#আমার_সংসার
#লেখিকা_ DI YA
#পর্ব- ০৩+০৪
আমিও তো পারি না। আচ্ছা দাড়াও দেখি কি করা যায়।তারপর আসিফ ইউটিউব থেকে একটি শাড়ি পরানোর ভিডিও দেখে আয়েশাকে শাড়ি পরিয়ে দিলো। প্রথমবার ভাল না হলেও দ্বিতীয় বার মোটামুটি ভালই হয়েছে শাড়ি পরানো। তারপর আসিফ আর আয়েশা তৈরি হয়ে নিচে চলে গেলো। নাস্তা করে তারা বেরিয়ে পরলো আসিফদের বাড়ির উদ্দেশ্য। বাড়িতে প্রবেশ করতেই আয়েশা দেখলো ড্রইংরুমে প্রচুর মানুষজন গিজগিজ করছে। এত মানুষ এখানে কি করছে আয়েশা বুঝতে পারলো না।তাই সে আসিফকে জিজ্ঞেস করলো,
এত মানুষ এখানে কি করছে ? – আয়েশা
আমি নিজেই জানি না তোমাকে কিভাবে বলবো? বাসায় ভিতরে চলো। যাবার পর বোঝা যাবে – আসিফ
তারপর তারা বাসার ভিতরে চলে আসলো। আসিফের মা আয়েশাকে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসিয়ে দিলো। আর আসিফকে আয়েশার পাশে বসতে বললো। আসিফ বিরক্তি নিয়ে আয়েশার পাশে গিয়ে বসে পরলো।একেকজন আয়েশাকে একেকরকম প্রশ্ন করতে লাগলো,
মা তোমার নাম কি ? – একজন
আয়েশা আমার নাম – আয়েশা
আচ্ছা তোমার বয়স কত আর কোন ক্লাসে পড়াশোনা কর ? – অন্য একজন জিজ্ঞেস করলো
আমার বয়স ১৪ বছর। আর আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছি -আয়েশা
তা কেমন দেখলে সকলে আমার বউমাকে – আসিফের মা
দেখতে শুনতে সবদিক দিয়েই তোমার বউমা মাশাল্লাহ বুঝলে আসিফের মা।কিন্তু – ১ম জন বললো
কিন্তু কি ? – আসিফের মা
কিন্তু আসিফের বয়স তো ২২ আর বউমার বয়স মাএ ১৪ বছর।ওদের বয়সের পার্থক্যটা একটু বেশিই হয়ে যায় – ২য় জন বললো
আন্টি আমি যতদূর জানি আপনার আর আঙ্কেলের বয়সের ডিফারেন্স তো প্রায় ১০ বছরের।আমাদের থেকে বেশিই।আপনারা তো ঠিকই একসাথে সংসার করছেন।আপনারা পারলে আমরাও পারব। আচ্ছা যাই হোক মা আমরা ক্লান্ত রুমে গিয়ে রেস্ট করবো। যাই – বলে আসিফ আয়েশার হাত টেনে উপরে আসিফের রুমে নিয়ে আসলো।
আরে কি করলেন আপনি এটা।- আয়েশা
কেন আমি কি করছি ? – আসিফ
আরে এভাবে বড়দের সামনে হাত টেনে নিয়ে আসলেন।সবাই কি ভাবলো বলেন তো? – আয়েশা
ও আচ্ছা তারা কি ভাবলো এটা নিয়ে তোমার চিন্তা
। তুমি কি ওখানে বসে তাদের সাথে গল্প করতে চাইছিলা।যদি চাও আমি এখন গিয়ে তোমাকে আবার ওখানে রেখে আসতে পারি।তুমি মন খুলে তাদের সাথে কথা বলবা। চলো তোমাকে নিচে রেখে আসি – আসিফ
আরে না আমি যাবনা।তাদের কথাবার্তা আমার ভাল লাগছিল না। কিন্তু তাও তো – আয়েশা
সব বাদ দাও।যাও ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো। – আসিফ
হুম যাচ্ছি – আয়েশা
~~~~
এভাবে দেখতে দেখতে ওই বাড়িতে আয়েশা যাওয়ার পাঁচ দিন পুরো হয়ে গেলো। এই পাঁচ দিনে আসিফ আর আয়েশার সম্পর্কটা আগের থেকে অনেক ভালো হয়ে গেছে।আয়েশা ও এখন আসিফকে নিয়ে ভাবে। তাদের সম্পর্কটা এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে। আর একদিন পর আসিফ খুলনা চলে যাবে।আসিফ ওখানেই একটা অফিসে মেনেজার পদে কাজ করছে। আয়েশার এসএসসি পরীক্ষার পর আয়েশাকেও আসিফ খুলনা নিয়ে যাবে।এর মধ্যে নীলয় রহমান ও দেশে এসে পরেছেন।আর এই বিয়েটা তিনি এখনো মেনে নেয়নি। আয়েশা বুঝতে পারছে আয়েশার বাবা ওকে কিছু বলতে চাইছে। কিন্তু কোনো কারণে বলতে পারছেন না। এভাবেই আরো দুদিন পার হয়ে গেলো।কালকে আসিফ আয়েশাকে আয়েশাদের বাসায় দিয়ে গেছে। আর সাথে আয়েশাকে একটা ফোনও গিফট করে গেছে। আসিফ আয়েশাকে বলেছে সে যখন ফ্রি হবে তখন সে আয়েশাকে কল করবে এই ফোনে।আসিফ চলে যাওয়ায় আয়েশার অনেক মন খারাপ হয়।কিন্তু যাওয়ার পর যখন আসিফ তাকে কল দেয় তখন আসিফের সাথে কথা বলে আবার মন ভালো হয়ে যায়।এর মাঝে আয়েশার পরীক্ষা ও হয়ে গিয়েছে।প্রতিবারের মত এবারো আয়েশা ক্লাসে প্রথম হইছে। আয়েশার যেদিন রেজাল্ট দেয় সেদিন আসিফ আয়েশাকে গিফট পাঠায় খুলনা থেকে। গিফট বক্স খুলে আয়েশা দেখে একগুচ্ছ সাদা গোলাপ, একবক্স চকলেট আর ছোট একটা চিরকুট। সেখানে লিখা ছিল,
‘ কংগ্রাচুলেশনস বউ ‘
সময় প্রবহমান। সময়ের কোনো পিছুটান নেই।সে নিজের আপন স্রোতে বইতেই থাকে।কারোর জন্য সে অপেক্ষা করে না।তাই তো মানুষ বারবার এই সময়ের কাছেই হেরে যায়। মানুষের যে অনেক অনেক পিছুটান থাকে। এভাবেই আরো আড়াই বছর চলে গেলো। ছোট পিচ্চি আয়েশা এখন কিশোরী হয়ে গিয়েছে। অনেক চিন্তিত হয়ে আয়েশা বাসার ড্রইংরুম জুড়ে পাইচারি করছে।আজকে তার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে। টেনশনে আয়েশার হাত পা কেপে চলছে। বাসার কলিংবেল বাজতেই আয়েশা গিয়ে দরজা খুলে দিলো। দরজা খুলতেই ওপাশ থেকে দেখা গেলো নীলয় রহমানের হাস্যজ্বল চেহারা।আয়েশা করুণ দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকি তাকে বললো,
বাবা আমি কি ফেল করেছি ? – করুণ স্বরে বললো আয়েশা
ধুর পাগলি মেয়ে এসব কি বলিস।তুই কি জানিস তুই পুরো স্কুলের মধ্যে সবার থেকে ভালো রেজাল্ট করেছিস – নীলয় রহমান
সত্যি বাবা – আয়েশা
হুম মা। – নীলয় রহমান
তখনই আয়েশার ফোনে আসিফের কল আসে।আয়েশা ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আসিফ বলে,
বা বা আমার বউ তো বেশ ভালোই রেজাল্ট করলো।এখন আমার বউয়ের তার এই বরের কাছে কি গিফট চায়। হুম বলো। যা চাইবা আমি তোমাকে তাই দিব – আসিফ
সত্যি বলছেন – আয়েশা
হুম সত্যিই বলছি।তুমি বলো কি চাও সেটাই তোমাকে দিবো – আসিফ
আপনি আমাকে আপনার কাছে নিয়ে যান – আয়েশা
তাহলে কি আমার বউটা তার বরের কাছে এসে পরতে চায় – আসিফ
হুম। আপনি কবে আসবেন আমাকে নিতে ? – আয়েশা
খুব তারাতাড়িই আমি ছুটি নিয়ে তোমাকে নিতে আসবো – আসিফ
কবে আসবেন বলেন না প্লিজ ? – আয়েশা
এত অস্থির হলে কি চলে নাকি হুম।শুনো অতি শীঘ্রই আসবো।এসে তোমাকে পুরো চমকে দিবো – আসিফ
আচ্ছা তারাতাড়ি আসবেন। আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করব – আয়েশা
হুম – আসিফ
আচ্ছা রাখি। আল্লাহ হাফেজ – আয়েশা
হুম।আল্লাহ হাফিজ – আসিফ
এভাবেই আরো কিছু দিন চলে গেলো। কাল আয়েশার জন্মদিন। কালকে আয়েশা ১৬ বছর পুরো করে ১৭ বছরে পা দিবে।কিন্তু এ কথাটা আয়েশার মনেই নেই। রাতে আয়েশা নিজের রুমে বসে গল্পের বই পরছিল।তখনই নীলয় রহমান তার রুমে আসে। আয়েশা গল্পের বইয়ের মধ্যে এতোই বিভোর ছিল যে সে নীলয় রহমানকে খেয়ালই করেনি।নীলয় রহমান আয়েশাকে ডাকলেন,
চলবে🥰🥰,,
#আমার_সংসার
#লেখিকা_ DI YA
#পর্ব_০৪ (বোনাস)
রাতে আয়েশা নিজের রুমে বসে গল্পের বই পরছিল।তখনই নীলয় রহমান তার রুমে আসে। আয়েশা গল্পের বইয়ের মধ্যে এতোই বিভোর ছিল যে সে নীলয় রহমানকে খেয়ালই করেনি।নীলয় রহমান আয়েশাকে ডাকলেন,
আয়েশা মা – নীলয় রহমান
হুম বাবা বলো।তুমি কখন রুমে আসলা? – আয়েশা
মাএই আসছি। এসে দেখি তুই বই পড়ছিস – নীলয় রহমান
হুম এখন তো তেমন পড়াশোনা নেই।তাই বসে বসে গল্পের বই পড়ছিলাম।গল্প পড়তে পড়তে গল্পের জগতেই চলে গিয়েছিলাম।তাই তো তুমি কখন আসছো বুঝতেই পারলাম না – আয়েশা
আচ্ছা বাদ দে।আর শোন আমি একটা কাজে তোর রুমে আসছি৷ – নীলয় রহমান
কি কাজ বাবা বলো – আয়েশা
কালকে কি তোর মনে আছে? – নীলয় রহমান
না তো বাবা।কালকে আবার কি? – আয়েশা
কালকে তোর জন্মদিন। এটাও তোর মনে নেই – নীলয় রহমান
আসলে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।আচ্ছা জন্মদিন তো কি হইছে? – আয়েশা
একটা ফাইল নীলয় রহমান আয়েশার দিকে এগিয়ে দিলো।আর বললো,
এই ফাইলটা এরপরের বছরের তোর জন্মদিনের সময় খুলে দেখবি।এর ভিতর একটা চিঠি আর অনেক জরুরি কিছু পেপার আছে।ভুলেও এগুলো হারাবি না।নিজের হাতের কাছে রাখবি। আর একটা কথা – নীলয় রহমান
হুম বলো – আয়েশা
এই জিনিসগুলোর কথা কাউকে বলবিনা।আসিফকেও না। মনে থাকে জেনো।কেউ যেন না জানে এটা তোর কাছে। মনে থাকবে তো – নীলয় রহমান
মনে করে ১৮ তম জন্মদিনের দিনই এটা খুলবি। তখন সময় কেমন হবে আমি জানিনা। কিন্তু আমি যা ভাবছি ভবিষ্যত যদি তা হয় তাহলে সেই সময় এই জিনিসগুলো তোর অনেক কাজে আসবে – নীলয় রহমান
ঠিক আছে। কিন্তু এখানে কিসের পেপার আছে? – আয়েশা
তা সময় হলেই জানতে পারবি।তোকে আজকে আমি কিছু কথা বলি তুই মন দিয়ে শুনবি আর যা জিজ্ঞেস করবো। তার জবাব ঠিক ঠিক দিবি – নীলয় রহমান
আচ্ছা জিজ্ঞেস কর – আয়েশা
তুই আসিফকে ভালোবাসিস তাই না? – নীলয় রহমান
হুম বাবা আমি মানুষ টাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি – আয়েশা
নীলয় রহমানের মুখে একটি মুচকি হাসি ফুটে উঠলো।তিনি আবার বললেন,
আমি জানতাম তুই আসিফকে ভালোবাসিস।ধর আসিফ তোকে একদিন ধোঁকা দিলো। তখন নিজেকে সামলাতে পারবি – নীলয় রহমান
কি বলো তুমি এসব বাবা।ও আমাকে ধোঁকা কেন দিবে।শুধু আমি না আসিফ ও আমাকে অনেক ভালোবাসে – আয়েশা
ধুর পাগল মেয়ে।আমি তো কথার কথা জিজ্ঞেস করলাম। এখন এটা বল তখন নিজেকে কিভাবে সামলাবি বা কি করবি?- নীলয় রহমান
আমি নিজেকে সামলাতে পারবনা।কি করে নিজেকে সামলাবো তুমিই বলো। ভালোবাসার মানুষের কাছে থেকে ধোঁকা পেলে কি সেটা মেনে নিতে পারা যায় – আয়েশা
তুই বড্ড সরল আয়েশা। কিন্তু এই দুনিয়া আর দুনিয়ার মানুষ গুলো যে একটুও সরল না। তারা বড্ড জটিল বুঝলি।স্বার্থ ছাড়া তারা কিছু করেনা। আসিফ যদি কখনো তোকে ধোঁকা দেয় তখন তোর তাকে দেওয়া সেরা জিনিসটা কি হবে জানিস? – নীলয় রহমান
কি বাবা – আয়েশা
তুই নিজেকে বদলাবি।একেবারে ভিন্ন আয়েশা হয়ে যাবি।নিজেকে পাল্টে ফেলবি।প্রত্যেকটা মানুষ যেন তোর এই বদলানো টা অনুভব করতে পারে। আর – নীলয় রহমান
আর কি ? – আয়েশা
নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবি নিজের যোগ্যতায়।নিজেকে প্রমাণ করে দেখিয়ে দিবি কারোর জন্য থেমে থাকার মেয়ে তুই না।- নীলয় রহমান
আয়েশা নিশ্চুপ
কখনো এমন কোনো মানুষের জন্য চোখের পানি ফেলবি না যে তোর মর্মই জানে না।মর্ম থাকলে সে অবশ্যই তোর কদর করতো।চকচকে দেখে কাচকে হিরে ভেবে সে হিরের পিছনে নয় কাঁচের পিছনেই ছুটছে। কিন্তু তুই কাচ না তুই হচ্ছিস হিরে।যার মর্ম সবাই বুঝেনা। বুঝলি – নীলয় রহমান
হুম – আয়েশা
আচ্ছা যাই আমি। অনেক রাত হয়ে গেছে। তুইও ঘুমিয়ে পড়। শুভ রাত্রি – বলে নীলয় রহমান চলে গেলো রুম থেকে
আয়েশাও বিছানায় ঘুমানোর জন্য চলে গেলো।কিন্তু আয়েশার চোখে আজকে ঘুম নেই। বাবার কথাগুলো তাকে বারবার ভাবিয়ে তুলছে।আসলে বাবা কি বলতে চাচ্ছে।এসব কথা ভাবতে ভাবতে
আয়েশা একসময় ঘুমের দেশে পারি দিলো। সকালে ফজরের আযানের সময় উঠে আয়েশা নামাজ পরে নিলো। নামাজ শেষে আয়েশা ছাদে চলে গেলো। এটা তার প্রতিদিনের অভ্যাস।তখনই গেটের বাইরে একটা গাড়ির হর্ণের শব্দ কানে আসায় আয়েশা গেটের দিকে উঁকি দিলো। দারোয়ান গেইট খুলে দেওয়ার পর গাড়িটা বাসার গ্যারেজে চলে গেলো। আয়েশা ভাবতে লাগলো এত সকালে কে আসতে পারে।কারোর তো এসময় আসার কথা না।ভাবতে ভাবতে বাসার কলিংবেল বেজে উঠলো। কলিংবেল বাজায় আয়েশা চলে গেলো দরজা খুলতে। কারণ এত সকালে বাসায় আয়েশা ছাড়া কেউই উঠে না।গেট খুলে দেওয়ার পর সামনের ব্যাক্তিকে দেখে আয়েশা বরফের মত জমে গেলো। আয়েশা এতই অবাক হয়েছে যে সেও নড়তেও ভুলে গিয়েছে। এক দৃষ্টিতে অবাক হয়ে আসিফের দিকে তাকিয়ে আছে আয়েশা।আজ প্রায় দুই বছরের বেশি সময় পর মানুষটাকে সামনে থেকে দেখে পেলো সে।এতদিন শুধু ভিডিও কলে দেখেছে।আজকে এতদিন পর প্রিয় মানুষটিকে সামনে থেকে দেখে আয়েশার মনের মধ্যে প্রশান্তির হাওয়া বইতে লাগলো। আয়েশাকে এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আসিফ বললো,
বউ কি আমাকে এইভাবেই বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখবে ? ভিতরে কি ঢুকতে দিবানা – আসিফ
আসিফের কথা শুনে আয়েশা গেটের সামনে থেকে সরে দাঁড়ালো। আসিফ ভিতরে ঢোকার পর আয়েশা দরজা বন্ধ করে।আসিফের হাত ধরে ভিতরে আয়েশার রুমে নিয়ে গেলো।তারপর আয়েশা বলতে লাগলো,
আপনি হঠাৎ কখন কিভাবে আসলেন ? – আয়েশা
শুভ জন্মদিন বউ। আজকে তোমার বার্থডে তাই আজকেই তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে আসলাম।কিছু দিন আগে না তুমি বললা তোমাকে আমার কাছে নিয়ে যেতে। পরে ভেবে দেখলাম কয়দিন পর তো তোমার বার্থডে। তাই ওইদিন একেবারে গিয়ে তোমাকে পুরো চমকে দিবো – আসিফ
সত্যিই আমি পুরো অবাক হয়ে গিয়েছি।এখন এসময় আমি আপনাকে মোটেও ভাবিনি – আয়েশা
ভাবাভাবি সব বাদ দাও। আমি ভেবেছি আজকেই আমরা খুলনা যাবো – আসিফ
এ মা আজকে কেন ? আজকেই তো আপনি আসলেন। তো আজকে আবার কেন যাবো আমরা। দু তিনদিন থেকে তারপর যাই – আয়েশা
নাগো বউ এটা তো এখন সম্ভব না।কালকে আমার অনেক জরুরি একটা মিটিং আছে। আর আমাকে ওটা কালকে জয়েন করতেই হবে।নাহলে আর চাকরি থাকবে না – আসিফ
আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই। আপনি যান ফ্রেশ হয়ে আসুন। এত দূর থেকে এসেছেন অবশ্যই ক্লান্ত। আপনি এখন কিছু খাবেন ? – আয়েশা
হুম জাস্ট এক কাপ কফি – আসিফ
আচ্ছা আপনি ফ্রেশ হতে যান। আমি এখনই বানিয়ে নিয়ে আসছি আপনার কফি – আয়েশা
তারপর আয়েশা কফি বানাতে চলে গেলো রান্না ঘরে।কফি বানিয়ে রুমে এসে দেখে আসিফ ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। আয়েশা আসিফের কাছে গিয়ে আসিফকে কফিটা এগিয়ে যেতে দিলো। আসিফ আয়েশাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে কফিটা হাতে নিয়ে খেতে লাগলো। সাথে আয়েশার সাথে কথা বলতে লাগলো। তারপর ওইদিন দূপুর বারোটার দিকে আয়েশা আর আসিফ খুলনার উদ্দেশ্য বের হয়ে যায়।যেতে যেতে তাদের রাত হয়ে যায়।তারা গিয়ে সোজা আসিফের ফ্ল্যাটে উঠে।অফিস থেকে আসিফকে এই ফ্ল্যাট গাড়ি সবকিছু গিফট করেছে। আয়েশা বাসায় ঢুকে পুরো ফ্ল্যাট টা ঘুরে দেখতে লাগলো।আয়েশার অনেক পছন্দ হয়েছে ফ্ল্যাট টা।আসিফ আয়েশাকে বললো,,
জার্নি করে এসেছো। যাও ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়। কালকে আমি তোমাকে এখনকার একটা কলেজে ভর্তি করে দিবো। প্রিন্সিপালের সাথে আমি তোমার কথা বলেই রেখেছি।কালকে অফিসে যাবার আগে তোমাকে কলেজে দিয়ে তারপর যাবো। – আসিফ
আয়েশা আসিফের কথা মতই কাজ করলো। পরদিন যথারিতি আসিফ আয়েশাকে ওখানকার বেশ নাম করা একটা কলেজে ভর্তি করে দিলো। এভাবে আরো ৫ মাস পার হয়ে গেলো। আসিফ আর আয়েশার সংসার বেশ ভালই যাচ্ছে। দুজনই পুরোপুরি ভাবে নিজেদের মধ্যে মানিয়ে নিয়েছে। আজ আয়েশা আসিফকে বলেছে যে সে বাসায় আসতে লেট হবে। কারণ আয়েশা আজ তার ফ্রেন্ডের সাথে একটু ঘুরতে আর শপিং এ যাবে। পরে আসিফ জানায় আজ তার অফিস ছুটি। তখন আয়েশা যেতে না চাইলেও আসিফ বলে যাও ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরলে মন ভাল হবে। পরে আসিফের কথায়ই আয়েশা রাজি হয়।কিন্তু এক ফ্রেন্ড সেদিন কলেজে না আসায় তাদের প্ল্যান ক্যান্সেল হয়ে যায়।তারা ঠিক করে পরের দিন যাবে। তাই আয়েশা কলেজ ছুটির পর বাসায় এসে পরে। বাসার সামনে এসে দেখে ফ্ল্যাটের দরজা খোলা। তাই আয়েশা ভিতরে ঢুকে গেলো। ভিতরে ঢোকার পর যা দেখলো তাতে আয়েশার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরতে শুরু করলো।এটা কি করে হতে পারে
চলবে,🥰🥰