উত্তরাধিকার (পর্বঃ-১১)

0
1132

উত্তরাধিকার (পর্বঃ-১১)
লেখাঃ-মোর্শেদা রুবি
***********************
প্রান্তিক কম্পিউটারে কাজ করছিলো!
প্রিয়ন্তী এসে অদুরেই একটা সোফাতে বসলো!প্রান্তিক না তাকিয়েও বেশ বুঝতে পারছে প্রিয়ন্তী কোনো প্রশ্ন করতে চায় ওকে!হয়তো ভাবছে করা ঠিক হবে কিনা।মেয়েলী কৌতুহল ছাড়া আর কি হতে পারে!প্রান্তিক নির্বিকারে টকটক শব্দে কিবোর্ডে ঝড় তুলে চললো!
প্রিয়ন্তী বললো-“বিয়ে করতে রাজী হয়েছিস শুনলাম?”
প্রান্তিক হাতের কাজটা শেষ করলো প্রথমে। তারপর রিভলবিং চেয়ারটা ক্যাঁচ শব্দ তুলে বোনের দিকে ঘুরালো।
নিঃশব্দ মাপা মুচকি হাসিতে বললো-“হমম,ঠিক শুনেছিস।”
-“হঠাৎ,এই সিদ্ধান্ত?”
প্রান্তিক দু একটা কাশি দিয়ে বললো-
-“সাধারনতঃ যে কোনো সিদ্ধান্ত হঠাৎই নেয়া হয়!আমিও নিয়েছি!”
-“হমম….আমি ভাবলাম মেয়েটা আবার তোকে ফোন করে পটালো টটালো কিনা!”
-“খুবই উর্বর মস্তিষ্ক সন্দেহ নেই! তা…সে পটালেই আমি পটে যাবো এটা কেন মনে হলো?”
-“না,জাষ্ট কিউরিসিটি থেকে বললাম!”
-“কিউরিসিটি ইজ প্রহিবিটেড ইন ইসলাম।কুরআনে ষ্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা আছে,সুরা হুজুরতের ১২নম্বর আয়াতে- “তোমরা ধারনা করা থেকে বেঁচে থাকো,কোনো কোনো ধারনা পাপ” এটা আয়াতাংশ।মুল আয়াতটা আরো লম্বা!তাছাড়া সিহাহ সিত্তাহর প্রায় সবক’টি হাদীসে “ধারনা” না করার ব্যপারে কঠিন আদেশ এসেছে।”
-“উফ্,এই এক তুই আর নাযিয়াত কথায় কথায় এটা ভালোনা…ওটা হারাম, কুরানে আছে হাদীসে আছে!এতো রেষ্ট্রিকশন মেনে কি চলা যায়?”
-“যায় না মানে?আমরা সবাই কোনো না কোনো রেষ্ট্রিকশন মেনেই তো চলি!তুই সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমুতে যাবার আগ পর্যন্ত প্রত্যেকটা কাজই কোনো না কোনভাবে করিস।সেই কাজগুলোই যদি সুন্নত সম্মত ভাবে করা যায় তাহলে দুটো লাভ!এক.আমরা উপকৃত হবো!দুই,ইবাদতের সাওয়াব পাবো।যেমন ধর্,তুই সকালে উঠে কি করিস?দাঁত ব্রাশ বাথরুম ইত্যাদি। সেটাই যদি সুন্নতসম্মত ভাবে করিস যেমন ঘুম থেকে উঠে প্রথমে কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নেয়া,তারপর মিসওয়াক করে অযু করা!বাথরুমে গেলে বাম পা আগে প্রবেশ করা,আরো অনেক কিছু আছে যার প্রত্যেকটা কাজ বিজ্ঞানসম্মত ও স্বাস্থ্যকর!”
-“হমম…বুঝেছি!”বলে প্রিয়ন্তী দাঁড়িয়ে গেলো!
-“চলে যাচ্ছিস?”প্রান্তিক জিজ্ঞেস করলো!
-“হ্যাঁ,লেকচার শুনতে ভাল্লাগছেনা!”
-“কেউ নিজেকে ভালো কিছু থেকে বঞ্চিত করতে চাইলে কার কি করার আছে!একটা কথার জবাব দিয়ে যা..!”
-“কি কথা?”
-“রাফিজ হঠাৎ ডিভোর্স লেটার পাঠালো কেন?”
-“কেন আবার নতুন বৌ পেয়ে মজেছে।হুকুমের বাঁদী পেলে স্বাধীনচেতা নারী কে চায়!”
প্রান্তিক প্রিয়ন্তীর দিকে তাকালো-
-“কেন যেন মনে হচ্ছে ব্যাপারটা এতো সহজ না!দেয়ার ইজ সামথিং রং!তুই কি আমার কাছে কিছু লুকোচ্ছিস?”
প্রিয়ন্তী কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বললো–
-“গুড নাইট!”
প্রান্তিক সামান্য মাথা ঝাঁকিয়ে মুচকি হেসে কাজে মন দিলো!



নাযিয়াত চিঠিটা লেখার সময় খুব যত্ন করে লিখেছে।সে বিশ্বাসে “বি”টা মোটা করে লিখেছে,পুরোটার “পু” মোটা করেছে এভাবে,ক্রমান্বয়ের “ক্র”,আমার এর “ম”আর আপনার এর “র” টা অনেকটা পুরু করে বেশ মোটা করে লিখেছে।একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়!নাযিয়াতের বুদ্ধির তারিফ করে মনে মনে হাসলো রাফিজ।
মোটা শব্দগুলো এক করলে দাঁড়ায় “বি,পু,ক্র,ম,র!
এটাকে সাজালে হয় বিক্রমপুর!
বিয়ের কিছুদিন পর একরাতে গল্প করতে গিয়ে নাযিয়াত তার নানাবাড়ীর অনেক সুন্দর সুন্দর ঘটনা রাফিজকে শুনিয়েছিলো!
বিক্রমপুরের বাড়ৈগাঁও নাযিয়াতের নানাবাড়ী।
নাযিয়াতের শৈশব নাকি ওখানেই কেটেছে।সেখানকার অনেক গল্পও করেছে নাযিয়াত।সেকারনেই বিক্রমপুর পড়েই রাফিজ চট করে বুঝে ফেলে।
ও সিদ্ধান্ত নিলো কালই বিক্রমপুর বাড়ৈগাঁও যাবে!



নাযিয়াতের নানা নানু কেউই বেঁচে নেই।নাযিয়াতের ছোট মামা তার পরিবার নিয়ে এখানে থাকেন।নাযিয়াতের নানার এক ভাই বেঁচে আছেন।
পাশেই তার ভিটাবড়ী।
তার খেতও নাযিয়াতের নানার খেতের সাথে লাগোয়া!সেই খেতের আইল নিয়ে কিছুদিন আগেও বিরাট ঝগড়া একেবারে কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে।
এদিকে ছোট মামার অংশের জমিতে ধান পেকে গেছে কিন্তু সেই নানার ছেলেরা এই জমির উপর ইনজাংকশন জারী করায় মামা ধান কাটতে পারছেন না।
দুদিন আগেও ছোটখাটো একটা হাতাহাতি হয়ে গেছে।এরই মধ্যে কে বা কারা এসে ঐ বাড়ীর গোলাঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।ওরা আবার পাল্টা কাউন্টার কেস করেছে।
এই বিশাল হুলুস্থুল দেখে নাযিয়াতের মা মেয়েদের নিয়ে ওখানে থাকার সাহস করছেন না।
কখন কে কি অঘটন করে বসে কে জানে!
নাযিয়াতের ছোটমামাও বউ ছেলেমেয়েকে বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছে।কেস শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওদের ওখানেই রাখবে।
নাদিয়া মা’কে বললো-“চলো মা ঢাকায় চলে যাই,রিফাতকে বাসা ভাড়া করতে বলে দিয়েছি! ঐ এলাকাতেই যাবোনা নইলে বড়’পুর দজ্জাল শ্বাশুড়ী ঠিক আমাদের খুঁজে বের করে ফেলবে।তারপর বড়াপুকে ডিভোর্স দেয়াবে!”
নাযিয়াত কাছে বসেই শুনছিলো কথাগুলো–“আমার এই অবস্থায় তো সে ডিভোর্স দিতে পারবেনা!”
-“বড়লোকেরা সব পারে,তোমার বাবু হলে বাবুটা নিয়ে নিবে আর তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে।বেলা চৌধুরীরা সব পারে।”
-“কিন্তু রাফিজ যদি এখানে আমাকে খুঁজতে আসে তো?”
-“এখনো এই আশা করো?আমরা গ্রামে এসেছি এক মাস হতে চললো, তোমার জামাই ওর সময় হলোনা এই এক মাসে তোমাকে খুঁজে দেখার?”
-“ওখানে কি হচ্ছে তা তো আমরা জানিনা!ওকে দোষ দেবার আগে সত্যটা তো জানতে হবে!”
-“যত যা’ই বলো বড়াপু।তোমার ঐ বেলা চৌধুরীর কাছ থেকে দুরে থাকা উচিত।সে হাতপা ধরে তোমাকে বিয়ে করালো, এখন প্রয়োজন ফুরিয়েছে তো এখন আর তোমাকে লাগবেনা তার!”
নাযিয়াত নিরব হয়ে গেলো।
তার পরের দিন রিফাত ফোন করে জানালো ঢাকার শ্যাওড়াপাড়াতে একটা বাসা ঠিক করা হয়েছে।
নাদিয়ারা যেন সব গুছিয়ে তৈরী থাকে।সে বিকেলেই ওদের নিতে আসবে।
রিফাতের কথামতো ওরা দুপুরের খাবার খেয়েই সব গুছিয়ে তৈরী হয়ে গেল।
তিনটার দিকে রিফাত ক্যাব নিয়ে হাজির।নাদিয়া এটা নিয়েও কিছুক্ষণ চেঁচালো!
-“এতো খরচ করে ক্যাব আনতে কে বলেছে তোমাকে?ক্যাবের ভাড়া কত বেশী!
রিফাত বললো-“আমি বড়াপুর কথা ভেবেই ক্যাব নিয়েছি কারন তার জার্নিটা সহজ এবং আরামদায়ক হওয়া উচিত!”
নাযিয়াত মনে মনে কৃতজ্ঞ হলো ওর উপর। সত্যিই এই অবস্থায় জার্নিটা এভয়েড করতে পারলেই ভালো!কিন্তু এদিকের যা পরিস্থিতি তাদের ঢাকা না গিয়েও উপায় নেই!
অবশেষে বেলা সাড়ে তিনটা নাগাদ নাযিয়াতদের পুরো পরিবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলো!ছোট মামা ওদের মালপত্র সহ গাড়ীতে তুলে দিলেন।
ওরা চলে যাবার পরপরই খবর পেলেন কারা যেন আজ রাতেই তার পাকা ধান কাটার ফন্দী করছে!শুনে ছোটমামা দ্রুত থানায় ছুটলেন।
তারই ঠিক দশ মিনিটের মাথায় রাফিজের গাড়ী বাড়ীটির সদর দরজায় থামলো।
রাফিজ আর বেলা চৌধুরী নেমে এলেন!আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করে আসতে আসতে তাদের এতটা দেরী হয়েছে।
কিন্তু এসে কাউকেই দেখতে পেলেন না।
আশে পাশের কেউ তেমন কিছু বলতে পারলোনা।
রাফিজ বেরিয়ে কাছেই একটা চায়ের ছাপড়া পর্যন্ত ঘুরে এলো!সেই দোকানদার জানালো, এই বাড়ী নিয়ে মামলা মোকদ্দমা চলছে তাই এখানে কেউ থাকেনা।কোথায় থাকে জিজ্ঞেস করলে সে কোনো সদুত্তর দিতে পারলোনা!”
ঘন্টাদেড়েক ঘোরাঘুরি করে অবশেষে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে রাফিজকে বাড়ী ফিরতে হলো!
বেলা চৌধুরীর নিজেরও মনটা খারাপ হয়ে গেলো।না জানি তার পাপের শাস্তি হিসেবে তাকে আরো কি কি ভোগ করতে হয়।নিজের ভুলে আজ নিজের পরম চাওয়া নিজ উত্তরাধিকারটিকে হারাতে হলো!কে জানে ওরা কোথায় আছে, কেমন আছে।
তার দুদিন পরে রাফিজ আবার নাযিয়াতদের ঢাকার পুরোনো বাসায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে আসলো। সেখানে অন্য একটি পরিবার উঠেছে দেখে ফিরে আসলো।
রাফিজের বুকটা ফাঁকা হয়ে গেলো।
তাহলে কি সে নাযিয়াতকে চিরদিনের জন্য হারিয়েই ফেললো?



ফ্রিকের বেশিদিন একজনের সাথে ভালো লাগেনা।নিত্য নতুন বান্ধবী না হলে সময়টা ঠিক যেন জমেনা ওর কাছে।
গত দুদিন ধরে “লারা” নামের এক মেয়ের পরিচয় হয়েছে।ফ্রিকের মনে হচ্ছে “লারা”র জন্মই হয়েছে ওকে শরীরে মনে ভালোবাসা শেখাবার জন্য।লারা খুবই বুদ্ধিমতী এবং চৌকস মেয়ে।
ফ্রিক আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে লারাকে সাথে নিয়ে একটা প্লেজার ট্রিপে যাবে!
এদিকে বাসায় বাবা ঘ্যানঘ্যান শুরু করেছেন ওকে বিয়ে করে থিতু হতে।ফ্রিক তাদের বলে বোঝাতে পারছেনা যে থিতু হওয়া ফ্রিকের ধাতে নেই!সে তার যৌবনটাকে পুরোপুরি উপোভোগ করতে চায়।
তাই এবার বাসায় না জানিয়েই লারাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে।পরে এয়ারপোর্ট থেকে ফোন করে দিলেই হবে।
এয়ার পোর্ট আসার পর থেকেই ফ্রিকের গা টা কেমন যেন ম্যাজ ম্যাজ করতে লাগলো।
প্রথমটায় সে পাত্তা দিলোনা।
প্রচন্ড মাথা ব্যথায় বেশী খারাপ লাগায় পথে দুটা পেইনকিলার খেয়ে নিলো। পৌঁছুতে না পৌঁছুতেই ফ্রিকের ঝাপিয়ে জ্বর এলো সেই সাথে সারা গায়ে লাল লাল র্যাশ বেরুলো।
লারা এসব দেখেই ইয়াক ইয়াক করে বিদায় নিয়েছে।ফ্রিক কোনোমতে ট্যাক্সি ধরে একটা হোটেলে উঠলো।সেখানে পৌঁছেই জানতে পারলো যে ‘লারা’ যাবার সময় ওর যাবতীয় টাকা পয়সা, ক্রেডিট কার্ড সব সাথে করে নিয়ে গেছে।ফ্রিক বেলবয়ের সাহায্যে বাবার কাছে ফোন করে নিজের দুরবস্থার কথা জানালে তিনি ছেলেকে রেসকিউ করার ব্যবস্থা করলেন!
বাড়ী ফিরেও ফ্রিকের জ্বর তেমন কমেনি,গায়ে র্যাশের পরিমানও বেড়েছে।
ডাক্তার জানালেন,ফ্রিক অন্য কারো শরীর থেকে প্রাপ্ত এক ধরনের জীবাণু বহন করছে।এটা ধীরে ধীরে আরো মারাত্মক রূপ নিতে পারে। ওকে হসপিটালাইজড করার পরামর্শও দিলেন ডাক্তার!
ফ্রিকের বাবা মায়ের দিশেহারা অবস্থা।ছেলের উচ্ছৃংখলতাকে বাধা দিতে না পারার পরিণতি এখন তাদের সামনে!
ফ্রিকের মা স্বামীকে বুদ্ধি দিলেন।
ফ্রিকের যা অবস্থা!
প্রিয়ন্তীর সাথে ওর বিয়েটা তাড়াতাড়ি করিয়ে না দিলে তাদের উত্তরাধিকারীটাও হাতছাড়া হয়ে যাবে।কে জানে প্রিয়ন্তী এরই মধ্যে এবরশন করিয়ে ফেলেছে কিনা!
ফ্রিকের বাবা স্ত্রী’র মনের ইচ্ছা বুঝতে পেরে অতিসত্বর শাজিয়ার সাথে যোগাযোগ করলেন।
শাজিয়া কিছুটা দোটানায় পড়লেন যখন শুনলেন যে,টেলিফোনেই বিয়ে করিয়ে দিতে চান বড় ভাই।
পরে ধীরে সুস্থে প্রিয়ন্তী অস্ট্রেলিয়া আসুক,সমস্যা নেই! কিন্তু ওদের সম্পর্কটা একটা পরিণতি পাক।
প্রিয়ন্তীর গর্ভপাতের কথা তাদের জানানো হয়নি!তারা হয়তো উত্তরাধিকার আশা করছেন!
শাজিয়া ফোন রেখেই প্রিয়ন্তীকে সবকথা জানালেন।প্রিয়ন্তী মনের উচ্ছাস চাপতে দুহাতে মুখ ঢাকলো!
শাজিয়া বুঝতে পারছেন না,কি কেবেন,কি করা উচিত।
এদিকে প্রান্তিক বিয়ে করে সামনের সপ্তাহেই চলে যাচ্ছে!এবার ও আর অষ্ট্রেলিয়া যাবেনা,মালয়েশিয়ার একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন্ট করবে।কাগজ পত্রও ইতোমধ্যেই হাতে পেয়ে গেছে।কিছুদিন পর দেশে ফিরে বউকেও সেখানে নিয়ে যাবে।
শাজিয়া বড়ভাইকে সবকথা জানিয়ে বললেন প্রান্তিকের বিয়েটা হয়ে গেলে ও বাইরে চলে গেলেই তিনি প্রিয়ন্তীর বিয়েটা করিয়ে দেবেন।প্রান্তিককে এক্ষুণি এসব জানাতে চাচ্ছেন না তিনি তাতে ঝামেলা বেড়ে যাবে।
অগত্যা শওকত চৌধুরী তাই মেনে নিলেন।


আজ প্রান্তিকের বিয়ে!
খুব অনাড়ম্বরে একেবারে ঘরোয়া আয়োজনে প্রান্তিকের আকদটা সম্পন্ন হয়ে গেলো!
প্রান্তিক আগামী সপ্তাহে মালয়েশিয়া চলে যাবে।দুমাস পর এসে বউকে একেবারে তুলে নিয়ে যাবে!
বরযাত্রী বিদায় নেবার আগে বর কনে একটি ঘরে মুখোমুখি হলো!
প্রান্তিকই প্রথমে সালাম দিয়ে নববধূকে অভ্যর্থনা জানালো!
নববধূ লজ্জায় গলে গিয়ে সালামের উত্তর দিলো।
প্রান্তিক কিছুক্ষণ ওর দিকে চেয়ে থেকে বললো-
–“কেমন আছেন?”
প্রান্তিকের গভীর চাহনী, ওর মুখের আপনি সম্বোধন জান্নাতকে বিহ্বল করে তুললো যেন।
সে মুখ নামিয়ে বললো-“আলহামদুলিল্লাহ্!”
প্রান্তিক হেসে বললো-“ভাবছি এলিফ্যান্ট রোডের সব দোকানদারকে আমাদের ফাংশানে দাওয়াত করবো!এমন সুন্দর করে আমাদের মিলটা করিয়ে দেবার জন্য,কি বলো?”
জান্নাত লজ্জায় লাল হয়ে বললো-“আপনি আমাকে নিশ্চয়ই বেহায়া ভাবছেন?”
প্রান্তিক সিরিয়াস কন্ঠে বললো-“হমম,ভেবেই তো বিয়ে করতে চাইলাম।”
জান্নাত চোখ তুলে তাকালো!
প্রান্তিকের মনে হলো ওর সামনে পৃথিবীর সবচে সুন্দর মেয়েটি বসে আছে।
…..
চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে