আড়ালে ভালোবাসি পর্ব-৫+৬

0
1865

#আড়ালে_ভালোবাসি
#পর্ব_৫-৬
#নন্দিনি_চৌধুরী

সকালের মিষ্টি রোদে ঘুম ভেংগে যায় স্নেহার।চোখ মুখ কুচকে ফেলে সে।হাতের কাছে ফোনটা নিয়ে দেখে সকাল ৮টা বাজে।স্নেহা আসতে করে উঠে চুলটা ভালো করে খোপা করে ক্লেচার দিয়ে আটকে নেয়।এরপর বিছানা থেকে নেমে সব গুছিয়ে আলমারি থেকে ড্রেস নেয় কলেজে যাওয়ার জন্য।আজকে স্নেহার মনটা কিছুটা ভালো। গতকাল রাতেও তার মন খুব খারাপ ছিলো। কিন্তু আরাফ তার মন একদ্ম ভালো করে দিয়েছিলো।

গতকাল রাতে…….

স্নেহার নিজের রুমে কিছু জিনিশ খুজে পাচ্ছেনা। পরে তার মন পরলো সে প্রায় আকাশের রুমে কিছু না কিছু ফেলে রেখে আসতো। আর আকাশ সেগুলা গুছিয়ে দিয়ে যেতো। হয়ত শেষ যেদিন সে আকাশের রুমে গিয়েছিলো তখন সেগুলো রেখে এসেছে। কিন্তু আকাশ তাকে গুছিয়ে দিয়ে যায়নি। স্নেহা ভাবে আরতো দিয়েও যাবেনা গুছিয়ে।তাই বাধ্য হয়ে স্নেহাকেই যেতে হবে এখন আকাশের রুমে। তার জিনিশ গুলো আনতে। আর না আনলেও হবেনা স্নেহার জরুলি জিনিশ অগুলো।কিন্তু স্নেহা ভাবছে সে কি করে যাবে আকাশের রুমে। আকাশ যদি রুমে থাকে তবে তাহলে আবার তাকে কথা শোনাবে।আর বাড়ির লোকের কাউকেও সে বলতে পারবেনা কেউ তো তার সাথে কথাই বলেনা।তাই অগ্যত্যা স্নেহাকেই যেতে হচ্ছে আকাশের রুমে।

স্নেহা এক পা এক পা করে এগোচ্ছে, আর ভয় পাচ্ছে। সে ভেবে নিয়েছে আকাশ যদি তাকে কিছু বলে তাহলে সে একদম দৌড়ে চলে আসবে।আকাশের রুমে সামনে এসে দেখে দরজা খোলা তবুও সে নক করে। আগেও নক করেই ডুকতো কারো ঘরে সে। নক না করে যায়না। কয়েকবার নক করার পরেও কোনো সারা শব্দ পেলোনা সে। তাই আসতে করে রুমে ডুকে গেলো সে। রুমে গিয়ে দেখে কেউ নেই। তাই স্নেহা তার জিনিশ গুলো খুজতে লাগ্লো আর পেয়েও গেলো। স্নেহা যখন রুম থেকে আসতে নিবে তখন মিতু ওয়াশরুম থেকে তাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বের হয়ে দেখে স্নেহা দরজার সামনে দাঁড়ানো। স্নেহাকে দেখেই মিতুর রাগ উঠে গেলো। সে স্নেহাকে একদম সয্য করতে পারেনা। স্নেহাকে রুমে দেখে মিতু ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে,

মিতু:কি ব্যাপার স্নেহা তুমি এত রাতে এই রুমে কোনো দরকার?

স্নেহার মনেই ছিলোনা যে মিতুও আছে এই রুমে। তাই স্নেহা একটু ঘাবড়ে গেলো। তাও সে হেসে বল্লো,

স্নেহা:হ্যা এইযে কিছু জিনিশ আমার যা এই রুমে ছিলো। সেগুলো নিতে এসেছিলাম। আমি অনেকবার দরজায় নক দিয়েছিলাম কিন্তু তুমি দরজা খুলোনি। তাই আমি রুমে ডুকেগেছি এখন চলে যাচ্ছি।

মিতু স্নেহার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে কিছু জিনিসপত্র মিতু এভার স্নেহার দিকে তাকিয়ে বলে,

মিতু:শুধু এই জিনিসগুলো নিতে এসেছিলে নাকি কাউকে দেখতেও এসেছিলে?

মিতুর এমন একটা কথায় স্নেহা অনেক চমকে যায়। তবুও সে নরমাল ভাবেই উত্তর দেয়,

স্নেহা:মানে?

মিতু এভার বাঁকা হেসে বল্লো,

মিতু:মানে তুমি বুজতে পারলেনা নাকি বুজেও বুজতে চাইছ না। আচ্ছা আমিই বলছি তুমি আকাশকে দেখতে এসেছিলে নাকি,যে আকাশ আমি কেমন আছি সেটা। দেখো যদি সেটা দেখতে আসো তাহলে আমি আকাশকে তোমার থেকে অনেক ভালোরাখবো। তোমার মত ওকে ঠকাবোনা। আমিতো ভেবেই পাইনা স্নেহা যে তুমি কিভাবে পারলে আকাশকে ঠকাতে। যে তোমাকে এত ভালোবাসলো তাকে এভাবে ঠকালে। ছিহ্ স্নেহা।

মিতুর কথাগুলো শুনে স্নেহার চোখের কোণে পানি জমে গেছে এখনি হয়ত পরবে পানি গুলো।স্নেহা আর একটুও সেখানে দাঁড়ায় না ছুটে চলে আসে একদম ছাদে।হাতের জিনিশ গুলো ছুড়ে ফেলে দিয়ে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে,

“কেন আল্লাহ কেন? কেন আমাকে এত কষ্ট দেও। আমি কি এমন পাপ করেছি যার শাস্তি সেই জন্মের পর থেকেই আমাকে দিচ্ছো। জন্মের পর আমাকে মাকে নিয়ে গেলে। মায়ের মৃত্যুর জন্য বাবা আমাকে দায়ী মনে করে আমাকে একবার দেখলেওনা আমাকে ফেলে চলে গেলো। তারপর যাদের কাছে সেই ছোট থেকে মানূষ হলাম তারাও আজ আমাকে ভুল বুজতেছে।আমি জানি বাবাই মা কে কত কিছু সয্য করতে হচ্চে আমার জন্য।আর যেই মানুষটাকে আমি আকড়ে বাচঁতে চাইলাম। যাকে জীবনের সব ভাবলাম, এত ভালোবাসলাম। আজ সেও আমাকে ভুল ভুজে দূরে চলে গেলো। অন্য কাউকে বিয়ে করে নিলো। ও আল্লাহ কেন এমন করলা। আমি কি পারবনা নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে। কবে পারবো আমি আল্লাহ কবে? আমি যে আর পারছিনা নিজের চোখের সামনে ভালোবাসার মানুষ্টাকে অন্য একজনের সাথে দেখতে”।

স্নেহা এভাবে কাদঁতে লাগলো হঠ্যাৎ কাধেঁ কারো হাতের স্পর্শ পেলো। সে পিছনে ফিরে দেখে আরাফকে।আরাফকে দেখে সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলোনা।সে আরাফকে জরিয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বল্লো,

স্নেহা:ভাইয়া আমার সাথে কেন এমন হয় বলোতো। আমি কি পাপ করেছি।যার শাস্তি পাচ্ছি আমি। আর এগুলা নিতে পারছিনা। আমার খুব কষ্ট হয়। (কাদঁতে কাঁদতে স্নেহা কথা গুলো বলছে।)

আরাফ স্নেহাকে পরম যত্নে আগলে নিলো নিজের বুকে। আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলছে,

আরাফ:শান্ত হো স্নেহা পাখি। এভাবে কাঁদতে হয়না।তুই কোনো পাপ করিসনাই বুজলি। এটা আল্লাহর একটা পরিক্ষা। ধৈর্য্যে রাখ সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি সব ঠিক করে দেবো। তোকে আর কাঁদতে দিবোনা।প্লিজ কাঁদিস না।

আরাফের কথায় স্নেহা কিছুটা শান্ত হয়। কিন্তু তবুও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। আরাফ স্নেহার মাথা বুক থেকে তুলে ওর দুইগালে হাত রেখে বলে,

আরাফ:আজকের পর আর কাঁদবি না তুই। নিজেকে শক্ত রাখবি বুজলি। যে যাই বলবে তা শুনে চলে আসবিনা। অবশ্যই প্রতিবাদ করবি। একদম মুখের উপর জবাব দিয়ে আসবি। কেউ তোকে অপমান করলে তাকে তার যোগ্য জবাবটা দিবি।

আরাফের কথা শুনে স্নেহা মাথায় নাড়ালো। যার উত্তর ঠিক আছে।

আরাফ এভার হেসে স্নেহাকে বল্লো,

আরাফ:কাল থেকে তুই কলেজে যাবি নিতুর সাথে। আর সবার সাথে নিচে খেতে বসবি।

আরাফের কথা শুনে স্নেহা চমকে যায়। সবার সাথে নিচে কিভাবে যাবে সে। সবাইত তার উপর রেগে আছে। তাহলে সে কি করে যাবে।

স্নেহার চিন্তা দেখে আরাফ মুচকি হেসে বলে,

আরাফ:এত চিন্তা করার কিছু নেই। সবাই তোর উপর রেগে নেই। একটু কষ্ট পেয়েছে আরকিছুনা। সবাই বলেছে তোকে কাল থেকে নিচে আসতে। আর কলেজে যেতে। কয়েদিন পরেইতো এক্সাম তুর। পড়াশুনা কি কিছু করেছিস? না ঘুমিয়ে কাটিয়েছিস হু।🤨

আরাফের কথা শুনে স্নেহা অনেকটা খুসি হয়ে যায় আর বলে,

স্নেহা:সত্যি কেউ রেগে নেই। সবাই আমাকে ভুল বুজেনি?

আরাফ:হুম কেউ রেগে নেই।

স্নেহা:আচ্ছা তাহলে কাল থেকে আমি কলেজে যাবো। তাহলে আমার মন ভালো থাকবে।

আরাফ স্নেহার কথা শুনে হেসে দেয়। তারপর ওর কপালের চুল গুলু শরিয়ে একটা চুমু দিলো। আরাফের এমন কাজে অনেকটা শকড হয়ে যায় স্নেহা। সাথে লজ্জাও পায়। আরাফ স্নেহার ব্যাপরটা বুজতে পেরে ওর থেকে সরে দাঁড়িয়ে বলে,

আরাফ:যা এখন ঘুমাতে যা। সকালে জলদি উঠতে হবে।

আরাফের ধমক খেয়ে স্নেহা একদম ভো দৌড়। স্নেহার এমন কান্ড দেখে আরাফ হেসে বলে।

“পাগলি একটা”

স্নেহা নিজের রুমে এসে ধপাস করে শুয়ে পরে। আর লজ্জায় বালিস জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায়।

বর্তমানে,,,

আয়নায় চুল আচড়াচ্ছে আর কালকের কথা গুলো ভাবছিলো,আর ব্লাশিং হচ্ছিলো। সে জানেনা আরাফের সামনে গেলে তার মনে কি অনুভুতি হয়। তবে সে এটা জানে আরাফ অনেক ভালো একটা মানুষ। কোনোদিন কাউকে কষ্ট দেয়না। স্নেহা রেডি হতে হতে নিতু ওর রুমে এসে ওকে জরিয়ে ধরলো।

নিতু:আপু কি করছিস?

স্নেহা বোনকে কাছে পেয়ে অনেক খুশি হলো।

স্নেহা:এইত রেডি হচ্ছি কলেজে যাওয়ার জন্য। তুই রেডি?

নিতু:হ্যা আমি একদম রেডি। চল নিচে চল নাস্তা করতে। সবাই বসে আছে তোর জন্য।

স্নেহা:আচ্ছা চল।

তারপর নিতু আর স্নেহা মিলে নিচে এলো।

স্নেহাকে নিচে আসতে দেখে ওর সেঝো কাকি উঠে ওর কাছে গেলো। সেঝো কাকিকে নিজের দিকে আসতে দেখে স্নেহা ভাবছে কাকি কি ওকে বকবে। কিন্তু না এমন কিছুই হলোনা ওর কাকি ওর কাছে গিয়ে চোখের কাজল এর থেকে একটু নিয়ে কপালের পাশে লাগিয়ে বলে,

সেঝো কাকি:মাসাল্লাহ আমার মেয়েটার উপর কারো নজর না লাগে।আজকে তো বেশ মিষ্টি লাগছে আকার মেয়েটাকে।

স্নেহা কাকির এই কাজে খুব খুসি হয়ে। তাকে জরিয়ে ধরে। স্নেহা অনেক খুসি যে তার কাকি তার উপর রেগে নেই। স্নেহা আসতে আসতে সবার কাছে গেলো। সবাই তাকে আদর করে কাছে টেনেনিলো। আজকে নাস্তায় স্নেহার পছন্দের খাবার। পরাটা আর মুরগির মাংস। স্নেহার মেঝ বাবা ওকে পরাটা ছিড়ে ছিড়ে খাইয়ে দিচ্ছে। খাবার খাওয়ার মাঝে বড় কাকা সবাইকে উদ্দ্যেশ করে বলেন,

বড় কাকা:আজকে সবাই বিকালে ড্রইং রুমে থেকো। বাড়ির সবাই জেনো থাকে। ছেলে মেয়েরা থেকে শুরু করে বড়রা সবাই। আমার আর ইমরানের কিছু কথা আছে। নাজমাও আসবে আজকে।

বড় বাবার কথা শুনে সবাই আচ্ছা বল্লো।

খাওয়া শেষে নিতু আর স্নেহাকে কলেজে দিয়ে আসতে গেলো জুনায়েদ। জুনায়েদ এবার একটা প্রাইভেট কম্পানিতে জব পেয়েছে। রিতু আপু আর জুনায়েদ ভাইয়ার এক বছরের ছোট।

নিজের শরীলে তরল কিছু পরছে টের পেয়ে চট করে ঘুম থেকে উঠে গেলো আকাশ। চারিপাশে ভালো করে তাকিয়ে দেখে আরাফ ওর গায়ে পানি ঢেলে দিয়েছে। আকাশ চোখ মুখ কুচকে বল্লো,

আকাশ:ভাইয়া এটা কিন্তু একদম ঠিক না। কত সুন্দর ঘুমটা নষ্ট করে দিলি দূর।

আরাফ:সকাল ১০টা বাজে। ভার্সিটিতে কি আর যাবিনা বলে ঠিক করেছিস। তুর লাস্ট ইয়ারের এক্সাম না আছে। তাহলে তুই এক্সাম হলে যাবি কখন। যা এক্ষুনি ফ্রেশ হয়ে নিচে আয়। আমি খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছি তোর জন্য।

আকাশ এতখন নেশার ঘোর কাটিয়ে ভালো করে তাকিয়ে দেখে সে আরাফের রুমে। কিন্তু সে এখানে এলো কেম্নে? সেতো ক্লাভে ছিলো।

আরাফ:এত ভাবার কিছু নেই। কাল রাতে মাতাল অবস্থায় তোকে নুয়াজ বাসায় দিয়ে গেছে। আমি রাতে তোকে এই রুমে রেখেছি। এখন নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হো।

আকাশ:আচ্ছা😒।

আকাশ আর কথা না বাড়িয়ে নিজের রুমে গেলো।

মিতু আজকে এখনো সকালে নিচে নামেনি। জবা এসেছিলো ওকে ডাকতে। শরিল খারাপের বাহানে দিয়ে যায়নি। কারন আকাশ বাসায় নেই কেউ জিজ্ঞেশ করলে কি বলবে সেই ভয়েই জায়নি।

আকাশ রুমে এসে দেখে মিতু বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। সামনে টেবিলে তার নাস্তা দেওয়া। কিন্তু সে খায়নি। আকাশ এসব গায়ে না লাগিয়ে কাবার্ড থেকে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হতে। হঠ্যাৎ রুমে কারো প্রবেশ করা বুজতে পেরে মিতু রুমে এসে দেখে বিছানায় আকাশের মানিন্যাগ আর ফোন। মিতু বুজতে পারে আকাশই রুমে এসেছে আর এখন ফ্রেশ হতে গেছে। মিতু সোফায় বসে পরলো। আকাশ বেরোলে তার সাথে কথা বলবে।

আকাশ শাওয়ার নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুচতেছে। আর মিতু তার দিকে চেয়ে আছে। এক আলদা মুগ্ধতা কাজ করছে আকাশের চেহারায়। মিতু আসতে করে বলে উঠলো,

মিতু:কাল রাতে কোথায় ছিলেন আপনি?

আকাশ মিতুর কথা শুনে চুল মুছা অফ করে। ওর দিকে তাকিয়ে বলে,

আকাশ:তোমাকে আমি আগেও বলেছি আর এখন আবার বলছি। নিজেকে আমার স্ত্রী ভাবা বন্ধ করো। আমি তোমাকে নিজের স্ত্রী মনে করিনা। তাই আমি কি করলাম, কখন আসলাম, আসলাম না কেন, এসব কৈফিয়ত তোমাকে দিতে বাধ্য নই। নিজের সিমার ভিতরে থাকো। সেটা ভালো হবে তোমার জন্য। আমাদের সম্পর্কের মেয়াদ মাত্র ছয় মাস। এরপর তুমাকে আমি ডিভোর্স দিয়ে দেবো। সো আমার ব্যাপারে নাক গলিওনা।

মিতু আকাশের কথার পিঠে কোনো কথা বল্লনা। নিঃশব্দে রুম থেকে আসতে করে চলে গেলো।
আকাশ সেদিকে খেয়াল না করে রেডি হতে লাগ্লো।

খাবার টেবিলে বসে আকাশের জন্য অপেক্ষা করছে আরাফ। আকাশ সিঁড়ি বেয়ে নেমে এসে আরাফের পাসে বস্লো। খেতে খেতে দুই ভাই অনেক গল্প করতে লাগ্লো। কথা মাঝেই আরাফ বলে উঠলো।

“স্নেহার সাথে এমন কেন করলি আকাশ”?

#চলবে

ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন🙏।

#আড়ালে_ভালোবাসি
#পর্ব_৬
#নন্দিনি_চৌধুরী

কলেজে এসে আজকে স্নেহার মন খুব ভালো হয়ে গেলো। কলেজে ওর জানেরজান পরান এর পরান ওর এক মাত্র বান্ধুবি মেহেক এর সাথে খুব ভালো সময় কাটালো। ওদের এক্সাম এর রুটিন দিয়ে দিয়েছে সামনের মাসের ৫তারিখ থেকে ওদের এক্সাম।মেহেক স্নেহার সাথে ঘটা সব জেনেছে। ওরতো ইচ্ছা করছিল মিতুকে একদম চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে। কারণ মেহেক জানে মিতু যা বলেছে সব মিথ্যা।স্নেহা আর মিতু বসে ক্যান্টিনে আড্ডা দিচ্ছে আর কফি খাচ্ছে।

চেম্বারে নিজের চেয়ারে সাথে হেলান দিয়ে বসে চোখ বন্ধ করে আছে আরাফ। সকালে সে আকাশের থেকে কারন জানতে চাইলে আরাফ সেরফ এক কথায় জানিয়ে দেয় সে এই বিষয়ে কোনো কথা বলতে চায়না। আরাফ ভেবেছিলো আকাশ কিছু হলেও একটু বলবে। কিন্তু সে কিছুই বলেনি। আরাফ তার হাতে ফোন নিয়ে একটা নাম্বার ডায়েল করলো। দুইবার রিং হবার পর কল রিসিভ হলো,,

আরাফ:আসসালামু আলাইকুম।

অপাশ:ওলাইকুমুস সালাম।কিরে কি খবর তোর? কবে আসলি দেশে? আসলিতো আসলি জানালিওনা।🙂

আরাফ:আসছি মাত্র ৪দিন হলো। তোকে কল দিছি শালা তুইত ধরিসনা। কোন মহাভারতে বিজি থাকস।

অপাশ:অহ সরি দোস্ত। আসলে কি বলবো বল। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পরে মাথা পুরাই হ্যাং মেরে গেছে। তাই আরকি এই সেই কাজে বিজি থাকি। আচ্ছা তুই বল তোর কি অবস্থা।

আরাফ:হ্যা ভালোই আচ্ছা শোন আমার একটা কাজ করে দিতে পারবি?

অপাশ:হ্যা অবশ্যই বল দোস্ত কি কাজ।

আরাফ:তোকে আমি কিছু ছবি আর ভিডিও সেন্ড করছি। তুই আমাকে এই ভিডিওটা আর ছবিটার আসল ফুটেজ বের করে দিতে পারবি। ছবি গুলা ফেক আমার ছবির মেয়ের মুখে যেই মুখটা এখন আছে অই মুখের যায়গায় আসল মুখটা দরকার আর ভিডিওটার ও।

অপাশ:আচ্ছা দোস্ত তুই আমাকে সেন্ড কর। তবে আমার তিনদিন সময় লাগবে। একটা জরুলি কাজ আছে। সেটা শেষ করেই তোর কাজটা করে দেবো ওকে।

আরাফ:ওকে নো প্রব্লেম।

আরাফ ফোন কেটে দিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিলো। এত্তখন সে তার কাছের বন্ধু আবির এর সাথে কথা বলছিল। পেশায় সে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। সে কম্পিউটারের সব কাজ জানে। তাই তার উপরই আরাফ এখন ভর্সা করতে পারে।

“স্নেহা পাখি খুব তাড়াতাড়ি তোমার সাথে করার অন্যায় এর শাস্তি পাবে তোমার অন্যায়কারীরা। যারা তোমার এত কস্ট দিয়েছে। তাদের সবাইকে শাস্তি দেবো। তারপর আমার মনের কথা তোমায় জানাবো। আমার ১২ বছরের #আড়ালের_ভালোবাসাটা। আরোও একবার সুযোগ পেয়েছি তোমাকে জানাবার। এবার আমি তোমাকে হারাতে দিবনা। স্নেহা পাখি খুব ভালোবাসি তোমার #আড়ালে_ভালোবাসি। ”

বিকেলে ড্রইং রুমে সবাই উপস্থিত। শুধু আকাশ বাদে। আকাশকে কেউ এখানে আশাও করেনা। তাই আকাশের অপেক্ষা ছাড়াই কথা বার্তা শুরু হয়েগেছে।

বড় কাকা:তোমাদের সবাইকে এখানে এনেছি এর বিষেশ কিছু কারন আছে। তোমাদের আমরা আমাদের তিন ভাইয়ের কিছু সিদ্ধান্ত জানাতে চাই। আর এই সিদ্ধান্ত গুলো আমাদের সন্তানদের নিয়ে। তাই সবাইকেই আমি এখানে ডেকেছি।

ইমরান:আমি আর বড় ভাইজান আর মোতালেভ কি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা এখন জানাবো।

বড় কাকা:ইমরান আগে তুই বল।

ইমরান:আচ্ছা ভাইজান।আসলে আমি ঠিক করেছি জুনায়েদ আর নিতুর বিয়ে দেবো। যেহুতু নিতু আর জুনায়েদ দুজোনেই প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েছে। আর ওরা দুজন দুজনকে পছন্দ করে সেখানে আমি আর ভাইজান কোনো অমত করছিনা। এখন বড় ভাবি আর জুনায়েদের মা তোমাদের কি কোনো অমত আছে?

বড় ভাবি:আমার কোনো অমত নেই ভাই। জুনায়েদকে নিজের মেয়ের জামাই পেয়ে আমি খুসি হবো। তাছড়া মেয়েটাকেও আর ঘরের বাহিরর যেতে হবেনা।

মেঝ কাকি:আমার ও নেই জঁবার বাবা কোনো অমত। নিতুকে আমার ও ভাড়ি পছন্দ। তুমি ওদের বিয়ের দিন তারিখ দেখে ফেলো।

আচ্ছা এবার নাজমা তোকে আমরা কিছু বলার আছে।

নাজমা হাসাম বাড়ির ছোট মেয়ের। তার স্বামী একজন রিটায়েড সরকারি কর্মকর্তা। তার ছেলে রাতুল এভার বিসিএস ক্যাডার হয়েছে এখন একটা ভালো জব করে।

নাজমা:হ্যা ভাইজান বলো।

জাফর:আমি চাই রিতুকে তোর রাতুল এর বউ করতে। তুই কি রাজি আছিস এই সমন্দে।

জাফর এর কথা শুনে রিতু রাতুল দুজনেই চমকে যায়। তারা একজন আরেকজনকে পছন্দ করে ঠিক কিন্তু কোনোদিন কাউকে বলেনি। যদি বাড়ির সবাই রেগে যায় এই ভয়ে।

নাজমা:আমার কোনো আপত্তি নেই। রিতুকে মাকে নিজের ছেলের বউ করতে। তুমি যেদিন চাও সেদিন ওদের বিয়ে দিয়ে দেও। কি বলো রাতুলের বাবা।

রাতুলের বাবা:হ্যা ভাইজান আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

জাফর:তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ। দুইটা বিয়ে একসাথেই হবে তাহলে।

সবাই:হ্যা তাই ভালো হবে।

ইমরান:আর একটা জরুলি কথা বলার আছে।
সামনের সোমবার ইকবাল দেশে ফিরছে।

ইকবাল নামটা শুনে সবাই চমকে যায়। বিষেশ করে স্নেহা প্রায় ১৮টা বছর পর সে তার নিজের জন্মদাত্রি বাবাকে সামনাসামনি দেখবে। ভেবেই এক আলাদা আনন্দ শুরু হয়ে গেলো স্নেহার মনে। কিন্তু তা সবার সামনে প্রকাশ করলোনা।

নাজমা:তাহলে এতগুলা বছর পর ছোট ভাইজানের মন গল্লো।

জাফর:জানিনা তবে কাল রাতে আমাকে ফোন করে জানালো সে দেশে আসছে। কেন বা কি কারনে তা বলেনি।

মোতালেভ:ইকবাল বাড়িতে আসলে সবার আগে স্নেহাকে দেখে রাগ না করলেই হয়। ওর যা রাগ একদম বাবার মতো।

ইমরান:হ্যা তাই ভাবছি আমি স্নেহাকে সামনে দেখলে ও তো রেগে যাবে। তাহলে এখানে আসছে কেন। এতগুলা বছরে একবার ও ফোন করে জানতে চায়নি ওর মেয়ে কেমন আছে। আর আসা তো পরের কথা।

জাফর সাহেব এই বিষয়ে কিছু বললেন না। সবাই আর ও টুকটাক কথা বলে যে যার মত চলে গেলো। জাফর সাহেব যাওয়ার আগে স্নেহাকে বলে গেলো রাতে যেন স্নেহা তার রুমে একটু আশে। তার ওর সাথে কিছু কথা আছে।

রাতের বেলা স্নেহা খাবার খেয়ে ওর বাবার জন্য গরম দুধ নিয়ে রুমে গেলো। স্নেহার বাবাই চেয়ারে বসে কাগজ দেখছেন। স্নেহা আস্তে করে দরজার সামনে এসে ডাক দিলো,

স্নেহা:বাবাই আসবো?

স্নেহার গলার আওয়াজ পেয়ে তিনি কাগজ রেখে হেসে বললেন,

জাফর:আয় মা ভিতরে আয়।

স্নেহা আস্তে করে ভিতরে ডুকে বাবাইকে দুধটা দিলো। জাফর সাহেব দুধটা খেয়ে স্নেহাকে বল্লো আয় এখানে বস। স্নেহা মেঝেতে বসে বাবাইয়ের হাটুতে মাথা রাখলো। বাবাই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে,

জাফর:তোকে আজ কিছু কথা বলবো। তুই মন দিয়ে শোন।

স্নেহা:আচ্ছা বাবাই।

জাফর:আমরা চার ভাই একজন আরেকজনের প্রান। আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি নিজেদের ভিতর দন্দ না করার। এবং তাতে আমরা সফল। আজ ও আমরা একসাথে। আমার বিয়ের পর তোর মা কন্সিভ করতে পারছিলেন না। এতে আমার কোনোই সম্যসা ছিলোনা। আমার বিয়ের ছয় মাসের মাথায় মেঝর ঘর আলো করে আসে জুনায়েদ। তারপর নাজমার ঘরে আসে রাতুল। এরপর আমার ঘরে আসে রিতু,নিতু,। এরপর সেঝর ঘরে আসে আরাফ আর আকাশ,আর তোর বাবার ঘরে আসিস তুই। কিন্তু তোর মায়ের প্রেগ্নেন্সিতে অনেক সম্যসা ছিলো। ইমরান বলেছিলো ওকে এখন বেবি না নিতে। কিন্তু ওর প্রথম সন্তান হওয়ায় ও তোকে ফেলেনি। ডেলিভারির দিন যখন তোর মা মারা গেলো। তখন ইমরান পাগল হয়েই গেছিলো। তাই তোকে সেদিন আমার হাতে দিয়ে চলে যায়। তুই কি জানিস সেদিন ও চাইলেই তোকে ফেলে দিতে পারতো। কিন্তু না ও সেদিন আমাকে বলেছিলো, “ভাইজন আপনি একে নিয়ে নেন আমি এর মুখ দেখতে চাইনা”।সেদিনই তোর বাবা চলে যায় সিডনিতে। তোকে নিজের মেয়ের মতো আমি আর শায়লা আগলে নিলাম। তুই আর নিতু ছিলি এক বয়সের। তোর দুই মাস আগে ওর জন্ম হয়েছে। তোদের পালতে আমাদের কোনো সম্যসা হয়নি। তোর যখন দুই বছর তখন একদিন তোর বাবা সবার আড়ালে দেশে এসেছিলো। আমার সাথে দেখা করতে। সেদিন সে আড়াল থেকে তোকে দেখেছিলো। আর কত খুসিইনা হয়েছিল। তুই দেখতে একদম তোর মায়ের মত হয়েছিস ইমরান বলতো। ইমরান সব সময় তোর খোজ খবর নিতো। তোর জন্য সিডনিতে বসেই টাকা দিত যাতে তোর কোনো অসুবিধা না হয়। আমি নিতে না চাইলে সে বলত, “ভাইজান আমি হয়ত কখনো সাহস করে নিজের মেয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারবনা। কি মুখে দাঁড়াবো যে ওর মায়ের মৃত্যুর জন্য আমি ওকেই দায়ী করে ওকে রেখেই চলে গেছিলাম। তাহলে তো ওর চোখে আমার জন্য ঘৃণা থাকবে। যা আমি চাইনা। তাই আমি আমার মেয়েকে ওর #আড়ালে_ভালোবাসি। আপনি প্লিজ না করবেনা। ওর জন্য আমি যথেস্ট কিছু করে রেখেছি। ওর ১৮ বছর পূর্ণ হলে ওকে সেগুলো আপ্নি নিজ হাতে বুঝিয়ে দেবেন”।তোর বাবার কথা সেদিন আমি ফেলতে পারিনি। সে সবসময় তোর জন্য অনেক টাকা দিতো। সেগুলো সব আমি তোর নামের ব্যাংকের একাউন্টে জমা করে রেখেছি। তোর বিয়ের জন্য অনেক গুলো গহনা আর তোর মায়ের গহনাও সে রেখেছে একটা ব্যাংকের লকাড়ে। তোর ১৮ বছর আর কিছুদিন পরেই হবে। সেদিনই তুই সেগুলো হাতে পেয়েযাবি। তোর বাবার এখন হঠ্যাৎ করে দেশে এই জন্য আসছে। তোর বাবার হার্টের রোগ ধরা পরেছে। তাই সে একবার তোকে নিজের চোখে দেখতে চায় সামনাসামনি। তুই তোর বাবাকে ভুল বুজিস না মা। সে এলে তাকে তুই পরম যত্নে বাবা বলে গ্রহন করে নিস। আমি জানি তোর অনেক অভিমান জমে আছে। কিন্তু আমি বলছি ইমরান বাবা হিসেবে তোকে সামনা সামনি আগলে না রাখলেও #আড়ালে_ভালোবাসে।

স্নেহা বাবাইয়ের কথা গুলো শুনে চোখ থেকে পানি পরছে। তার বাবাই তাকে এত ভালোবাসে তবে তাও কাছে আসতোনা। নাহ বাবা এলে সে বাবাকে একদম আগলে ধরবে। যেনো আর তাকে রেখে না যেতে পারে। স্নেহা আসতে করে উঠে চোখ মুছতে মুছতে রুম ত্যাগ করলো। স্নেহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন জাফর সাহেব।

ভোর ৫টা আযানের ধনি শুনা যাচ্ছে চারপাস থেকে। সাথে কাক আর পাখির ডাকার আওয়াজ। বিছানা থেকে আসতে করে উঠে বস্লো মিতু। গতকাল রাতে তার সাথে খুব বাজে কাজ করেছে আকাশ।

মাতাল অবস্থায় গতকাল রাতে ৩টায় আকাশ বাড়ি ফিরেছে একা একা। এত রাত পর্যন্ত মিতু জেগে ছিলো আকাশের জন্য। আকাশ বাসায় আসলে মিতু দেখে সে নেশায় আছে ঠিক মতো চলতেও পারছেনা। মিতুকে আকাশকে ধরে ধরে রুমে নিয়ে যায়। তারপর তাকে বেডে শুয়ে দিয়ে উঠতে নিলে আকাশ তাকে টেনে বুকে নিয়ে আশে। আকাশ নেশার ঘোরে ভাবছে এটা স্নেহা তাই স্নেহাকে ভেবেই মিতুকে বুকে নিয়ে এসেছে। আর মিতুর খুব ভয় হচ্ছে যদি আকাশ নেশার ঘোরে কিছু করে বসে। তবেতো সকালে তার কিছু মনে থাকবেনা। মিতু চায় আকাশের ভালোবাসা তবে সেটার আকাশে সজ্ঞানে, এরকম নেশা অবস্থায় না। তাই মিতু নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে আকাশ ওকে আর ও কাছে টেনে নিয়ে। বিড়বিড় করে বলতে থাকে,

আকাশ:কেন কষ্ট দেও আমাকে এত স্নেহা। আমি যে তোমায় খুব ভালোবাসি। এতো ভালোবাসার পরেও তুমি আমাত ঠকালে কেন স্নেহা কেন?

মিতু বুজতে পারছে আকাশ নেশার ঘোরে তাকে স্নেহা ভাবছে। মিতু আবার নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে আকাশ এভার ওর ঠোটঁ জোরা মিতুর ঠোঁটের সাথে মিলিয়ে দেয়। মিতু অনেকবার ছোটাছুটি করলেও এখন চুপ হয়ে গেলো। না চাইতেও একটা অনাকাঙ্ক্ষিত মিলন হয়ে গেলো তাদের। যেখানে ভালোবাসা নেই সব শুধু নেশার্ত ঘোরের মহো। মিতু জানেনা এই মিলনের পর তার জীবনে কত বড় ঝড় আসতে চলেছে।

বিছানা থেকে উঠে পাসে থাকা জামাটা পরে নিলো সে। হাটতে বেস কষ্ট হচ্ছে তার। শরীলের সব জায়গায় ব্যাথা। নখের আচড়, কামরের দাগ ভরে আছে। আকাশ এক পাষবিক পশুর মতো তাকে খুবলে খেয়েছে। মিতু আস্তে করে ওয়াসরুমে গিয়ে ঝর্না ছেড়ে তার নিচে বসে। চোখ থেকে পানি পরছে। সে এরকম মিলন চায়নি সেতো চেয়েছিলো আকাশ তাকে ভালোবেসে কাছে টেনেনিক। কিন্তু এটা চায়নি সে।

শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে দেখে আকাশ এখনো ঘুম। মিতু নামাজ পরে নিচে চলে যায় নাস্তা বানাতে। বাড়ির বউ হয়ে এসেছে চারদিন কিন্তু এখনো অব্দি সে কিচেনে যায়নি। তাই আজ সেই গেলো রান্না ঘরে।

সকাল ৯টায় আকাশের ঘুম ভেংগে যায়। আস্তে করে মাথাটা চেপে ধরে উঠে। সে মনে করার চেষ্টা করছে কাল রাতে কি করেছে সে। আসে পাশে তাকিয়ে দেখে মিতু নেই। এখন নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে তার গায়ে কোনো কাপড় নেই। এটা কি করে হলো। তবে কি সে মিতুর সাথে কিছু। নাহ্ এরকম হতে পারেনা। সে নেশা করলেও এতটা খারাপ হয়ে যায়নি। আকাশ জলদি উঠে চাদর পেচিয়ে গোস্ল করতে গেলো। তার মিতুর সাথে কথা বলতে হবে। তার মুখ থেকেই শুনতে হবে কাল কি হয়েছে।

স্নেহা বসে বসে পড়ছে। আজকে কলেজ যায়নি সে কারন আজ উঠতে লেট হয়ে গেছে তার। তাই সে যেতে পারেনি। তাই সে ঘরে বসেই অংক করছে। কিন্তু অংকটা মেলাতেই পারছেনা।

স্নেহা:দূর ছাই! এই পড়াকপাইল্লা অংকটাতো মিলছেইনা দূর দূর।

“ঘটে বুদ্ধি থাকলে তো অংক মিলাতে পারবি গাধি।”

#চলবে

ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।🙏আর গঠনমুলোক মন্ত্যব্য আশা রাখছি🙏।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে