আশিকি Part-10

0
2318

❤#আশিকি❤
#Madness_Of_Love
#Writer_Sanjana_Fahmida_Shabnam
#Part_10

সেদিন এর পর মেয়েটাকে অনেক খোজার চেষ্টা করেছে আমাল কিন্তু পায় নি। কেন যেন মেয়েটা সম্পুর্ন ঝেকে বসেছে ওর মস্তিষ্কে। কিছুতেই মেয়েটার খেয়াল মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছে না ও।

আজ দশ দিন হলো সেই ঘটনার। এই দশদিনে অনেকটা বদলে গিয়েছে আমাল। বেশিটা সময় আনমনা হয়ে থাকে। হয়তো সেই মেয়েটিকে খুঁজে না পাওয়ার হতাশা ভিতর থেকে কুরে খাচ্ছে ওকে।

সকাল সকাল ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পরেছে আমাল। ভার্সিটিতে এডমিশন নেওয়ার কিছু কাগজ পত্র ফিল করা বাকি আছে। তাই সকাল সকাল ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে ও।

হোয়াইট শার্ট আকাশি রঙের জ্যাকেট, স্কেট্স সুজ জিন্স পরে রেডি হয়ে বেরিয়েছে ও। চুল বড় থাকায় কপালে পরে চোখ কিছুটা ঢেকে যাচ্ছে আমালের। এই হেয়ার স্টাইল টা পুরোই বাচ্চা বানিয়ে দেয় আমালকে। আমাল ড্রাইভ করছে। গাড়ির গ্লাস খোলা যার কারনে বাতাস প্রবেশ করছে গাড়িতে। বাতাসেও আমাল সেই মেয়েটার ঘ্রান অনুভব করার চেষ্টা করছে।

ড্রাইভ করার সময়েও চোখে হলুদ শেডের সানগ্লাস পরেছে ও।

কারো কল আসায় ড্রাইভ করার মাঝেই কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে নিল ও।

আমালঃ ইয়েস বল।

আবিদঃ where are you bro. পুরোই কি দেবদাস হয়ে গেলি। দেবদাস হয়ে ঘরে বসে থাকার প্লান নাকি,,, আজকে ভার্সিটিতে ফরম ফিল করতে হবে মনে আছে তো…..

কথার মাঝেই আমাল আবিদকে থামিয়ে দেয়।

আমালঃ Cool down yaar. কে বলেছে আমি দেবদাস হয়ে গিয়েছি। দেবদাস তো তারা হয় যারা তাদের হিরোইন কে কখনো পায় না। বাট I’m Amaal Khan আমার হিরোইন যত‌ই আমার কাছ থেকে দূরে থাকুক না কেন আমি তাকে ঠিক‌ই খুঁজে নিব।

আবিদঃ সিরিয়াসলি আমাল,,, একটা মেয়ে যাকে তুই এক পলক দেখেছিস তার জন্য এতো Madness… ভাই তুই তো রোমিও হয়ে গেলি,,,(বলেই জোরে জোরে হাসতে শুরু করল)

আমালঃ হেসে নে হেসে নে এখন তোর হাসার দিন। যখন আমি তাকে খুঁজে বের করে তোদের সামনে আনবো তখন তোরা বুজবি যে আমাল খান কেন তার জন্য এতো পাগল।

আর হ্যাঁ I’m not Romeo আর না হতে চাই। কারন রোমিও আর জুলিয়েট এর লাভ স্টোরি কখনো কমপ্লিট হয় না। দে হ্যাভ এ্যা পেইন ফুল লাভ। কিন্তু আমার লাভ স্টোরি আমি ইনকমপ্লিট থাকতে দিবোনা। খুব শীঘ্রই তাকে খুঁজে বের করবো।

আর আমার এই #আশিকি তে তাকে রাঙাবো।জাস্ট ওয়েইট ফর দ্যা…… ওহ নোওওওওও,,

খুব জোরে গাড়ি ব্রেক করলো আমাল। কথা বলতে গিয়ে খেয়াল‌ই করে নি যে গাড়ির সামনে কারো সাইকেল চলে এসেছে। সাইকেলের সাথে একটু ধাক্কা লাগায় সাইকেলসহ মানুষটি পরে গিয়েছে।

আমালঃ ওহহ নোওও কি করালাম এটা ড্যাম ইট ( চিন্তিত হয়ে)

আমাল দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে যায়। একটা ব্লু কালার গার্লস সাইকেল। সাইকেলে স্টারগেজার ফুল ছিল পরে যাওয়ায় ফুল গুলো আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছে।

আমাল বাইরে বেড়িয়ে কিছুটা অবাক হয়ে গেল কারন যাকে এক্সিডেন্ট করেছে সে একটা মেয়ে। সাদা স্কার্ট হলুদ গার্ল্স শার্ট। মেয়েটা বসে পরেছে
সাইকেল থেকে পরে যাওয়া হয়তো ব্যাথা পেয়েছে। চুল দিয়ে মেয়েটির চেহারা ঢেকে গিয়েছে তাই চেহারা বুঝা যাচ্ছে না।

আমাল খেয়াল করলো মেয়েটির এক পা সাইকেলের টায়ারের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছে।

আমাল দোড়ে মেয়েটির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।

আমালঃ Are you okay mam. ‌আসলে আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি ইট্স জাস্ট আ মাইনার এক্সিডেন্ট…..

আমালের কথায় মেয়েটি মুখ তুলে ওর দিকে তাকালো। মেয়েটিকে দেখে যেন আমাল নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।

সেদিনের মেয়েটি আজ ওর সামনে দাঁড়িয়ে,,, যাকে এতোদিন পাগলের মতো খুজলো ফাইনালি তাকে পেয়ে গিয়েছে ও।

কিন্তু মেয়েটির মাঝে আজকে আর সেদিনের মধ্যে অনেক পার্থক্য ‌লক্ষ করলো আমাল।

সেদিন মেয়েটির চোখে ছিল খুশি আনন্দ আর উল্লাস কিন্তু আজ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। চোখে আজ তার প্রচণ্ড রাগ। সেদিন মুখে মন ভুলানো হাসি ছিল কিন্তু আজ রাগে গাল দুটো লাল হয়ে গিয়েছে। সম্পুর্ন ভিন্ন রুপে আজ সে।

চোখ দুটো ছোট ছোট করে রাগী ফেস করে তাকিয়ে আছে মেয়েটি আমালের দিকে।

আরেক দফা প্রেমে পড়ে গেল আমাল মেয়েটির। এ মেয়েটার দোনো রুপে ঘায়েল হয়ে গিয়েছে ও।

আমালকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মেয়েটি বিরক্ত হয়ে বলল।

মেয়েটিঃ ও হ্যালোওওও মি. অন্ধ ড্রাইভার এভাবে তাকিয়ে না থেকে দয়া করে তুলুন,,, ?

মেয়েটার কথায় ঘোর কেটে যায় আমালের।

আমালঃ কিহহ,,, অন্ধ ড্রাইভার কে কাকে বলছো ?

মেয়েটাঃ এখানে আপনি বাদে তো আর কেউ নেই তাই obviously আপনাকেই বলছি ।?

আমালঃ কুল আমাল ডোন্ট এংরি,, ( মনে মনে)।

আমাল হাত বাড়িয়ে দিতেই মেয়েটি আবার বলল

মেয়েটিঃ আমাকে না সাইকেলকে তুলুন,,, স্টুপিড ( আস্তে বলল)

আমাল এগিয়ে গিয়ে সাইকেলটা সোজা করে দাড় করালো তারপর মেয়েটার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল।

মেয়েটি আমালের হাত না ধরেই নিজে নিজে দাড়িয়ে গেল। আমাল কিছুটা ইনসাল্ট ফিল করলো। মেয়েটি দাঁড়িয়ে তারপর বলল

মেয়েটিঃ গাড়ি যখন চালাতে পারেন না তাহলে চালান কেন। শুধু শুধু আপনাদের মত অন্ধ ড্রাইভার দের জন্য আমাদের মতো মাসুম পাবলিক সাফার করে।

আমালঃ লিসেন আমি….

মেয়েটিঃ আপনার এই টুকু কমন সেন্স নেই যে ড্রাইভ করার সময় সানগ্লাস পরতে হয় না। এখন আপনার এই স্টুপিড মার্কা ভূলের জন্য আমার ব্লু হুইল কতটা ব্যাথা পেয়েছে do you have any idea ?

আমালঃ ব্লু হুইল ?? এখানে তো কোন তিমি মাছ নেই তাহলে,,,,

মেয়েটিঃ ব্লু হুইল তিমি না আমার সাইকেলের নাম ?

আমাল মেয়েটার কথা শুনে নিজের হাসি আটকে রাখতে পারলো না,,,

আমালঃ ?????? সাইকেলের নাম তাও আবার ব্লু হুইল ?? মোস্ট ফানি জোক অফ দ্যা আর্থ,,,

আমালকে হাসতে দেখে মেয়েটি রেগে ফায়ার হয়ে যায়। কিছু বলতে নিলেই মেয়েটির ফোনে ম্যাসেজ টোন বেজে ওঠে। ম্যাসেজ চেক করে মেয়েটি ফোন নামিয়ে নেয়। আমাল এখনো হাসছে।

মেয়েটিঃ আমার যদি ইম্পর্টেন্ট কাজে না যেতে হতো তাহলে আপনার হাসি কে কাশি বানিয়ে দিতাম।

সাইকেল সোজা করতে করতে।

আমাল সাইকেলের সামনে গিয়ে ওটার হ্যান্ডেলে হাত রেখে বলে।

আমালঃ সাইকেলের নাম বললেন এখন আপনার নামটাও বলে যান মিস ব্লু হুইল…… ?

মেয়েটিঃ আমি যাকে তাকে নিজের নাম বলি নাহ।?

আমালঃ ওহ ওকে মিস সখিনা ?

মেয়েটাঃ হুস সখিনা আমার নাম সানাহহ ?

আমালঃ এইটা নাম জানার নিন্জা টেকনিক ??

সানাহঃ ইউউউউউউউউ,,, ?

আমালঃ আশা করি আবার দেখা হবে মিস সানাহ,, ?

সানাহঃ আশা করি আর যেন দেখা না হয় আপনার সাথে ? ডিসগাস্টিং পিপলললল।

সানাহ সাইকেলে উঠে চলে যায় আমাল‌ও সানার পেছনে গাড়ি নিয়ে যায়। কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে আমাল ড্রাইভ করেছে তাই সানাহ বুঝতে পারে নি যে আমাল ওর পেছনে।

To be continued….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে