এই_সাঁঝবেলাতে_তুমি_আমি পর্ব-০৬

0
1729

#এই_সাঁঝবেলাতে_তুমি_আমি🍁
পার্ট ৬
#সারা_মেহেক
🍀🍁

মুসকান আলমারির কাছে গিয়ে আলমারি খুলে কাপড়চোপড় নিলো শাওয়ার নিবে বলে।

কাপড় নিতে গিয়ে মুসকানের চোখ পরলো আলমারির এক কোনায় রাখা আকাশ আর তার ছোটো বেলার ছবিটার দিকে। এতোদিন ছবিটা দেখে খুব রাগ লাগতো তার। কারন সেদিনকার আকাশের সেই ব্যবহার। আর আজকে এ ছবিটা দেখে মনের অজান্তেই ঠোটের কোনে একটা হাসি ফুটে উঠলো।সে ছবিটা নিয়ে আলমারি আটকিয়ে সুমনার কাছে আসলো।সুমনাকে বললো,

“দেখ,আমার আর আকাশ ভাইয়ার ছোটোবেলার ছবি।”

সুমনা ভ্রু উচিয়ে মুসকানের দিকে তাকিয়ে বললো,

“এই ছবি কোথা থেকো আসলো??এতোকাল তে দেখিনি।”

মুসকান ছবির দিকে তাকিয়ে বললো,

“আমার আলমারির এক কোনায় অবহেলায় পরেছিলো এটা। আজকে হঠাৎ চোখে পরলো। এতোদিন তো এই ছবিটা ভালো লাগতো না। কিম্তু এখন এ ছবিটা আবারো ভালো লাগা শুরু করেছে। কারন ফ্রেন্ডশিপ আবার আগের মতো হয়ে গিয়েছে।
আচ্ছা আকাশ ভাইয়ার রুমে একটু চল না। উনাকে এ ছবিটা দেখাবো।দেখতে চাই যে এই ছবির কথা মনে আছে কি না। ”

সুমনা হতাশ ভঙ্গিতে বললো,

“ঠিক আছে চল। ”

.
.
রুমের দরজা হালকা লাগানো, মানে দরজা পুরোপুরি বন্ধ না।
প্রথমেই মুসকান রুমে ঢুকতে গিয়েছিলো। কিন্তু পরে সেদিনকার কথা মনে আসলো।তাই সে আগে দরজাা দুবার টোকা দিলো।
ভিতর থেকে একজন বললো,

“আসুন।”

একথা শুনে আর দেরি না করে মুসকান আর সুমনা রুমে ঢুকে গেলো।রুমে ঢুকেই সামনে যা দেখলো তাতে দুজনের চক্ষু চড়াকগাছ।
কারন রুমে বসবাসরত দুই বান্দার এক বান্দার গায়েও কাপড় নেই। আকাশ পরে আছে একটা ট্রাউজার।আর আফনান শুধু টাওয়াল পেঁচিয়ে আছে।
দুজনই বসে বসে অতি মনযোগ সহকারে ফোন টিপছে।এজন্য কে যে আসলো সেদিকো কারোর খেয়াল নেই।
আকাশই ফোন টিপতে টিপতে মুসকান আর সুমনাকে আসতে বলে।

মুসকান আর সুমনা আকাশ আর আফনানের এমন অবস্থা দেখে তাড়াতাড়ি দরজার দিকে মুখ করে দাঁড়ায়।মুসকান বলে,

“আপনারা দুজন প্লিজ আগে কাপড় পরে নিন।তারপর আমরা রুমে আসছি।”
বলে সুমনাকে নিয়ে মুসকান রুম থেকে তড়িঘড়ি করে বের হয়ে গেলো।

এবাবে হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনায় আকাশ আফনান দুজনেই চুপ হয়ে আছে।কি দিয়ে কি হয়ে গেলো মাথায় ঢুকছে না। এভাবে খালি গায়ে যে তারা আছে আর রুমের ভিতরে কাউকে আসার পারমিশনও দিয়ে দিয়েছে বুঝতেও পারেনি।কারন ফোনে দুজন এতোটাই মগ্ন ছিলো।
মুসকানের বলা কথাগুলো কানে গিয়েছিলো আফনানের তাই সে একটা টিশার্ট আর ট্রাউজার হাতে নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো চেঞ্জ করতে।যাওয়ার আগে আকাশের দিকে একটা টিশার্ট ছুড়ে মেরে পরে নিতে বললো।
আফনান নিজেই নিজেকে বকছে। এই ফোনটাই যত ঝামেলার মূল। ফোনে এতো বিজি থাকি কেনো বুঝি না। আশেপাশে কি হচ্ছে সেটা তো একটু খেয়াল রাখা উচিত।

আকাশ তাড়াতাড়ি টিশার্ট টা গায়ে জড়িয়ে দরজা খুলে মুসকান আর সুমনাকে ভিতরে আসতে বলে।

তারা দুজন এসে সোফার উপর বসলো।মুসকান বললো,

“আপনারা দুজন ওলয়েজ রুমে এভাবে থাকেন নাকি!!একটাবারও আপনাদের রুমে আপনাদের গায়ে শার্ট দেখলাম না।রুমের ভিতর কি ফুল ড্রেসে থাকতে পছন্দ করেন না নাকি??”

আফনান ওয়াশরুম থেকে বের হতে হতে বললো,”আরে একটু গরম পরছে তো তাই আরকি।”

মুসকান মুখ বাঁকিয়ে বললো,

“তো আমাদের তো আসতে নিষেধ ও করতে পারতেন।”

আফনান মাথা মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো,

“আরে অতো শত খেয়াল ছিলো না।আকাশ তোমাদের আসার পারমিশন দিয়েছে।”

আফনানের কথা শুনো মুসকান আর সুমনা সরু চোখে আকাশের দিকে তাকায়।
আকাশ দাঁত কেলিয়ে হেসে বলে,

“আরে এসব বাদ দাও। হঠাৎ তোমরা যে এসেছো??”

মুসকান নিজের হাতের থেকে ছবিটা আকাশের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,

“এ ছবির কথা মনে আছে আপনার??”

মুসকানের চোখেমুখে উৎসুকতা। তার মন খুবই জানতে চাচ্ছে যে আকাশের এই ছবির কথা মনে আছে না কি। আবার এমনও হতে পারে আকাশ ভুলেও যেতে পারে।

আকাশ কিছুক্ষণ ভেবে বললো,

“হুম মনে আছে তো।কেনো মনে থাকবে না। তুমি যেরকম জিদ ধরেছিলে মেলায় যাওয়া নিয়ে তা কি আর ভুলা যায়।”

আকাশের কথা শুনে মুসকানের মুখে হাসি ফুটে যায়। সে মুখে হাসি রেখেই বলে,

“হুম,আপনাকে তো কোনোমতেই রাজি করানো যাচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত আংকেলের বকা শুনে রাজি হইলেন।”

আকাশ ছবির দিকে তাকিয়েই বললো,

“হুম।সব মনে আছে।”

এভাবে করে এই ছবি নিয়ে আকাশ আর মুসকান বেশ কিছুক্ষণ ধরে গবেষনা চালালো।
আফনান আর সুমনার একদমই ভালো লাগছে না।তারা নিরব দর্শকের মতো চেয়ে চেয়ে সব দেখছে। এছাড়া আর করারই বা কি আছে। ছোটোবেলার আলাদা হয়ে যাওয়া দুই দোস্ত একসাথে হলে যা হয় আরকি।
.
.
.
বিকালের দিকে সব মেয়েরা হাতে মেহেদি নিলো। মেহেদি দেওয়া নিয়ে সে এক হুলস্থুল কান্ড।মেহেদি আর্টিস্ট যে ক’জন এসেছে তারা কুলাতে পারছে না। কতোজনকে মেহেদি দেওয়া যায়। হাত ব্যাথা হয়ে কিছুক্ষন বসে ছিলো তারা।
পরে আর উপায় না পেয়ে সুমনা,মুসকান আর দুজন মেয়ে মেহেদি দেওয়া শুরু করে।তারা এই আশায় বসে ছিলো যে মেহেদি আর্টিস্ট এর থেকে হাত ভরে মেহেদি নিবে।কিন্তু তা কি আর হবে নাকি কো জানে।

মুসকানরা ৪জন মেহেদি দেওয়া শুরু করায় বেশ এগিয়ে গেলো মেহেদি দেওয়া।
সবশেষে মুসকান আর সুমনা মেহেদি আর্টিস্ট এর থেকেই মেহেদি নিলো একদম হাত ভরে।

বসে বসে ঝিমুচ্ছে সুমনা। দীর্ঘ ২টা ঘন্টা ধরে শুধু বসেই আছে সে।মুসকানের হালকা ধাক্কা দেওয়াতে চোখ খুললো সুমনা। চোখ খুলেই বেশ খুশি হলো সে।কারন মেহেদি দেওয়া শেষ তার।মুসকানের মেহেদি দেওয়া শেষ হয়েছিলো তাও প্রায় আধ ঘন্টা আগে। সে বসে বসে সুমনার মেহেদি দেওয়া দেখছিলো।
সুমনা হাই তুলে বললো,

“আমার না যথেষ্ট সন্দেহ হচ্ছে যে আমি অতো রাত পর্যন্ত জাগতে পারবো নাকি।”

মুসকান বসা থেকে উঠতে উঠতে বললো,

“আরে জাগতে পারবি দেখিস। সবাই যখন একসাথে মজা করবে তখন তোর একটুও ঘুম পাবে না দেখিস।আচ্ছা চল একটু পানি খেয়ে আসি।”

সুমনা উঠতে উঠতে বললো,

“ঠিক আছে চল।”

মুসকান সুমনার দিকে তাকিয়ে কথা বলতে বলতে হাঁটতে লাগলো। ফলস্বরুপ খেলো একটা ধাক্কা, তাও আবার আফনানের সাথে। ধাক্কা লাগায় বাম হাতের মেহেদি একটু নষ্ট হয়ে যায়।এদিকে সুমনা যে বলবে আফনান আসছে তারও উপায় নেই।কারন বেচারি ঘুমে প্রায় চোখ বন্ধ করেই হাঁটছিলো।

মুসকানের হাতের মেহেদি নষ্ট হওয়ায় যেমন খারাপ লাগছিলো তেমন রাগও হচ্ছিলো।মেহেদি নেওয়াটা খুবই পছন্দের মুসকানের কাছে।একটু থেকে একটু মেহেদি নষ্ট হলে সে এক হুলস্থুল কান্ড বাঁধিয়ে দেয় সে।

একবার মেহেদির দিকে তাকাচ্ছে তে একবার সামনে থাকা ব্যক্তির দিকে তাকাচ্ছে।রাগটা আরো বেড়ে গেলো এই দেখে যে এ কাজটা আফনানের কাজ। কোনো ছোটো বাচ্চা হলে নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করতো।কিন্তু সামনে আফনান খাম্বা দেখে সে রাগটাকে আর কন্ট্রোল করতে পারলো না।

মুসকান জোরে জোরে বললো,

“ঐ মিয়া,আপনার চোখ থাকে কোথায় শুনি??চোখটা কি রুমে রেখে এসেছেন নাকি??”

মুসকানের এভাবে জোরে চিল্লানিতে সুমনা বড় বড় করে চোখ খুলে। এমন চিৎকার শুনে পাশে থাকা যে কারোর ঘুম ভেঙে যাবে।

আফনান নিজের টিশার্ট থেকে মেহেদি মুছতে মুছতে বললো,

“সেম প্রশ্ন আমারো। তোমার কি চোখ নেই??আমার পছন্দের একটা টিশার্ট দিলে তো নষ্ট করে।”
মুসকান এমনভাব ধরেছে যেনো এখন কোমড়ে কাপড় বেঁধে ঝগড়া করতে নামবে।সে রেগে বললো,

“বেটা বজ্জাত কোথাকার।আমার মেহেদি নষ্ট করেছেন সেদিকে খেয়াল নেই তাইনা??এতে সুন্দর করে দেওয়া মেহেদি আপনি নষ্ট করলেন কেনো আগে বলুন।”

“এই এই,আমি নষ্ট করেছি কোথায় হুম??নিজে অন্যদিকে তাকিয়ে হাঁটবে। গুঁতো খাবে নিজে না দেখে।আর দোষ দিবে আমার উপর বাহ বাহ।আগে নিজের দোষটা দেখো।!”

মুসকান আফনানের দিকে মুখ এগিয়ে বলে,

“এ মিস্টার সাদা হাতি,দোষ আমার না।দোষ আপনার। আপনি এদিকে দেখে হাঁটবেন না??এদিকে যে এতো মেয়ে আছে তাই একটু দেখে হাঁটা উচিত ছিলো আপনার।”

“এই মেয়ে,তুমি আমাকে সাদা হাতি বললে কেনো??কোন দিক দিয়ে আমি এমন লাগি শুনি??”

“একদম এমনই লাগেন। তাও ভালো যে আপনাকে বান্দী বলি নি। সে যাই হোক,আগে দেখুন,আমার কতোটুকু মেহেদি নষ্ট করেছেন!!! একটুও আফসোস হয় না??বাচ্চা একটা মেয়ের সুন্দর করে দেওয়া মেহেদি নষ্ট করে দিতে!!”বলে মুসকান আফনানের মুখের দিকে নিজের মেহেদি ভরা হাত বাড়িয়ে দিলো।

আফনান চোক কুঁচকে হাতের এদিক ওদিক দেখে বললো,

“সামান্য একটু মেহেদি নষ্ট হয়েছে যাস্ট।তার জন্য এতো চেঁচানোর কি আছে শুনি??আর আফসোস হবে কোন দুঃখে??”

মুসকান চোক বড় বড় করে বললো,

“আপনার কাছে এটা সামান্য মনে হয়!!!আপনি এতোটা খারাপ জানতাম না।ছোটো একটা মানুষের হাতে মেহেদি নষ্ট করে কই একটু সরি বলবে তা না। উল্টা এই সেই কথা বলছে।”

আফনান অন্যদিকে তাকিয়ে ধীর গলায় বললো,

“কিসের ছোটো বাচ্চা!!আজ বিয়ে দিলে কয়দিন বাদেই এক বাচ্চার মা হয়ে যাবে।”

মুসকান হয়তে কথাটা কিছু শুনেছে। তাই সে বললো,

“কি বললেন আপনি!!”

এদিকে এ দুজনের ঝগড়ায় অতিষ্ঠ হয়ে ডাইনিং টেবিলের চেয়ারে বসলো সুমনা। কান মাথা যেনো তার গিয়েছে অর্ধেক।গলাটাও শুকিয়ে আসছে।
কিন্তু পানি খাবেই বা কিভাবে। দুহাতেই তো মেহেদি ভরা।সুমনা অসহায় গলায় বললো,

“এই মানুষটাকে কেউ একটু পানি খাইয়ে দাও। বড়ই অসহায় আমি। দয়া করিয়া আমাকে কেউ পানি পান করাইয়া দাও। গলা শুকিয়ে আসিতেছে।”

চোখ বন্ধ করে সুমনা বিলাপ করছে বসে বসে। হঠাৎ মনে হলো কেউ তার মুখের কাছে পানির গ্লাস ধরলো।তাই চোখ খুলে সামনে তাকালো সে। আর চোখ খুলতেই আকাশকে দেখতে পেলো।আকাশ পানির গ্লাস হাতে দাঁড়ীয়ে আছে।মুখে সুন্দর একটা হাসি। যে হাসি দেখে মনটা ভালো হয়ে গেলো সুমনার। সব ক্লান্তি যেনো দূর করে দেয় এ হাসি।
আকাশ সুমনার ঠোটের কাছে পানির গ্লাস লাগিয়ে বললো,

“নেও এবার পানিটা খেয়ে নাও। ”

আকাশের কথা শুনে সুমনা ঢকঢক করে পুরো পানি খেয়ে ফেললো।
সুমনার পানি খাওয়া শেষে আকাশ টেবিলে গ্লাস রাখতে রাখতে বললো,

“এবার পিপাস গিয়েছে??”

সুমনা মুখে একটা হাসি এনে বললো,

“হুম গিয়েছে।”

“তুমি যেমনভাবে সব বলছিলে না,মনে হচ্ছিলো এখনি পানি না পেলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে তোমার।
আচ্ছা ওদিকে চলো, দেখি দুজনের ঝগড়া থামানো যায় নাকি।”

“হুম চলুন।”

আকাশ হাঁটতে হাঁটতে বলে,

“আমার থেকে একটু দূরেই থাকো সুমনা। কখন যেনো আবার আমার কাছ থেকে তোমার মেহেদি নষ্ট হয়ে যায়।তখন আবার এদের মতো ঝগড়া করতে হবে নে।”বলেই হেসে দেয় আকাশ।
আকাশের এ কথা শুনে সুমনা বিড়বিড় করে বলে,

“হোক না একটু ঝগড়া। দুষ্টু মিষ্টি ঝগড়া।ব্যাপারটা বেশ ভালো হবে।”

আকাশ সুমনার বিড়বিড় করা শুনে বললো,

“কিছু বললে তুমি??”

সুমনা চমকিয়ে বললো,

“না না, তেমন কিছু না। বললাম যে সাবধানেই আছি। লাগবে না মেহেদি।”

“হুম সেটাই ভালো।”

আকাশ গিয়ে আফনানের কাঁধে হাত রেখে বললো,

“কি ব্যাপার রে আফনান, আমার ছোটো ময়নাটাকে এতো জ্বালাচ্ছিস কেনো??”

আকাশের কথা শুনে মুসকান মুখ উল্টিয়ে বললো,

“দেখুন আকাশ ভাইয়া,আপনার এই ত্যাড়া বন্ধুটা নিজের দোষ স্বীকার করে একটু সরি বলছে না।”

আকাশ আফনানের দিকে তাকিয়ে বললো,

“কিসের জন্য সরি বলছিস না ওকে??”

আফনান মুসকানের দিকে সরু চোখে তাকিয়ে বললো,

“কোন দুঃখে ওকে আমি সরি বলবো,যেখানে আমার কোনো দোষই নেই।”

আকাশ বললো,

“আচ্ছা দোষ থাকুক আর নাই ই থাকুক একটু সরি বললে কি এমন হয়ে যায়। সরি বলে দে দোস্ত।মেয়ে মানুষ তো।”

আকাশের বলা শেষ কথাটা ধরে বসে মুসকান। সে বলে,

“মেয়ে মানুষ মানে!!!আমরা কি দয়ার পাত্র!!! এমনভাব দেখাচ্ছেন!!”

সুমনা মুসকানের কাছে এসে বললো,

“মুসু,বাদ দে না। আর কতো ঝগড়া করবি??”

আকাশ বললো,

“আরে আমি তা বলেছি না। আচ্ছা আফনান, তুই সরি বলছিস না কেনো??”

আফনান যুদ্ধে হারা এক সৈনিক এর মতো বললো,

“আচ্ছা সরি। ”

“সরি”শুনে মুসকান একটা তৃপ্তির হাসি দিলো। সে মুখ টিপে হেসে বললো,

“এই শুকনো সরি তে কোনো কাজ হবে না।আমাকে রেস্টুরেন্ট এ নিয়ে খাওয়াতে হবে। অথবা আমি যা চাইবো তা।”

আফনান চোখ বড় বড় করে বলে,

“এটা ঠিক না। সরি চেয়েছো।বলছি।আবার কিসের খাওয়াদাওয়া?? ”

মুসকান সরু চোখে তাকিয়ে বলে,

“কেনো পকেটে টাকা নেই??সামান্য খাবার খাওয়াতে পারবেন না??”

“আচ্ছা আচ্ছা খাওয়াবো।”

আকাশ মুসকানকে বলে,

“এটা তাহলে ট্রিট নেওয়ার ধান্ধা ছিলো বুঝি?”

মুসকান মুক টিপে হেসে বলে,

“তা না। আর আপনার না জানলেও চলবে।”
বলে মুসকান চলে গেলো। সাথে সুমনাকে ইশারা করলো তার সাথে যাওয়ার জন্য।

মুসকানের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো আফনান।মুসকানের সাথে এতোক্ষন ঝগড়াটা করো বেশ ভালোই লাগলো তার।ইচ্ছা করেই তা বাড়িয়ে যাচ্ছিলো আফনান।কারন মুসকানের সাথে একটু সময় কাটাতে অনেক মন চাচ্ছিলো আফনানের। আজকে তা পেরেছে সে। ঝগড়ার মাধ্যমেই হোক পেরেছে তো সে।
মুসকানের কিছু কিছু বাচ্চামো স্বভাব অনেক ভালো লাগে তার।মুসকান কিন্তু দেখতে যে খুব সুন্দরী তা না।কিম্তু আফনানের মনে সে একটু একটু করে জায়গা করে নিতে শুরু করেছে। এ বিষয়টা মুসকানের অজানা। হয়তো আফনান এরও।
মুসকানের কথা বলা,চোখ নাড়ানো এসব দেখতে বেশ লাগছিলো আফনানের কাছে।মুসকানের কথা চিন্তা করতে করতে তার ঠোটের কোনো এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে।
আফনানের মুখে হাসি দেখে আকাশ সন্দেহের সুরে বলে,

“এভাবে একা একা হাসছিস কেনো??পাগল হয়ে গেলি নাকি??”

আফনান হেসে বলে,

“পাগল তো হয়েই গিয়েছি। হয়তো কারোর প্রেমে।”

আকাশ মাথা চুলকে বলে,

“মানে?কার প্রেমে??”

“সে পরে জানবি দোস্ত।একটু ওয়েট কর।”
বলে আফনান গার্ডেনে চলে গেলো। আর আকাশ বেকুবের মতো দাঁড়ীয়ে রইলো সেখানেই।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে