#আলো_আঁধার
পর্ব-০৫+০৬
পর্ব ঃ- ০৫
~আঁখি দেব তৃপ্তি
সকালবেলা তনিমার বাবা বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিলেন। তনিমা এর মধ্যে একবার উঠানে বেরোলো। তখন ওর বাবা ওকে ডাকলেন।
“তনিমা, এদিকে একবার আসিস তো।”
“আসছি বাবা।”
কাজ সেরে ২ মিনিট পর বাবার সামনে হাজির হলো তনিমা।
“বলো বাবা।”
“কী সিদ্ধান্ত নিলি মা?”
“আমি আর ও বাড়িতে ফিরবো না।”
“ভালোভাবে ভেবে কথাটা বলছিস তো?”
“হুম বাবা। অনেক ভেবেছি তারপরই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
“তোর সামনে সারা জীবন পড়ে আছে কীভাবে একা কাটাবি?”
“ও সমস্যা না। কেটে যাবে কোনকরকম। এখানে থাকলে যদি তোমাদের কোনো অসুবিধা হয় তাহলে অন্য জায়গায় ব্যবস্থা করে নিব।”
“এসব কী বলছিস? আমাদের কেন অসুবিধা হবে।”
“তোমার না হলেও অন্যদের তো হতে পারে। আমি কাউকে কোনো অসুবিধায় ফেলতে চাই না।”
“এখনো আমার টাকায় এ সংসার চলে। কার এতো সাহস যে তোকে অসুবিধা মনে করবে?”
“তাও বাবা আমি বাড়তি মানুষ বোঝা হয়ে কারো কাছে থাকতে চাই না। ভাবছি একটা চাকরি খুঁজবো।”
“চাকরি করলে তো একা শহরে গিয়ে থাকতে হবে। আমি তোকে এভাবে ছাড়তে পারবো না।”
“কতোদিন বেঁধে রাখতে পারবে বাবা?”
“যতদিন বেঁচে আছি। আর ওদের কী করবো বল। এমনি এমনি ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আমি মামলা করবো ওদের বিরুদ্ধে। ”
“ওসব করে কী লাভ বাবা? শুধু শুধু অশান্তি। বাদ দাও যার যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে থাকতে দাও। আমার কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। তবে একটা চাওয়া আছে। আমি আগে ও বাড়িতে ডিভোর্স লেটার পাঠাতে চাই ওখান থেকে আসার আগে।”
“আচ্ছা তুই যা চাইবি তাই হবে। তবে সুযোগ পেলে ওদের আমি উচিত শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো।”
৭ দিন পর,
অফিস থেকে ফিরে বিজয় দেখলো টেবিলের উপর একটি খাম পড়ে আছে। তার মাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো –
“এ খাম কীসের মা?”
“জানিনা একজন এসে দিয়ে গেলো। খুব জরুরি নাকি। তোকে দিতে বলেছে তাই তোর টেবিলে রাখলাম।”
“ও।”
কী এমন আছে এর মধ্যে এই ভেবে খামটা খুললো বিজয়। তারপর কাগজগুলো পড়ে বেশ ঝটকা খেল। কাগজগুলোর দিকে তাকিয়ে রইলো নির্বাক হয়ে। এর মধ্যেই তার মা রুমে প্রবেশ করলেন।
“কী রে কী হলো? কীসের কাগজ এটা?”
“ডিভোর্স লেটার।”
“ও বুঝেছি তুই তনিমাকে পাঠাবি তো? পাঠিয়ে দে বাবা ঝামেলা যত তাড়াতাড়ি শেষ হবে তত মঙ্গল।”
” তনিমাই আমাকে পাঠিয়েছে মা।”
“কী! দেখেছিস মেয়েটার কান্ড? বলি এতো দেমাগী মেয়ের দ্বারা ঘর-সংসার হয়? কী সাহস দেখো নিজের স্বামীকে ডিভোর্স লেটার পাঠায়। নিশ্চয়ই অন্য কিছু আছে এর পিছনে। কারো সাথে কিছু না থাকলে কেউ সহানুভূতি না দেখালে এতো সাহস মেয়ের হয় কীভাবে? যাক বাবা বাঁচা গেল। আমরা কিছু করতে গেল যদি মামলা দিয়ে দিত তাতে আরও ওকে টাকা পয়সা দিতে হতো। তুই একদম চিন্তা করিস না। আমি তোকে খুব ভালো, সুন্দরী মেয়ে দেখে আবার বিয়ে দিব।”
বিজয় এখনো চুপচাপ বসে আছে। রাগে দুঃখে ভেতর ফেটে যাচ্ছে তার। কিন্তু কোনটা বেশি হচ্ছে তা বুঝতে পারছে না। এভাবে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে তনিমা তাকে অপমান করেছে। এটা তার ইগোতে লেগেছে খুব। তাই এই রাগ আর ইগোর কাছে দুঃখ সেটা খুবই তুচ্ছ বিষয়। হয়তো মা যা যা বলেছেন তাই ঠিক। নয়তো এতো সাহস তনিমা পেলো কোথায়? এরকম মেয়েছেলের জন্য কষ্ট পাওয়ার কোনো মানেই হয় না। আর কখনো যদি এর মুখ দেখতে না হয় তাতেই মঙ্গল।
৫ বছর পর,
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে তনিমা দেখলো আলো তার পাশে নেই। কোথায় গেল মেয়েটা?
“আলো, এই আলো কোথায় গেলি সকাল সকাল? “- ডাকতে ডাকতে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো তনিমা। তারপর যে দৃশ্য দেখলো তাতে তার চোখ জুড়িয়ে গেল। শরৎকাল চলছে। তনিমাদের উঠালের একপাশে একটি বড় শিউলি গাছ। সকালবেলা শিউলি ফুলে ছেয়ে যায় সারা উঠান। এই গাছটি তনিমারই হাতে লাগানো। ছোটবেলা থেকেই ফুলের বাগানের প্রতি খুব ঝোক ছিল তনিমার তাই সবসময় এটা ওটা ফুল গাছ লাগাতো। আলোরও ফুলের প্রতি খুব ভালবাসা। ছোট্ট আলো শরতের এই সুন্দর সকালে মাটিতে বসে শিউলি কুঁড়াচ্ছে আর তা নিজের জামার মধ্যে জমাচ্ছে। দেখতে দেখতে অনেকগুলো ফুল কুড়ানো হয়ে গেল। আর জায়গা হচ্ছে না আলোর জামায়। এবার সে উঠে ঘরের দিকে এগিয়ে এলো।
” এগুলো দিয়ে কী করবি আলো? ”
“আমার ঘর সাজাবো মা।”
“সকাল সকাল না বলে কোথায় না বেরোতে বলেছিলাম না তোকে?”
“তুমি তো ঘুমে ছিলে কীভাবে বলবো।”
“আর কখনো এভাবে একা একা বেরোবি না।”
“আচ্ছা”- মন খারাপ করে বললো আলো।
” যা হাত মুখ ধুয়ে আয় আমি নাস্তার ব্যবস্থা করছি।”
সকালের নাস্তা করে আলো আবার ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়লো। আলোর এতো বারমুখি হওয়াটা ভালো লাগে না তনিমার কাছে। হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ ছাড়া কেউ আলোকে সহজ চোখে দেখে না। নানান রকমের কথা বলে আলোকে ইঙ্গিত করে। ছোট আলো তো কিছুই বুঝে না কিন্তু তনিমার এসব সহ্য করতে অনেক কষ্ট হয়।
তনিমা এখন গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা করে। নিজের ও নিজের মেয়ের বেশিরভাগ খরচই নিজে চালায় সে। বাবার অনেক বয়স হয়েছে। আজকাল বিছানায়ই বেশি পড়ে থাকেন। নানা রোগ বাসা বেধেছে শরীরে। তনিমার ভাই এখন সবকিছু দেখাশোনা করে। ভাইয়ের বউও খুব একটা ভালো ব্যবহার করে না তনিমাদের সাথে। দুদিন পর যখন বাবা থাকবেন না তখন যে কী হবে এই নিয়েই চিন্তা তনিমার।
#আলো_আঁধার
পর্ব ঃ- ০৬
~আঁখি দেব তৃপ্তি
আস্তে আস্তে আলো আরেকটু বড় হয়ে উঠলো। এখন সে স্কুলে যায়। পড়ালেখায়ও তার বেশ ভালো মনোযোগ। তবে ওর আরেকটা কাজের প্রতি ঝোঁক আছে সেটা হলো আঁকাআঁকি। যেখানে সেখানে সে হাতের সামনে যা কিছু পায় তা দিয়ে আঁকা-আঁকি শুরু করে দেয়। তার জন্য প্রায়ই বকা খেতে হয় ওর।
ছোট্ট আলো প্রকৃতিকে অনেক ভালবাসে। ঘরে তার মনই টিকেই না। সারাদিন বনে বাতারে ছুটাছুটি, গাছে চড়া, বিলের শাপলা তোলা, বনের ফুল সংগ্রহ ইত্যাদি কাজে মেতে থাকে আলো । এ নিয়েও লোকের কথার শেষ নেই। নিশ্চয়ই এ মেয়ের মধ্যে কোনো খারাপ ছায়া আছে। তা না হলে মেয়ে-ছেলে দিন-দুপুর না মেনে এভাবে চলতে পারে নাকি! তনিমা কিছু না বলে মুখ বুজে সব সয়ে যায় শুধু । মাঝে মাঝে রাগে দুঃখে মেয়েকে খুব মারে তাও আলোর এই স্বভাব আর বদলায় না।
একদিন ক্লাসে স্যার জিজ্ঞেস করতে শুরু করলেন- তোমারা বড় হয়ে কে কী হতে চাও? প্রায় সবার উত্তরই ছিল তারা ডাক্তার হতে চায়। এবার আলোর পালা আসলো।
“আলো তুমি কী হতে চাও?”
“আমি আটিস হতে চাই স্যার। ”
“আটিস আবার কী?”
“ওই যে স্যার যারা ছবি আঁকে।”
“ও, এটা আটিস নয় আর্টিস্ট হবে।”
“ও বুজেছি আ…টিস।”
সবাই হেসে উঠলো আলোর কথা শুনে।
“তুমি ছবি আঁকো? ”
“জ্বি স্যার। ”
“আচ্ছা কালকে আমাকে তোমার ড্রয়িং খাতা এনে দেখিওতো।”
“আমার তো খাতা নেই স্যার। ”
“তাহলে কীসে আঁকো? ”
“মাটিতে, নদীর তীরে, দেয়ালে আঁকি। বই আর স্কুলের খাতায় আঁকলে মা বকে।”
“বুঝেছি। তোমার মাকে বলো ড্রয়িং খাতা ও রং পেন্সিল কিনে দিতে তাহলে আর তোমায় যেখানে সেখানে ছবি আঁকতে হবে না।”
“ওসব কোথায় পাওয়া যায় স্যার? ”
“বাজারেই কিনতে পাওয়া যায়।”
“সত্যি? আমি আজই মাকে গিয়ে বলবো আমাকে কিনে দিতে।”
বিকেল বেলা আলো বায়না ধরলো তাকে রং পেন্সিল আর খাতা কিনে দিতে হবে। স্যার বলেছেন কালকে ছবি এঁকে নিয়ে যেতে। তনিমা প্রথমে না করলেও শেষ পর্যন্ত মেয়ের বায়নার কাছে হার মানতে হলো। ভাইকে বলে রং পেন্সিল আর ড্রয়িং খাতা আনিয়ে দিল আলোকে। এসব পেয়ে আলো এতো খুশি হলো যে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। যেন সাত রাজার ধন পেয়ে গেছে সে।
সন্ধ্যা পার হতেই আলো আঁকতে বসে গেল। তনিমা এ দেখে রেগে বললো
” এসব এনে দিয়েছি বলে কী লেখাপড়া বাদ দিয়ে শুধু এসব নিয়ে পড়ে থাকবে নাকি তুমি? পড়তে বসো ওসব পড়ে হবে।”
“লক্ষ্মী মা শুধু আজকের রাতটা আঁকি।কালকে স্যারকে দেখাতে হবে তো।”
“আচ্ছা ঠিকাছে কিন্তু কাল থেকে যেন সবকিছু ঠিকঠাক দেখি।”
“আচ্ছা।”
সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয় তনিমার। সকালবেলা ভাইয়ের বউকে রান্না-বান্নায় সাহায্য করে স্কুলে যেতে হয়। স্কুল থেকে ফিরেও সংসারের নানান রকম কাজ, রাতের রান্না তার উপর অসুস্থ বাবা আর আলোর দেখাশোনা। সব সামলে হাঁপিয়ে উঠতে হয় তনিমাকে। মেয়েটাকে ঠিকমতো পড়া দেখিয়ে দেবার সময়টুকুও হয়ে উঠে না তার। পরের সংসারে থাকলে সবার মন জুগিয়ে চলতে হয় এই তার মায়ের উক্তি। তনিমাও তা কষ্ট করে মেনে চলে। কী লাভ শুধু শুধু অশান্তি বাড়িয়ে। এখন শুধু একটাই চাওয়া মেয়েটা যাতে মানুষের মতো মানুষ হয়। সবাই বলে এ মেয়েকে বিয়ে দিতে তনিমার অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে। কে বিয়ে করবে এমন মেয়ে। কী জানি সারাজীবন এরকমই না থেকে যায়! এসব শুনে বুক ফেটে যায় তনিমার। যে মেয়ের জন্য সে এতো কষ্ট সহ্য করছে তার ভবিষ্যৎ অন্ধকারময় সে দেখতে পারবে না।
রাতের খাবার শেষে থালা বাসন ধুয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে নিজের ঘরে এলো তনিমা। এসে দেখলো আলো বিছানার উপর বসে এখনো ছবি আঁকাতে মগ্ন।
“আলো এখনো ঘুমাস নি তুই?”
“একটু বাকি ছিল মা এইতো শেষ হয়ে গেছে।”
“রাত অনেক হয়েছে এসব রেখে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ো।”
“তুমি দেখবে না আমি কী এঁকেছি? ”
“আমার ওসব দেখে কাজ নেই। যা রেখে আয়।”
মায়ের কথা শুনে মুখ ভার হয়ে গেল আলোর। মন খারাপ ভাব নিয়ে সবকিছু গুছানো শুরু করলো। তনিমার মায়া হলো মেয়ের এরুপ অভিমান দেখে।
“আচ্ছা দেখি কী এঁকেছিস?”- বলে বিছানায় গিয়ে বসলো তনিমা। আলো অতি উৎসাহের সাথে খাতাটি এগিয়ে দিল তার মায়ের দিকে। খাতা খুলে প্রথম ছবির দিকে তাকাতেই অবাক হলো তনিমা।
” একটি ছোট্ট পুকুর, সেখানে অনেক শাপলা ফুটে আছে। একটি ছোট মেয়ে শাপলা গুলো তুলার চেষ্টা করছে একমনে। মেয়েটির ডান পাশে একটি সাপ ফনা মেলে বসে আছে সেদিকে তার কোনো লক্ষ্য নেই।” – এই দৃশ্যটি এঁকছে আলো। এমন ভাবে এঁকেছে যেন প্রানবন্ত এক দৃশ্য। কিন্তু এরকম আঁকা ও শিখলো কোথায় আর এই থিম টাই বা ওর মাথায় কোথা থেকে আসলো! ও তো নিজেও বিলে শাপলা তুলতে যায়। তাহলে কী এটা তার সাথেই ঘটেছে? ভয়ে বুক কেঁপে উঠল তনিমার।
“আলো এরকম আঁকা তোকে কে শিখালো?”
“কেউ না।”
“এসব তোর মাথায় এলো কীভাবে? ”
“এমনি।”
“সত্যি করে বল। তুই তো বিলে যাস। এরকম হয়েছে কী কখনো? ”
“না মানে..”
“না মানে আবার কী?”
“একদিন হয়েছিল।”
“কী? তারপর কী হলো? ”
“আমি পাশে তাকাতেই সাপ দেখতে পেয়ে ভয় পেয়ে গেছিলাম। তারপর আস্তে আস্তে সাপের সামনে থেকে পেছনে সরে আসি। সাপ একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে। পরে আমি দৌঁড়ে বাড়ি চলে আসি।”
“এরকম পদ্ধতি তোকে কে শিখিয়েছে?”
“দাদা। দাদা বলেছিল সাপ দেখলে সাপের দিকে তাকিয়ে থেকে পিছনে সরতে তাহলে সাপ কামড় দিবে না।”
“তোকে যদি আর কখনো বনে বা বিলে যেতে দেখি তাহলে আর বাড়িতে ঢুকতে দিব না কথাটা মনে রাখিস।”
“আচ্ছা,”- মাথা নিচু করে বললো আলো।
তারপরের পেইজে একটি গ্রামের দৃশ্য আঁকা। একটি খোলা নীল আকাশ। ভূমি থেকে একটি বড় গাছ যেন আকাশ ছুতে চাইছে। গাছের নিচে ঘরবাড়ি। বাড়ির সামনে বিস্তৃত ফসলের মাঠ। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নদী। নদীতে ভাসছে একটি নৌকা। খুবই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।
” আলো তুই নিজে থেকে এতো সুন্দর আঁকা কীভাবে শিখলি?”
“আমি টিভিতে একটি ড্রয়িং এর অনুষ্ঠান দেখি। ওখান থেকে কিছুটা শিখেছি বাকিটা নিজে আঁকতে আঁকতে। আমায় ড্রয়িং শিখাবে মা?”
“আমি এসব পারি না।”
“তাহলে যে পারে তার কাছে শিখবো।”
“এরকম কেউ গ্রামে নেই।”
“ও।”- মন খারাপ করে ফেললো আলো।
তারপরের ছবিটা দেখে থমকে গেল তনিমা। এ কী এঁকেছে আলো। একটি পরিবারের ছবি। একজন পুরুষ আর একজন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে আর তাদের মাঝখানে তাদের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে তাদের ছোট্ট মেয়ে। এ ছবি দেখে আবেগে ভরে গেল তনিমার মন।
” মা এই ছবিটার মতো আমরা নই কেন? আমার বাবা কোথায়?”- বলে উঠলো আলো।
মেয়ের কথা শুনে আর চোখের জল আটকে রাখতে পারলো না তনিমা। কী জবাব দিবে মেয়েকে? আলো যখন জানতে পারবে ওকে ওর বাবা অস্বীকার করেছে তখন কেমন লাগবে ওর? বিজয় হয়তো এতোদিনে আরেকটা বিয়ে করে সুখে সংসার করছে। আমাদের কথা তার মনেই নেই।