আমি তুমিতেই আসক্ত পর্ব-২০+২১

0
2263

#আমি_তুমিতেই_আসক্ত।
#পর্ব_২০
#সুমাইয়া মনি।

আড়ম্বরপূর্ণ কমিউনিটি সেন্টারটি আরো জমজমাট হয়ে উঠে বর আসার ফলে। বরযাত্রীকে ভেতরে নিয়ে আসা হয়। কিছু মেয়েদের মুখে বর এসেছে বাক্যটি শুনে তনুজা লজ্জায় মাথা নুইয়ে রাখে। তার অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। তনুজাকে নবনী খাবার খাইয়ে দিচ্ছে। বোনের লজ্জামিশ্রিত হাসি দেখে সে-ও খুশি হয়। সামান্য কিছু খাবার খাওয়ানোর পর নবনী নিজেও খেয়ে নেয়। নিচে বরযাত্রীদের খাওয়া – দাওয়ার পর্ব আরম্ভ হয়। বরকেও খাবার দেওয়া হয় খেতে। আপন আদি সহ ওদের আরো কিছু ফ্রেন্ড, ভাইরা মিলে খাবার খাচ্ছে।
ঘন্টাখানিক পর বিয়ে পড়ানো শুরু করে কাজী সাহেব।
আপন অতিরিক্ত ঘামছে। বার বার রুমাল দ্বারা কপালের ঘাম মুছে নিচ্ছে। আদি বিষয়টি লক্ষ্য করে। সবাইকে উপস্থিত দেখে কিছু বলে না। কাজী সাহেব খাতাটি আপনের দিকে এগিয়ে দেয় সাইন করতে। আপন কিছুটা কাঁপা হাতে কলম তুলে নেয়। সাইন করতে যাবে ঠিক সেই মুহূর্তে আপনের একজন ফ্রেন্ড এসে ওর কানে ফিসফিস করে কিছু একটা বলে সরে যায়। স্তব্ধ বাকরুদ্ধ হয়ে পাথরের ন্যায় চুপটি করে বসে রয় কলম ধরা অবস্থায়। উপস্থিত সবার নজর এখন আপনের ওপর। আদি পরিস্থিতি সামনে নেওয়ার জন্যে আপনে কাঁধে হাত রেখে বলে,
-“আপন সাইন কর ব্রো।”

আদির কথা শেষ হতেই আপনের হাত থেকে আপনাআপনি কলম গড়িয়ে পড়ে যায়। মাথার পাগড়ি খুলে পাশে রেখে সে উঠে দাঁড়ায়। সবার চোখেমুখে বিস্ময় ভাব ফুটে উঠে আপনের ব্যবহারে। আপন বহু কষ্টে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে উঠে,
-“আমি বিয়ে করতে পারব না।”

পুরো হলটি নিশ্চুপ হয়ে যায়। আপনের কথার প্রতিধ্বনি হয় হয়ে ছড়িয়ে পড়ে চারদিক। চোখমুখ কালো হয়ে যায় নিলাজ হোসাইন, মাহবুব হাসান সহ বাকি আত্মীয়দের। বিয়ের আসরে বরের মুখে এমন কথাটি কতটা যন্ত্রণা অপমানসূচক, একমাত্র মেয়ের বাবারাই বুঝতে পারবে সেটি। আজিম উদ্দীন, আজমল উদ্দীন মুখ চাওয়াচায়ি করছে দু’জনার। তারাও বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছে না। আপন সবাইকে উপেক্ষা করে চলে যাওয়া ধরলে পিছন থেকে আদি আপনের হাত ধরে থামিয়ে ধীরে কন্ঠে বলে,
-“এসব কী বলছিস তুই? কোথায় যাচ্ছিস? আমাদের মানসম্মান……”

পুরো কথাটি আদিকে বলতে না দিয়ে আপন কিছুটা জোরেশোরে বলে উঠে,
-“মানসম্মান? যে মেয়েটি আমাকে ভালোবেসে অপেক্ষা করতে করতে সুইসাইড করেছে, তার সামনে মানসম্মান অতি তুচ্ছ! ”

বিস্মিত আদি আপনের কথা শুনে। অবাক চোখেমুখে চেয়ে রয় আপনের পানে। সে বলেছে তার ভালোবাসার কোনো মানুষ নেই। তবে সে কার কথা বলল এই মাত্র। ফের প্রশ্ন রাখে আপনের উদ্দেশ্যে আদি,
-“মেয়েটি মানে? কে সে?”

-“আমার ভালোবাসা, তনুশ্রী। সে পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে ওপারে পাড়ি জমিয়েছে।” বলতে বলতে আপনের চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।

সবার মুখ থমথমে হয়ে যায়। আপনের মুখে তনুশ্রী নামটি শুনে আদির পরিবাবের সবার বুঝতে বাকি থাকে না কে এই তনুশ্রী। হতবিহ্বল দৃষ্টি রাখে আপনের ওপর। আজিম উদ্দীন উঠে আপনের কাছে এসে গম্ভীর কণ্ঠে শুধালো,
-“যা হবার হয়ে গেছে। তুমি তনুজাকে বিয়ে করে নেও। বিয়ের পর সব কথা হবে।”

-“কিভাবে চাচ্চু? কিভাবে কথাটি বলতে পারলে? এই তোমার আইন।”

আজিম উদ্দীন ক্ষেপে গিয়ে ‘আপন’ নামটি উচ্চারণ করলেন।
আপন কথা বন্ধ রাখে না। বলে,
-“ঐ দিকে আমার প্রেয়সীর চিতা জ্বলবে। আর আমি এসব ভুলে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করব, কিভাবে?”

-“আপন তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছো, কাউকে কথা দিয়ে কথার খেলাফ আমরা করি না।” ক্ষুব্ধ কন্ঠে বললেন।

-“আর আমি তো তোমাদের সুখের জন্য অনেক আগেই তনুশ্রীকে দেওয়া কথার খেলাফ করেছি। তার কী হবে চাচ্চু?” করুণ কন্ঠে বলে আপন।

-“এসব বলার সময় এখন নয়। আগে বিয়ে হোক…”

আপনের চোখের কোণায় জমে থাকা জল গুলো মুছে কঠোর কন্ঠে বলে,
-“আমায় মাফ করো চাচ্চু। আমি তনুজাকে বিয়ে করে ওর জীবনটা নষ্ট করতে পারব না। চললাম!” বলেই সে দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায় দরজার দিকে।

পিছন থেকে আজমল উদ্দীন ‘আপন’ বলে কয়েক বার নাম ধরে ডাকলেন। কিন্তু সাড়া পেল না আপনের। লজ্জায় অপমানে মুখ খুঁচিয়ে আসে তার। আপনের দ্বারা এমন ব্যবহার কেউ মেনে নিতে পারছে না। আদি নিরব স্রোতার মতো সব শুনেছে। তবে আপনের লাস্টের কথাটিতে সে সহমত। নিলাজ হোসাইন এবার রেগে গিয়ে আজিম উদ্দীনের উদ্দেশ্যে বললেন,
-“এভাবে আমাদের অপমান করাটা কি জরুরি ছিল। আগে কেন বলেন নি আপনের হিন্দু ধর্মের একজন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছে।”

-“দুঃখিত! আমরা সত্যি এই বিষয়টি জানতাম না বেয়াই।” কিছুটা আহত স্বরে বললেন আজিম উদ্দীন।

-“বেয়াই বলে সম্মোধন করেন কোন হিসাবে? বিয়ের আসর থেকে বিয়ে ভেঙে যাওয়া যে মেয়ের বাবার কাছে কতটা যন্ত্রণাদায়ক অপমান, সেটা আপনাদের বোধগম্য নয়।” কাঠিন্য স্বরে কথা গুলো বললেন।

মাথা নত করে আজিম উদ্দীন, আজমল উদ্দীন তার কথা গুলো শুনছে। এমন অপমানসূচক কথা তাদের মেনে নিতে বিবেকে বাঁধছে। তবুও শুনতে হবে।

মাহবুব হাসান নিলাজ হোসাইনকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন,
-“তুমি একটু শান্ত হও। আমি দেখছি বিষয়টি।”

-“কিভাবে শান্ত হবো? কি দেখবে তুমি। সব তো চোখের সামনে ঘটে গেল। আমার মেয়ের জীবন ধ্বংস হতে চলেছে।” লাস্টের কথাটি বলে সে অসহায় ভাবে পাশের চেয়ারে বসে পড়লেন। তার যেমন রাগ হচ্ছে, তেমনি মেয়ের জন্য দুঃখ লাগছে। কী জবাব দিবে মেয়েকে। সে যে অধিক আশা ভরসা নিয়ে বধূ সেজে বসে আছে। কখন বাবা তার পছন্দের সুপাত্রের হাতে তাকে তুলে দিবে।

আদি তার বাবা, চাচ্চুর মানসম্মানের অবস্থা বুঝতে পারছে। সঙ্গে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছে। সে চুপ থাকতে পারে না। এগিয়ে এসে তাঁদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে দৃঢ়তা ফেলে বললেন,
-“আপনাদের আপত্তি না থাকলে আমি তনুজাকে বিয়ে করতে রাজি আছি।”

এক চিতলে রোদের জন্য সকালটি যেমন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তেমনই আদির কথা শুনে সবাই এক বিন্দু আশার আলো খুঁজে পায়। মুখ তুলে তারা আদির দিকে তাকায়। আদি তাঁদের উত্তরের অপেক্ষা না করে নিজ থেকে ফের বলে,
-“আপন ঠিকিই বলে গেছে। এই মুহূর্তে আপন যদি তনুজাকে বিয়ে করতো। তাহলে কখনোই সুখি হতে পারতো না আপনাদের মেয়ে। ভাঙা মন কাঁচের ন্যায় সমতুল্য। জোড়া লাগার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আপনের অবস্থা ঠিক একই। ও-তো আপনার মেয়ের জীবন আরো বাঁচিয়ে দিয়ে গেছে। সঙ্গে আমার দায়িত্ব। আমি নিরদ্বিধায় আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে প্রস্তুত আছি।”

নিলাজ হোসাইনের চোখ খুশিতে চিকচিক করে উঠে। এগিয়ে এসে আদির উদ্দেশ্যে অসহায় কন্ঠে বলে,
-“সত্যি! তুমি বিয়ে করবে আমার মেয়েকে?”

-“হ্যাঁ!”

আজিম উদ্দীন আদির কাছে এসে বললেন,
-“আমাদেরও কোনো আপত্তি নেই।”

-“তাহলে বিয়ে পড়ানো হোক।” মাহবুব হাসান বললেন।

-“কিন্তু তার আগে আপনার মেয়ের সঙ্গে কথা বলুন। তার সম্মতি নেওয়া দরকার।” আদি বলে।

-“আমি কথা বলছি। একটু অপেক্ষা করুন আপনারা।” নিলাজ হোসাইন কথাটি বলেই ছুঁটে চললেন তার মেয়ের কক্ষের দিকে। তিনি ভেতরে প্রবেশ করে নিজেরা ক’জন থেকে বাকিদের বের করে দিলেন।

কিছুক্ষণ পর….

তনুজা পাথরের মতো শক্ত হয়ে ওড়না খাঁমচে ধরে উলটো দিকে মুখ করে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। এক হাত বুকের কাছে রেখে মাথা নত করে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে। পিছন থেকে তার বাবা বিনীত স্বরে বিয়ের জন্য রাজি হতে বলছে তাকে। কিন্তু তনুজা কিছুতেই রাজি হতে পারছে না। কিভাবে সে রাজি হবে? যাকে এতদিন ধরে ভালোবেসেছে। মনের ঘরে যার বিচরন। তাকে ভুলে অন্য কাউকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। এমনই কি হয় তাহলে এক তরফা ভালোবাসা! এত কষ্ট, এত যন্ত্রণাদায়ক। আর শুনতে পারছে না বাবার মিনতি। কান্না কণ্ঠে পিছনে ফিরে বলে,
-“থামো বাবা, থামো! আমি পারব না বিয়ে করতে। আমাকে তুমি মাফ করো প্লিজ!”

-“মা আমার মানসম্মান আর তোর নিজের কথা একবার ভেবে দেখ। এই মুহূর্তে তোর বিয়ে না হলে, পরে তোকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।”

-“এর চেয়ে কঠির পরিস্থিতি আর কি হতে পারে বাবা। আমার….. ” বাকিটা বলার আগেই অঝোরে কাঁদতে থাকে তনুজা।

মেয়ের কান্না দেখে সে নিজেও কেঁদে দেয়। তনুজার মা আমেনা বেগম, নিলুফা বেগম এগিয়ে আসে তনুজার কাছে। তাদের চোখেও পানি বিদ্যমান। নবনী এক কোণায় দাঁড়িয়ে তাঁদের সবার কথপোকথন শুনছে। চোখের কোণায় কিছু অশ্রু তারও জমা হয়েছে।

-“মা দয়া কর তোর বাবার ওপরে। বিয়ে করে নে।”

তনুজা কান্নার ফলে কিছু বলতে পারছে না। আমেনা বেগমকে জড়িয়ে ধরে অনবরত কেঁদে চলেছে। আড়ম্বরপূর্ণ কমিউনিটি সেন্টারটি নিমিষেই বেদনাপূর্ণে পরিনত হয়। সৃষ্টি হয় এক ক্লেশকর পরিবেশ!

আধাঘন্টা পর নিলাজ হোসাইন ও মাহবুব হাসান রুম থেকে বের হয়। আদিদের দিকে এগিয়ে আসতেই আজিম উদ্দীন বললেন,
-“রাজি হয়েছে তনুজা?”

নিলাজ হোসাইন কন্ঠ খাদে ফেলে বললেন,
-“হু,,একটা কথা বলার ছিল আপনাদের।”

আদি দ্রুত উঠে এগিয়ে এসে বলে,
-“আঙ্কেল এমনেতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। আগে বিয়ে হোক, তারপর আপনি যা বলার বইলেন। কাজী সাহেব আপনি বিয়ে পড়ান।”

-“আদি আগে আমাদের কথাটা শুনে নেও।” মাহবুব হাসান বলেন।

-“পরে শুনবো আঙ্কেল।” কিছুটা তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলে আদি।

আর কেউ কোনো কথা বলে না। কাজী বিয়ে পড়ানো আরম্ভ করে। কবুল বলার পর সাইনে করে দেয় আদি। কাজী সাহেব উঠে কনের কক্ষের দিকে এগিয়ে যায়। সঙ্গে আজিম উদ্দীন, আজমল উদ্দীনও আসে। দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে বিয়ে সম্পূর্ণ হয়। আদি তৎক্ষনাৎ উঠে একটু দূরে এসে আপনকে কল দেয়। কিন্তু আপন ফোন তুলে না। ওর সেই বন্ধুটির সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে সব। কাল রাতে তনুশ্রী বিষ খেয়ে সুইসাইড করেছে। সব জায়গা থেকে তনুশ্রীকে ব্লক করার ফলে আপন অবধি খবরটি পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

গভীর ভালোবাসা ছিল আপন তনুশ্রীর। কুমার দত্তের মেয়ে তনুশ্রী। কুমার দত্ত পেশায় একজন ক্রিমিনাল লয়ার ছিলেন। অনেক আগে থেকেই কুমার দত্তের সঙ্গে আজমল উদ্দীনের দ্বন্দ্ব ছিলেন কোনো এক কেস নিয়ে। সেই দ্বন্দ্ব আস্তেধীরে দ্বিগুণ হয়। এবং নতুনে শুরু হয় আজিম উদ্দীনের সঙ্গে। তনুশ্রী হিন্দু তাতে কোনো সমস্যা ছিল না। সমস্যা ছিল কুমার দত্তকে নিয়ে। সে শুধু সৎ লোকদের বিরূদ্ধে লড়াই করতেন। তনুশ্রীও ছিল একজন ক্রিমিনাল লয়ার। রাগ, জেদের বশে তাদের সম্পর্ক হয়। আপন একজন সি,আই,ডি অফিসার। এই বিষয়টি পরিবার, তনুশ্রী বাদে বাহিরের লোকরা জানে না।বহুবার তনুশ্রীকে ক্রিমিনাল লয়ারের পদ থেকে সরে আসতে বলেছে। কিন্তু বাবা-মায়ের এক মাত্র সন্তান হবার কারণে বাবার পদ সে কিছুতেই ছাড়তে রাজি ছিল না। ওঁদের সম্পর্কের কথা দু’জন বন্ধু বাদে কেউ জানতো না। এমনকি আদিও না। আপন কয়েকবার বাবা, চাচ্চুকে বলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সাহস করে বলতে পারেনি। তাই সে তাদের সুখের কথা ভেবে তনুশ্রীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে। এটাই ছিল তার ভুল! যার কারণে তনুশ্রীর মৃত্যু ঘটল! আপন জানে তনুশ্রী ভীষণ জেদি একটি মেয়ে। তার জেদের বশেই আজ তার মৃত্যু হয়েছে।

কল দিয়ে যখন আপনকে পাচ্ছিল না। তখন আদি নিজে আপনের কাছে যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু একেবারে কনে সঙ্গে নিয়ে যাবার বার্তাটি বলে আজমল উদ্দীন। ইচ্ছে না থাকা শর্তেও থেকে যেতে হয় আদিকে। কিছুক্ষণ বাদেই রওয়ানা হয় তারা। তনুজা নয়, এখন শুধু মাথায় আপনের কথা ভনভনিয়ে ঘুরছে তার। তনুশ্রীর জন্য আপন নিজে না ভুল কিছু করে বসে। বাড়ি যাওয়ার মাঝপথেই আদি নেমে যায়। একটি টেক্সি নিয়ে সোজা তনুশ্রীর বাড়িতে আসে। বাড়ির ঠিকানা আপনের বন্ধুর কাছ থেকে নিয়েছিল। বাড়িতে কেউ ছিল না। সবাই শশানে গিয়েছে। আদি সেখান থেকে শশানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। মিনিট দশের পর সে পৌঁছে যায়।

শশানের বাহিরে আপন একটি গাছের ডালের ওপর হাত
রেখে ঝাপসা চোখেমুখে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে জ্বলন্ত অগ্নির চিতায় তার ভালোবাসার মানুষটি পুড়ছে, অন্যদিকে তার হৃদয় পুড়ে পুড়ে ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে! এ যে এক করুণ মর্মান্তিক দৃশ্য। আলতোভাবে কাঁধে স্পর্শ পায় আপন। চোখ মুছে ঘুরে তাকিয়ে আদিকে দেখে। হাউমাউ করে কেঁদে উঠে দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে তাকে। আদি আপনের পিঠে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে। আশ্বাস আশা দিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা তার নেই, কাছ থেকে আপনের কষ্টকে অনুভব করা ছাড়া।
________________
রাতে…

আপনকে সঙ্গে নিয়ে আদি বাড়ি ফিরে। তনুশ্রীর বিষয় নিয়ে কেউ কোনো কথা বলে না আপনের সঙ্গে। আপনকে আদির রুমে দিয়ে এসে কাকি মাকে খাবার খাইয়ে দিতে বলে এবং সে আজ রাতে আপনের সঙ্গে থাকবে কথাটি বলে আপনের কক্ষে চলে আসে। আসার আগে আজমল উদ্দীন তাকে কিছু কথা বলতে চেয়েছিল। আদি ক্লান্তির বাহানা দিয়ে এড়িয়ে যায়। আজ বিয়ে ছিল আপনের। যার দরুণ তার রুমেই বাসর ঘর সাজানো হয়েছে। কিন্তু মোড় ঘুরে গেছে। আদির রুম যে তাড়াহুড়ো করে সাজাবে সেই মনমানসিকতা এখন আর কারো মধ্যে নেই। ছোট্টখাটো একটি ঝড় বয়ে গেছে তাদের ওপর থেকে। তাই তাকে বাধ্য হয়ে আপনের রুমে যেতে হচ্ছে। এক রাতেরই তো ব্যাপার। মানিয়ে নিবে সে।
রুমের কাছে আসতেই তনুজার কথা মনে পড়ে তার। একবারের জন্যও কথা তো দূর দেখার সুযোগ হয়নি তাকে।
কি থেকে কি হয়ে গেল ভেবেই আদি সরু নিঃশ্বাস ফেলে প্রবেশ করে রুমে। বিছানার মাঝখান বরাবর মাথায় ঘোনটা টেনে বসে আছে তনুজা। চোখ ঢা’কা, শুধু ঠোঁট ও টানা নথ সহ নাক দেখা যাচ্ছে। আপন কিছুক্ষণ মৌন হয়ে দাঁড়িয়ে রয়। কি বলে শুরু করবে ভেবে পাচ্ছে না। যে-ই মানুষটিকে এতদিন ভাবি বলে সম্মোধন করেছে। আজ সে তার অর্ধাঙ্গিনী! আল্লাহর কি লীলাখেলা। দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে নরম স্বরে বলে,
-“আপনি চেঞ্জ করে শুয়ে পড়ুন। আমি আজ রাতে আপনের সঙ্গে ঘুমাবো।”

প্রতুত্তর আসে না তনুজার কাছ থেকে। সে চুপ করে সেভাবেই বসে রয়। আদি বুঝতে পারে তাকে মেনে নিতে সংকোচ বোধ করছে। আপাতত কিছুটা স্বাভাবিক করতে চায় পরিস্থিতি। সে ফের বলে,
-“আমি আপনাকে নাম ধরে ডাকবো। এতে আপনার কোনো সমস্যা হবে বলে মনে করছি না তনুজা?”

এবার মৃদুস্বরে উত্তর আসে,
-“তনুজা নয়, আমি নবনী।” কথাটি বলে নবনী মাথার ঘোমটা সরিয়ে দৃষ্টি নত রাখে।

আদি যেন ছোট্ট একটা ধাক্কা খেলো। আকস্মিকতায় হতভম্ব চোখে তাকায় সে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় বিস্ময় চোখমুখ কুঁচকে আসে তার। চোখের সামনে তনুজার বদলে সয়ং নবনীকে দেখে চমকে উঠে । আসলেই কি সে সঠিক দেখছে? নজর সরিয়ে নিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে কিভাবে কী হয়েছে। তনুজার স্থানে নবনী কিভাবে এলো? তাহলে কি একটু আগে চাচ্চু আর তখন নিলাজ আঙ্কেল বিয়ে পড়াবার আগে নবনীর কথাই বলতে চেয়েছিল?
.
.
.
#চলবে?

#আমি_তুমিতেই_আসক্ত।
#পর্ব_২১
#সুমাইয়া মনি।

-“আমার কিছু বলার এবং করার কিছু ছিল না। জোরাজুরি করার পরও তনুজা আপু যখন বিয়েতে রাজি হচ্ছিল না, তখন মামা আমাকে আপুর বদলে আপনার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে। আব্বু প্রথমে আপত্তি করে। কিন্তু পরে মামার মিনতীর কাছে হাড় মানতে হয় তাকে। মামা যখন আমার মাথায় হাত রেখে আমাকে বিয়ের কথা বললেন। তার অসহায় চোখ দু’টি দেখে আমি তাকে ফিরিয়ে দিতে পারিনি। সব পিছনে ফেলে রেখে রাজি হয়ে যাই বিয়েতে। বাবা-মায়ের পর মামাকে ভীষণ ভালোবাসি। ভালো লাগছে মামার জন্য কিছু করতে পেরে।” কোমল স্বরে কথা গুলো বলে নবনী মাথা তুলে তাকায় আদির দিকে।

আদি এতক্ষণ নবনীর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে কথা গুলো মনোযোগ সহকারে শুনছিল। মামার জন্য নিজের জীবনকে বিসর্জন দিয়েছে। ভেবেই নবনীর প্রতি শ্রদ্ধা তৈরি হয় তার মনে। নজর সরিয়ে নিয়ে সরু নিশ্বাস ফেলে বলে,
-“আপনার আমার জীবনের মোড় একি ভাবে ঘুরে গিয়েছে। আপনি আপনার মামার জন্য স্যাকরিফাইস করেছেন। আর আমি পরিবারের জন্য।”

-“আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই নাকি করে। ভবিষ্যতে কী হবে সেটা জানি না। আচ্ছা আপনিও কী জানতেন না আপন ভাইয়ার সম্পর্কের কথা?”

-“আপনের এতটা কাছে ছিলাম, ক্লোস ছিলাম। বন্ধুর মতো চলাচল করতাম। অথচ আপন আমাকে তার ভালোবাসার মানুষটির সম্পর্কে কিছুই বলেনি। ভাবতেই কেমন অদ্ভুত লাগে।”

-“না বলার পিছনে হয়তো কোনো গভীর কারণ ছিল। আপনি কি জানতেন না আপনার সঙ্গে আমার বিয়ে হবে? কেননা আপনার বাবা,চাচ্চু তারা তো বিষয়টি জানতো।”

-“আমি সত্যিই জানতাম না বরের মতো কনেও পাল্টে গেছে। আপনার মামা বিয়ে পড়ানোর আগে আমাকে বলতে চেয়েছিল, আমি শুনিনি। কিছুক্ষণ আগেও চাচ্চু মেবি আপনার কথাই বলার জন্য ডেকেছে। ইগনোর করে চলে এসেছি। তাই তো আপনাকে দেখে আমি শকট!” কথা গুলো বলে আদি খাটের এপাশে এসে বসে।

নবনী দৃষ্টি নত করে নিরব হয়ে রয়। তাঁদের মধ্যে এখন নিরবতা বিদ্যমান। সেকেন্ড কয়েক অতিবাহিত হতেই আদি ফের বলে,
-“একটা প্রশ্ন করি?”

নবনী চোখ তুলে তাকায়। আদির নজর সামনের দিকে। নরম স্বরে বলে,
-“জি, প্রশ্ন করতে পারেন।”

-“আপনি কী আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবেন?”

মিনিট কয়েক চুপ করে রয় নবনী। প্রতিত্তোরে কি বলা উচিত বুঝতে পারছে না। মিনিট কয়েক পর দৃষ্টি নিচু করে নিরবে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
-“নাহ! এ বিয়েতে বড়দের দোয়া রয়েছে। তাদের নির্দেশে বিয়ে হয়েছে। তাই আমি এটা কখনোই চাইবো না। এটা আমার নিয়তি। আমি নিরদ্বিধায় মেনে নিতে প্রস্তুত আছি।”

নবনীর কথায় আদি স্বস্তির প্রশ্বাস ফেলে। যেভাবেই হোক, জানা বা অজানা বশে বিয়ে তো হয়েই গেছে। সে নিজেও চায় না ডিভোর্স হোক। সময় দিবে! প্রচুর সময় দিবে, যাতে করে তাদের সম্পর্কটা আর দশটা স্বামী – স্ত্রীদের মতো সুন্দর হয়। আদি ভাবনা ফেলে বলে,
-“আমি চাই আগে আমাদের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং তৈরি হোক। আমাকে মেনে নিতে আপনার সময় লাগবে। আপনি যতদিন চান সময় নিতে পারেন। আমার কোনো আপত্তি নেই।”

আদির এ কথাটিতে নবনীর উদ্‌বেগহীনতা কেঁটে যায়। বুঝতে পারে আদিও ডিভোর্সের ব্যাপারে আগ্রহী নয়। সে আরো ভাবে স্বামী স্ত্রীর পবিত্র বন্ধনকে অস্বীকার করবে না। সময় দিবে! তাঁদের এই সম্পর্ককে সময় দিবে, যেন পবিত্র বন্ধনটি অটুট হয় চিরকাল। অতীত ভুলে গিয়ে ভবিষ্যতকে আঁকড়ে ধরে সে বাঁচার চেষ্টা করবে।

-“শুনুন?” আদি নরম স্বরে নবনীকে ডাকে।

নবনীর ভাবনা থেকে ফিরে আসে। বলে,
-“বলুন?”

-“আমি আপনার নাম ধরে ডাকতে চাই।”

-“জি, ডাকতে পারেন।”

-“আচ্ছা আপনি ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়েন।”

-“হুম!” ছোট উত্তর দেয়।

আদি উঠে এগিয়ে যায় দরজার দিকে। বের হবার আগে বলে,
-“কিছু প্রয়োজন পড়লে আম্মু বা কাকি মাকে বলবেন।”

নবনী মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব জানায়। আদি প্রস্থান করে। নবনী নজর বুলিয়ে নেয় রুমের চারদিক। ফুলদিয়ে রুমটি খুব যত্ন করে জানানো হয়েছে। কিন্তু আফসোস! যাদের জন্য সাজানো হয়েছে তারাই মিসিং। ভাগ্য তাকে আজ অন্যের বাসর ঘরে বসিয়ে রেখেছে। পাশের দেয়ালে আপনের একটি ছবি টাঙানো দেখতে পায়। তনুজার ফোনে আপনের ছবি দেখেছিল, আর এখন ছবিতে দেখছে। সরু নিশ্বাস ছাড়ে সে। খাট থেকে নেমে লাগেজ থেকে একটি থ্রিপিস বের করে।
.
খাবার খেতে ইচ্ছে করছে না আদির। এদিকে আপনও খাবার খায় নি। অনেক জোরাজোরি করারও পরও কিছু মুখে তুলেনি সে। আদি রুমে এসে দেখে আপন ফোন হাতে নিয়ে এক পলকে চেয়ে আছে। চোখেমুখে তার কান্নার ছাপ। আদি হেঁটে কিছুটা কাছে আসতেই স্ক্রিনে একটি মেয়ের ছবি দেখতে পায়। সে বুঝতে পারে মেয়েটি তনুশ্রী। আদি পাশের টেবিল থেকে খাবারের প্লেট নিতেই আপনের দৃঢ় কন্ঠে স্বর শুনতে পায়। বলে,
-“খাব না আদি। জোর না করলে খুশি হবো।” ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বলে।

আদি খাবারের প্লেট পাশে রেখে দেয়। আপনের কাঁধে হাত রেখে বলে,
-“জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না। তুই,আমি এটা জানি। তবুও……”

-“আমি থেমে থাকতে চাই নি। আমাকে বাধ্য করেছে তনুশ্রী! কেন করল এটা আদি। বল? একটু বল না ভাই? ওর সঙ্গে আমার মিল না হলেও এটা ভেবে খুশি থাকতাম, যাক ও ভালো – খারাপ যে ভাবে আছে, আছে তো। কিন্তু এখন? তনুশ্রী এ ভুবনে নেই ভাবতেই আমার দুনিয়া অন্ধকার হয়ে আসে। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।” আদির দিকে তাকিয়ে কেঁদে বলে আপন।

আদি চুপ করে ফ্লোরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ রাখে। উত্তর দেওয়ার মতো জবাব তার জানা নেই। আপন চোখ মুছে স্বাভাবিক কন্ঠ এনে বলে,
-“আমার ওপর তোর রাগ আছে জানি। তনুশ্রীর বিষয়টি চাপিয়ে গিয়ে মিথ্যে বলেছি তাই। কিন্তু ভাই বিশ্বাস কর, আমি ওঁকে পুরোপুরি ভুলে যেতে চেয়েছিলাম। চেষ্টা করছিলাম। এর মধ্যে তনুশ্রী….! ” বাকিটা বলার আগেই ফের তার গলা ধরে আসে। বহু কষ্টে কান্না আটকিয়ে পুনরায় বলে,
-“আমাকে মাফ করিস, মিথ্যে বলার জন্য।”

-“এসব শুনতে চাই না আমি। যা হবার হয়ে গেছে। আমি শুধু চাই তুই নতুন করে আবার শুরু কর। এখনো গোটা ভবিষ্যত তোর পড়ে আসে সামনে।”

আদির দিকে অসহায় চোখে তাকায় আপন। আদি ফের বলে,
-“শুয়ে পড়। ফোন দে আমার কাছে।” বলেই ফোন নিয়ে নেয় আদি।

আপন অশ্রুসিক্ত চোখে ছোট বাচ্চাদের মতো গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়ে। আদি পাশে শুয়ে লাইট অফ করে দেয়। পুরো রুম জুড়ে অন্ধকার নেমে আসে। আদি চিৎ হয়ে শুয়ে এক হাত কপালের ওপর রেখে আজকের ঘটনা পুনরায় ভাবতে থাকে। জীবন কত বিচিত্রময়। কখন কোথা থেকে মোড় ঘুরে যায় কেউ বলতে পারে না।
___________________
সকালে…

মাথায় আলতো হাতের স্পর্শে নবনীর ঘুম ভেঙে যায়। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে রানী খাতুন তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। নবনী তড়িঘড়ি করে উঠে বসে ওড়না ঠিক করে নেয়। কিছুটা লজ্জা অনুভব করে সে। রানী খাতুন মৃদু হেসে বলেন,
-“সমস্যা নেই বৌমা, আমাকে নিজের মা মনে করতে পারো।”

নবনী একবার তাকিয়ে নজর সরিয়ে নেয়। কিছু বলে না। সে আবার বলে,
-“আজ এ বাড়িতে তোমার প্রথম দিন শুরু। দোয়া করি, সুখি হও তুমি। এটা তোমার ছোট মায়ের আর্শীবাদ!”

-“জি, দোয়া করবেন।” নরম স্বরে বলে উঠে নবনী।

সে মুচকি হাসে। তখনই রুমে প্রবেশ করে আদির মা রুবিনা বানু।
-“রানী নবনী কি ওঠেছে ঘুম থেকে?” মুখে আওড়াতে আওড়াতে এগিয়ে আসেন।

দু’জানর দৃষ্টি তার ওপর পড়ে। রুবিনা বানু তাদের নিকট এসে ফের বলেন,
-“তাহলে তুমি উঠে গেছো। আসলে তোমার কোনো ননদ নেই। তাই ননদের দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হবে। কিন্তু এখন যখন তুমি আমাদের বাড়িতে এসেছো। মেয়ের শখ পূরন হবে আমাদের।”

নবনী নরম ভঙ্গিতে তাকিয়ে তার কথা শুনে। রানী খাতুন বলেন,
-“অনেক ঝড়ঝাপটা বয়ে গেছে তনুজার ওপর, সঙ্গে তোমারও। জানি না মেয়েটা এখন কেমন আছে। তোমার জন্যও খারাপ লাগছে। এত তাড়াতাড়ি নিশ্চয় তোমার আব্বু, আম্মু বিয়ে দিতে চায় নি।”

-“এটা আমার ভাগ্যে ছিল আন্টি।”

-“আন্টি নয় ছোট মা বলো। আর ওনি তোমার শ্বাশুড়ি। তাকে বড় মা বলে ডাকবে।”

-“জি, ছোট মা।”

-“এবার উঠে যাও। নাস্তা বানানো শেষ। গল্পগুজব পরে হবে।”

-“আচ্ছা।”

দু’জনেই প্রস্থান করে। নবনী ভাবে এক মা ফেলে এসেছে, দু মা পেয়েছে। তারা নিশ্চয় তাকে যথেষ্ট স্নেহ করবে। সংসার সম্পর্কে ধারণা নেই বললেই চলে তার। তবুও সে চেষ্টা করবে সব কিছু গুছিয়ে নেওয়ার। সঙ্গে পড়াশোনাও রানিং করবে। এই বিষয়ে আদির সঙ্গে আলাপ করবে ভাবে সে।
.
.
.
.
#চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে