আশিকি Part-24

0
1891

❤#আশিকি❤
#Madness_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_24

আমালকে হসপিটাল থেকে ডিস্টার্জ করে সবাই বেরিয়ে যায় হসপিটাল থেকে।

ফ্লাইটের জন্য ওয়েটিং জোনে বসে আছে আমাল আবিদ সানাহ আর দিয়া।

আধা ঘণ্টা পর কক্সবাজার টু ঢাকার ফ্লাইট।

দিয়াঃ কক্সবাজার আসলাম অথচ একটু ঘুরতেও পারলাম না সব এই আবিদের দোষ ( রাগী ভাবে)

আবিদঃ আমার দোষ ( নিজের দিকে আঙ্গুল তাক করে অবাক হয়ে )। আমি আবার কি করলাম। যেটাই হয় সেটার জন্য সবাই আমাকে দোষে কেন বুঝি না। ( অসহায় ভাবে)

দিয়াঃ জানি না কিন্তু তোমার দোষ মানে তোমার দোষ।

আমালঃ একদম ঠিক বললে শালি সাহেবা। সব আবিদের দোষ। ( চোখ মেরে)

আবিদঃ আমাল তুইওও,,,

সানাহঃ দোষ আবিদের না দোষ তোমার সো ওকে দোষবে না।

আমালঃ আমি আবার কি করলাম সান বেবি ( অবাক হয়ে)

আবিদঃ থ্যাংক ইউ সানু ইউ আর মাই বেস্ট সিস্টার।

সানাহঃ আই নো আবিদ,, আর হ্যাঁ আমাল তুমি মাথা না ফাটালে আমরা এখন ঘুরতে পারতাম।

আমাল সানার কথায় চুপসে যায় তারপর নিজের কপালে টাচ করে দেখে আসলেই তো এখনো কপালে ব্যান্ডেজ করা।

আবিদঃ কি হলো দিয়া বেবি এখন বলো না কেন জিজুর দোষ।

দিয়া আবিদকে ভেংচি কেটে মুখ ঘুরিয়ে নিল। এমনি খুনসুটি ঝগড়া করতে করতে ওরা ঢাকা পৌঁছে যায়। গাড়ি থেকে নেমে সবাই ফ্ল্যাটের ভিতরে যাচ্ছে।

আবিদের এক কাধে নিজের ব্যাগ আর দুই হাত দিয়ে আমাল আর দিয়ার লাগেজ টানছে ও। আমাল আর দিয়া বিন্দাজ হাটছে আর হাসাহাসি করছে। বেচারা আবিদ সবার পেছনে পরে আছে। আর মনে মনে আমালের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছে। সানাহ নিজের লাগেজ নিজেই ক্যারি করছে কারন সে বেচারা আবিদের কষ্ট বুঝতে পেরেছে প্লাস আবিদের তো আর কোন হাত খালি নেই ওর লাগেজ ক্যারি করার জন্য।

সবাই লিফ্টে উঠে আবিদের জন্য ওয়েট করছে। আবিদ সব বস্তা টেনে টুনে টরটয়েজ এর মত আসছে।

আমালঃ আরে এয়ার তুই কচ্ছপের মত স্লো হয়ে গেলি কেন খরগোশের মত স্পীড বাড়া।

আবিদঃ কুত্তা কামিনা একতো নিজে বিন্দাজ যাচ্ছে আর আমাকে দিয়ে বস্তা টানাচ্ছে তার উপর আমাকে কচ্ছপের সাথে তুলনা দিচ্ছে। শালা হারামী দোস্ত একটা। মাথা ফাটা তাই কিছু বলছি না নাহলে,,,, ( আবিদ হাটছে আর বিরবির করে বলছে) হ্যাঁ আসছি তো ( দাঁত খিচিয়ে)

সানাহ ওদের ফ্ল্যাটের বেল বাজাতেই ওর আম্মু দরজা খুলে দিল,,,

সানাহঃ আম্মিইইই আ’ম কাম ( জড়িয়ে ধরে) আই মিস ইউ এত্তো গুলো।

দিয়াঃ খালামনিইই আই অলসো মিস ইউ,,

আমাল আবিদঃ হ্যালো আন্টি,,

রাহেলাঃ কেমন কাটলো তোদের জার্নি?

দিয়াঃ একটু ভালো একটু খারাপ,,, ( আবিদের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে)

রাহেলাঃ ভেতরে আসো তোমাদের জন্য কেউ অপেক্ষা করে বসে আছেন,,,

সবাইঃ কে?

রাহেলাঃ নিজেই দেখে নাও,,,

সবাই ভিতরে ঢুকে দেখে একজন সোফায় বসে আছে,,,

আমালঃ ড্যাড ( অবাক হয়ে) হোয়াট আ্য প্লেজেন্ট সারপ্রাইজ,,

আমাল ওর ড্যাড কে জড়িয়ে ধরে কথা গুলো বলল।

আদহামঃ কেন সারপ্রাইজ কি শুধু তুই দিতে জানিস আর ( আমালের মাথার ব্যান্ডেজে হাত দিয়ে) এটা কি করে হল।

আমালঃ কিছু বখাটে রা তোমার বৌমাকে টিজ করছিল তাদের শায়েস্তা করতে গিয়ে একটু লেগেছে আর কি,,,

আদহামঃ দ্যাট্স লাইক মাই বয় প্রাউড অফ ইউ,,,

আমালঃ আই নো দ্যাট ড্যাড।

আদহাম সানার সামনে এসে ওর মাথায় হাত রেখে বলল,,,

আদহামঃ আমার ছেলেটা তোমাকে বড্ড বেশি ভালোবাসে সানাহ। নিবে ওর দায়িত্ব সারা জীবনের জন্য,,, আমার তো বয়স হয়ে গিয়েছে তাই ওকে তোমার হাতে সপতে চাই। নিবে এই পাগলটার দায়িত্ব?

আমাল সানার দিকে তাকিয়ে আছে আর সানাহ আমালের দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে হ্যাঁ বলল,,,

আবিদঃ গ্ৰেটটট মিয়া বিবি রাজি তো হ্যাপি এন্ডিং হয়ে যাক পাপাজি,,,

আবিদের কথায় সবাই হেসে দিল। আবিদ দিয়ার হাত ধরে সানার আম্মুর সামনে এনে বলে।

আবিদঃ ইয়ে মানে খালামনি আমাদের ব্যাপারটাও যদি দেখতেন,,, ?

দিয়াঃ কি বলছো আবিদ,,, এটা আমার খালামনি,, ( ফিসফিসিয়ে)

আবিদঃ কি বলছি দিয়ু আমাদের বিয়ের কথা বলছি। আর ইনি খালামনি বলেই তো ইনার থেকে তোমার হাত চাইছি,,,

রেহালাঃ ডোন্ট ওয়ারি আবিদ আমি আজ‌ই দিয়ার আম্মুর সাথে তোমাদের ব্যাপারে কথা বলবো।

আবিদঃ ইয়েপপপ থ্যাংক ইউ খালামনি ইউ আর গ্ৰেটটট,,,

দিয়াঃ BBN ( মিনমিন করে)

আবিদঃ সেম টু ইউ,, ( মিনমিন করে)

দিয়া রাগি লুক নিয়ে তাকালো আবিদের দিকে।

আদহাম সানার আম্মুর সাথে বসে সানাহ আর আমালের বিয়ের ব্যাপারে সব ডিসকাশন করে গেছে। তিন দিনের মধ্যেই বিয়ের সব কাজ শেষ করতে চান উনি। সকালে আবিদ আর আমাল এসে সবাইকে বিয়ের শপিং করতে নিয়ে যাবে।

আজকে সানাহকে রিং পরিয়ে দিয়ে গেছেন উনারা। পরশু রাতে হলুদ তারপরের দিন বিয়ে।

❤❤ At Night ❤❤

সানাহ বেডে শুয়ে হাতের রিংটা ঘুরাচ্ছে আর ব্লাডি হচ্ছে। হঠাৎ বারান্দায় কিছুর আওয়াজ পেলো ও।

সানাহঃ এতো রাতে বারান্দায় কে?

সানাহ উঠে বারান্দায় চলে আসে। আমাল ওর ফ্ল্যাটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে সানার বারান্দায় কাগজ মুড়িয়ে ছুরছে যেন সানাহ আওয়াজ পেয়ে বারান্দায় আসে।

সানাহ বারান্দায় এসে দেখে অনেক গুলো মোড়ানো কাগজ পরে আছে আর আমাল নিজের হাতে একটা কাগজ নিয়ে ছুরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সানাহ এসে পরায় আমাল আর কাগজ ছুরলো না।

সানাহঃ এসব কি আমাল?? ( তাজ্জব হয়ে)

আমালঃ একচুয়ালি ঘুম আসছিল না তাই ভাবলাম ভূতের সাথে ক্যাচ ক্যাচ খেলি,,, ( মজা করে)

সানাহঃ ভুতের সাথে কেন তোমার জানে জিগার দোস্ত আবিদ কোথায়?

আমালঃ শালা আবিদ আমার শালির সাথে প্রেম করছে তাই আমি এখানে ওর শালির সাথে প্রেম করতে এসেছি,,, ভালো আইডিয়া না,,,

সানাহঃ মানে,,,?

আমালঃ ওই যে দেখো,,

আমাল সানাহকে রুমের দিকে ইশারা করলো। আবিদ বেডের উপর উবু হয়ে শুয়ে দিয়ার সাথে কথা বলছে,,,

আমালঃ সিইই! আমি তুমি বাদে সবাই প্রেম করছে,,, আমার হবু বউ তো হেব্বি আনরোমান্টিক তাই আমার কিসমাত খারাপ। ( মন খারাপ)

সানাহ আমালের কথায় রেগে নিচে থেকে কাগজ তুলে ওকে ঢিল মেরে বলে,,,

সানাহঃ ভারমে যাও তুমি আর তোমার সো কল্ড কিসমাত,,, আমি এতই আনরোমান্টিক তাহলে আমাকে বিয়ে না করে রোমান্টিক কাউকে খুঁজে বিয়ে করে নাও ( রেগে)

আমালঃ কি করবো বলো আমিতো এই আন রোমান্টিক ব‌উ টাকেই ভালোবেসে ফেলেছি তাই বিয়ে তো তোমাকেই করতে হবে নো চয়েজ ( মন খারাপের এক্টিং করে)

সানাহঃ তুমি ইন ডাইরেক্টলি আমাকে ইনসাল্ট করছো আমাল,,,

আমালঃ নো বেবি আমিতো জাস্ট একটু প্রেম করতে এসেছিলাম,,,

সানাহঃ করো প্রেম তুমি ভুতের সাথে।

সানাহ আরো কয়েকটা কাগজ আমালকে ছুরে
হনহন করতে করতে রুমে চলে আসলো। বারান্দার দরজাও অফ করে দিল যেন আমাল প্রবেশ করতে না পারে।

❤❤ In Morning ❤❤

সবাই ব্রেকফাস্ট করে শপিং করতে চলে আসে মলে। সানাহ এখনো রেগে আছে আমালের উপর। কথা বলছে না ওর সাথে। আমাল কথা বলতে আসলেই ওকে ইগনোর করে চলে যায়।

আমাল সব কিছু নিজের পছন্দের মত কিনেছে সানার জন্য। আর সানাহ আমালের সব কিছু নিজের পছন্দ অনুযায়ী কিনেছে।

শপিং শেষে দিয়া আর সানাহ প্যাকিং খুলে সব দেখছে। বাড়িতে আস্তে আস্তে মেহমান আসতে শুরু করেছে। বিয়ের সব দায়িত্ব আবিদের উপর। আবিদ সব কিছুই অনেক কেয়ারফুলি হ্যান্ডেল করছে যেন কোন ত্রুটি না থাকে।

দিয়াঃ আচ্ছা দি কালকের পর তুই সিঙ্গেল থেকে ডাবল হয়ে যাবি তাইনা,,, ( বেডে শুয়ে)

সানাহঃ তুই কি বলতে চাইছিস বুঝিয়ে বলবি?

দিয়াঃ এটাই যে আজকে তোর সিঙ্গেল লাইফের শেষ দিন। কালকে হলুদ তাই তুই বাড়ি থেকে বের হতে পরবি না আর পরশু বিয়ে দ্যান তুই সানাহ এহমাদ থেকে মিসেস সানাহ আমাল খান হয়ে যাবি। তাই তোর সিঙ্গেল লাইফের স্মৃতি হিসেবে কিছু করা উচিত,,,

সানাহঃ আর সেটা কি আমি জানতে পারি??

দিয়াঃ হেন্স পার্টি দি হেন্স পার্টি। ( লাফ দিয়ে উঠে বসে)

সানাহঃ হেন্স পার্টি??

এইদিকে,,,,

আবিদঃ হ্যাঁ ব্যাচেলর পার্টি ভাই,,,

আমালঃ আইডিয়াটা খারাপ না। বাট পার্টি হবে কোথায়?

আবিদঃ সেই সব ব্যবস্থা আমি করে ফেলেছি। আজকে রাতে তোর ব্যাচেলর পার্টি ফিক্সড।

আমালঃ কিন্তু সানাহ? ওতো আমার উপর রেগে আছে এখনো।

আবিদঃ সানাহ রেগে আছে ওকে পরে মানাতে পারবি চিল কর। আর সানাহ দিয়া যেন এই পার্টির কথা না জানে নাহলে ইন্ঞ্জয় এর বারোটা বেজে যাবে।

আমালঃ ওখেই।

To be continued…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে