#আমি_তুমিতেই_আসক্ত।
#পর্ব_৬
#সুমাইয়া মনি।
অ্যানিমেল’স শপের সামনে দাঁড়িয়ে আছে নবনী, মায়া। থ হয়ে গেছে মায়া। নবনীর চোখেমুখে খুশির রেখা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে সে। কিছুদিন ধরেই এ মেয়ের স্বভাব,আচরণে পরিবর্তন ঘটেছে। তার এক মাত্র কারণ নিভ্র। নিরবতা কাটিয়ে মায়া প্রশ্ন করে,
-“এখানে কেন এসেছি আমরা?”
-“কুকুরনি কিনতে।”
-“কী, কুকুরনি?” অবাক হয়ে চেয়ে রয় মায়া।
বাকি কথার উত্তর না দিয়ে নবনী মায়ার হাত ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে আসে। বামেই শপের মালিক বসে হিসাবের খাতা নাড়াচাড়া করছিল। মধ্য বয়স্ক লোকটি ওদের দু’জনকে ভেতরে আসতে দেখে চোখ তুলে তাকালেন। তীক্ষ্ণ নজরে দু’জনকে পর্যবেক্ষণ করে জিজ্ঞেস করলেন,
-“বলুন আপনাদের কী দরকার?”
-“আমাদের একটি কুকুরনি দরকার।”
সপ্রশ্ন সূচক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে লোকটি। কুকুর,কু*ত্তা,কু*ত্তি এমন আরো বিভিন্ন নাম সে কুকুরের শুনেছে। কিন্তু আজ হঠাৎ কুকুরনি নাম শুনে কিছুটা অবাক হলেন। বলল,
-“কুকুরনি বলতে কি বুঝায়?”
-“মেয়ে কুকুর। যদি ছেলে কুকুর হয়,তাহলে মেয়ে কুকুরের নাম অবশ্যই কুকুরনি হবে।”
-“কথায় লজিক আছে। ভেতরে আসো দেখাচ্ছি কুকুরনি।” বলেই লোকটি হিসাবের খাতা টেবিলের ওপর রাখে। নবনী লোকটির পিছু যেতে নিলে মায়া হাত ধরে থামিয়ে দেয়। আস্তেধীরে বলে,
-“হচ্ছেটা কি বলবি? তুই কুকুর কেন কিনছিস?”
-“প্রথমত আমি কুকুরনি কিনছি। দ্বিতীয় নিভ্র স্যারের কুকুর টমির বাচ্চার জন্য।”
-“নিভ্র স্যারের টমির বাচ্চার জন্য তুই কেন কুকুরনি কিনবি?”
-” টমির বাচ্চা আমাকে দেখলেই ঘেউঘেউ আওয়াজ তুলে ভয় দেখায়। তাই ওর মুখ বন্ধ করতে কুকুরনি কিনছি।”
-“আমি বুঝতে পারছি না। টমির বাচ্চা নাকি টমি?”
-“টমি! টমির বাচ্চা বলে তো আমি ওঁকে গালি দিয়েছি।”
-“আল্লাহ! বোন চল এখান থেকে। কুকুর-টুকুর কিনিস না।”
-“আমার শর্ত অনুযায়ী আমার সঙ্গে থাকবি। সো চুপ।”
-“বালের শর্ত।” মুখে বিরক্ত বোধ নিয়ে বলে মায়া।
বেশ সুন্দর মাঝারি আকারের সাদা রঙের মেয়ে কুকুর কিনে নবনী। শপ থেকে বের হয়ে ওরা রিকশায় ওঠে। সারা রাস্তায় কুকুরটির সঙ্গে সে কথা বলেছে। কুকুরের সঙ্গে এমন আদিখ্যেতা দেখে গা গুলিয়ে আসছে মায়ার। শুধু কিছু বলতে পারছে না। নবনী কুকুরটির ছোট করে একটি নামও দেয় ক্যাথি। মায়া মাঝ পথে নেমে বিদায় নিয়ে চলে যায়। সেই রিকশা করে নবনী বাড়ি ফিরে। আজ একবার কলিং বেল বাজাতেই দরজা খুলে দেয় নিয়ান। নবনীর কোলে কুকুর দেখে চিৎকার দিয়ে আম্মুকে ডাক দেয়। এক চিৎকারে সে হাজির। প্রথমে তো সে গম্ভীর চোখেমুখে কুকুরটির দিকে তাকিয়ে থাকে। পরক্ষণে হেসে দিয়ে বলে,
-“বাহ! কুকুরটি বেশ সুন্দর। কোথায় পেলি নবনী।”
-“কিনেছি আম্মু।”
-“তাই?” বলতে বলতে কুকুটিকে কোলে তুলে নেয় নিলুফা বেগম। ক্যাথিকে যে তারও মনে ধরেছে সেটা বুঝতে সমস্যা হয়না নবনীর। সে নিজেই ক্যাথিকে গোসল করিয়ে দেয়। নবনী রুমে এসে জানালার সামনে দাঁড়িয়ে নিভ্রর বারান্দার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসে। এ হাসির মানে যে টমিকে জব্দ করা সেটা বুঝাই যাচ্ছে।
————–
বিয়ের শপিং করতে এসেছে আমেনা বেগম ও খোদেজা বেগম। সঙ্গে আদি,আপনও এসেছে। অবশ্য আদির আসার ইচ্ছে থাকলেও আপনের ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু আদির জোরাজোরি আসতে বাধ্য হয়। তনুজার জন্য গহনা,শাড়ি কিনার জন্য তারা আলাদা মেয়েদের কালেকশনে যায়।
আর আদিরা ছেলেদের কালেকশনে আসে। আদি শেরওয়ানি,জুতো আরো বিভিন্ন জিনিস দেখাচ্ছিল আপনকে। আপন সব আদির পছন্দের ওপর ছেড়ে দেয়। নিজের পছন্দ মতোই আপনের জন্য বিয়ের যাবতীয় সব কিছু কিনে। বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় দুপুর গড়িয়ে যায়। সবাই বেশ ক্লান্ত। তখন তনুজা কল দেয় আপনকে। বিরক্তিতে ফোন সাইলেন্ট করে রেখে দেয় আপন। আদি আপনের বিরক্তির কারণ বুঝতে পারে না। বলে,
-“কোনো সমস্যা? ”
-“তনুজা কল দিয়েছে। সারাক্ষণ ফোনে ঘ্যানঘ্যান করতে ইচ্ছে করে না। এখন তো মোটেও না।” বিরক্তিতে নাকমুখ কুঁচকে বলে।
-“ফোন দে,আমি বলে দিচ্ছি।”
-“নে,যা বলার বল।” বলেই ওঠে চলে যায় ওয়াশরুমে।
আদি তনুজার সঙ্গে কথা বলে। বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় তাঁদের মাঝে। আপন ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে তাদের মধ্যে এখনো ফোনালাপ চলছে। এত গুরুত্ব দেয় না সে।
_______
তার পরদিন…
কলেজের ক্যান্টিনে মুড অফ করে বসে রয়েছে নবনী। একটা বার্গার অর্ডার করে নীরবে খাচ্ছে। মায়া নিজেও বার্গার অর্ডার করেছে। কিন্তু না খেয়ে নবনীর দিকে বিস্ময় চোখে তাকিয়ে আছে। কলেজে আসার পর থেকেই নবনীর মুখ কালো। তেমন একটা কথাও বলেনি আজ। নবনীকে এমন চুপচাপ থাকতে দেখে মনে সন্দেহর বীজ দানা বুনতে শুরু করেছে। কাল অবধি তো ভালোই ছিল। আজ হঠাৎ কি হলো?
ভ্র বাঁকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় মায়া,
-“কি হয়েছে তোর? মুড অফ কেন?”
নবনী ভারী নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। আনমনে বলে,
-“নিভ্র স্যারকে না দেখতে পেলে, আমি সুইসাইড খাব।”
চটাস করে কপালে হাত রাখে মায়া। এতক্ষণে মূল কারণ উদঘাটিত হলো। প্রেমের পাগল দেখেছে, কিন্তু এমন পাগল দেখেছে কি-না সন্দেহ! মায়া কপালের হাত পাশে সরিয়ে নরম স্বরে বলে,
-“আপাতত বার্গার খা। পরে সুইসাইড খেয়ে নিস।”
-“তুই কেমন বান্ধবী,প্রিয় বান্ধবীকে সুইসাইড খেতে বলছিস।”
-“আর কি বলতাম বোইন।” কপালের ওপর থেকে হাত সরিয়ে কান্নাস্বরে বলে মায়া৷
-“নিভ্র স্যারের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেবো। এই কথাটা বলে আমাকে সান্ত্বনা দিতে পারতি।” রাগ জেড়ে বলে।
-“তাকে আমি কোথায় পাব? ”
-“জানি না। আজ সকালে নিভ্র স্যারকে দেখতে পাইনি। তাই মনটা আমার অশান্ত,অস্থির।” মন খারাপ করে বলে।
-“এমন পাগলামি করিস না। নিভ্র স্যার তোকে কখনোই ভালোবাসবে না।”
-“তোকে এটা জিজ্ঞেস করেছি?” দাঁত কিড়মিড় করে বলে নবনী।
মায়া নবনীর রাগ দেখে ভীত বনে যায়। কিছু না বলে বার্গার হাতে নিয়ে কামড় দিতে যাবে তখনই নবনী ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। বলে,
-“বার্গার রাখ,চল আমার সঙ্গে।”
-“কোথায় যাব,আগে খেতে তো দে।”
-“খাওয়া বন্ধ।” বলেই মায়ার হাত ধরে ক্যান্টিনের বিল মিটিয়ে বাহিরে আসে। একটি রিকশা ডেকে দু’জনেই চড়ে বসে।
কিছুক্ষণ পর রিকশা থানার সামনে এসে দাঁড়ায়। এটা সে-ই থানা। যেখানে আরেকবার এসেছিল। মায়ার চিনতে ও বুঝতে কষ্ট হলো না। বিরক্ত সঙ্গে রাগ নিয়ে নবনীকে দেখে চলেছে।
ভেতরে আসে তারা। আজকে তেমন মানুষজন ছিল না। যে যার মতো কাজে ব্যস্ত ছিল। সেদিনের সেই জলিল হাসান একজন লোকের হাত টেবিলের ওপর রেখে কলম ওপরে তাক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এটা কমন। আরো অনেক ভাবে টর্চার করা হয় জিজ্ঞাসাবাদের সময়। তাই ওরা তেমন কিছু মনে করে না।
-“ক,তোর লগে আর কেডা কেডা যুক্ত আছে। নাম ক। নাইলে কলম হাতের মধ্যে ঢুকাইয়া দিমু।”
মুখ খুলে না লোকটি। মুড নিয়ে বসে থাকে। দেখে নবনীর রাগ হয়। দ্রুত ব্যাগের ভেতর থেকে একটি পেন্সিল বের করে লোকটির হাতের মাঝ বরাবর ঢুকিয়ে দেয়। লোকটি ব্যথায় জোরে চিৎকার দিয়ে ওঠে। পুরো থানা যেন কেঁপে ওঠে তার আর্তচিৎকারে। হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে। পুরোপুরি ভেতরে ঢুকেনি। অর্ধেকের কম ঢুকেছে। আশেপাশে সবার নজর এখন নবনীর ওপর। জলিল হাসান রীতিমতো আশ্চর্য নবনীর এমন কাণ্ডে। যেটা করার সাহস আপাতত তার মধ্যে ছিল না। সেটা নবনী করে দেখিয়েছে। সে চিনে ফেলে নবনী এবং মায়াকে। মায়া মুখ হা করে তাকিয়ে আছে নবনীর পানে। নবনী জলিল হাসানের উদ্দেশ্যে বলে,
-“আঙ্কেল শুভ কাজে দেরি করতে নেই। এবার সে সব স্বীকার করবে। আচ্ছা আঙ্কেল নিভ্র স্যার ভেতরে আছেন?”
জলিল হাসান এখনো থ হয়ে তাকিয়ে আছে নবনীর দিকে। বলতে হবে মারাত্মক সাহস আছে মেয়েটির। তাইতো এমন কাণ্ড করল। সে ভাবনা কাটিয়ে ছোট্ট করে “হয়” উচ্চারণ করে। নবনী তাকে ধন্যবাদ দিয়ে মায়াকে সঙ্গে করে ভেতরে প্রবেশ করে। আশেপাশের সবাই নবনীর সাহসের প্রশংসা করছে। এটা-ওটা বলছে।
নিভ্র মনোযোগ দিয়ে একটি ফাইল পড়ছিল। তখনই নবনী ও মায়ার আগমনে চোখ তুলে তাকায়। নবনী ভেতরে এসে মাথা কিছুটা নিচু করে দাঁড়ায়। দেখে মনে হচ্ছে সে নিভ্রকে দেখে ভয় পাচ্ছে। অথচ, বাহিরে সে বড়ো কাণ্ড বাঁধিয়ে এসেছে। সব জায়গায় সাহসীকতার পরিচয় দিলে-ও, নিভ্রর কাছে সে ভীতিগ্রস্ত! নিভ্র কপাল কোঁচকায়। নবনীকে এখানে দেখে কিছুটা অবাক। শান্ত কন্ঠে বলে,
-“এখানে কেন এসেছো?”
নবনী আমতা আমতা কেটে জবাব দেয়,
-“আমার চুরি হয়ে গেছে?”
-“আমার চুরি হয়ে গেছে বলতে কী বুঝাতে চাইছো?”
-“আমার…”
-“হুম,তোমার?”
-“আমার…..”
-“সরাসরি বলো নবনী।” কিছুটা ধমকের স্বরে বলে নিভ্র।
নবনী ভয়তে চট করে বলে দেয়,
-“আমার বই চুরি হয়েছে।” বলেই চোখ জোড়া বন্ধ করে নেয়।
মায়া সরু চোখে নবনীর দিকে তাকায়। সে প্রচণ্ড বিরক্ত।
নিভ্র চেয়ারে হেলান দিয়ে কলম হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করে বলে,
-“আমি মোটেও মজার মুডে নেই। আই থিঙ্ক, তুমিও মজা করছো না।”
-“আসলে স্যার….”
-“হেই নিভ্র…. ” বলতে বলতে তড়িঘড়ি করে ভেতরে প্রবেশ করেই নবনী এবং মায়ার ওপর নজর পড়ে জিনানের। এতে করে বাকি কথা না বলেই থেমে যায়। নবনী,মায়া জিনানকে দেখে চিনতে পারে। নবনী ক্ষোভ নিয়ে তাকায়। নিভ্র জিনানের উদ্দেশ্য করে বলে,
-“ওয়েট তোর সঙ্গে পরে কথা বলছি।” তারপর নবনীর দিকে তাকিয়ে বলে, “হ্যাঁ বলো নবনী কী যেন বলছিলে?”
-“ভুলে গেছি।” নিচুস্বরে বলে।
নিভ্র কপালে বুড়ো আঙ্গুল দ্বারা চুলকিয়ে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে। গম্ভীর কণ্ঠে বলে,
-“যাও এখান থেকে। নেক্সট টাইম যেন থানায় না দেখি।”
-“ওকে স্যার।” বলেই চলে যেতে নিলে নবনী জিনানের একটু কাছে ঘেঁষে আস্তে করে বলে যায়,
-“তোর নানি পাগল।”
জিনানের চোখ বেরিয়ে আসার জোগাড়। চোখেমুখে আকস্মিক ভাব! এই মেয়ের এখনো তাকে পাগল বলা কথাটি মনে ধরে বসে আছে, জানা ছিল না। ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে জিনান। নিভ্রর ডাকে জিনান ঘুরে তাকায়।
-“জিনান?”
-“হুম…”
-“বোস!”
জিনান এসে নিভ্রর পাশের চেয়ারে বসে। নিভ্র জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,
-“যাওয়ার আগে নবনী তোকে কিছু একটা বলেছে। রাইট?”
-“তোর নানি পাগল বলেছে। সেদিন ওঁকে পাগল বলা কথাটি আজও মনে রেখেছে। হাউ স্ট্রেঞ্জ!”
-“তোকে একটা জিনিস দেখাই।” বলেই নিভ্র ল্যাপটপের ভেতর থেকে কিছুক্ষণ আগের ফুটেজ বের করে জিনানকে দেখায়। যেখানে আসামির হাতে পেন্সিল ঢুকানোর দৃশ্য দেখতে পেয়ে জিনান বিস্মিত! দেখা শেষ হলে নিভ্র ল্যাপটপ ঘুরিয়ে ফেলে ওর দিকে। জিনান বুকে হাত রেখে বলে,
-“ভাভারে! এই মেয়ের তো দেখছি সাংঘাতিক সাহস।”
-“ইয়েস! কিন্তু আমার সামনে আসলেই ওর সাহস উবে যায়। ”
-“এমনটা কেন? ভয় পায় তোকে তাই?”
-“মেবি!”
-“যাই হোক। এই মেয়ের থেকে দূরে থাকিস। কিন্তু ওরা এসেছিল কেন?”
-“বই চুরি হয়ে গেছে বলতে।”
জিনান হেসে ফেলে। বলে,
-“আজ-কাল বই চুরির রিপোর্ট লিখছিস নাকি?”
-“নাহ!”
-“নাম কী ওদের?”
-“নবনীতা। বান্ধবীর নাম মায়া।”
-“মায়ার চেহারা মায়াবী। ভালো লেগেছে।”
-“প্রেমে পড়িস না। ভালোলাগা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রাখ। নবনীতা জানতে পারলে, পরবর্তীতে পেন্সিল তোর হাতের মধ্যে ঢুকাবে।” দুষ্টুমি করে বলে নিভ্র।
-“ধুর শালা।” নিভ্র হাসে। জিনানও হেসে দেয়।
.
.
.
#চলবে?
কার্টেসী ছাড়া কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ।