#আড়ালে তুমি
পর্ব ২
লেখকঃ শাহরিয়ার কবির নীল
রাতে শুয়ে ছিলাম এমন সময় কেউ কল দিলো। আমি রিফাতের কাছ থেকে ফোন নিয়ে কলটা ধরলাম
আমিঃ আসসালামু আলাইকুম
ওপাশ থেকেঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। আপনি নীল না?
আমিঃ জ্বী। কিন্তু আপনাকে তো চিনলাম না।
ওপাশ থেকেঃ আমি ইসরাত জাহান শিলা।
নামটা ঠিক আছে। তবে ডাকনামটা শুনে আমার প্রিয় মানুষটির কথা মনে পড়ে গেলো। ভয়েসটাও কেমন জানি মনেহচ্ছে খুব পরিচিত।
আমিঃ সরি চিনলাম না।
শিল ম্যামঃ আরে আমি আপনার অফিসের বস।
আমিঃ ( বস শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম) মমম ম্যাম আআ আপনি?
শিলা ম্যামঃ জ্বী আমি।
আমিঃ ম্যাম আমাকে ফোন দিলেন কি মনে করে?
শিলা ম্যামঃ কেনো ফোন দিতে পারিনা বুঝি?
আমিঃ না সেটা বলিনি। তো কি জন্য ফোন দিলেন?
শিলা ম্যামঃ আপনার ছেলে কি করছে?
আমিঃ কার্টুন দেখছিলো। এখন এমনি বসে আছে।
শিলা ম্যামঃ আপনার ছেলেটা এতো শান্ত কেনো?
আমিঃ মা নেই তাকে চঞ্চল বানাবে কে?
শিলা ম্যামঃ আচ্ছা ঘুমাবেন না?
আমিঃ হুম কিছুক্ষন পর ঘুমাবো।
শিলা ম্যামঃ খেয়েছেন?
আমিঃ জ্বী। আপনি খেয়েছেন?
শিলা ম্যামঃ হুম খেলাম। আচ্ছা আপনাকে আরেকটা কথা বলার ছিলো।
আমিঃ জ্বী ম্যাম বলুন।
শিলা ম্যামঃ আপনাকে অফিস থেকে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। সামনে সপ্তাহে উঠতে পারবেন।
আমিঃ কিন্তু ম্যাম আমি তো বাসা ভাড়া নিয়েছি।
শিলা ম্যামঃ আপনি ফ্রী থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। আর ফ্ল্যাটটা অফিসের পাশেই। যাতায়াতের সময় বাঁচবে। আর আপনার ছেলেটাকে জন্যও জমা করতে পারবেন।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে ম্যাম আমি সমানে সপ্তাহে উঠবো।
শিলা ম্যামঃ আচ্ছা কালকে অফিসে দেখা হবে।
আমিঃ ইনশাআল্লাহ।
যাক মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মতো ব্যাপার। আমার এক্সট্রা খরচ হবেনা। বাসা ভাড়ার টাকাটা জমা করা হবে। তবে শিলা নামটা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। জানিনা কি হয়েছিলো সেদিন। সেই বের হলো আর ফিরলো না। হয়তো আমার প্রতি বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলো। নাহয় অভাবের সংসারটা পচ্ছন্দ হয়নি। তাইতো নিজের ছেলেটাকে ফেলে চলে যেতো না। কি দোষ ছিলো আমার? সেই তো আমাকে রাস্তা থেকে তুলে নিজের মনে জায়গা দিয়েছিলো। তাহলে কেনো আবার রাস্তাতে ফেলে চলে গেলো? এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই।
সকালকে এলার্মের শব্দে উঠলাম। তারপর নাস্তা তৈরি করে নিলাম। এর মাঝে রিফাত ঘুম থেকে উঠে গেছে। কাজ শেষ করে আমি রিফাতকে তৈরি করে দিলাম। তারপর অফিস চলে গেলাম। গিয়ে নিজের ডেস্কে বসলাম। বসতে না বসতেই পিয়ন আসলো।
পিয়নঃ আপনাকে ম্যাডাম ডেকেছেন।
আমিঃ আচ্ছা যাচ্ছি।
রিফাতকে নিয়ে চলে গেলাম। ম্যামের কেবিনের সামনে গিয়ে বললাম
আমিঃ May I come in mam?
শিলা ম্যামঃ Yes, Come in.
আমিঃ ম্যাম কিছু বলছিলেন?
শিলা ম্যামঃ জ্বী। কালকে ম্যানেজার সাহেব আপনার কাজের রিপোর্ট আমাকে দিয়েছে। ভালোই করেছেন। আজকে থেকে আপনাকে আসল কাজ শিখিয়ে দেওয়া হবে৷ সাথে ছোট ছোট কাজগুলো করবেন। ১ মাস পর আপনার রিপোর্ট অনুযায়ী আপনাকে কাজ দেওয়া হবে।
আমিঃ জ্বী ম্যাম।
শিলা ম্যামঃ আর সামনে সপ্তাহেই ফ্ল্যাটে উঠবেন।আর আপনা ছেলেকে রেখে যান।
আমি রিফাতকে রেখে চলে এলাম। একটু পর রফিক ভাই আসলো।
রফিক ভাইঃ কেমন আছো নীল?
আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভাই। আপনি কেমন আছেন?
রফিক ভাইঃ আলহামদুলিল্লাহ। শুনলাম তোমাকে নাকি ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে?
আমিঃ জ্বী ম্যাম কালকে ফোনে বলেছন।
রফিক ভাইঃ আসলে আমি তোমাকে আমার সাথে থাকার জন্য বলতাম। আসলে আমার কেউ নাই তো তাই একা একা ভালো লাগেনা। তুমি আর তোমার ছেলেটা থাকলে ভালো লাগতো। তবে ভালোই ফ্ল্যাটে উঠেছো। যে বিল্ডিং এ উঠবা সেখানেই আমি আছি।
আমিঃ সরি ভাই আপনার কেউ নেই মানে?
রফিক ভাইঃ বাবা মা কিছুদিন আগে মারা গেছে। একটা বড় ভাই ছিলো। সে বিদেশে কাজ করতো। হঠাৎ একদিন শুনি এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে। আর আমি কোনো দিন বাবা হতে পারবোনা তাই বিয়েও করিনি। ( কাঁদো কাঁদো হয়ে)
আমিঃ আরে ভাই মন খারাপ করছেন কেনো? আপনি যখন ভাই বলেছেন তখন আপনাকেও আমি বড় ভাই হিসেবে মানে করলাম। কিছুদিন পরই আমরা একসাথে থাকবো।
রফিক ভাইঃ আচ্ছা। ( মুখে খুশির ঝলক)
আমিঃ আচ্ছা ভাই আপনি কয় বছর থেকে কাজ করছেন?
রফিক ভাইঃ এই ধরো ৩ বছর মতো হবে। তাই তো নতুন কেউ আসলে আমি শিখিয়ে দুই। আর বেতন আলহামদুলিল্লাহ। আমি একা মানুষ সব জমা পড়ে থাকে।
আমিঃ আচ্ছা। তা ভাই কাজ বুঝিয়ে দিন। তাড়াতাড়ি কাজ শিখিয়ে দিন।
রফিক ভাইঃ আচ্ছা।
তারপর ভাই ১ ঘন্টা কাজ বুঝিয়ে দিলেন। তার ১ ঘন্টা পর আবার রিপোর্ট দেখতে আসলেন। পুরোটা পারফেক্ট না হলেও মোটামুটি হয়েছে। তবে রফিক ভাই আবার কাজটা দিলেন। এবার ৯৭% পারফেক্ট। লাঞ্চের পর আবার কাজ শুরু করবো। রিফাতকে আনার জন্য ম্যামের কেবিনে গেলাম।
আমিঃ ম্যাম আসবো?
শিলা ম্যামঃ আসুন।
আমিঃ ম্যাম ওকে খাইয়ে নিয়ে আসি।
ম্যামঃ আচ্ছা৷ এসে আবার আমার কাছে রেখে যাবেন।
আমি রিফাতকে নিয়ে ক্যান্টিন থেকে খেয়ে এলাম। তারপর আবার ওকে ম্যামের কাছে রেখে আমি আবারও কাজে মন দিলাম। রফিক ভাই আমাকে আরেকটু কাজ শিখিয়ে দিলেন। তারপর সব রিপোর্ট সারাদিনের কাজের রিপোর্ট নাকি ম্যানেজার দেখবেন।
কাজ করতে করতে ছুটির সময় চলে আসলো। ছুটির একটু আগে আগেরদিনের মতো ম্যানেজার এলো
সিফাত ভাইঃ নীল কাজের কি অবস্থা?
আমিঃ ভাই কভার হয়ে গেছে।
সিফাত ভাইঃ বাহ ভালোই তো এগিয়ে যাচ্ছো।
আমিঃ আল্লাহর রহমত ভাই।
সিফাত ভাইঃ আচ্ছা আজকের কাজের রিপোর্ট গুলো দাও।
আমি রিপোর্ট গুলো এগিয়ে দিলাম। উনি দেখতে লাগলেন। একটু পর বললেন
সিফাত ভাইঃ বাহ চমৎকার। ভালোই করছো। আচ্ছা তুমি আজকে দুইটা কাজ শিখেছো তাইনা?
আমিঃ জ্বী
সিফাত ভাইঃ কাল থেকে তুমি ট্রেনিং করবা পাশাপাশি ছোট ছোট কাজ গুলো করবা৷ আমার মনেহয় কাজ শিখতে তোমার খুবজোর ১৫ দিন লাগনে।
আমিঃ ধন্যবাদ।
একটুপর অফিস ছুটি হয়ে গেলো। আমি ম্যামের কাছ থেকে রিফাতকো নিয়ে আসলাম। আসলে ম্যামের কাছে রাখতে আমারও খুব একটা ভালো লাগেনা। যতই বাচ্চা ভালোবাসুক না কেনো এটা পরের সন্তান। তার ওপর মায়া জন্মাতে পারে তবে কিছু সময় পর বিরক্ত হবেই। তাই ভাবছি একটা
চাইল্ড কেয়ারে রাখবো। সারাদিন থাকবে আর অফিস শেষে নিয়ে যাবো। পড়াশোনাও করানো হবে সাথে অনেক বাচ্চা থাকবে ওদের সাথে খেলেবে।
বাড়ি চলে আসলাম। এসে বাবা ছেলে মিলে খেয়ে নিলাম। তারপর ওকে ঘুম পাড়িয়ে আমিও ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে উঠে আবারও সময় মতো অফিস চলে আসলাম। বরাবরের মতোই ম্যাডামের ডাক। রিফাতকে রেখে আসলাম।
ডেস্কে বসে আছি তার কিছুক্ষণ পর রফিক ভাই আসলো।
রফিক ভাইঃ কি ব্যাপার নীল ম্যাম প্রতিদিন তোমার ছেলেকে নিজের কাছে রাখে কেনো?
আমিঃ জানিনা ভাই। তার নাকি বাচ্চা অনেক ভালো লাগে। তবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ওকে চাইল্ড কেয়ারে রাখবো। সারাদিন খেলাধুলা করবে, কিছু শিখবে আর অফিস শেষ করে নিয়ে আসবো।
রফিক ভাইঃ কিন্তু ম্যাডাম যদি রাখতে চাই রাখুক। বাচ্চা ছেলে একা থাকবে?
আমিঃ একা কই? আরও অনেক বাচ্চা থাকবে। তাছাড়া হাজার হলেও ম্যামের নিজের কেউ না। হয়তো ১ মাস খুব ভালো লাগবে। তারপর ঠিকই বিরক্ত হবেন। আমি চাইনা আমার ছেলে কারও বিরক্তির কারণ হয়ে উঠুক।
রফিক ভাইঃ এটা অবশ্য ঠিক। হাজার হলেও নিজের কেউ না। আচ্ছা ঠিক আছে। তোর যা ভালো মনেহয়।
আমিঃ আচ্ছা। আমার কাজ দেখিয়ে দিন।
তারপর ভাই আমাক শিখিয়ে দিলেন। বরাবরের মতোই আমি কাজ করতে থাকলাম। আমি যেই কাজ করিনা কেনো মন দিয়ে করি। কাজের সময় আমার অন্য কথা মাথায় আসেনা। তাই নতুন হবার সত্ত্বেও খুব দ্রুত কাজ করতে পারি।।
আজ শুক্রবার। তাই ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে আছি। সকাল ১০ টায় আমার ঘুম ভাঙলো। আমি তাড়াহুড়ো করে উঠে খাবার প্রস্তুত করলাম। তারপর রিফাতকে জাগিয়ে ওকে ব্রাশ করিয়ে দুইজন মিলে খেয়ে নিলাম৷ খাওয়া শেষে রিফাতকে নিয়ে বের হলাম৷ উদ্দেশ্য একটা ভালো চাইল্ড কেয়ারে ভর্তি করা।
অনেক্ষন খোজার পর অফিস থেকে একটু দূরে হেঁটে যেতে ১০ মিনিট লাগে এইরকম দূরত্বে একটা চাইল্ড কেয়ার পেলাম। যাক ভালোই হলো খুব একটা দূরে না। তারওপর অফিস থেকে দেওয়া ফ্ল্যাটে পরশু দিন উঠবো তই সমস্যা হবেনা৷ এখন সমস্যা হলো রিফাত মানিয়ে নিতে পারবে তো?
চাইল্ড কেয়ারে গিয়ে খোজ নিয়ে বুঝলাম বেশ ভালো পরিবেশ। তাই ভাবলাম ভর্তি করে দিবো। মাসিক ৪ হাজার লাগবে। সমস্যা নাই । রিফাত মানিয়ে নিতে পারলে খুব ভালো হবে। নাহলে সমস্যা হলেও নিজের কাছেই রাখবো। আমি চাইল্ড কেয়ারের মালিক যিনি কিনা একজন মহিলা তার সাথে কথা বলা শুরু করলাম
আমিঃ আসসালামু আলাইকুম।
মালিকঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম।
আমিঃ আসলে আমি তো আসছিলাম। আমার ছেলেটাকে এখানে ভর্তি করতে চাই।
মালিকঃ হুম আপনার সুবিধা হলে ভর্তি করতে পারেন। আপনি কি চাকরিজীবী?
আমিঃ জ্বী। কিছুদিন আগেই একটা চাকরি পেয়েছি।
মাকিকঃ তো ছেলেকে আপনার স্ত্রীর কাছে রাখবেন। নাকি উনিও চাকরিজীবী?
আমিঃ আসলে আমার স্ত্রী নেই।
মালিকঃ সরি। তাহলে আপনি রাখতে পারেন। আমাদের এখানে অনেক শিশু আছে।
আমিঃ আচ্ছা আপনাদের সার্ভিস সম্পর্কে যদি একটু খুলে বলতেন তাহলে ভালো হয়।
মালিকঃ এখানে আমরা ওদের প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে থাকি। আনন্দের সাথে তারা শিখার সুযোগ পায়। এতে তাদের ভিতর একটা উৎফুল্লতা কাজ করে। সাথে এখানে ওরা খেলা ধুলা করার সুযোগ পায়। এখানে ক্লাস ৩ পর্যন্ত পড়ানো হবে। তারপর ভালো কোনো স্কুলে এডমিশন করাতে পারেন।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। তো ফি কতো?
মালিকঃ মাসিক ৪০০০।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। আমি তাহলে আজকেই ভর্তি করাতে চাই।
মালিকঃ আচ্ছা। ফরমটা পূরণ করুন।
তারপর সব কাজ শেষে আমি রিফাতকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। ওকে ৪ দিন পর থেকে পাঠাবো বলে কথা বলে আসি।
২ দিন পর আমি আমার বাসা ছেড়ে ফ্ল্যাটে উঠলাম। রফিক ভাই আমার অনেক সাহায্য করেছেন। অফিসের টাইমে ম্যামই রিফাতকে নিয়ে থাকে। তবে জানিনা পরের সন্তানকে এতো স্নেহ করার কারণ কি?
আজ অফিসে যাবার আগে রিফাতকে নিয়ে চাইল্ড কেয়ারে গেলাম। আমি অনেক বাচ্চা আছে। আমি ওকে রাখতে গেলে ও জিজ্ঞেস করে
রিফাতঃ বাবা তুমি আমাকে রেখে চলে যাবে?
আমিঃ না বাবা। এটা তোমার স্কুল। তোমার অনেক বন্ধু হবে এখানে। আমি কাজ শেষ করেই তোমাকে নিতে আসবো।
রিফাতঃ বাবা আমি তোমার সাথে যাবো। ওই আন্টিটা আমাকে অনেক আদর করে। তুমি কাজ করবে আমি ওনার কাছে থাকবো। আমাকে রেখে যেওনা।
আমিঃ বাবা এখানে তোমার অনেক বন্ধু হবে। খুব মজা করতে পারবে।
রিফাত কোনো মতেই থাকবেনা। আমি এক প্রকার জোর করেই ওকে রেখে আসলাম। ওর চোখে পানি দেখে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। একাই ওকে ৫ বছর নিয়ে থেকেছি। তবে আমার কিছু করার নেই। অন্যের দয়া দেখতে চাইনা। ম্যামের সাথে থাকতে থাকতে যদি কোনোদিন মায়ের আবদার করে বসে? আমি পারবনা এসব। বুকে পাথর রেখেই আমি আলে এলাম অফিস। আজও ম্যাডামের ডাক।
আমিঃ আসবো ম্যাম?
শিলা ম্যামঃ আসুন। আপনার ছেলে কই?
আমিঃ ম্যাম ওকে চাইল্ড কেয়ারে রেখে এসেছি।
কথাটা বলার পর ম্যামের চোখের দিকে তাকিয়ে লক্ষ করলাম পানিতে ভরে গেছে। তার চোখগুলো যেনো আমাকে খুব বকছে।
ম্যামঃ চাইল্ড কেয়ারে রাখর দরকার ছিলো? বাচ্চা একটা ছেলে একাই কিভাবে থাকবে। আমার কাছে রাখতেই বা কি সমস্যা ছিলো?
আমিঃ দেখুন ম্যাম আজ হয়তো আপনার ওকে দেখে মায়া হয় কিন্তু যখন আপনার মায়া হারিয়ে যাবে তখন তার উপর বিরক্ত হবেন। আর যদি কখনও বিরক্ত করে আর ভুল করে ওর গায়ে হাত উঠান তখন আমি ঠিক থাকতে পারবোনা। মা নাই ছেলেটার। খুব যত্নে রাখি।
শিলা ম্যামঃ ওও এইকথা? তা কোথায় ভর্তি করলেন?
আমিঃ অফিস থেকে ১০ মিনিটের লাগে পায়ে হেঁটে যেতে।
শিলা ম্যামঃ আচ্ছা যান কাজে মন দিন।
আমি কাজে মন দিলাম। তবে ছেলেটার জন্য কিছুতেই ভালো লাগছিলোনা। সেদিনের মতো অফিস শেষ করে আমি রিফাতকে আনতে গেলাম।
গিয়ে দেখি একটা জায়গায় বসে আছে।।আমাকে দেখে দৌড়ে চলে এলো।
রিফাতঃ বাবা বাবা তুমি এসেছো?
আমিঃ হ্যাঁ বাবা। আমার বাবাকে আমি একা রেখ থাকতে পারি? চলো বাড়ি যাবো।
রিফাতঃ বাবা আমাকে চকলেট কিনে দিবে?
আমিঃ আমার বাবা চাইবে আর দিবোনা? চলো তোমাকে চকলেট কিনে দেই
আমি রিফাতকে চকলেট কিনে দিয়ে বাসায় আসলাম৷ এখন আমি রফিক ভাই সবাই একসাথে খাবার খাই। আমার ছেলেটাকেও উনি অনেক ভালোবাসেন।
পরেরদিন আবারও রিফাতকে রেখে কাজে গেলাম। আজও রফিক ভাই কাজ দেখিয়ে চলে গেলেন।
অফিস শেষ হবার ১ ঘন্টা আগেই দেখি ম্যাডাম কোথাও চলে গেলেন।
অফিস ছুটির পর আমি রিফাতকে আনতে গেলাম। তবে আনতে গিয়ে যা দেখলাম তা দেখে পুরাই অবাক হয়ে গেলাম। কারণ আমি দেখলাম…………
চলবে………………..