আহানের শ্যামবতী পর্ব-০৩

0
1001

#আহানের_শ্যামবতী
#পর্বঃ৩
#Sam Ira

আহান এর কথা শুনে ইতি লজ্জায়🙈 নুয়ে রইলো, বিরবির করে বললো –
” অসভ্য বেডা মানুষ। 😡

ইতির খাবার গলা দিয়ে নামে না তাই না খেয়ে উঠে গেছে। রুমে বসে বসে আহানের কথা ভাবতেছে আর লজ্জায় লাল নীল হচ্ছে🙈।

ইহান বাসায় ঢুকে দেখলো আহান বসে আছে। আহানকে দেখে ইহান এইবার টেনশনে পড়ে গেল, তখন হঠাৎ করে ঠিকানা দিয়ে দিলো, ইতি যে বাসায় আছে সেটা মনেই ছিলোনা। ইহানের ভাবনার মাঝেই আহান বললো —
” কিরে দোস্ত, কি এতো ভাবছিস,?? তোর বাসায় তো কেউ নাই, ভাবছি তোর সাথে আড্ডা দিবো কিন্তু একটু ইমারজেন্সি কাজ পড়ে গেছে তাই এখনি যেতে হবে।

ইহান মনে মনে খুশি হয়ে গেছে এইভেবে যে ইতিকে আহান দেখে নি। ভদ্রতার খাতিরে ইহান আহানকে থাকতে বললেও আহান থাকেনি।
আহান যাওয়ার পর ইহান সস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।

ইতি ঠিকমতো খায়নি, তাই খাওয়ার নিয়ে ইতির রুমে গেলো ইহান।
” ঠিকমতো খাবার না খেলে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে স্বামীর সেবা করতে পারবি না বনু😁। এখন তাড়াতাড়ি খয়ে ঔষধ খেয়ে ঘুমা।

” ভাইয়া, আমার কিছু খেতে ভালো লাগে না।

“এই সময় এরকম হয়, কিছু না খেলে তুই অসুস্থ হয়ে যাবি বনু।
“খাবো না মানে খাবো না।

এইবার ইহান ইতির কাছে গিয়ে বসে এক লোকমা খিচুড়ি ইতির মুখের সামনে ধরলো। ইতি আর না করলো না, খেয়ে নিলো। ইহান জানে ইতির পিরিয়ড হলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, তাই এতোক্ষন চুপচাপ সব সহ্য করছে।

শুক্রবারে অফিস আদালত সব বন্ধ। নিয়ম মতো আজকে বাবা-মা সবাই বাসায় থাকলেও ইহান বাসায় নেই, তাই ইতির মন খারাপ। ইতির বেস্ট ফ্রেন্ড রিমি আসবে বলছে কিন্তু সে এখনো আসে নাই তাই ইতি বসে বসে মিউসিক শুনছে😶।

কলিংবেল এর আওয়াজ শুনে দরজা খুলে দিয়ছেন রানি বেগম। সালাম দিয়ে জিজ্ঞাস করলেন–
“আপনাদের তো চিনতে পারলাম না??

আমেনা বেগম একটু মুচকি হেসে উত্তর দিলনে– “আমরা কালকে রাতে আপনাদের সাথে কথা বলছি, আজকে আসবো বলছি।

রানি বেগম অনেক খুশি হলেন এবং সবাইকে ভিতরে নিয়ে গেলেন। সকাল থেকে অনেক আইটেম এর নাস্তা তৈরি করছেন উনি। ছেলে ইহানের বেস্ট ফ্রেন্ড, আর ফ্যামিলিও ভালো। ইতি পড়া-লেখায় এতো ভালো না, আর স্কুল অনেক দূরে। আহানের বাসার কাছাকাছি ইতির স্কুল। আহান হাসপাতাল যাওয়ার সময় ইতিকে স্কুল দিয়ে যেতে পারবে, আবার আসার সময় নিয়ে আসতে পারবে। এইসব কিছু ভেবেই মোবারক আহমেদ আর রানি বেগম রাজি হয়েছে। আজকে তারা সামনাসামনি সব কথা বলবে।

রিমি মাত্র বাসায় ঢুকছে, এত মানুষ দেখে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেছে। সবাইকে সালাম দিয়ে ইতির রুমে চলে আসছে।

রানি বেগম মেয়ের রুমে একটা গোলাপি কালার শাড়ি হাতে নিয়ে ঢুকছেন। এটা দেখে ইতি মনে মনে ভাবলো —
” ইসসস, আজকে সূর্য কোনদিক থেকে উঠছে সেটা একটু দেখা দরকার ছিলো। যেই আম্মুর কাছে হাজার বার শাড়ি চাইলেও দেয় না, সেই আম্মু আজকে কেমনে শাড়ি নিয়ে আসলো??
আমি তো আজকে ভবছি চুরি করে একটা শাড়ি পরে রিমির সাথে ঘুরতে যাবো। সেটা কি আম্মু জেনে গেলো নাকী?

ইতির ভাবনার মধ্যে এক বালতি পানি ঢেলে ইতির আম্মু বললো,
“এইদিকে আয়, তোকে শাড়ি পরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সবাইকে সালাম দিয়ে দারিয়ে থাকিস, বসতে বললে তারপর বসিছ।

ইতির এখন খুশিতে নাচতে ইচ্ছা করতেছে🤩🤩, কিন্তু মায়ের সামনে নাচতে গেলে এখন ২-৩ টা থাপ্পড় খেতে হবে তার চাইতে ভালো চুপচাপ থাকা।

মেয়ের ভাবসাব রানি বেগম ভালই বুঝতে পারছেন তাই শাড়ি পরাতে পরাতে বললেন —
“ছেলে ডাক্তার, বিয়ে হলে পড়া-লেখা ছেড়ে দিবেন সেই চিন্তা মাথায় না আনলেই ভালো হবে।

ইতি মনে মনে বললো,
” ছেলে ডাক্তার হোক নয়লে ইঞ্জিনিয়ার, তাতে আমার কি?? ২ দিনেই সোজা করে ফেলবো😁😁।

রানি বেগম শাড়ি পরিয়ে হালকা একটু লিপিস্টিক দিয়ে ইতিকে নিয়ে গেলেন, রিমি অনেক বুঝিয়ে ইতির আম্মুকে পাঠিয়ে দিয়েছে।
রিমি সবার সাথে মিশতে পারে না, আজকে ইতি অনেকবার বলছে তাই শাড়ি পরে আসছে, এখনি শাড়ির বেহাল অবস্থা, ঠিকমতো হাটাই যায় না।
সবার মাসনে যাওয়ার পর যদি শাড়ি খুলে যায় তাই ইতির সাথে না গিয়ে রুমে বসে রইলো।

ইতিকে আহানের পাশে বসিয়ে আমেনা বেগম অনেক কথা বলেতছে। ইতি চুপ করে বসে রয়েছে।
তার পাশে যে হবু বর বসে রয়েছে সেদিকে তার কোনো খেয়াল নাই। বর যেই হোক না কেনো তার এখন একটাই চিন্তা বিয়ে করে পড়া-লেখাকে টটা বাই বাই করা।

ইহান বাসায় ঢুকে এরকম পরিবেশ দেখে অনেক অবাক, পরে আহানের কাছ থেকে সব জেনে নেওয়া যাবে,আহান ছেলে হিসাবে ভালো, ইতি আহানের কাছর সুখে থাকবে, এইভেবে সবার সামনে আর কিছু জিজ্ঞাস করেনি। সবাইকে সালাম দিয়ে তার রুমে চলে গেছে।

ইহান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে বিছানার মধ্যে চকলেট আছে। প্রতিদিন ইহান ইতির জন্য চকলেট আনে, আজকে সবার মাঝখানে বসে রয়েছে বিধায় চকলেট নিতে আসেনি তা না হলে এতোক্ষনে খাওয়া হয়ে যেতো।

রিমির শাড়ির আচলের অংশটা এলোমেলো হয়ে আছে, তাই সেটাই ঠিক করতেছিলো তখনি ইহান রুমে ঢুকছে। রিমি ওইদিকে ফিরতে গেলে পায়ের সাথে সব কুচি খুলে যায়।

চকলেট গুলো ইতির রুমে রাখতে এসে রিমিকে এই অবস্থায় দেখবে সেটা কল্পনাতেও ছিলো না।

ইহান সামনের দিকে যেতেই রিমি শাড়ি টান দেওয়াতে ইহান রিমির গায়ের উপর পরছে।
রিমি টাল সামলাতে না পেরে নিচে পরছে, আর তখনি ঘটছে একটা দুর্ঘটনা —

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে