আমিরাহ্ পর্ব-১৩+১৪

0
528

#আমিরাহ্

১৩,

পারিবারিক অফিসঘরে যখন আমিরাহ্ র ডাক পড়ল তখন সে পড়াশোনায় ডুবে ছিল। আব্বাস তার জন্য তিনজন গৃহশিক্ষিকার ব্যবস্থা করেছেন– গণিত, ইংরেজি এবং সমকালীন ও সাধারণ জ্ঞান। কুরআন তিলাওয়াত তো সে আগেই শিখেছিল। এখন এইসব নতুন জ্ঞানের সাথে তার পরিচয় ঘটছে। সে খুব মনোযোগ ও আনন্দের সাথে পড়াশোনা করছে। পাশাপাশি সে নিজেকেও বেশ বদলে নিয়েছে। আল আবাদি পরিবারের ছোটো বেগম হিসেবে বেশ গয়না পরে রানির মতো সেজেগুজে ঘুরে বেড়ায়। সে কোন এক রুপকথার গল্পে পড়া প্রাসাদে বন্দি দুঃখী রানির সাথে নিজের মিল খুঁজতে খুব পছন্দ করে।

দুপুরবেলা সবাই যখন বিশ্রাম নিচ্ছিল, আমিরাহ্ তখন শিক্ষিকার দেওয়া বাড়ির কাজ তৈরি করছিল। এমন সময় নুঙ এসে জানাল আব্বাস আল আবাদি তাকে অফিসঘরে ডাকছেন।

বিশাল অফিসঘরের খয়েরি রঙের গোড়ালি ডুবে যাওয়া নরম কার্পেটে আমিরাহ্ প্রথমবার পা রাখল। এই ঘরে যাবতীয় ব্যাবসায়িক আলোচনা, হিসেব-নিকেশ চলে। বাড়ির মেয়েরা এ ঘরে তেমন একটা আসে না। জানালায় ঝোলানো ভারি মখমলের খয়েরি পর্দা ভেদ করে মরুর দুপুরের কড়া রোদের আঁচ চলে আসছে। বাইরে হু হু শব্দে বয়ে চলছে তপ্ত মরু হাওয়া। সাথে উড়িয়ে নিয়ে চলেছে বালিরাশি। এ হলো সংক্ষিপ্ত মরুঝড়, হুটহাট শুরু হয়ে হঠাৎই থেমে যায়। এসময়ে আর বাইরে থাকার উপায় নেই।

বাইরে গণগণে চুল্লীর উত্তাপ থাকলেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিস কক্ষে আরামদায়ক শীতলতা বিরাজমান, সেই সাথে পিনপতন নীরবতা । আব্বাস পুদিনা চা খাচ্ছিলেন আর কী যেন লিখছিলেন। আমিরাহ্কে দেখে হাসলেন,

– কেমন আছ আমিরাহ্? তোমার সাথে তো আমার দেখাই হয় না।

– জি ভালো আছি। আসলে আপনি তো ব্যস্ত থাকেন। আর আমিও পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি।

– ভালো কথা। তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে? তোমরা শিক্ষিকারা ঠিকমতো বোঝাতে পারছে তো?

– জি তারা অনেক ভালো পড়াচ্ছেন।

– আর, এ বাড়িতে কেমন লাগছে? কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো? কোনো ধরণের সমস্যা হলে আমাকে জানাবে।

– জি জানাব। আপনি আমাকে কি বিশেষ কিছু বলবেন বলে ডেকেছেন?

– হুম। আমাদের নিকাহ্ এর ছয়মাস হয়ে গেল। এর মাঝে তুমি একবারও তোমার বাবার বাড়ি যাওনি। এমনকি গত সপ্তাহের ইফতারের দাওয়াতে যখন তারা আসলেন তখনও নাকি তুমি ঠিকভাবে তাদের সাথে কথা বলোনি। কেন আমিরাহ্? এখনও কি তুমি রাগ পুষে রেখেছ? আমাদের নিকাহ্ র কারণে কি এখানে তোমার খুব অসুবিধা হচ্ছে?

– বিষয়টা অসুবিধার না। বিষয়টা অপমানের। তারা তাদের নিজের মেয়ের সওদা করেছে। নিজেদের লাভের চিন্তা করে আমাকে আপনার সাথে নিকাহ্ দিয়েছে। তারা আপনার ভালোমানুষির ফায়দা নিয়েছে। এমনভাবে আপনার সামনে আমাকে উপস্থাপন করেছে যে আপনি আমাকে কোনো অসহায়, দুস্থ, বয়ষ্ক নারী ভেবে নিকাহ্ করেছেন। অথচ একটাবার আপনার সামনে আমার বয়স উল্লেখ করেনি। আর আমার মতামতের তো তোয়াক্কাই করেনি। আমি তাদের কখনোই মন থেকে ক্ষমা করতে পারব না।

– আমিরাহ্, বুঝলাম তোমার সাথে অন্যায় হয়েছে। যা ঘটে গেছে চাইলেই তো তা বদলানো যাবে না। তাদের মাফ করে দাও। ক্ষমা মহৎ গুণ।

আমিরাহ্ চুপ করে থাকল।

– আচ্ছা মাফ করতে ইচ্ছা না করলে করো না। তোমার বাবারবাড়ি না যেতে চাইলে যেও না। তবে সামাজিকতা পালন তো করতেই হবে। তারা আমাদের অতিথি হয়ে এসেছিলেন। তাদের সাথে অথিতি হিসেবেই ভালো ব্যবহার করতে। আগামিকাল তোমার বাবার বাসায় আমাদের সপরিবারে ইফতারের দাওয়াত। আমি চাইব তুমিও যাবে। ইফতার শেষে ইচ্ছা করলে বেড়াতে পার, না ইচ্ছা করলে আবার আমাদের সাথেই চলে আসবে।

আমরা সামাজিক জীব আমিরাহ্। সমাজে বাস করতে হলে আমাদের অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। এখানে আমরা ইচ্ছামতো আচরণ করতে পারি না। যা ইচ্ছা হলো করলাম, যেমন খুশি তেমন চললাম, যা খুশি তাই বলে দিলাম– এটা আসলে ঠিক না। সমাজে থাকতে হলে সমাজের কিছু নিয়ম মেনেই চলতে হবে। তা নাহলে তো আমাদের মাঝে আর বন্য পশুর মাঝে কোনো পার্থক্য থাকবে না। আমি কি তোমাকে বোঝাতে পেরেছি?

– জি বুঝতে পেরেছি। আপনি চিন্তা করবেন না। আমি আগামিকাল আপনাদের সাথে যাব। তবে সেখানে কিন্তু আমিরাহ্ যাবে না, যাবে আল আবাদি পরিবারের ছোটো বেগম। আমি তাহলে এখন আসি।

– আমিরাহ্, একটু দাঁড়াও। তোমার কথায় স্পষ্ট বুঝতে পারছি তুমি মনোকষ্টে আছ। এভাবেই কী তুমি সারাজীবন কাটাতে চাও? তুমি যদি চাও এ সম্পর্কের বাঁধন আমি ছেড়ে দেব। তোমার অনিচ্ছায় তোমাকে একপ্রকার বন্দি বানিয়ে রাখার আমার কোনো ইচ্ছা নেই। তুমি কি মুক্তি চাও?

আমিরাহ্ একটু কেঁপে উঠল। এসব সে কখনও ভাবেনি। মেয়েরা সহজে বিচ্ছেদের কথা ভাবে না, ভাবতেও পারে না। হঠাৎ এরকম প্রশ্ন সামনে আসলে তারা হকচকিয়ে যায়। আমিরাহ্ ও হঠাৎ করে কী বলবে ভেবে পেল না। আব্বাস তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন উত্তরের অপেক্ষায়।

আমিরাহ্ তার প্রশ্নের জবাব খুঁজতে লাগল। এখান থেকে মুক্তি দিলেই কী সে মুক্ত হয়ে যাবে? এই যে সমাজের কথা আব্বাস বললেন, সেই সমাজের প্রশ্নের আঘাতে কি আমিরাহ্ টিকে থাকতে পারবে? আর তাছাড়া তারপরে সে কোথায় যাবে? সেই বাবারবাড়িতেই ফিরতে হবে। তারা নিশ্চয়ই তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে না। এবার হয়তো আশি বছর বয়সী কারো সাথে নিকাহ্ দেবে। অথবা কোনো লম্পটের বেগম হয়ে দিনরাত নির্যাতন সহ্য করতে হবে।

এখানে আমিরাহ্ তো সবদিক থেকেই বেশ ভালো আছে। শুধু তার স্বামীর বয়স বেশি। এটা তো আরব সমাজে খুবই স্বাভাবিক বিষয়। সে যদি শুধু এই কারণে তালাক নিতে চায় তাহলে সমাজ সব দোষ তার কাঁধেই চাপিয়ে দেবে। এমনিতেই দুনিয়ার সব দোষের বোঝা বহন করার দায়িত্ব তো মেয়েদেরই। জোরাল কোনো কারণ ছাড়া আব্বাস আল আবাদির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সমাজের মানুষের কথার আঘাতেই সে মরে যাবে।

– না, আমি কখনও সেটা কল্পনাতেও ভাবি না। এত মানুষ আপনার দয়ায় বেঁচে আছে। আমি থাকলে কি খুব সমস্যা হবে? আমাকে নাহয় আপনার মহলের আশ্রিতা হিসেবেই থাকতে দিন। দরকার হয় আপনি আমার শিক্ষক বাদ দিয়ে দিন।

– এটা কেমন কথা? আমি কি বলেছি তোমার এখানে থাকা বা পড়াশোনা করাতে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে? তোমার মনমড়া ভাব দেখেই আমি একথা বলেছি। আমার সাথে সম্পর্কিত প্রত্যেকেই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যা বলেছি ভুলে যাও। পড়াশোনায় মন দাও। আমি তোমার মাঝে বিবি খাদিজার ছায়া দেখতে পাই। তেমনই বুদ্ধিমতি আর বিচক্ষণ তুমি। জ্ঞান আহরণ করে নিজেকে আরও শাণিত করো। আমি তোমার পাশেই আছি। যাও পড়ো গিয়ে।

আমিরাহ্ ধীর পায়ে চলে গেল। আব্বাস আল আবাদি আমিরাহ্ এর গমনপথের দিকে চেয়ে রইলেন। মেয়েটা মনে খুব আঘাত পেয়েছে। আব্বাস চাইলেও সেই আঘাতে মলম লাগাতে পারছেন না। আসলে আমিরাহ্কে নিজে নিকাহ্ না করে তার কোনো অল্পবয়সী কর্মচারির সাথে নিকাহের আয়োজন করতে পারতেন। কিন্তু তখন চোখের সামনে আমিরাহ্ এর যোগ্য সুপাত্র খুঁজে পাচ্ছিলেন না। আর তাই হুট করেই মুখ থেকে তার নিজের বিয়ের কথা বের হয়ে গেল। এখন আর তা ফেরাবার সুযোগ কোথায়? যেভাবে চলছে চলুক। দেখা যাক নিয়তি কী পরিকল্পনা করে রেখেছে তাদের নিয়ে।

চলবে…

১৪,

– ছোটো উম্মী, আরে পড়া রাখ তো। কী সারাদিন বইয়ে মুখ গুজে থাক? দারুণ একটা খবর আছে।

আয়শা ভীষণ উত্তেজিত। উত্তেজনায় মুখ- চোখ লাল হয়ে গেছে। এই কয়মাসে আয়শার সাথে আমিরাহ্ এর ভালো একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ওর ছটফটে ভাব দেখে আমিরাহ্ হেসে বই বন্ধ করল।

– আচ্ছা এই বই বন্ধ করালাম। বলো কী তোমার দারুণ খবর।

– বাবা বলেছেন আগামি সপ্তাহে আমাদের সবাইকে নিয়ে মক্কা-মদিনা সফরে যাবেন। প্রায় পনেরো দিনের সফর হবে। দুইটা কারাভান নিয়ে যাব আমরা। একটাতে ছেলেরা আরেকটাতে মেয়েরা। কী দারুণ মজা হবে তাই না?

ওদের কথার মাঝেই আব্বাস রুমে আসলেন।

– কী ব্যাপার দুজনে খুব খোশগল্প হচ্ছে বুঝি ?

– বাবা, আমি ছোটো উম্মীকে আমাদের সফরের ব্যাপারেই বলছিলাম।

আব্বাস এবার আমিরাহ্ এর দিকে তাকালেন।

– আয়শা তো সব বলেছেই। সামনের সপ্তাহে রওয়ানা হলে তোমার কোনো সমস্যা হবে?

– জি না। কে কে যাবে?

আমিরাহ্ র মনে প্রশ্ন আহমাদ যাবে কিনা। সেদিনের পর থেকে আর আহমাদ আমিরাহ্ র সামনে আসেনি। এখন আহমাদ যদি সফরসঙ্গী হয়, আমিরাহ্ র ভীষণ অস্বস্তি হবে।

– মেজ আর আহমাদ যাবে না। মেজ ঘর সামলাবে আর আহমাদ ব্যাবসা। এই সুযোগে মেহমুদের ছেলের মক্কা-মদিনা সফর হয়ে যাবে। আর তাছাড়া নিকাহ্ এর পর থেকে তোমার ও তেমন কোথাও যাওয়া হয়নি। তাই ভাবলাম একইসাথে ওমরাহ্ আর নবীজীর রওজাহ মোবারক জিয়ারত করাও হবে আর সেই সাথে ঘোরাও হবে। তা তোমার আপত্তি নেই তো।

আহমাদ যাবে না শুনে আমিরাহ্ হাফ ছেড়ে বাঁচল। আহমাদ যে তার কারণেই যাবে না তা সে ঠিকই বুঝে নিয়েছে।

– না, সবাই মিলে গেলে তো খুব মজা হবে।

– আচ্ছা তাহলে গোছগাছ শুরু করে দাও।

***
তিনদিন পরে বিশাল দুই ক্যারাভান ভর্তি করে তারা রওয়ানা হলো। সামনের গাড়িতে আব্বাস আল আবাদি, মেহমুদ, আমিনা ও আছিয়া এর স্বামী , আমিনার তিন ছেলে এবং আছিয়ার এক ছেলে চড়ল। এই গাড়ি ড্রাইভার ড্রাইভ করবে।

পিছনের ক্যারাভানে আমিরাহ্, বড়ো বেগম, আয়শা, আমিনা, আছিয়া, আমিনার এক মেয়ে, আছিয়ার দুই মেয়ে, মেহমুদের বেগম এবং তার বাচ্চা রওয়ানা করল। এই গাড়ি চালাবে মেহমুদ । নারীদের পর্দার জন্যই এই ব্যবস্থা। তা নাহলে সারাদিন নিকাব করে ভ্রমণ করা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে। গাড়ির উপরে বেঁধে নেওয়া হলো বেশকিছু তোশক, বালিশ, কম্বল ও তাবুর সরঞ্জাম। পিছনের ক্যারাভানের সাথে আলাদা ট্রেলার বেঁধে তাতে নেওয়া হলো রাজ্যের খাবার-দাবার। এর মাঝে একটা জ্যান্ত খাসীও আছে। পথে থেমে খাসী জবাই করে খাওয়ার পরিকল্পনা আছে।

সবাই খুব আনন্দিত। মেয়েরা যথাসময়ে হিজাব-নেকাব পরে গাড়িতে চড়ে বসল। কিছুদিন তাদের বিশ্রাম। কোথাও সফরে গেলে গোছগাছ, রান্নার দায়িত্ব পুরুষেরাই বহন করে। মহিলারা শুধু গা ভর্তি গয়না নিয়ে ঘুরে বেড়াবে। এমনকি বাচ্চাদের তদারকিও করবে ছেলেরা। মেয়েরা তাই ভীষণ রিল্যাক্স মুডে আছে। শুধু রুকাইয়ার বাচ্চাটা বেশি ছোটো বলে তার দেখাশোনা রুকাইয়াকেই করতে হবে। তবে সবাই মিলেমিশে হাতে হাতে বাচ্চা সামলানো যাবে বলে রুকাইয়ার উপরেও চাপ কম পড়বে। অবশেষে সারি বেঁধে রওয়ানা হলো ভ্রমণ যানবাহনগুলো।

চলতে চলতে দুপুর গড়িয়ে এলে পুরুষেরা সিদ্ধান্ত নিল পথেই কোনো খোলা প্রান্তর দেখলে তারা আজকের মতো যাত্রাবিরতি নেবে। তাই পথের পাশে ছোটো শহরটির দেখা পেয়ে তার সীমানার বাইরের মরুভূমিতে তারা ক্যাম্প করবে বলে ঠিক করল। এতে করে ওখানকার পেট্রোল রিফিল স্টেশনে গাড়িতে পেট্রোল নেওয়া যাবে, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে টুকটাক খাবার কেনা যাবে, মসজিদে নামাজ আদায় করা যাবে। সবচেয়ে বড়ো কথা পাবলিক টয়লেট ব্যাবহার করা যাবে। সৌদী আরবে হাইওয়ের পাশে পাশে ট্যুরিস্টদের সুবিধার জন্য এমন অসংখ্য ছোটো ছোটো শহর গড়ে ওঠে।

গাড়ি থামতেই পুরুষেরা বালির উপরেই অনেকখানি জায়গা জুড়ে ফরাশ ( পাতলা তোশক) বিছিয়ে ফেলল। তারপর একে একে প্রয়োজনীয় জিনিস আর রান্নার সরঞ্জাম, স্টোভ, কেতলি, বড়ো ডেকচি নামানো হলো। মেয়েরা ততক্ষণে ফরাশের একপাশে বসে গল্পে মেতে উঠল।

ড্রাইভারকে নিয়ে মেহমুদ খাসীটাকে জবাই করতে গেল। আমিনার স্বামী চায়ের পানি বসিয়ে দিল। তার রান্নার হাত অসাধারণ। এ ধরণের পারিবারিক পিকনিকে সেই রান্নার দায়িত্বে থাকে। আছিয়ার স্বামী আর বাকি ছেলেরা ক্যাম্প ফায়ারের আয়োজনে লেগে পড়ল।

সন্ধ্যা হতেই ক্যাম্পফায়ারের লালচে আগুন ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে। বাতাসে ভেসে বেড়াতে লাগল পুদিনা চা আর গাওয়ার ঘ্রাণ। একটু পরেই ঝলসানো খাসীর মাংসপোড়া ঘ্রাণে বাতাস আন্দোলিত হতে লাগল। সেই সাথে শোনা যাচ্ছে নিচু স্বরে গল্প, মৃদু হাসি, গান আর কাঠপোড়ার শব্দ।

রাত বাড়তেই সবাই খাবসা লাহম খেয়ে যার যার জায়গায় ঘুমিয়ে পড়ল। মেয়েদের শোবার জায়গা আর পুরুষের শোবার জায়গা আলাদা আলাদাভাবে বিছানো হলো। ছোটো একটা তাবুও খাটানো হলো। ছোটো বাচ্চাকে নিয়ে রুকাইয়া সেখানে ঘুমালো। বাকিরা সবাই খোলা আকাশের নিচেই খোলা প্রান্তরে ঘুমিয়ে পড়ল। মেয়েদের গা ভর্তি গয়না চাঁদের আলোয় ঝলমল করতে লাগল। এখানে কেউ আসবে না তাদের গা থেকে গয়না খুলে নিতে। এমনকি দামি গাড়ি ও অন্যান্য জিনিসপত্রও খোলামেলা পড়ে রইল। কোনো চোর-ডাকাতের ভয় নেই। আছে শুধু মরুর রাতের শরীর জুড়ানো শীতল হাওয়া।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে