আলো থেকে অন্ধকার পর্ব-২+৩

0
1247

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-02+03
Writer:- Esrat jahan Esha

সাকিলঃ- আপনি?????
লিমাঃ- হুমম আমি। কেমন আছো?
সাকিলঃ- কি পাপের জন্য আল্লাহ আপনার মত একজন মহিলার সাথে আবার দেখা করাল?

লিমা মাথা নিচু করে চোখের জলে একাকার হয়ে গেছে। যে ছেলেটা সারাদিন পিছনে ঘুর ঘুর করত আর বলত ভাবি তুমি আমার শুধু ভাবি না তুমি আমার বড় বোন। ভাবি তুমি অনেক ভালো সুমি আপু পচা কিছু হলেই আমাকে শুধু মারে। ভাবি তুমি আমাকে সুমি আপুর থেকে বেশি আদর করবা।
আর সেই সাকিল আজ আমাকে এমন কথা বলল।
বলবেই বা না কেন আমি তো এটাই পাওয়ার যোগ্য।

-আচ্ছা এটা কি আমার ছেলে?
-নাহ।
– তাহলে কে?
-আমার সন্তান।
– তোমার তো এখনো বিয়ের বয়স হয় নাই।
– জন্ম দিলে যেমন মা হওয়া যায় না। তেমন বিয়ে না করলেও সন্তানের বাবা হওয়া যায়।
-তার মানে এটাই আমার রামিম?
– পথ ছাড়ুন। আর ঐ মূখে আমার ভাতিজার নাম নিবেন না।
– কি বলছ এসব। হুমম আমি ভুল করেছি কিন্তু আমি আমার শাস্তিও পাচ্ছি।
– দেখুন আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই না। সুতরাং পথ ছাড়ুন।
– সাকিল দেখ আমার একটা অনুরোধ শুধু রাখ। একটু খানি আমার সন্তান কে কোলে দাও প্লিজ। তাহলেই আমি চলে যাব।
– কখনোই না। আমার বাচ্চা কে আমি কোনো ডাইনির কোলে দিতে পারব না।

সাকিল চোখের পলকে বাসে উঠে উধাও হয়ে গেল।

আমি চুপচাপ ওখান থেকে চলে আসি। ঐ যে সামনের গলি ঐখানে একটা ঘরে আমি ভারা থাকি।
জিবনে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছে। কত ভালো ছিল আমার জিবন।

আমি হারালাম আমার সংসার হারালাম বাবা মা। বাবা মা তারও ত্যাগ করে দিয়েছে। আচ্ছা আমার ভুলের কি কোনো ক্ষমা হত না।

মিমঃ-সব ভুলের ক্ষমা হয় না। ভুলের ক্ষমা ততক্ষণ পর্যন্ত পাওয়া যায় যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের জিবন একটা পেন্সিল মত থাকে। ভুল হলে সাথে সাথে মুছে ফেলি। কিন্তু যখন কলম এর মত জিবন শুরু হয় তখন আর কিছুই মোছা যায় না। ফুল স্টপ টা পর্যন্ত স্পষ্ট খাতায় দেখা যায়। ( মিম লিমার বর্তমান সাথী,, তারও জীবনের একটা গল্প আছে যা ছিল পরিস্থিতির শিকার)

লিমাঃ- জানিস মিম আমার স্বামী অনেক ভালোছিল। সে আমাকে অনেক ভালোবাসত অনেক কেয়ার করত। আমার ছেলে স্বামী আমার শ্বশুর বাড়ির লোক সবাই অনেক ভালো ছিল।

মিমঃ- আচ্ছা আজকে তোর সম্পর্কে বল কিভাবে কি হল? এত সুন্দর সংসার ছেড়ে তুই কিভাবে এখানে আসলি?

লিমা তাহলে শোন।,,,,,,,,,,,

আমার সংসার খুব সূখের ছিল। নিজেকে অনেক লাকি ভাবতাম আমার ছেলের যখন ১ বছর তখন আমার স্বামী কে বল্লাম আমার অনেক সখ ছেলের অনেক বড় করে জন্মদিন করব।

– লিমা এটা কি বল? জন্মদিন পালন করব মানে কি? এটা মুসলমান এর মধ্যে আছে?
– কেন এখানে কি সমস্যা? জন্মদিন করলে কি মহাভারত অসুদ্ধ হবে একটু শুনি তো।
– জন্মদিন দিন পালন করা আামাদের ধর্মে নাই।এটা বির্ধর্মীদের কালচার। এটা আমাদের মুসলমানদের জন্য জায়েজ নয়। আচ্ছা শোন রাসুল (সঃ) কি বলে শোন

জন্মদিন পালন করা কি হারাম?
=======================
উত্তরঃ শুধু জন্মদিন নয় কোন ম্যারিজ ডে, মৃত্যুদিবস ইত্যাদি যা-ই হোক না কেন, কোন দিবস-ই পালন করা জায়েজ নয়।

প্রথম কারনঃ বিজাতির অনুকরণ
===========
এই ধরণের যত প্রকার দিবস রয়েছে সেগুলোর কোনটাই মুসলিমদের সংস্কৃতি নয়।
যদি এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি হত তবে এগুলো সাহাবাদের যুগ থেকেই পালিত হয়ে আসতো। তাই যেহেতু এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি নয় তাহলে বুঝাই যাচ্ছে যে এগুলো কাফের-মুশরিক বিজাতীয়দের সংস্কৃতি থেকে এসেছে।
আর এ প্রসঙ্গে রাসূল ﷺ বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে’
( আবূ দাঊদ হা/৪০৩১) ।
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি মুশরিকদের দেশে বাড়ী তৈরি করল তাদের উৎসব দিবস পালন করল এবং এ অবস্থায় মারা গেল তবে তার হাশর তাদের সাথেই হবে। (সূনানে বাইহাকীঃ ২৩৪)
নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি বিজাতির তরীকা অনুযায়ী আমল করে, সে আমাদের কেউ নয়।”(ত্বাবারানী, সিলসিলাহ সহীহাহ ২১৯৪নং)
“আমাদের তরীকা ওদের (মুশরিকদের) তরীকা থেকে ভিন্ন।”(বাইহাকী ৫/১২৫, সিলসিলাহ সহীহাহ ২১৯৪)
সাওবান (রা:) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি সবচেয়ে যাদের বেশী ভয় করি তারা হচ্ছে নেতা ও এক শ্রেনীর আলেম সমাজ। অচিরেই আমার উম্মতের কিছু লোক মূর্তিপূজা করবে। আর অতি শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু লোক বিজাতিদের সাথে মিশে যাবে।” [ইবনে মাজাহঃ ৩৯৫২। হাদ সহি]
আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। নাবী (স.) বলেছেন, “অবশ্য অবশ্যই তোমরা তোমাদের আগের লোকদের নীতি-পদ্ধতিকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি গুইসাপের গর্তে ঢুকে, তাহলে তোমরাও তাদের অনুকরণ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল (স.)! এরা কি ইয়াহুদী ও নাসারা? তিনি (স.) বললেন, আর কারা?” –[সহীহুল বুখারী ৭৩২]
দ্বিতীয় কারনঃ মুসলিমদের জন্য দিবস শুধু ২ টি
===========
ইসলামে দুটি দিবস ব্যতীত অন্য তৃতীয় কোন দিবস পালন করা তো এমনেতেই নিষেধ।
আনাস (রা) বলেন, “রাসুল (সা) মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, মদীনাবাসীরা দুটি ঈদ (আনন্দের দিন) পালন করছে ৷ তা দেখে রাসূল (সা)বললেন, জাহীলিয়াতের যুগে তোমাদের দুটি দিন ছিল যাতে তোমরা খেলাধূলা, আনন্দ-ফুর্তি করতে এখন ঐ দিনগুলির পরিবর্তে আল্লাহ্ তোমাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন, ঈদুল ফিৎর ও ঈদুল আযহার দিন। (আবূ দাউদ: ১০০৪, নাসাই: ১৫৫৫ হাদীস সহীহ)
এই হাদিসে আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) বলেছেন ঐ দুটি দিনের পরিবর্তে আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন। যেহেতু আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) অন্য মানব রচিত গুলো পরিবর্তন করে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন তাই অন্য যে কোন দিবস পালন করা এমনেতেই বাতিল হয়ে যায়।
তাই কোন মুসলিমদের জন্য অন্য কোন প্রকার দিবস পালন করা বৈধ নয়, হোক সেটা জন্মদিন, শোক দিবস, মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবস, নববর্ষ ইত্যাদি যা-ই হোক না কেন, তা পালন করা যাবে না।
=========================
এরপরেও কি আমরা সতর্ক হবো না??
অতএব মুসলিমরা যদি জান্নাতের আশা করে এবং জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে চায় তবে তারা আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসুলের দিকে ফিরে আসুক।

– তা না হয় বুঝলাম সব কিছুতেই তোমার লজিক আছেই।
– শোন আমাদের জন্য ইসলাম পূর্ণ জিবন বিধান। আমরা কেন মুসলিম হয়ে অন্য ধর্মের চাল চলন গ্রহন করব। আমরা চাইলে আমার ধর্মীয় ভাবে আমাদের জিবন সুন্দর ভাবে সাজাতে পারব।
– হুমম বুঝলাম। তাও ছেলের মঙ্গল কামনায় কিছু করতে পারি না???
– হুমম পারিতো,, এতিম খানায় দান করতে পারি। কিছু গরিব লোক ডেকে তাদের ভালো মন্দ খাওয়াতে পারি। নামাজ পড়ে আমার সন্তানের জন্য দোয়া করতে পারি সেই মহান রবের দরবারে।
– ওহ্হ তাহলে তাই করেন।
– আচ্ছা ঠিক আছে। আমি দেখছি।
– আচ্ছা আমার একটা আবদার আছে রাখবেন? প্লিজ না করবেন না প্লিজ প্লিজ।
– আচ্ছা বল শুনি। চেষ্টা করব
– ছেলেকে একটা টাচ মোবাইল কিনে দিবেন?
– এই পিচ্চি ছেলের জন্য মোবাইল? হা হা হা,,,,,, নিজের জন্য লাগবে সেটা বল্লেই তো হয় আমি কি না করতাম।
– আচ্ছা তাহলে দিবেন?
– আচ্ছা দিব ইনশাআল্লাহ। খুশিতো এবার?
– অনেক অনেক খুশি।
– তুমি খুশি থাকলেই আমি খুশি।

তারপর সে আমাকে একটা মোবাইল গিফট করল।
আমিতো অনেক খুশি। খুশিতে তাকে জরিয়ে ধরে একটা কিস করে দেই।
– এই হাসি আর এই খুশি আমি সারাজীবন দেখতে চাই।

আল্লাহ আমাদের ছেলে সন্তান দিছে খুশি হয়ে কয়েক জন গরিব লোক দাওয়াত করে সমার্থ অনুযায়ী তাদের আপ্যায়ন করি।

রামিমের বাবা এতিমখানায় ও কিছু টাকা দান করে।

-অনেক দিন তো হল এভাবে নিরামিশ মোবাইল ভালো লাগে না।
তো মাবাইল যেহুতু দিছে তাই তাকে বল্লাম এভাবে শুধু মোবাইল দিয়ে কি করব। আপনি আমাকে ফেইজবুক ইমো এগুলো খুলে দেন।
তারপর সে খুলে দিল।

তারপর একদিন হটাৎ তুহিনের কথা মনে হল তখন মনে মনে বল্লাম তুহিনের নম্বর টা imo তে এডড করে দেখি।
সেভ করার সাথে সাথে তুহিনের একাউন্ট চলে আসে।

আর তখন থেকে আমার মনে অশান্তি শুরু হতে লাগল। কিছুই ভালো লাগছে না কি করব না করব। একটা sms দিয়ে দেখব কেমন আছে?
না থাক দিব না।

তারপর ডাটা অফ করে মোবাইল রেখে চলে গেলাম।সারাদিন রামিম কে নিয়ে ব্যস্ত থাকলাম। মনের অশান্তি যেন থামছেই না। উফফ কেন যে নম্বরটা imo তে সেভ করলাম।

তারপর মনের সাথে যুদ্ধ করে আর পেরে উঠি নি।তারপর আমি নিজেই sms দিলাম।

– কেমন আছো?
১ ঘন্টা পর রিপ্লাই আসে।

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন। বানান গুলো অনেক সংশোধন করার চেষ্টা করছি কিন্তু ভুল থেকেই যায়। তাই কষ্ট করে বুঝে নিবেন)

#আলো_থেকে_অন্ধকার
Part:-03
Writer:- Esrat jahan Esha

১ ঘন্টা পর রিপ্লাই আসে,,,
– কে আপনি?
– আমি লিমা।
– লিমা তুমি?
– তুমি এত দিনে আমার কথা একবার ও মনে করলে না। জান আমি তোমাকে কত ভালোবাসতাম।
– আচ্ছা এগুলো বাদ দেও যা হবার তা তো হয়েই গেছে। তাইনা
– হুমম। তোমাকে আর কখনো পাবো না?
– সেটা তো আর সম্ভব না। আমার একটা ছেলে আছে।
– ওহ্হ।
– তুমি এতদিন জেলে ছিলা কেন?
– একথা তোমাকে কে বলছে?
– আমার বাবা। তুমি কি ভাবছ আমি কি তোমার কোনো খবর রাখি না।
– হুমম। ছিলাম আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়ে ছিল। বিশ্বাস করো আমি নির্দোষ। আমি কিছু করি নি।তোমার কসম।
– আমার কসম মানে?? আল্লাহ ব্যতিত কারো নামে কসম কাটা শির্ক।
– ওহ্হ আচ্ছা আল্লাহর কসম।

লিমা লিমা ও লিমা কই তুমি দেখো কত বড় বড় মাছ আনছি।

– আচ্ছা আমার স্বামী আমাকে ডাকছে। বায়।
– আচ্ছা বায় পড়ে আবার আসবে কিন্তু তোমার সাথে জরুরি কথা আছে।
– আচ্ছা দেখি।

ডাটা অফ করে ওনার ডাকে সারা দিলাম।
– কি হইছে এত ডাকেন কেন? হুমম। সব সময় খালি আমাকে ডাকতে হবে।
– আরে রাগ করো কেন? তোমার পছন্দের মাছ আনছি। তুমি না বোয়াল মাছ খেতে ভালোবাসো।
– ওহ্হ হ্যা ভালোবাসি। (মুচকি হাসি দিয়ে)
– আর কি বল্লে তোমাকে সারাদিন ডাকব না তো কাকে ডাকব হুমম। নাকি সতীন চাও???
– ঐ কি বল্লেন।
– কিছুনা।
– আপনি সতীন আনবেন?
– তাহলে তো তোমাকে আর বেশি ডাকব না।
– আপনার মুখে আর একদিন যদি সতীন এর কথা শুনি একদম আমি মরে যাব হুমম।
– আচ্ছা ঠিক আছে।
– ঠিক আছে মানে কি?
– তুমি আমার সব। বুঝেছ তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি। তোমার আগে পড়ে কেউ থাকবে না অনেক ভালোবাসি।
– সত্যি??
– হুমম সত্যি, ভবিষ্যতে আল্লাহ যদি বাচিয়ে রাখে তাহলে আমরা বুড়া বুড়ি একি রকম ভালোবাসায় পারি দিব শেষ সময় পযন্ত।
আমাদের ২ জনের শুরুর পৃষ্ঠাতেও ভালোবাসা শেষেও পৃষ্ঠায় ও ভালোবাসা।

আচ্ছা রাতে তো মাছ কোটা হবে না। এখন ফ্রিজে রেখে এসো। আমি রুমে যাই।
– কেন এখন আর দোকানে যাবেন না?
– নাহ আজকে রামিম আর তোমাকে সময় দিব।
– জিহ্বায় কামর দিয়ে আল্লাহ উনি ঘরে গিয়ে যদি আমার মোবাইলটা চেক করে তাহলে। ( মনে মনে)
– কি হলো কি ভাবছ?
– আপনি রেখে আসেন আমি রুমে গেলাম। তারপর ওনার কপালে একটা কিস দিয়ে দৌরে ঘরে আসি। আমি জানি ওনাকে আমি ভালোবাসলে উনি আমার জন্য সব করেন।

সে হাসি মুখে ফ্রিজে মাছ রেখে আসে।
আমি তারাতারি ওর কথা গুলো ডিলেট করে দেই৷ আর sms দিয়ে রাখি তুহিন আমি sms না দিলে তুমি আমাকে sms করবা না।

সব sms ডিলেট করে নিশ্চিত হই। যাক বাচা গেল।
উনি ঘরে এসে সব সময় আমার মোবাইল চেক করত। আমি বুঝতাম। কিন্তু উনি বুঝতে দিত না। এমনি সন্দেহ করে না। তবে ভয় করতেন যদি দূর্ঘটনা হয়ে যায়।

রামিম ঘুম থেকে উঠলে জাবেদ ওর সাথে খেলা শুরু করে। আমি শুধু তাকিয়ে দেখতাম বাবা ছেলের সম্পর্ক কত মধুর। রামিম কে সে খুব ভালোবাসত।

কিন্তু আমার মন অশান্ত হয়ে আছে। কি থেকে কি হয়ে গেলো বার বার শুধু তুহিনের কথাই মনে হয়।
তার পর মনে মনে জাবেদ সাহেব কে গালি দিতে লাগলাম আজকেই আপনার তারাতারি বাড়িতে আশা লাগল। আগে।তো ১০ টার আগে আসতেন না।। আজ একদম ৭ টার সময় ঘরে।

– এই তোমাকে এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন? কিছু হয়েছে?
– কো,,,,,,, কই না তো
– একি তুমি লাফিয়ে উঠলে কেন?
– উফফ কই না তো। আপনি একদম বেশি ভাবেন।
– তোমার তো কিছু হইছেই। নাহ কিছু হয় নাই। এ লোক তো বেড় করেই ছাড়বে আমি এমন কেন করছি কথা ঘুরাতে হবে।

আচ্ছা একটা কথা জানার ছিল।

– হুমম কি কথা বল?
– আজকে আমি যখন খোপা বাধতে গেলাম সুমি আমাকে দেখে বলে ভাবি তুমি খোপা এত উচু করে বাধছ কেন?
– কেন কি হইছে?
– তুমি জানো না নবীজি এই ভাবে উচু করে বাধতে নিষেদ করছেন৷ তারপর আর বাধিনাই। কিন্তু আমি এই বিষয়টা সম্পর্কে ক্লিয়ার হতে চাই।
– ওহ আচ্ছা তাহলে শোনো,,,,,,,

মেয়েদের জন্য মাথায় চুলের খোপা বাধা জায়েয। কিন্তু মাথার উপর উটের কুজের মত উঁচু করে বাধা বৈধ নয়। কিন্তু পেছনে ঘাড়ের কাছে ফেলে রাখতে কোন সমস্যা নেই-যাতে উঁচু দেখাবে না।

আবু হুরায়রা রা. ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:-

صنفان من أهل النار لم أرهما تيجان بأيديهن سياط يضربون بها الناس يعني ظلماً ونساء كاسيات عاريات مائلات مميلات رؤوسهن كأسمنة البخت المائلة لا يدخلن الجنة ولا يجدن ريحها، وإن ريحها ليوجد من مسيرة كذا وكذا

“জাহান্নাম বাসী দুটি দল রয়েছে- যাদেরকে আমি এখনো দেখি নি। একদল এমন লোক যাদের হাতে গরুর লেজের মত লাঠি থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর অন্য দল এমন নারী যারা পোশাক পরেও উলঙ্গ থাকে। তারা অন্যদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে নিজেরাও অন্যদের প্রতি ঝুঁকবে। তাদের মস্তক উটের পিঠের কুজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না অথচ এর ঘ্রাণ এত এত দূর থেকেও পাওয়া যায়।” [মুসলিম : ২১২৮]

হাদিসের ভাষা হল: “উটের পিঠের কুজের মত”। মাথার উপর চুল বাঁধলে বা ঝুটি থাকলেই তখন উটের পিঠের কুজের মত দেখা যাবে; অন্যথায় নয়।
আল্লাহু আলাম।

বুঝতে পেড়েছ,,,?
– হুমম বুঝতে পেড়েছি।
– কি বুঝেছ?
– সব সময় নিচু করে চুল বাধব। যাতে মাথার চেয়ে খোপা উচু না দেখায়।
– হুমম।
___★___
এভাবে ৫ মাসের মত কেটে গেল। তুহিনের সাথে ও মাঝে মাঝে কথা হত। আমি সব কিছু ডিলেট করে রাখতাম যাতে তার কখনো আমার প্রতি সন্দেহ না হয়। সে আমাকে অনেক ভালোবাসত আর বিশ্বাস করত।

তবে একদিন আমার ননদ সুমি ওর সাথে যে কথা বলি ও তা দেখে ফেলেছে। তারপর ও আমাকে বলছে
-ভাবি এই ছেলেটা কে?
আমি দাঁতে দাত চেপে বলি তুমি কেন আমার ফোনে হাত দিছ?
– কেন ভাবি তোমার আমার ভাই ছাড়া পার্সোনাল কেউ আছে?

উফফ তারাহুরোতে এই sms গুলো ডিলেট করতে মনে ছিল না ( মনে মনে)

– এসব কোন ধরনের কথা সুমি? তুমি আমার নামে অপবাদ দিতে চাও?
-না ভাবি আমি তো শুধু জানতে চাইলাম এই ছেলেটা কে? তোমাকে বাবু জান এগুলো বলে ডাকছে?

– সে কইফত আমি তোমাকে দিব না।
– বেড় হও আমার ঘর থেকে। বয়স তো কম হলো না এখোনো বাড়ি থেকে বিদায় হও না কেন? সংসারে আগুন লাগাতে চাও?
সুমি কান্না করতে করতে বেড়িয়ে যায়।

আমি মনে মনে অনেক ক্ষিপ্ত হই আর আমার মাথায় কোনো কাজ করে না। সুমি যদি কিছু ওর ভাইকে বলে দেয়। সেই ভয়ে আমি উনি আসার সাথে সাথেই
কান্না করে দেই, ,

– কি হইছে তোমার কাঁদছ কেন?
– আপনাকে বল্লে হয়ত আপনি বিশ্বাস করবেন না।
– কি হইছে বল?
– আমি আর imo fb কিছু চালাব না। যার জন্য আমাকে বাজে কথা শুনতে হবে তা আমি কখনোই চালাব না।
– উফফ আসল কথা বল। কে কি বলেছে এমনিতেই আজকে খুব মাথা বেথা করছে আরো তুমি যদি কান্না কর ভালো লাগে বল??
– আমি বল্লে তো আপনি বিশ্বাস করবেন না।
– বিশ্বাস করব। আমি জানি তুমি মিথ্যা বলবে না।
– আজকে সুমি আমার রুমে আসে তারপর ছেলেটা পাশে কান্না করছিল । ও যখন কান্না শুরু করে সাথে সাথে সুৃমি আসে আর আমাকে যা না তাই বলে।
বলে বাচ্চা কান্না করে তুমি চোখে দেখ না। তুমি কি দেখ মোবাইলে এত। ঘরের কাজ তো কিছুই কর না বাচ্চাটাকেও তো সামলাতে পার না।

কি কাউকে জুটিয়ে নিয়ছ নাকি হুমম। বাচ্চা আগে না মোবাইল আগে তারপর আমি বলি দেখ সুমি আমাকে এভাবে বাজে কথা বল না তুমি আসার সাথে সাথেই বলতে গেলে ও কেঁদে উঠে।

কিন্তু ও আমার কথা না শুনে বলে আমি জানি তুমি fb imo তে কারো সাথে কথা বল। তাই তো সংসারের কোনো খেয়াল নেই। বলে আমাকে ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয় আর রামিম কে রুমে নিয়ে যায়।

আমি সত্যি এমন মেয়ে না। এভাবে যদি শুধু শুধু আমার নামে অপবাদ দেয় তাহলে কেমন লাগে আরো বলছে আপনার কাছে নাকি আমার নামে নালিশ করবে।

– কি বল এসব সুমি এগুলো বলতে পারে?
– জানতাম বিশ্বাস করবেন না। আমিই তো মিথ্যুক। আমার অপমানে এবাড়ির কারো কিছু না।

– আচ্ছা আমি দেখছি তুমি কেদোনা।থামো আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করে আসি। ও আর কখনো তোমার সাথে এমন ব্যবহার কখনো করবে না। ক্ষমা চাইবে তোমার কাছে। এখন থামো বলছি।

-(মনে মনে খুব খুশি হয়ে যাই ) থাক এমনি বকা দিয়েন কিন্তু বেশি কিছু বলার দরকার নেই। ও তো ছোট আমি তেমন কিছু মনে করিনি।
– আচ্ছা। তবে ওরে একটু তো বকা দিতেই হবে না হয় আবার কখন না কখন তোমাকে উল্টা পাল্টা বলে।
আমি যাই ওকে জিজ্ঞেস করে আসি।
,,,,,,সুমি সুমি এই সুমি,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম কেমন হইছে জানাবেন। ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। কিছু বানান ভুলে হলে বুঝে পড়ে নিবেন প্লিজ)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে