়ানি পরেছে।

মুসকান নেভীব্লু রংয়ের লেহেঙ্গা পরেছে।আফনান ও সেম কালারের শেরওয়ানি পরেছে। এই মিল করে ড্রেস পরার জন্য আফনানের অবশ্য মিরার সাহায্য নিতে হয়েছে।মিরাকে আইসক্রিম আর চকলেট এর লোভ দেখিয়ে আফনান মুসকানের রুমে পাঠায়। আর কি রংয়ের ড্রেস পরবে তা জানতে বলে।পরে যখন আফনান জানে যে মুসকান নেভীব্লু কালারের লেহেঙ্গা পরবে,তার কতো খুঁজাখুঁজি ম্যাচিং একটা শেরওয়ানির। অবশেষে পেয়েও গেলো। আফনানের নিজেরই শেরওয়ানি, শুধু খুঁজে পেতে দেরী হলো আরকি।

সুমনা আকাশী রংয়ের লেহেঙ্গা পরেছে আর আকাশ সাদা রংয়ের শেরওয়ানি।

বরযাত্রীদের বাড়ীর ভেতরে ঢুকার জন্য কোনো প্রকার সমস্যা হয়নি।
যোহরের নামাজের পর বিয়েটাও খুব ভালোভাবেই পরানো হয়ে গেলো। কবুল বলার সময় মাহিরার সে কি কান্না।মুসকান আর আম্মু অনেক বলে মাহিরার কান্না থামাতে পারে।

বিয়ে পরানো হয়ে গেলে সবাই খাওয়াদাওয়া করলো। খাওয়াদাওয়া শেষে এবার ছবি তুলার পালা। বর কনের একসাথে ছবি তুলো দিচ্ছে ফটোগ্রাফার।
আর বাকি সবাই নিজ নিজ ফোনে ছবি তুলছে।

আফনান একটা চেয়ারে বসে সামনে রাখা টেবিলে হাত বাম হাত রেখে ডান হাত দিয়ে মোবাইল টিপছে।আকাশ বাইরে দাঁড়ীয়ে কথা বলছে ফোনে।

আফনান ফোন টিপতে টিপতে খেয়াল করলো পাশের চেয়ারে একটা মেয়ে বসলো।আফনান যেহেতু ফোনের দিকে দেখো রয়েছে তাই সে ভাবলো হয়তো মুসকান বসেছে তার পাশে। মনে মনে সে বেশ খুশি হলো।

এদিকে ছবি তুলতে তুলতে বেশ কয়েকবার আফনানের দিকে তাকানো হয়ে গিয়েছে মুসকানের। না চাইতেও বারবার অবাধ্য চোখগুলো আফনানকেই দেখছে।আফনান আশেপাশে না থাকলে মুসকানের চোখ শুধু আফনানকেই খোঁজে।
আজকে নেভীব্লু কালারের শেরওয়ানিতে একদম মেয়েদের নজরকারার মতো সুন্দর লাগছে আফনানকে।তারপর আবার যে স্টাইলে চেয়ারে বসেছে তাতে অনেক মেয়ের ক্রাশ লিস্টে চলো গিয়েছে আফনান।
আফনান অবশ্য মুসকানকে দেখার সুযোগ পায়নি।

ছবি তুলতে তুলতে হঠাৎ মুসকান দেখলো আফনানের পাশে একটা মেয়ে বসে আছে।অবশ্য আফনান কোনো কথা বলছে না দেখে সে বেশ খুশিও হলো।কিন্তু এ খুশি বেশি সময় থাকলো না।

আফনানের পাশে বসা মেয়েটা বললো,

“এক্সকিউজ মি।আপনার সাথে কি একটু কথা বলতে পারি??”

অপরিচিত কন্ঠ শুনে পাশে তাকালো আফনান। তাকিয়েি থতমত হয়ে গেলো সে।কারন সে তো মুসকানকে আশা করেছিলো, এ তো অন্য মেয়ে।

আফনান নিজেকে স্বাভাবিক করে মুখে জোরপূর্বক একটা হাসি ফুটিয়ে বললো,

“জ্বি বলুন।”

মেয়েটা মুচকি হেসে বললো,

“আমি পিয়া।শাওন ভাইয়ার চাচাতো বোন।আপনি??”

“আমার নাম আফনান। আমি আকাশের বন্ধু। আর আকাশ হলো মুসকানের ফ্রেন্ড।”

“ওহ আচ্ছা।”

এদিকে মুসকানের সারা শরীর রাগে যেনো জ্বলে যাচ্ছে এসব দেখে।আফনানের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে দিচ্ছে গালি দিয়ে।কি দরকার তার এসব গায়ে পরা মেয়েদের সাথে কথা বলার।তারপর আবার কি সুন্দর হেসে হেসে!!
মুসকান আর এক মিনিটও দেরী না করে আফনানের দিকে তেড়ে গেলো।

সেখানে গিয়েই পিয়াকে বললো,

“হেই ইউ মিস সমস্যা কি তোমার??”

পিয়া তো মুসকানকে এভাবে হঠাৎ দেখে ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো।সাথে আফনানও। দুজনি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
পিয়া অবাক হয়ে বললো,

“আজব তো, কি সমস্যা হবে আমার??আর তুমিই বা কে??”

মুসকান রেগে বললো,

“আমি কে সেটা তোমার জানতে হবে না। তুমি এখানে কেনো??আর কোনো জায়গা নেই বসার??”

পিয়া একটু ভাব নিয়ে বললো,

“আমার এ জায়গাটা পছন্দ হয়েছে তাই বসেছি।আর সাথে উনাকেও।”শেস কথাটা আস্তে বললেও আফনান আর মুসকান শুনতে পেয়েছে।
পিয়ার কথা শুনে আফনানের চোখ রীতিমতো বড় হয়ে গেলো। আর মুসকানের রাগ যেনো এখন আকাশচুম্বী। সে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

“কি বললে তুমি!!”

“ঠিক বলেছি।”

“তুমি উনাকে খুব ডিস্টার্ব করছো।সো এখনি চলে যাও এখান থেকে।”

মুসকানের কথা শুনে পিয়া বলে,

“আমাকে তো বললো না একবারো উনি।”

এবার মুসকানের রাগের সীমা যেনো ছাড়িয়ে যাচ্ছে।সে রাগী চোখে আফনানকে চোখের ইশারায় বুঝালো যে সে ডিস্টার্ব হচ্ছে এটা যেনো পিয়াকে বলে।
আফনান মুসকানের ইশারা বুঝতে পেরে তৎক্ষণাৎ পিয়াকে বলে,

“হুম হুম।আমি অনেক ডিস্টার্ব হচ্ছি।আমার একটু খোলা হাওয়া বাতাস চাই।”বলে নিজের শেরওয়ানির কলার দুহাত দিয়ে ধরে উঠানামা করাচ্ছে।

আফনানের এ কথায় বেশ অপমানিত বোধ করলো পিয়া।মুসকান দাঁত কেলিয়ে বললো,

“শুনলে তো উনার মুখ থেকে??না শুনাই বেটার ছিলো।শুধু শুধু অপমানিত হতে হলো। এবার তো যাবে।”পিয়া আর কিছু না বলে মুখ ভাঙিয়ে চলে গেলো।

আফনান তো এসব কান্ড দেখে মুখ টিপে হাসছে।
পিয়া চলে যাওয়ার সাথে সাথে মুসকান আফনানের দিকে সরু চোখে তাকিয়ে বলে,

“হাসছেন কেনো??এখানে কোনো কমেডি চলছে না।আর আপনি এসব মেয়েদের সাথে কথা বলেন কেনো!!!!”

আফনান কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগেই মুসকান সেখান থেকে রেগে চলে যায়।আর আফনান মুসকানের যাওয়ার পানে তাকিয়ে মুচকি হাসতে থাকে আর বলে,

“এই মেয়ে তো আমার প্রেমে পুরোই হাবুডুবু খাচ্ছেে।একে হাবুডুবু খাওয়া থেকে বাঁচাতে তো হবে। ডুবে গেলো এতো কিউট হবু বউ পাবো কোথায়।”

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে