উইজা বোর্ড লেখনীতে : তাপসী দাশ

0
671

#গল্পপোকা_ছোটগল্প_প্রতিযোগীতা_আগস্ট_২০২০

গল্পের নাম : উইজা বোর্ড
লেখনীতে : তাপসী দাশ
ক্যাটাগরি : থ্রিলার

“সুমু ওঠো প্লিজ! অলরেডি তিনটে বেজে গেছে, কখন রেডি হবো, কখন পৌঁছাবো বল তো? যেতেই তো লাগবে দেড় ঘন্টা!”

রক্তিম দুপুরবেলায় বিছানায় সিঁটিয়ে থাকা সুমাহেরাকে ডেকে চলেছে নিঝুম । দু’চোখে ঘুম না থাকা সত্ত্বেও বিছানার সাথে লেপ্টে আছে সে । আড়মোড়া ভেঙে নিঝুমের দিকে ফিরে বললো,

“প্লিজ নিঝুম! আমি যাবো না । তোমার বন্ধুদের গেট টুগেদার পার্টিতে যেতে একদমই ভালো লাগে না আমার । কেমন যেন সবাই!
সো বোরিং! ”

“দিস্ ইজ নট ট্রু সুইটহার্ট !
সবাই কত ফ্রিলি মিশে তোমার সাথে! ইভেন আমাকে তো বার বার বলে দিল তোমাকে সাথে নিয়ে যেতে ।
রিশাদ কি বলেছে জানো? ও বলেছে, বৌ ছাড়া গেলে আমার দাঁত ভেঙে দেবে ।”
বলে নাক টেনে দিল সুমুর ।

ভীষণ বিরক্ত হলো সুমু । রিশাদের তাকানোর স্টাইলটা একদম ভালো লাগে না ওর । বেশ কিছুক্ষণ ইতস্তত করে শেষ পর্যন্ত উঠে বসলো ।

এই মানুষটার আবদার অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা ওর নেই। এক বছরের সংসারজীবন তার সকল অপূর্ণতাকে ভুলিয়ে দিয়েছে । জন্মের সময় মায়ের মৃত্যুর পর বাবা পূুনরায় বিয়ে করলেও সেই সংসারে জায়গা হয়নি সুমাহেরার । নানুর কাছে থাকার জায়গাটুকু পেলেও মামা-মামীর চক্ষুশূল হওয়ায় তাচ্ছিল্য মনোভাব সহ্য করেই বড় হয়েছে ।

অন্যদিকে ইউএসটিসি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা নিঝুৃম তখন ভালোবাসার মানুষটাকে হারিয়ে বিপর্যস্ত প্রায় । সুমুর মামীর বড় ভাইয়ের একমাত্র ছেলে সে। ছেলের বেগতিক অবস্থায় বোনের কথার বিরুদ্ধে গিয়ে সুমুকে তিনি ভরসা করে পুত্রবধু করে ঘরে তোলেন।
সুমুর কেয়ার ভালোবাসায় নিঝুম স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে আর সুমু পায় ভালোবাসায় ঘেরা তার আকাঙ্ক্ষিত সংসার ।
এসব ভাবতে ভাবতে মুচকি হেসে নিঝুমের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় সে। নিঝুম হেসে ওকে টেনে নামিয়ে কোমর আঁগলে একটা প্যাকেট তুলে দিল হাতে। তারপর বললো,

“আজকের ড্রেসকোড অনুযায়ী সবাই ওয়েস্টার্ন পড়ছে। তাই তোমার জন্যেও দারুণ একটা গাউন এনেছি । এটা পড়ে ঝটপট রেডি হয়ে এসো, কেমন! ” বলে হাতের উল্টোপিঠে আলতো ছুঁয়ে দিল গালটা ।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্যাকেটটা হাতে তুলে নিলো সুমু । প্রায় একঘন্টা সময় কাটিয়ে একটা কালো জামদানীর সাথে শাশুড়ির দেয়া রুবির চারলহর খানদানি মালাটা গলায় ঝুলিয়ে ড্রেসিংরুম থেকে বেড়িয়ে আসলো । নিঝুৃমের চোখ পড়তেই মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে কিছু না বলেই গাড়ির চাবিটা নিয়ে বেড়িয়ে গেল রুম থেকে । গাড়িতে উঠে বসতে নিঝুম কালক্ষেপণ না করে দ্রুত গতিতে রওনা হল । নিঝুমের মুখের কাঠিন্যতা দেখে মুচকি হেসে সুমু বললো,

” তোমাদের ওয়েস্টার্ন পার্টিতে আজ আমি না হয় বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করি। কি বলো? ”

নিঝুমের নির্লিপ্ততায় গালে হাত রেখে ওকে নিজের দিকে ফিরিয়ে আবার বললো,
“এমন হাইনেক গাউনে আমার অস্বস্তি হয় সুইটহার্ট। একটু বোঝ!”
একথা শুনে নিঝুম ফিরে গভীর দৃষ্টি নিয়ে তাকালো সুমাহেরার দিকে।
ঠিক সেই সময় একটা কুকুর ঝাঁপিয়ে পড়লো গাড়িতে। নিঝুম তৎক্ষণাৎ ব্রেক করে গাড়ি থেকে নামতে চাইলে হাত ধরে আটকে দিল সুমু। কুকুরটা গাড়ির নিচ থেকে বেড়িয়ে লাফিয়ে রাস্তার পাশে খাদের দিকে নেমে গেলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো দুজন। তারপর আবার স্টার্ট করে এগিয়ে চললো গন্তব্যের দিকে । কিন্তু সুমুর মনটা কেমন যেন অস্থির হয়ে কু ডাক দিচ্ছে। নিজেকে স্বাভাবিক করতে জানালার বাইরে প্রকৃতির মাঝে নিবিষ্ট হতে চাইল সে।

গোধুলির রঙিন আভা ছড়িয়ে পড়ার আগেই ওরা পৌঁছে গেল পার্টি সেন্টারে । গাজিপুরের সবুজের চাদরে ঘেরা একটি রিসোর্টে পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। শানবাঁধানো পুকুরঘাট, পাখির কলকাকলি, বিভিন্ন গাছগাছালির মেলা সব মিলে প্রাণ জুড়ানো পরিবেশ । ওদের দেখে রিশাদ, ইভানা ও তানভির এগিয়ে এলো । গাড়ি থেকে নামতেই ইভানা সুমুকে জড়িয়ে ধরলো। একটু চঞ্চল ও প্রাণবন্ত আপুটাকে বেশ ভালোই লাগে ওর। সেও জড়িয়ে ধরে,

“কেমন আছো আপু?”

জিজ্ঞেস করতেই ওপাশ থেকে রিশাদ বলে ওঠে,

“দিস ইজ নট ডান!
শুধু একজনকেই জড়িয়ে ধরবে? আমরা কি দোষ করলাম বলো তো?”

“কেন রে? তোকে তোর বিলাতি বিলাই সারাদিন চিপকায় তাও শখ মেটে না? শালা বান্দর!”

বলে পিঠে একটা কিল দিয়ে ইভানা সুমুর হাত ধরে এগিয়ে চলে। বন্ধুমহলে রিশাদ সবসময় এমন লাগামহীন কথাবার্তা বলায় ওর কথায় তেমন কেউ গুরুত্ব দেয় না।

সুইমিংপুলের পাশে আসতেই রায়হান, সাফি ও রিশাদের বিদেশী বৌ এমির দেখা মিললো। রায়হান বসে বারবিকিউর আয়োজন করছিল, অন্যদিকে সাফি ও এমি হাস্যরসে লিপ্ত । এমির ডার্ক ব্লু মিনি স্লিভল্যাস ফ্রকটা হাঁটুর বেশ উপরে হওয়ায় কলমিলতার মত ফর্সা পা দুটো ফুটে উঠেছে । সবমিলে বেশ আকর্ষনীয় লাগছে তাকে।

নিঝুৃমকে দেখেই সাফি বলে উঠলো,

“তোমার হানিমুন এতক্ষণে শেষ হইলো মামা? আমরা এদিকে মাছি তাড়ায়ে বেড়াচ্ছি । ”

“হুম! মাছি তাড়াচ্ছিস নাকি মৌমাছি হয়ে ঘুরতেছিস সব দেখতেছি মামা।”

বলে হেসে সাফির পেটে ঘুসি দেয় নিঝুম।

” আরে আমার হানি তো এমনই । ফ্রিলি সবাইকে আপন করে নেয়।”

রিশাদ তার চলমান গার্লফ্রেন্ড এমির কোমর জড়িয়ে এ কথা বলার পর এমি রিশাদের চোখে নেশাচ্ছন্ন দৃষ্টি রেখে বললো,

“ইউ মিন সো মাচ টু মি, ডার্লি!
আ’ম সো গ্লেড ইউ আর ইন মাই লাইফ!
টুডে দিস মোমেন্ট আই স্পেন্ড উইথ ইউ…ইজ লাইক বিউটিফুল ড্রিমস কাম ট্রু।”

রায়হান উঠে এসে বললো,

“হবে হবে সব ভালোবাসাবাসি হবে, পুকুর পারে কটেজে ইচ্ছামত প্রেম করতে পারবি চাইলে বারান্দায় যাইয়া জ্যোৎস্না বিলাস করিস।
তবে আজকে আমাদের পার্টির আয়োজন ঢাকার বাইরে করার পিছনে একটা কারন আছে। আজকে আমরা প্লেনচেট করবো। মানে আত্মার সাথে মিট করবো । আমি উইজা বোর্ড সাথে নিয়ে আসছি। ”

“হুয়াট! আর ইউ ম্যাড? এসব আজাইরা গেইমে আমি নাই দোস্ত।”
বলে নিঝুম একটা চেয়ার টেনে বসলো তানভিরের পাশে। তখন রিশাদ ব্যঙ্গাত্বক স্বরে বলে উঠলো,

“তুই কি কোন কারনে ভয় পাচ্ছিস? ”

“আরে ধুর!
আমরা কি বাচ্চা? কী সব প্লেনচেট গেইম! ছাত্র পড়াইতে পড়াইতে নিজেই ছাত্র হইছে।” বলে হেসে তানভীরের দিকে তাকালে ও বললো,

“আরে কিছু হবে না দোস্ত । জাস্ট মজা নিব।”

“ওকে ওকে পরেরটা পরে দেখা যাবে। আগে আমরা আমাদের পার্টি শুরু করি”- বলে ইভানা ড্রিংকস ও
চিকেনের ট্রে এগিয়ে দিল সবাইকে। রায়হান ড্রিংকসের গ্লাস হাতে তুলে নিয়ে সবার উদ্দেশ্য বলে উঠলো,

“আজকে এই গেট টুগেদার পার্টি আমাদের বেস্ট ফ্রেন্ড তুশিতার উদ্দেশ্যে ।” বলে একটু দম নিল । তারপর চিৎকার করে বললো,
” উই লাভ ইউ তুশি…
এন্ড টু মাচ মিস ইউর স্মাইল, কেয়ার, লাফ্ এভ্রিথিং ইয়ার!”

রায়হানের কথায় সিক্ত হয়ে উঠলো সবার চোখ । নিরবতা জেঁকে বসে সবার মাঝে । নিঃশব্দে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মৃতিরোমন্থন করে চলেছে একে একে সবাই । সুমাহেরা নিঝুমের হাতটা শক্ত করে চেঁপে ধরতেই জল গড়িয়ে পড়লো নিঝুমের গাল বেয়ে । তুশিতার ভালোবাসা হারানোর ব্যথাটা এখন তীব্রভাবে জানান দিচ্ছে ।
অন্যদিকে রিশাদ পুরো ড্রিংকস গলায় ঢেলে এমির কাছ থেকে সরে সুইমিংপুলের কিনারায় ল্যাম্পপোষ্টে হেলান দিয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকলো।

পরিস্থিতি হালকা করতে তানভির বলে উঠলো,

” আরে সবাই এমন মন খারাপ করে থাকলে তুশি তো নিজেই কষ্ট পাবে । আরে আমাদের তুশি কেমন জানিস না? কাওকে কষ্ট পেতে দেখলে নিজেই কেঁদে দিত!”

শেষ কথাটা বলার সময় গলাটা কেঁপে উঠলো তারও। তারপর ইভানার চোখের জলটা মুছে দিয়ে গান প্লে করে আরও নানান কথায় ফ্রি করতে থাকলো ।

আাড্ডা, ডান্স ও ডিনার শেষ হতে হতে রাত প্রায় এগারোটা ছুঁই ছুঁই । রায়হান কটেজ থেকে উইজা বোর্ডটা নিয়ে বাইরে আসলে সবাই কর্নারের টেবিলটার কাছে জড়ো হয়ে গোল করে বসে পরে।

রায়হান বোর্ডটি টেবিলে বিছিয়ে দিলে সবাই লক্ষ্য করে এতে ইংরেজি ২৬টি লেটার ও ০-৯ পর্যন্ত সংখ্যা দেয়া আছে । এছাড়া মাঝখানে একটি স্টার্ট বাটন ও তার দুইপাশে দুটি ইয়েস ও নো লিখা বাটন রয়েছে । সবার নিচে একপাশে এন্টার অন্যপাশে কুইট লেখা দুটি বাটনও আছে ।
ছোট চাকাযুক্ত ত্রিভুজাকৃতির গাড়ির মত একটা কাঠের টুকরো দিয়ে এই খেলা পরিচালিত হয় ।

রায়হান কাঠের ছোট গাড়িটা এন্টারে রেখে তারপর সবাইকে ওতে আঙুল দিয়ে স্পর্শ করে চোখ বন্ধ করতে বললো । তারপর সে যখন আত্মা ডাকতে শুরু করলো সবাই চমকে তাকিয়ে শুনলো সে তুশিতার আত্মাকে আসার আহ্বান করছে !

সবার মধ্যে কিছুটা উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হতেই সুমাহেরা বলে উঠলো,

” বার বার কেন ডাকছিস আমাকে? ”

ঠিক ওই মুহূর্তে ওরা সবাই খেয়াল করলো কাঠের টুকরাটা কখন যেন এন্টার থেকে স্টার্টে চলে এসেছে । ইভানা প্রচণ্ড ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলে রায়হান ইশারায় শান্ত করে তাকে । তারপর একে একে প্রশ্ন করতে থাকে সে ।

“তুই কি এসেছিস তুশি?”

কাঠের টুকরোটা ইয়েস বাটনে গিয়ে আবার স্টার্টে ফেরত আসলো । তারপর বললো,

“আমাদেরকে তোর মনে পড়ে না?”

কাঠের টুকরোটা আবার ইয়েস বাটনে গিয়ে স্টার্টে ফিরে আসার পর সুমাহেরা ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো। রায়হান কি হয়েছে জিজ্ঞেস করায় সুমাহেরা বলে উঠে,

“আমার অনেক কষ্ট হয়। তোরা কেউ আমাকে ভালোবাসিস না। কেউ না ” বলে হু হু শব্দ করে কেঁদে উঠে। ”

রায়হান বললো,

“আমরা সবাই তোকে খুব ভালোবাসি । খুব মিস করি দোস্ত! কী থেকে কী হয়ে গেল!
তোর গাড়িতে কিভাবে আগুন লেগেছে জানাবি না আমাদেরকে?”

কথাটা শোনামাত্র লাফিয়ে টেবিলের উপর উঠে বসে রিশাদের গলা চেঁপে ধরে সুমাহেরা। চিৎকার করে বলতে থাকে,

“এই কুত্তারবাচ্চা! সব করছে এই কুত্তারবাচ্চা!”

সবাই প্রচন্ড অবাক হলেও রিশাদের গলা থেকে হাত সরিয়ে দিয়ে ছাড়াবার চেষ্টা করছে সুমাহেরাকে । কিন্তু ওর জোরের সাথে না পেরে রায়হান বললো,

“রিশাদ প্লিজ বাঁচতে হলে বল কী করছিস তুই?”

“আমি বলতেছি,সব বলতেছি প্লিজ ছাড়তে বল তুশিরে! তুশি দোস্ত প্লিজ ছাড়!”

দোস্ত শব্দটা শোনার সাথে সাথে কষে থাপ্পড় দিল তুশি রিশাদকে। থাপ্পড় খেয়ে ঝিঁ ঝিঁ করে উঠলো রিশাদের কান। তারপর ভয় পেয়ে বলতে থাকলো তুশিতার মৃত্যু রহস্য!

” নিঝুমের জন্মদিনে যাওয়ার জন্য আমাকে পিক করে ইভানার বাসার দিকে যাচ্ছিলো তুশি। শুনশান একটা জায়গায় হঠাৎ গাড়ি বন্ধ হয়ে গেলে তুশি আর আমি বেড়িয়ে চেক করি গাড়িটা । তখন আমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল নিরিবিলিতে তুশিকে শর্টস পড়া দেখে । আমি গাড়ির ভেতরে ওকে জোর করে ঢুকিয়ে মুখ বেঁধে রেপ করতে থাকি। ”
বলে মাথা নিচু করলো সে। এটুকু শুনে নিঝুম,

” হুয়াট!
স্কাউন্ড্রেল!
আই’ল কিল ইউ ডেম ইট!” বলে চিৎকার করে উপর্যুপরি ঘুষি মারতে থাকে রিশাদকে ।
তানভির দ্রুত গিয়ে নিঝুমকে পেছন থেকে টেনে ধরে নিয়ে আসে। তারপর রায়হান চাপ দিলে আবার বলা শুরু করে রিশাদ।

” এরপর কাজ শেষে আমি ওর হাত পা বেঁধে পেছনের সিটে রেখে গাড়ি স্টার্ট করার চেষ্টা করি। স্টার্ট হলে ওর রুমালটা পেট্রোলে ডুবিয়ে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সরে পড়ি। কয়েক সেকেন্ডে ব্লাস্ট করে গাড়িটা। এর সাথে তুশিও পুড়ে কয়লা হয়ে যায়। ”

এমি এরপর বললো,

“একইভাবে তুমি সুজানকেও মেরেছিলে তাই না?”

ইভানা বিস্ময়ে, ” মানে?” জিজ্ঞেস করতেই এমি বলল,

” গত বছর ও কানাডা আসার পর আমার বড়বোন সুজানের সাথে রিলেশনে জড়ায়। তারপর একইভাবে সুজানকেও হত্যা করে সে। পার্থক্য শুধু গাড়িটা গাছের সাথে লাগিয়ে ব্লাস্ট করে। রিশাদের মুখটা ঢাকা থাকলেও সিসিটিভি ক্যামরায় ওর জ্যাকেট দেখে আমি চিনতে পারি ওকে । তারপর এদেশে এসে প্রমান জোগার করার জন্য সম্পর্ক গড়ে তুলি । রায়হানের সাথে আলাপকালে একসময় তুশিতার ব্যাপারে জানতে পারি আমি । তারপর দুজনে মিলে এই গেট টুগেদার প্ল্যান করে প্রমাণ রেকর্ড করেছি আমরা ।”

বলে রেকর্ডার বের করে টেবিলে রাখলো। তারপর আগে থেকেই লুকিয়ে থাকা পুলিশকে কল করে ডেকে ধরিয়ে দিল রিশাদকে।

এমি এসে সুমুর কাঁধে হাত রেখে বললো,

“থেংকস এ্য লট সুমাহেরা। দূর্দান্ত এক্টিং করেছো তুমি! তোমার সাহায্য না পেলে হয়তো আমরা আমাদের প্ল্যানে সাকসেস হতাম না।”

সুমাহেরা এমির কথার উত্তর না দিয়ে নিঝুৃমের সামনে দাড়িয়ে গভীর দৃষ্টিতে তাকালো । তারপর মৃদু হেসে ঢলে পড়লো নিঝুমের বুকে ।

(সমাপ্ত)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে