এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায় পর্ব-৩৩ এবং শেষ পর্ব

0
330

#এই_সুন্দর_স্বর্ণালী_সন্ধ্যায়
#পর্বসংখ্যা_৩৩

মাহাদের দিনগুলো ভালো যাচ্ছে না। বাচ্চাটা মারা যাবার পর বেশ অসুস্থ মাহিয়া। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায় নি এখনো। কোর্টে মাহতাবের কেস চলছে। অনেক চেষ্টা করেও তার জামিন করাতে পারে নি। পরিবারিক সংকটে পরে পিষ্ট সে। দিনশেষে তবুও যেটুকু সান্ত্বনা, স্বস্তি পাবার কথা সেটুকুও মেলে না তার। প্রিয়তমা স্ত্রীর মুখখানি দেখলেই বুক কেঁপে ওঠে। মনে হয় সেই দুঃস্বপ্নের সন্ধ্যার কথা। মনে পড়ে সিঁড়ির গোড়ায় নিথর হয়ে পরে থাকা রক্তাত মাহিয়ার মুখ। খুব ক্লান্ত স্বরে শুধায়,
— “এমনটা কেন করলে অনু?”
প্রশ্ন নয়, আক্ষেপ। আফসোস। বাড়ির কেউ আসল সত্যটা না জানলেও মাহাদ সব জানে। মাহিয়ার ঘটনাটা কোনো অ্যাকসিডেন্ট নয়। বরং তা পূর্বপরিকল্পিত। করিডোরে তেল ঢেলেছিল অনু। পরে সেটা মুছেও ফেলেছিল নিজেকে বাঁচাতে। কিন্তু সেদিন রাতে পায়ে লাগা কিছু লাগার চিটচিটে অনুভূতি; আর নিজের শয়নকক্ষের কোণায় রাখার খালি তেলের বোতল দেখেই সবটা পরিষ্কার হয়ে যায় ওর কাছে। ওকে জিজ্ঞেস করে সবটা জানতে, কিন্তু অনু উত্তর দেয় না। যদিও উত্তরটা জানার প্রয়োজন ওর একেবারই নেই!
অনু কেন এমন করেছে মাহাদ তা জানে। জানে বলেই আর কাউকে কিছু জানায় না সে। চুপচাপ সব গোপন করে ফেলে। কারণ, অনুর শাস্তিটা সে নিজেই দিতে চায়!
___

নির্ধারিত দিনে খুব ধুমধাম করে বিয়ে হয়ে গেল চারুর। ঢাকা থেকে বরযাত্রী এসে হাজির হলো বিয়ের দিন সকালে। সারাদিন থাকলো।
হৈ-চৈ হলো। বিয়ে পড়িয়ে রাতেই ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু কেউ ছাড়লেন না। নব দম্পতির বাসর অরুণা ম্যানশনেই হলো। পরদিন সকালেই নব পরিণীতাকে নিখিল আকাশপথে উড়িয়ে নিয়ে গেল নিজের বাসায়!
নতুন সংসারে বেশ সুখেই দিন কাটতে লাগলো। স্বামী, শাশুড়ি নিয়ে ঝঞ্ঝাটহীন নিরিবিলি সংসার। চারু সত্যিই খুব সুখী হলো। সেই সুখ দেখে লোকে যখন ঈর্ষা করে, হিংসায় জ্বলে গিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে ওকে নিয়ে, তখন হয় তো একটু দুঃখ পায় বেচারী। কিন্তু সেই দুঃখটা কখনোই স্থায়ী হতে দেয় না তার প্রিয়তম, নিখিল নওশাদ! কারণ সে যে কথা দিয়েছিল, চারুকে কোনদিন দুঃখী হতে দেবে না। কথা দিয়ে কথা না রাখা যায়?
চারুর খুশিতে বাড়ির সকলেই খুশি। মেয়েকে ভালো পাত্রের নিকট সোপর্দ করতে পেরে তাদের বুক থেকে যেমন পাথর নেমে গেছে। ভীষণ আনন্দিত তারা। কিন্তু এক দুশ্চিন্তার অবসান ঘটলেও, অন্য দুশ্চিন্তা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো তাদের ভেতর। সেই চিন্তা অনুকে নিয়ে। মেয়েটার সংসারজীবন খুব একটা সুখের যাচ্ছে না। ডেলিভারির সময়ও এগিয়ে আসছে। কি যে হয়, চিন্তায় আছেন সবাই!
____

ভালোবাসার মানুষের দেয়া উপহারের চেয়ে বড় উপহার যেমন আর কিছু হয় না; তেমনই ভালোবাসার মানুষের দেয়া শাস্তির চেয়েও বড় কিছু হয় না! অনুকে মাহাদ ঠিক সেই শাস্তিই দিয়েছে।
একই ছাদের নিচে, একই বিছানায় পাশাপাশি শুয়েও ওদের মধ্যে থাকে যোজন যোজন দূরত্ব। অনু কাছে আসবার চেষ্টা করলেও মাহাদ এড়িয়ে যায়। ঠিকমত কথা অবধি বলে না!
সারাদিন সকলের সামনে ভালো থাকার অভিনয় করে যায় অনু, সবাইকে দেখায় ওরা কতো সুখী দম্পতি! অথচ বাস্তবতা ভিন্ন—
অনু যে অপরাধটা করেছে তার আসলে ক্ষমা হয় না। কেউ কাউকে হিংসে করতেই পারে। কিন্তু সেই ঈর্ষার মাত্রা কতখানি হলে একজন মানুষ অন্যজনকে খুlন করে ফেলবার মত জঘণ্য কাজ করে ফেলতে পারে; সেটা ভেবেই আশ্চর্য হয় মাহাদ। অনুর রাগ, জেদ ঈর্ষা কতখানি প্রবল ছিল ভেবেই হতাশ হয়! করুণা হয় নিজের প্রতি, কি করে এমন একজনকে সে ভালোবেসেছিল?
মাহিয়াকে মেরে ফেলবার যে বিশ্রী প্রচেষ্টাটা অনু করেছিল সেটা আর কেউ জানে না। একমাত্র সাক্ষী মাহাদ। যে নিজে ঘটনা প্রত্যক্ষ না করলেও শতভাগ নিশ্চিত অনুই দোষী। কেস করবার মতো জটিল একটা ইস্যু হলেও এ নিয়ে থানা-পুলিশ অবধি যায় নি কেউ। নেহাৎ এক্সিডেন্ট বলে ছেড়ে দিয়েছে সব। সবার নিশ্চলতা দেখে চিরকাল ন্যায়ের পক্ষে থাকা মাহাদও আর কিছু বলে নি। শতহোক, বাড়ির বৌকে পুলিশি ঝামেলায় জড়াতে কেই আর চায়!
অনুকে অবশ্য অন্যভাবে শাস্তি দিতে পারতো সে। চাইলেই ডিভোর্স দিয়ে দিতে পারতো। কিন্তু শেষমেষ তা না করে নি মাহাদ। ওদের একটা বাচ্চা আছে। বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে বাচ্চাটার উপর কোনো খারাপ প্রভাব পড়ুক সেটা ও চায় নি। তাই যেমন-তেমন করে হলেও সংসারটা টিকেছে অনুর। কিন্তু এই সংসারের কোনোই যে দাম নেই, তা ভালো করেই জানে অনু!

দেখতে দেখতেই কেটে গেছে প্রায় ছ’ মাস। দীর্ঘদিন ধরে চলমান কেসের রায় হয়েছে অবশেষে। মাহতাবের সাজা হয়েছে। দু বছরের হাজতবাস সহ নগদ অর্থ দণ্ড। মাহতাব বর্তমানে কারাগারেই আছে। চাকরি চলে গিয়েছে, ভেঙে গিয়েছে তার সুখের সংসার। হাসপাতাল থেকে আর ফিরে আসে নি মাহিয়া। চলে গিয়েছে নিজের বাড়িতে; পরিবারের কাছে। এ বাড়ির সঙ্গে সবরকমের সম্পর্ক চ্যুত করে!
ডিভোর্স লেটারও পাঠিয়ে দিয়েছে যথাসময়ে।

অনুও শাস্তি পেয়েছে তার কর্মের জন্য। রাষ্ট্রীয় কোনো আইনের আওতায় নয়, তার সৃষ্টিকর্তার দেয়া আইনের অধীনে। যে মানুষটিকে সে ভালোবেসেছিল, একসাথে জীবন পার করবার পবিত্র স্বপ্ন দেখেছিল, সেই মানুষটিকে তার তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি। পাশে থেকেও যেন নেই মাহাদ। উফ্, কি যন্ত্রণা! সঙ্গে আছে নিদারুণ অপরাধবোধ, আত্মগ্লানি। অনু অস্থির হয়ে উঠলো সবকিছু নিয়ে। সৃষ্টিকর্তার দরবারে মাথা ঠুকতে লাগলো নিজের কষ্ট লাঘবের জন্য। সে অনুতপ্ত, ভীষণ ভাবে! এখন যেন তার প্রতি সদয় হন তিনি।
হয় তো সত্যি সত্যিই তার প্রতি সদয় হলেন সৃষ্টিকর্তা। দোয়া কবুল হলো তার। বেশিদিন এই কষ্ট তার বইতে হলো না। অনেকটা সময় ধরে চলা এই মানসিক চাপের ভার তুলে নিয়ে, তাকে ইহজীবনের যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি দিলেন তাকে। ভারসাম্যহীন অনুলেখার স্থান এখন পাবনা মানসিক হাসপাতালে!

পরিশিষ্ট:
শুক্রবারের দিন। ব্যালকনিতে একা দাড়িয়ে আছে চারু। দৃষ্টি দূরের বড় বড় ভবনের উপর বুলিয়ে যাচ্ছে একাধারে। পাশেই রেলিংয়ের উপর চায়ের কাপ রাখা। আগুন গরম কাপখানি থেকে ধোঁয়া উঠছে হু হু করে!
পুরো ফ্ল্যাটটা আজ ফাঁকা। গতকাল ছোট জা’র বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছেন নাজিয়া নিলুফার। চারুকে একা ফেলে যেতেন না, তবে আজ শুক্রবার; নিখিল বাসায় থাকবে বলেই গেছেন। বিয়ের পর নবদম্পতিদের একটু স্পেস দিতে হয়। সুযোগ দিতে হয়, একসঙ্গে থাকার। তাতে ভালোবাসা বাড়ে, বোঝাপড়া সুন্দর হয়!
এমনিতেই বিয়ের পর অফিস থেকে কোনো ছুটি পায় নি নিখিল। চারুকে নিয়ে সেই যে এসে ফ্ল্যাটে তুলেছে, তারপর আর কোথাও যাওয়া হয় নি। গৎবাঁধা জীবনে আটকা পড়েছে দু’জনে। মাঝে মাঝে উনি তাও ঠেলেঠুলে বাইরে পাঠাতে চান দু’টোকে কিন্তু কাজের বাহানা দিয়ে বাবুরা আর যান না! এবার তাই বুদ্ধিমতী নাজিয়া ছেলে আর ছেলের বৌকে একেলা সময় কাটাতে ছেড়ে গেছেন। বলে গেছেন, পাঁচ ছ’ দিনের আগে উনি ফিরবেন না!
নিখিলের অবশ্য তাতে দ্বিমত ছিল বেশ। মা কেন এতদিন দূরে থাকবে? এই নিয়ে বেশ রাগারাগিও করেছে জননীর সঙ্গে, কিন্তু নাজিয়ার জেদের কাছে হার মেনেছে। বাধ্য হয়েছে ছোট চাচীর বাড়িতে রেখে আসতে। কলিং বেলের আওয়াজে ভাবনার সুতো ছিঁড়লো চারুর। কাপটা ওভাবে রেখেই সে ত্বরিৎ পায়ে ছুটলো দরজা খুলে দিতে, তার প্রাণনাথ এসেছে যে!
দরজা খুলতেই নিখিলের ঘামে ভেজা ক্লান্ত মুখখানি চোখে পড়লো। স্ত্রীকে দেখেই যে মুখখানিতে অমায়িক হাসি ফুটে উঠলো,
— “অপেক্ষায় ছিলে?”
চারু ততোক্ষণে ওর দু’ হাত থেকে বাজারের ব্যাগ দু’টো হস্তগত করে ফেলেছে। সেগুলিকে রান্নাঘরে স্থানান্তর করতে করতে জানালো,
— “করবো না? স্বামীর জন্যই তো সব অপেক্ষা স্ত্রীদের!”
নিখিল পুনরায় হাসলো। ধীর পায়ে হেঁটে ঘরে এলো। এসেই তার নজর আটকে গেল বিছানায় থাকা কাপড়ের কুণ্ডলীর দিকে। হাসিমুখে এগিয়ে এলো সে। কাপড়ের ওই পোটলার ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে, সুন্দর এক ঘুমন্ত মুখশ্রী। ভীষণ মায়াময়, কোমল সে ছোট্ট মুখখানি!
একদম চারুর মতো দেখতে। যদিও সে চারুর গর্ভজাত নয়। তবুও একই জিন তো! অনুলেখার বাচ্চা মেয়েটা। স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে, তার সন্তানের দায়িত্বটা চারুর উপরেই দিয়ে দিয়েছে মাহাদ। চারুর কোল পূর্ণ হয়েছে, মেহেরিমাও পেয়েছে তার মা!

— “এ কি? এখনো হাত-মুখ ধুতে যান নি? যান!”
চারু তাড়া দিলে ও ফের হাসলো। বাচ্চাটার দিকে চেয়ে বললো,
— “কখন ঘুমিয়েছে, মেহেরিমা? উঠবে না? তোলো তো, একটু আদর করি।”
— “এই— একদম না! সারারাত, সারাদিন জ্বালিয়ে একটু আগে ঘুমিয়েছে। ঘণ্টাও হয় নি। এখনই তুলবেন না।”
দৌড়ে এলো চারু।
— “আচ্ছা , তুলবো না। তোমার এতো টেনশন নিতে হবে না।”
নিখিল হেসে ওর নাক টেনে দিলো। তারপর সোজা ওয়াশরুমে চলে গেল হাত-মুখ ধুতে। কাঁচা বাজার মানেই তো ভীষণ নোংরা একটা জায়গা। কতো হরেক রকমের মানুষজনের আনাগোনা, কতো হরেক রকমের আনাজ-সদাই! ঠিকমত পরিচ্ছন্ন তো হতেই হবে। বাড়িতে যখন ছোট্ট একটা শিশু আছে, তখন তো এটা আরো বেশি জরুরি!

ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে চায়ের কাপ হাতে চারুকে দাড়িয়ে থাকতে দেখলো নিখিল। একহাতে তোয়ালেটা স্ত্রীর হাতে দিয়ে, অন্য হাতে কাপটা তুলে নিতে নিতে বললো,
— “একা বোর হচ্ছিলে? আমি জলদিই আসতে চেয়েছিলাম, কিন্তু জানোই তো বাজার! একটু দেখে-শুনে না কিনলে ঠকতে হয়।”
— “সমস্যা নেই। আমি বোর হই নি। ব্যালকনিতে দাড়িয়ে ছিলাম। আকাশ দেখছিলাম। আজকের আকাশটা খুব সুন্দর, জানেন?”
হঠাৎ খুব উচ্ছ্বসিত মনে হলো ওকে। কাপে চুমুক বসিয়ে নিখিল বললো,
— “তাই নাকি? দেখি তো!”

কয়েক পা এগোলো সেদিকে। এসে সেখানটায় দাড়ালো, যেখানটায় চারু একটু আগে দাড়িয়ে ছিল। কাপটা রাখলো ওর কাপের পাশে। আড়চোখে তাকালো স্ত্রীর দিকে। চারু তখন ব্যালকনির তারে ভেজা তোয়ালেটা নাড়তে ব্যস্ত দেখে সুকৌশলে কাপ বদলে ফেললো। নিজের কাপটা চারুর জায়গায় রেখে, ওর কাপটা তুলে চুমুক বসালো। তৃপ্তিসূচক শব্দ করে বললো,
— “চা’টা ভালো হয়েছে, বৌ।”
চারু হাসলো প্রশংসা শুনে। বললো,
— “রোজই এই কথা বলেন।”
— “বিশ্বাস করছ না তো? তোমার চা কিন্তু আসলেই খুব ভালো হয়! ঠিক আমার পছন্দের মতো।”
— “শুনে ধন্য হলাম জনাব!”

চারু হেসে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হলো। কিন্তু চট করে ওর হাতটা ধরে ফেললো নিখিল। নরম করপুটে দুষ্টুমি করে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। চারু বিস্মিত হয়ে তাকাতেই চোখটিপে দিলো। অতঃপর হ্যাঁচকা টানে ওকে এনে ফেললো বুকের উপর।
লাজে রাঙা হলো চারুলতা জাফরিন,
— “কি করছেন?”
— “ভালোবাসছি!”
ফিসফিস করে বলা সেই কথাটা শরীরে কি আশ্চর্য শিহরণ জাগিয়ে দিলো ওর। শিরশির করে করলো সারা গা। দম আটকে দাড়িয়ে রইলো। নিখিল হাসলো। একহাতে থুতনি ধরে সুকোমল মুখখানি উঁচু করলো, অন্যহাতটা কপোলে ঠেকালো। আবেশে চোখ বুঁজে ফেললো চারু। পরপরই ললাটে এক ঊষ্ণ স্পর্শের অস্তিত্ব টের পেল। পরম যত্নে ওকে চুমু দিচ্ছে নিখিল।
চোখ বন্ধ করে রেখেই সবটা অনুভব করলো চারু। সন্ধ্যা নেমে যাওয়া নিসর্গের মৃদু সমীরণ এসে ছুঁয়ে দিচ্ছে তাদের। আহা, কি শীতালু ছোঁয়া! কি আদুরে! দূরে কোথায় যেন বাজছে,
“এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায়
একি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু
কোন রক্তিম পলাশের স্বপ্ন
মোর অন্তরে ছড়ালে গো বন্ধু~”

______(সমাপ্ত)______

#মৌরিন_আহমেদ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে