#ঋতুর_স্মৃতি
#সিজন_২
#পর্ব_০২
#Jechi_Jahan
আমাদের সামনে রাহাত আর রানি দাঁড়িয়ে আছে আর আমি রাহাতকে দেখেই ভয় পেয়েছিলাম।কারণ ও যদি এখন সত্যি টা জেনে যেতো তাহলে অনেক বড় সমস্যা হত।হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার হাতটা কেও শক্ত করে ধরেছে।আমি তাকিয়ে দেখি রবিন আমার হাতটা ধরেছে।
রানি-রনি তুমি এখানে?
রনি-আমি আমার আম্মু আর আব্বুর সাথে এসেছি এখানে।তুমি কখন এসেছো?
রানি-অনেক আগে এসেছি আচ্ছা আন্টি আমি রনিকে নিয়ে ওখানে খেলতে যাই?
আমি-যাও কিন্তু বেশি দূরে যেওনা।
রনি-আম্মু তুমি চিন্তা করোনা আমি তোমার হিরো না।(বলেই রানির সাথে দৌড়ে চলে গেলো)
রাহাত-ঋতু এ তোমার স্বামী???
আমি হ্যাঁ বলতে যাবো কিন্তু তার আগে রবিন।
রবিন-হুম আমিই ঋতুর স্বামী।
রাহাত-Hi!!!nice to meet you.
রবিন-Me too.আচ্ছা আমরা কোথাও বসি।
আমি-ওদিকে একটা কফিশপ আছে ওখানেই।
রাহাত-ওকে চলো।
এবার আমরা একসাথে কফিশপে গিয়ে বসলাম।
রাহাত-আচ্ছা বিয়ে কবে হয়েছে তোমাদের?
রবিন-৫ বছর আগে।(মুচকি হেসে)
রাহাত-হ্যাঁ???
রবিন-হুম।
রাহাত-ঋতু কিছু বলো চুপ করে কেনো আছো।
আমি-কি বলবো?
রাহাত-বলো কিছু একটা।
আমি-ব্যবসা ছেড়ে হঠাৎ স্কুল কিনলে যে?
রাহাত-ছিলো কোনো কারণ তাই কিনলাম।
আমি-রানি কি ওর মায়ের কথা জিজ্ঞেস করে?
রাহাত-আগে করতো এখন করেনা।
রবিন-আচ্ছা কফি খাও।
আমি-হুম।
রবিন-ঋতু ওয়েট তুমি কফি খেওনা।
আমি-কেনো?
রবিন-আচ্ছা খাও।
আমি-[রবিনের কথায় বোকার মতো ওর দিকে তাকিয়ে আছি।কারণ আমি কফি বা চা খাওয়ার সময় রাহাতও এরকম করতো আমার সাথে।]
রাহাত-খাও রিতু।
রবিন-আচ্ছা রাহাত তুমি আবার বিয়ে করোনি?
রাহাত-এক ভুল বারবার করবোনা।
রবিন-ভুল মানে???
রাহাত-কিছুনা।
আমি-আচ্ছা চলো বাচ্চারা ও তো একা আছে।
রবিন-হুম চলে।
(আমরা এবার রনি আর রানির কাছে গেলাম)
আমি-রনি অনেক খেলেছো এবার বাড়ী চলো।
রানি-আন্টি রনিকে আজ আমি আমার বাড়ীতে নিয়ে যাই।আসলে আমি বাড়িতে খুব একা একা লাগে আর বোরিং ফিল হয়।
রনি-হুম আম্মু যাই আমি।
আমি-না বাবা আমরা আরেকদিন যাবো।আর সরি রানি মামুনি আমি রনিকে এতো দূরে পাঠাতে পারবোনা।আর ও আমাকে ছাড়া থাকেও না।
রানি-না আমরা বাসা বদলে ফেলেছি।আমাদের আগের বাসাতে আমরা থাকিনা।
রাহাত-রানি আন্টি কি বলেছে শুনোনি?
রানি-বাবা প্লিজ রনিকে নিয়ে যাই।
রাহাত-না আম্মু।
আমি-ওকে আসি আজ। টা টা মণি।
রনি-টা টা।
আমরা পার্ক থেকে বাড়ীতে চলে এলাম।আসার সাথে সাথে রবিন আমাকে টেনে ছাদে নিয়ে যায়।
আমি-রবিন কি হচ্ছে?(বিরক্ত হয়ে)
রবিন-তুমি মিথ্যা বলেছো কেনো?
আমি-কি মিথ্যা বলেছি?
রবিন-তুমি ভালো করেই জানো তুমি কি বলেছো।
আমি-রাহাত যাতে আমাকে ওর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য না বলে সেজন্য মিথ্যা বলেছি।
রবিন-কিন্তু রনি???
আমি-রনি কি?রবিন ভুলে যেওনা এখন তুমিই রনির বাবা রাহাত নয়।আর যদি তুমি রনির বাবার দায়িত্ব নিতে না পারো তাহলে বলে দাও।আমি আমার ছেলেকে বাকি জীবন সামলাতে পারবো।
রবিন-তুমি এমন করছো কেন ঋতু?
আমি-কারণ তুমি আমাকে বার বার ওই অতীতে পাঠিয়ে দাও।সেই অতীত যেই অতীতে কেও আমার পাশে ছিলো শুধু আমার বাবা ছাড়া।
রবিন-এখন তো আমি তোমার পাশে আছি।
আমি-জানো রাহাত ও আমার পাশে ছিলো।কিন্তু যখন ওকে আমার পাশে থাকা দরকার ছিলো তখন ও আমার পাশে ছিলোনা।আর বাকি রইল তোমার কথা তুমিও যে রাহাতের মতো করবে না তার কি গ্যারান্টি আছে বলোতো।(কেঁদে কেঁদে)
রবিন-ঋতু ১২ বছর আগে আমি তোমাকে একটা প্রমিজ করেছিলাম মনে আছে।
আমি-হুম।
রবিন-তখন তুমি আমার প্রমিজ বিশ্বাস করোনি।কিন্তু দেখো আজ ১২ বছর পর ও আমি আমার প্রমিজ ভাঙ্গিনি।তবুও তুমি এমন বলবে।
আমি-সরি রবিন আচ্ছা নিচে চলো।
***রাতে***
আমি-রনি!!!বাবা খেতে আসো।
রনি-আসছি।(কানের মধ্যে হাত দিয়ে)
আমি-কি করছো তুমি?(রনির কাছে গিয়ে)
রনি-কথা বলছি।(মুচকি হেসে)
আমি-কার সাথে কথা বলছো?
রনি-বলবোনা।
আমি-দেখি(ফোনটা নিয়ে নিজের কানে দিয়ে)
কানে দেওয়ার সাথে সাথেই আমি যার কন্ঠ তার কন্ঠ শুনে আমার রাগ উঠে গেলো।আমি কোনো কথা না সাথে সাথে ফোনটা কেটে দিই।
-চলবে