আশিকি Part-27+28

0
1958

❤#আশিকি❤
#Madness_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_27+28

❤❤ In Morning ❤❤

ভোরের আলো চোখে পরতেই ঘুম ভেঙে গেল আমালের। চোখ বন্ধ অবস্থাতেই পাশের জনকে সানাহ ভেবে জড়িয়ে ধরলো ও। একটু মোটা মোটা অনুভব হচ্ছে তাও আমাল ব্যাপার টা অগ্রাহ্য করে পাশের জনকে নিজের দিকে টেনে আনলো তারপর ওর গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল,,,

আমালঃ আই লাভ ইউউ লাভ,,,

আমালের ঠোঁটে কাটা জাতীয় কিছু বিধলো। লাইক সানার কি দাড়ি হলো নাকি।

আবিদঃ আই লাভ ইউ টুউউ বেবি ??

আবিদের কন্ঠে শকড্ হয়ে চোখ মেলল আমাল। ওর পাশে আবিদ শুয়ে ছিল আর ও সানাহ ভেবে ওকে জড়িয়ে ধরেছে আর গালে কিস করেছে ছিহহহ,,,

আমাল লাফ দিয়ে উঠে বসে তারপর চেঁচিয়ে বলে,,,

আমালঃ ইয়াকককক থুহহহহ ছিহহহ আবিদের বাচ্চা তুই এখানে কেন?? ( ঠোঁট মুছতে মুছতে)

আবিদ বসতে বসতে বলে,,,

আবিদঃ আমি কি করলাম আমিতো শুয়ে শুয়ে গেইম খেলছিলাম তুইই তো আমাকে জড়িয়ে ধরে ইয়ে দিলি,,, ( লজ্জা পেয়ে)

আমালঃ ভাগ শালা তুই আমার পাশে আমি কি জানতাম নাকি আমিতো ভেবেছিলাম যে সানাহ,,,,

ওয়েট আমার ব‌উ কোথায় আর ওর জায়গায় তুই এখানে কি করছিস,,, ( আশে পাশে সানাহ কে খুঁজছে )

আবিদঃ রিলেক্স ব্রো তোর ব‌উ হারিয়ে যায় নি ও নিচে সবার জন্য ব্রেকফাস্ট রেডি করছে। টাইম কত হয়েছে তোর আন্দাজ আছে এগার টা বাজে আর ইনি পরে পরে ঘুমাচ্ছে।

আমাল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যিই এগারটা বাজে।

আমালঃ তাই বলে তুই আমার রুমে এসে গেম খেলবি। আমি এখন আর তোর মত সিঙ্গেল নেই ওকে আ’ম আ্য ম্যারিড পার্সন তাই ন্যাক্সট টাইম এভাবে আমার রুমে আসবি না।

আমালের কথায় আবিদ ইমোশনাল ভাব এনে বলে,,,

আবিদঃ ওয়াহ ওয়াহ আগে শুধু শুনেছি আজ প্রমাণ ও পেয়ে গেলাম,,, বিয়ের পর বন্ধু পর হয়ে যায় আর তুই সেটার এক্সাম্পল। শালা হারামী দোস্ত একটা।

আমালঃ তুই বসে বসে এখানে নটাঙ্কি কর আমি ফ্রেশ হয়ে এসে তোকে দেখছি,,,,

আবিদঃ যা যা আমার দলে সানাহ আছে ওকে,, তুই আমার কিচ্ছু করতে পারবি না।

আমালঃ আমার দলেও আমার শালিকা দিয়া আছে ও তো করতে পারবে। ( ওয়াশরুমে ঢুকতে ঢুকতে)

আমালের কথায় আবিদ ঢোক গিলল,,, সেদিন ক্লাবে দিয়া ওর যা অবস্থা করেছিল বেচারা এখনো শকড্ এ আছে।

সানাহ আজকে সবার জন্য ব্রেকফাস্ট রেডি করেছে। আদহাম ডাইনিং এ বসে আছে আবিদ ও এসে বসে পরলো আদহামের সাথে।

আদহামঃ কি হলো আবিদ আমাল উঠে নি,,,

আবিদঃ উঠিয়ে দিয়ে আসলাম। ফ্রিতে একটা কিস ও পেলাম ছিহহহ ( এটা আস্তে বলল)

আমাল একটা সাদা রঙের শার্ট আর কালো প্যান্ট পরে রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে। শার্টের হাতা ঠিক করতে করতে নামছে আমাল হঠাৎ নিচে সানাহকে দেখে থমকে যায় ও। সানাহ আকাশি রঙের শাড়ি পরেছে মাথায় ঘোমটা টানানো ওর। একদম ব‌উ ব‌উ লাগছে সানাহকে।

আমালঃ গুড মর্নিং ড্যাড,,,

আদহামঃ মর্নি বসো। আজকে সানাহ ব্রেকফাস্ট রেডি করেছে,,,

আমালঃ হুম দেখতেই তো পাচ্ছি,,, আচ্ছা সানাহ এগুলো খাওয়া যাবে তো নাকি আবার বাইরে থেকে অর্ডার করতে হবে, ( মজা করে)

সানাহ চোখ পাকিয়ে আমালের দিকে তাকালো। আদহাম সামনে তাই কিছু বলতে পারছে না। হাতের কাটা চামচ টা মোচরাচ্ছে সানাহ।

আমাল ব্যাপার টা খেয়াল করে ভয়ে ভয়ে আবিদের পাশে বসে আর সাথে সাথে আবিদ উঠে অপজিট চেয়ারে বসে পরে।

আদহামঃ কি হলো আবিদ উঠলে কেন?

আমালঃ এমন ভাবে উঠলি যেন তোর পাশে আমি না ভুত বসেছে।

আবিদঃ ভুত ও তোর থেকে ভালো। আজকে তোর থেকে যত দূর থাকবো সেফ থাকবো। সকালের প্রতিশোধ কিভাবে নিস কে জানে,,( মনে মনে)

না আসলে ওটাতো সানার সিট তাই আমি উঠে গেলাম আমালের তারিয়ে দেওয়ার আগে।

সবাই হোসে দিল আবিদের কথায়। সানাহ আমালের পাশে বসে সবাইকে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে,,,

[ আমি লাভ স্টোরি লিখতে পারি বাট এই সাংসারিক টাইপ গল্প আমার মাথার উপর দিয়ে যায়। তাই এতো গুছিয়ে লিখতে পারছি না স্যরি ফর দ্যাট ]

আদহামঃ আজকে রাতে তোমার আর সানার রিসেপশন পার্টি আমাল মনে আছে তো?

আমালঃ এয়াহ মনে আছে ড্যাড,,,

আদহামঃ আবিদ তুমি গিয়ে সানার আম্মু দিয়া আর ফ্যামিলি ম্যাম্বারদের নিয়ে আসবে।

আবিদঃ যথা আজ্ঞা আঙ্কেল,,,

সবাই ব্রেকফাস্ট করে উঠে যায়। আদহাম চলে যায় আরেঞ্জমেন্ট চেক করতে আর আবিদ সানার আম্মুকে আনতে। আমালের একটা কল আসায় ও উপরে চলে যায়।

সানাহ সব গুছিয়ে রুমে চলে আসে। রুমে কোথাও আমাল নেই সানাহ খুঁজছে ওকে।

হঠাৎ কোথা থেকে আমাল এসে সানাহকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। সানাহ কনুই দিয়ে আমালের পেটে গুতো দিতেই আমাল “ আহ” বলে দূরে সরে যায়।

আমালঃ আহহ সানাহ এটা কি করলে ব্যথা লাগলো তো,,,, ( পেটে হাত বুলাতে বুলাতে)

সানাহঃ বেশ করিছি নিচে কি যেন বলছিলে আমার রান্না খাওয়া যাবেনা বাইরে থেকে অর্ডার করতে হবে,,, ( রেগে)

আমালঃ আমি ঠিক সেটা বলিনি তো লাভ,,, তুমিতো রান্না জানো না তাই আমি একটা ( কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না)

সানাহঃ আমি একটু কি হ্যাঁ?? পিঞ্চ মেরে কথা বলছিলে আর আমি রান্না করতে পারি না বলে কি সামান্য ব্রেকফাস্ট ও রেডি করতে পারবো না,,,

আমালঃ অফকর্স পারবে বেবি,,,, আমি কি সেটা বলেছি,,

সানাহঃ একটা কথা শুনে রাখো আমাল বেশি তিরিংবিরিং করবে ডাইরেক্ট ডিভোর্স দিয়ে চলে যাবো হ্যাঁ আর,,,,

সানাহ আর কিছু বলার আগেই আমাল ওকে হ্যাঁচকা টান দিয়ে ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।

আমালের হঠাৎ এমন করায় সানাহ বেকুব বনে গেল,,,

আমাল সানাহকে ছেড়ে নিজের আঙ্গুল দিয়ে সানার ঠোঁট মুছতে মুছতে বলে,,,

আমালঃ নেক্সট টাইম আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা মুখে আনবে না গট দ্যাট,,,

সানাহ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে আমালের দিকে,,,

আমালঃ কি বললাম মনে থাকবে ( কিছুটা ধমকের স্বরে)

সানাহ ভয়ে ভয়ে নিজের মাথা নারালো।

আমালঃ গুড গার্ল,, ( সানার গালে কিস করে )

আজ প্রথমবার আমাল সানাহকে ধমক দিল তাই কিছুটা ভয় পেয়ে আছে সানাহ।

আমাল সানাহকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে ওর মাথায় ঠোঁট ছুঁইয়ে বলতে শুরু করল,,,

আমালঃ ইউ নো না সানাহ তোমার মুখে ছেড়ে যাওয়ার কথা শুনলে আমার রাগ উঠে যায়। আমি তোমার উপর নিজের রাগ দেখাতে চাই না। প্লিজ আর কখনো এ ধরনের কথা মুখে এনো না,,,

সানাহঃ আ’ম স্যরি আমাল আই প্রমিস আর কখনো এ ধরনের কথা বলবো না।

সানাহ আমালের মনের ভয়টা অনেক ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারছে। তাই আমালের সাথে আর কথা বাড়ালো না ও।

আমাল আর সানার রিসেপশন এর পার্টি থ্রো করা হয়েছে আমালদের হোটেলে।

পার্লারের মেয়েরা এসে সানাহকে রেডি করিয়ে দেয়। গোলাপী রঙের গাউন আর হোয়াইট ক্রিস্টাল স্টোনের জুয়েলারী পরিয়ে রেডি করা হয়েছে সানাহকে।

একদম একটা বার্বি ডলে মতো লাগছে ওকে। আমাল রুমে আসতেই মেয়ে গুলো বেরিয়ে যায়।

আমাল পিঙ্ক কালারের শার্ট হোয়াইট কোট প্যান্ট পরেছে। সানাহ বার্বি হলে আমালকে ক্যানের মত‌ই লাগছে। লাইক বার্বি অ্যান্ড ক্যান এর জুরি।

আমাল সানার বরাবর আয়নার সামনে দাঁড়ায়। দুজনের প্রতিবিম্ব এর দিকে তাকিয়ে আমাল বলল,,,

আমালঃ মাই প্রিন্সেস ইজ অল‌ওয়েজ লুকিং লাইক আ্য প্রিন্সেস,,,

সানাহ আমালের দিকে ঘুরে ওর শার্টের কলার ঠিক করতে করতে বলে,,,

সানাহঃ অ্যান্ড মাই প্রিন্স ইজ অল‌ওয়েজ লুকিং লাইক আ্য প্রিন্স।

আমালঃ কিন্তু একটা জিনিস মিসিং আছে,,,

সানাহঃ কি?

আমাল নিজের পকেট থেকে একটা ছোট বক্স বের করলো আর সেটা থেকে একটা নোস পিন।

হোয়াইট ডায়মন্ড এর সিম্পল নোসপিন। সিম্পল হলেও দেখতে অসাধারণ।

আমাল নোসপিন টা সানাহকে পরিয়ে দিয়ে বলল,,,

আমালঃ নাও লুক পারফেক্ট।

আমাল সানার হাত ধরে নিচে নিয়ে আসলো,,,

#Part_28

আমাল সানাহকে নিয়ে হলে চলে আসে। সানাহ ওর আম্মু আর দিয়াকে দেখে ওদের কাছে চলে যায় আমাল‌ও সানার পেছনে যায়।

সানাহঃ আম্মিইই আই মিস ইউউ। ( রাহেলাকে জড়িয়ে ধরলো)

রাহেলাঃ আই অলসো মিস ইউ বাবু,,, তোকে ছাড়া ঘর একদম খালি খালি লাগে,, (সানার গালে হাত রেখে)

আমালঃ আসসালামু আলায়কুম আম্মু,,,

রাহেলাঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম ডিয়ার,,,

দিয়াঃ হ্যাপি ম্যারিড লাইফ দি,,,

বাই দ্যা ওয়ে কেমন কাটছে দিন কাল জিজু বেশি জ্বালাচ্ছে না তো ( কানের কাছে মুখ এনে)

সানাহঃ তোর আর আবিদের বিয়ে হোক তারপর নিজেই বুঝতে পারবি,,, ( দাঁত খিচিয়ে)

দিয়াঃ কুল ডাউন দি এতো রাগছিস কেন,,, টেক ইট ইজি,, ( দিয়া সরে গেল)

লাইট অফ হতেই আবিদ স্টেজে উঠে একটা মাইক হাতে বলতে শুরু করে,,,

আবিদঃ আটেনশন এভরিওয়ান,,,

সবাই আবিদের দিকে তাকালো।

আবিদঃ আজকের এই সন্ধ্যা আমাল আর সানার নামে। কজ টুডে ইজ দেয়ার রিসেপশন অফ ম্যারেজ।

আমাল আর সানার উপর লাইট পরলো,,, আমাল মুচকি হেসে সানাহর হাত ধরে নিজের কাছে আনলো।

আবিদঃ আমাল আর সানাহ শুধু আমার বেস্ট ফ্রেন্ড না তারা দুজন আমার লাইফের একটা অংশ যাকে আমি কখনো নিজের থেকে আলাদা করতে চাই না। ফর মি ইউ গাইজ আর আ্য সিম্বল অফ লাভ। আই জাস্ট ওয়ান্ট টু টেল ইউ বোথ দ্যাট আ’ম ভেরি হ্যাপি ফর ইউ গাইজ। ফাইনালি এতো ঝড় এতো বাধা পেরিয়ে তোদের #আশিকি পূর্ণতা পেল। ইউ বোথ আর মেড ফর ইচ্ আদার। আমি শুধু একটাই দোয়া করতে চাই আল্লাহ যেন তোদের এভাবেই এক রাখে। আই লাভ ইউ এয়ারর আমাল তুই ওয়ার্ল্ড এর বেস্ট ফ্রেন্ড আর আমি জানি তুই সানার জন্য বেস্ট হাজবেন্ট হয়েও দেখাবি ।

আমার তরফ থেকে তোর আর সানার জন্ম ছোট্ট একটা গিফ্ট,,,

তোদের প্রথম দেখা থেকে শুরু করে আজ অবদি যত স্মৃতি আমার ক্যামেরায় ক্যাপচার করেছি তার এক ঝলক,,,

আবিদ কথা গুলো বলে মাইক নামিয়ে নিল। পুরো হল। অন্ধকার হয়ে যায় সামনের বড় প্রজেক্টের এ আমাল আর সানার পুরানো সব স্মৃতি স্লাইড শো করছে।

আমাল আর সানাহ মুগ্ধ চোখে দেখছে তাদের পুরোনা সব ম্যামোরিজ,,, আমাল সানার হাত আরো শক্ত করে ধরে তারপর মিনিটে মিনিটে ছবি দেখার ফাঁকে ফাঁকে ওর হাতে ঠোঁট ছোঁয়ায়।

স্লাইড শো অফ হতেই সবাই হাত তালি দিতে শুরু করে। আবিদ নেমে আসতেই আমাল ওকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,

সানাহঃ থ্যাংক ইউ আবিদ দিস ইজ বেস্ট,,,

আবিদঃ সিরিয়াসলি সানাহ ভাইকে কেউ থ্যাংকস বলে,,, ইট্স হার্ট,,,

সানাহ হেসে দেয়,,,
আমালঃ দিস ইজ দ্যা বেস্ট গিফ্ট ফর মি ফ্রম ইউ ভাই,,,

আবিদঃ তোর সঙ্গতির ফল,,, হতে হতে তোর মত‌ই হয়ে যাচ্ছি,,, এই গিফ্টের আইডিয়া টা তোর থেকেই এসেছে। আমিতো তোকে আর সানাহকে গিফ্ট দিলাম তো তোরা আমাকে রিটার্ন গিফ্ট দিবি না,,,

সানাহঃ কেন দিয়াকে দিয়েছি না তোমাকে গিফ্ট হিসেবে,,

আবিদঃ ও গিফ্ট কম প্যারা বেশি আমার লাইফের
??

দিয়াঃ আবিদের বাচ্চা ফাজিল কি বললি,,,

আবিদঃ নাথিং বেবি,,,

দিয়াঃ এক বার বিয়েটা হোক তারপর বুঝাবো প্যারা কত প্রকার ও কি কি,,, ( রেগে)

আবিদঃ যেমন আমাল তেমন তার শালি,,, ( মনে মনে)

তোমরা কি আমাকে রিটার্ন গিফ্ট দিবে না নাকি,,?

সানাহঃ কি চাই?

আবিদঃ বেশি কিছু না আমাল আর তুমি মিলে একটা রোমান্টিক গান শোনাও আমাদের সবাইকে,,,, সব সময় তো আমাল গায় বাট দিস টাইম তুমি ওর পার্টনার হবে,,,

সানাহঃ আ আমি আর গান! আমি গান করতে পারি না আবিদ তুমি অন্য কিছু বলো প্লিজ,,,

দিয়াঃ ওফফো দি এতো ন্যাকামি করিস না তো উই অল নো তুই অনেক ভালো গাস ওকে,,,

আমালঃ এয়াহহ সান বেবি আমরা এখন কাপল ব্যাটার হাফ তাই আমি একা কিভাবে গাই বলো,,, কাম উইথ মি,, ( সানার হাত ধরে)

আমাল সানাহকে নিয়ে স্টেজে যায় তারপর দুজনের জন্য মাউথ স্পিকার আনায়,, সানার নার্ভাস লাগছে তাই আমাল ওর হাত ধরে আশ্বাস দেয় ও আছে,,,

আমাল সানার চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে,,,

“ না জিয়া জিন্দেগি এক পাল ভি
তুঝসে হোকে জুদা সুন জারাহ ”

সানাহ আমালের চোখের দিকে তাকিয়ে পরের টুকু বলে,,,

“ বিন তেরে মুঝসে না রাসতা দিল
তু মিলা হ্যায় তো হ্যায় কেহ রাহা ”

আমাল সানার কোমর জড়িয়ে নিজের কাছে আনে। সানাহ আমালের এক হাতে হাত রাখে অপর হাত কাধে রাখে।

আমালঃ

ম্যায় তো তেরে রাঙ মে রাঙ চুকা হু
বাস্ তেরা বান চুকা হু
মেরা মুঝমে কুছ নেহি সাভ তেরা,,,

সানাহঃ

ম্যায় তো তেরে ঢাঙ মে ঢাল চুকি হু
বাস তেরি বান চুকি হু
মেরা মুঝমে কুছ নেহি সাভ তেরা
সাভ তেরা সাভ তেরা সাভ তেরা। ”

আমাল সানার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে ওকে বুকে জড়িয়ে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,,,

আমালঃ আমার সবটা জুড়ে তুমি মিশে গিয়েছো সানাহ প্লিজ কখনো ছেড়ে যেও না,,,

সানাহ মাথা তুলে আমালের নাক টেনে বলল,,,

সানাহঃ কক্ষনো না,,,

ওদের পারফর্মেন্স শেষ হতেই লাইট জ্বলে উঠে। সবাই ক্ল্যাপিং করছে। আমাল সানার হাত ধরে নিচে নেমে আসলো,,,

আবিদঃ হোয়াট আ্য রোমান্টিক পারফরমেন্স ভাই,,, আর সানাহ তুমি তো পুরোই লা জাওয়াব গেয়েছো।

সানাহঃ থ্যাংক ইউ আবিদ,,,

কথার মাঝেই আমালের ফোনে অফিস থেকে কল আসে,,,

আমালঃ আমি আসছি,,, ( কল রিসিভ করতে করতে গেল )

দিয়াঃ দি তোরা হানিমুনে কোথায় যাবি,,?

সানাহঃ উগান্ডা,,, যাবি আমাদের সাথে,, ?

দিয়াঃ তুই আমার পেছনে লেগে আছিস কেন রে,,, ভালো কথার দাম নেই,,, কথা বলবো না তোর সাথে যা,,,

দিয়া রেগে চলে গেল,,,

সানাহঃ দিয়ু আমিতো মজা করছিলাম,,, শুন তো।

আবিদঃ আমি ওকে দেখছি সানাহ,,,

আবিদ দিয়ার পেছনে দৌঁড় দিল,,,

আমাল হলের মিড সাইডে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। সানাহ আমালের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে,,,

হঠাৎ সানার চোখ যায় উপরের ঝালর টা কেমন ভাবে যেন নরছে। সানাহ ব্যাপার টা বুঝার চেষ্টা করছে যে ঝালরটা নরছে কেন,,,

ঝালরের ঠিক নিচে দাঁড়িয়ে আমাল ফোনে কথা বলছে,,, অন্য দিকে ওর খেয়াল নেই।

ঝালরের এক সাইড হেলে পরে সানাহ ভয় পেয়ে যায়। কারন ঝালরটা আমালের উপর পরে যাচ্ছে,,,

কারো সে দিকে খেয়াল নেই সবাই সবার মত করে ব্যাস্ত।

সানাহ দ্রুত আমালের দিকে ছুটে যায়,,

সানাহঃ আমালল,,

আমাল কথা বলতে ব্যস্ত,,,

হঠাৎ ঝালরটা ছুটে নিচে পরে যায়,, সানাহ আমালকে ধাক্কা দায়ে সরিয়ে দেয় আর আমাল দূরে ছিটকে পরে। ঝালরের বারি লেগে সানাহ অন্য সাইডে ছিটকে পরে।

আচমকা এমন হ‌ওয়ায় সবাই শুড হয়ে গেছে। হার্ট বিট যেন থেমে গেছে সবার।

আমালের লেগেছে কিন্তু তত বেশি না। আমাল উঠার চেষ্টা করে পাশে তাকাতেই থ হয়ে যায়।

সানাহ রক্তাক্ত অবস্থায় পরে আছে,,, আমালের নিজের চোখ কে বিশ্বাস হচ্ছে না। হঠাৎ কি হলো বুঝতে পারছে না ও। আমাল কোন রকমে উঠে সানার কাছে যায়।

আমালঃ স সানাহ সানাহ কি হয়েছে তোমার লাভ,,, প প্লিজ চোখ খুলো দেখো তোমার আমাল ঠিক আছে। স সানাহ লুক অ্যাট মি লাভভভ,,, ( পাগলের মতো সানাহকে ডাকছে আর কাঁদছে আমাল। )

সবাই ছুটে এসে সানাহকে ডাকছে কিন্তু চোখ খুলছে না ও। আমালের মনে হচ্ছে কেউ ওর গলা চেপে ধরেছে নিঃশ্বাস আটকে আসছে ওর।

সানহকে ঝাকাচ্ছে আমাল ডাকছে তাও সানাহ উঠছে না।

❤❤ In Hospital ❤❤

এক ঘন্টা ধরে ভিতরে অপারেশন চলছে সানার।

আই সি ইউ এর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে সবাই। রাহেলা আর দিয়া বসে কান্না করছে আবিদ ওদের সামলানোর চেষ্টা করছে।

কেবিনের পাশেই পা বিছিয়ে বসে আছে আমাল। চুল গুলো উস্ক খুস্ক হয়ে গেছে,,, পরনের শার্টে সানার রক্ত এখনো লেগে আছে।

সব কিছু একটা ঘোরের মত লাগছে ওর কাছে,,, মনে হচ্ছে কোন স্বপ্ন দেখছে ভয়ঙ্কর স্বপ্ন। ঘুম ভাঙলেই হয়তো স্বপ্নটা শেষ হয়ে যাবে।

কেবিন খোলার আওয়াজে সবাই উঠে গেল। ডাক্তার বেরিয়ে আসলেন। মুখের মাস্ক খুলে মুখটা মলিন করে আছেন তিনি।

আমাল ডাক্তার কে দেখে হন্তদন্ত করে উঠে তাকে পাগলের মতো জিজ্ঞেস করতে শুরু করে,,,

আমালঃ ডক্টর ডক্টর আমার সানাহ ও ঠিক আছে তো।

ডাক্তার চুপ করে আছে,,,

আবিদঃ কি হলো কিছু বলেন,,,

রাহেলাঃ বলেন না আমার সানাহ ও। ঠিক আছে তো,,

আমালঃ চুপ করে আছেন কেন টেল আস ড্যাম ইটটট ( চেঁচিয়ে)

ডক্টরঃ দেখেন আমরা আমাদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছি তাও ওনার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। হয়তো ওনাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না,,,

আমাল রেগে ডাক্তার এর কলার ধরে চেঁচিয়ে উঠে,,,

আমালঃ ওয়াট দ্যা হ্যাল্ আর ইউ টকি়ং,,, আমার সানার কিছু হলে আমি আপনার এই হসপিটাল এ আগুন ধরিয়ে দিব,,,

আবিদঃ কি করছিস আমাল ছাড় ওনাকে উনি ডাক্তার ( ছাড়ানোর চেষ্টা করে)

আমাল ডাক্তারকে ছেড়ে কেবিনে ঢুকে পরে,,

আবিদঃ আ’ম স্যরি ডক্টর ও,

ডক্টরঃ ইট্স ওকে আই আন্ডারস্ট্যান্ড।

কেবিনে ঢুকেই নিজের চোখ মুখ মুছে নিজেকে নরমাল করে নেয় আমাল। সানার মাথায় শরীরে ব্যান্ডেজ করা আর মুখে মাস্ক লাগানো হাতে ক্যানোলা। দুই জন নার্স ভিতরে সানার পাশে।

আমাল গিয়ে সানার পাশে বসলো,,,

আমালঃ সানাহ প্লিজ চোখ খুলো দেখো ডক্টর কিসব বলছে। তুমি তো প্রমিস করেছিলে আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে। সব সময় আমার পাশে আমার কাছে থাকবে তাহলে এসব কি সানাহ,,, ( কান্না আটকানোর চেষ্টা করে) আই উইল ডায় সানাহ,,, তোমাকে ছাড়া মরে যাবো আমি প্লিজ কাম ব্যাক টু মি,,,, আমার #আশিকি কে অসম্পূর্ণ রেখে তুমি যেতে পারো না।

এটা তো আমার ভাগ্য ছিল তুমি কেন মাঝখানে এলে। প্লিজ সানাহ আমাকে ছেড়ে যেও না,,, আমি,,,

হঠাৎ মেশিন টুট টুট শব্দ করতে শুরু করে। নার্সরা দ্রুত সানাহকে ইঞ্জেকশন পুশ করে তাও কাজ হচ্ছে না।

আমাল বুঝে উঠতে পারছে না কিছু। হৃদয় কাঁপছে ওর। মনে হচ্ছে এই বুঝি হার্ট বিট থেমে যাবে। হঠাৎ শব্দ থেমে যায় স্ট্রেট লাইন ভেসে উঠে মেশিনে আমাল ধপ করে বসে পরে,,,,

দুই বছর পর,,,,

To be continued…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে