#আমার_সংসার
#লেখিকা_ DI YA
#পর্ব_০২
একপ্রকার জোড় করেই আয়েশাকে সাজিয়ে নিচে নিয়ে আসলো তিনি।তার পর তাকে সোফায় আসিফের পাশে বসিয়ে দিলো।কাজি এসে পরেছে।আয়েশা আসার পর কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করলো।আয়েশা এখনো কান্না করছে। কি করবে সে আজ যদি তার বাবা থাকতো তাহলে তিনি এমন কিছু হতে দিতো না কখনোই। আসিফের দিকে লক্ষ্য করতেই আয়েশা দেখলো,
আসিফ তার দিকে তাকিয়ে বিচ্ছিরি ভাবে হাসছে। এটা হয়তো তার জয় আর আয়েশার পরাজয়ের হাসি।তারপর যথারীতি সকল নিয়ম মেনে আয়েশা আর আসিফের বিয়ে সম্পূর্ণ হলো। তারপর আয়েশার শাশুড়ী আর ননদ নিজেদের বাসায় চলে গেলেন।আর আসিফ আয়েশা কালকে ওই বাসায় যাবে। রাতে খাবারের পর আসিফ আয়েশার রুমে চলে গেলো। আর আয়েশাকে নীলিমা রহমান নিজের সাথে নিজের রুমে নিয়ে আসলো।আর বলতে লাগলো,
দেখ আয়েশা তোর আর আসিফের বিয়েটা হয়ে গিয়েছে। এখন ভালো এটাই হবে যে তুই এই বিয়েটা মেনে নিস।আর শোন তোর রুমে আসিফ আছে।ঘরে যা আর যাবার পর আসিফ যা বলবে তার সব কথা তুই শুনবি।আমি যদি জানতে পারি আসিফের কথা তুই অমান্য করেছিস তাহলে আমি কি করতে পারি এটা তুই জানিস। এখন যা তোর রুমে যা – নীলিমা রহমান
আয়েশা কিছু না বলে নিজের রুমের সামনে এসে দাড়ালো।দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সে ভাবতে লাগলো রুমের ভিতর তো আসিফ ভাই আছে। সে কি করে থাকবে আসিফ ভাইয়ের সাথে এক রুমে।এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ রুমের ভিতর থেকে আসিফ দরজা খুলে বেরিয়ে আসলো। আসিফকে এভাবে বেরোতে দেখে আয়েশা একটু চমকে গেলেও সে নিজেকে সামলিয়ে নিলো।আসিফ তাকে প্রশ্ন করলো,,
তুমি রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে কি করছো। তারাতাড়ি রুমের ভিতরে আসো -আসিফ
আয়েশা কিছু না বলে রুমের ভিতরে চলে আসলো। রুমে এসে আয়েশা রুমের এক কিনারে গুটিশুটি মেরে দাড়িয়ে রইলো৷আসিফ গিয়ে বিছানার উপর বসলো আর আয়েশার উদ্দেশ্য বললো,
আজকে রাতে কি জানো তুমি ? – আসিফ
আয়েশা ডানেবামে মাথা নাড়িয়ে ইশারায় না বললো।আসিফ আবারো বললো,
আজ আমাদের বিয়ে হয়েছে।আর আজকে রাতে আমাদের বাসর রাত – আসিফ
আয়েশা কিছু না বলে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। কিইবা বলবে এসময় সে। আসলে হঠাৎ করে কি থেকে কি হয়ে গেলো সে এখনো বুঝে উঠতে পারছেনা।আসিফ আয়েশাকে নিজের কাছে আসার জন্য ইশারা করলো।আয়েশা প্রথমে ভাবলো যাবেনা।পরে তার নীলিমা রহমানের বলা শেষ কথাটি মনে পরলো। আর সে গুটিশুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে আসিফের পাশে দাঁড়ালো। আসিফ তাকে তার পাশে বসার জন্য ইশারা করলো।আয়েশা আসিফের থেকে একটু দূরত্ব বজায় রেখে আসিফের পাশে বসলো। আয়েশা দূরে বসতে দেখে আসিফ আয়েশা কাছে গিয়ে তার সাথে গাঘেঁষে বসে পরলো। আয়েশার অস্তিত্ব হওয়ায় সে নিজেকে আসিফের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো সে।আজকে প্রথম বাবা ছাড়া অন্য একজন পুরুষ তাকে জড়িয়ে ধরলো। আয়েশা যখন আসিফের বাহুদ্বয় থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারলো না।তখন আসিফের পাশে থেকে উঠার চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু এতেও সে ব্যর্থ হয়।আসিফের দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আয়েশা।কিন্তু এতে আসিফের কিছু যায় আসে না। আয়েশা আরো অনেক ভাবে চেষ্টা করতে লাগলো নিজেকে আসিফের কাছে থেকে সরানোর। কিন্তু পারলো না।ধীরে ধীরে রাত বাড়তে লাগলো। আর আয়েশার উপর জানোয়ারের মত ঝাপিয়ে পড়ে নিজের স্বামীর অধিকার আদায় করতে লাগলো আসিফ।আয়েশা বার বার তাকে বললো,,
আসিফ ভাই আমাকে ছেড়ে দাও। আসিফ ভাই প্লিজ ছাড়ো আমাকে – আয়েশা
কিন্তু আয়েশার কথায় আসিফের মধ্যে কোনো পরিবর্তন হলো না।সারা রাত আয়াশের উপর জানোয়ারের মত শারিরীক অত্যাচার করলো আসিফ। আয়েশা কিছু করতে পারলো না।শুধু নিরবে নিজের চোখের পানি ফেললো।সকালের দিকে ক্লান্ত হয়ে আসিফ ঘুমিয়ে পরে। আর আয়েশা একই ভাবে শুয়ে কান্না করতে থাকে।ফজরের আযানের শব্দে আয়েশা কোনো মতে বিছানা তেকে একটা চাদর শরীরে জড়িয়ে জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। তারপর ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে নামাজ পরে নিলো আয়েশা।নামাজ পরে সে রুমে থেকে বেরিয়ে সোজা বাসার ছাদে চলে আসলো সে।তার আর আজ ঘুম হবেনা।এর থেকে ভালো সকালের পরিবেশ দেখতে দেখতে ছাদে একটু হাটাহাটি করতে লাগলো আয়েশা।এতে মনটা একদম ফ্রেশ হয়ে যায় আর মন খারাপও চলে যায়। আধা ঘন্টার মত ছাদে থেকে আয়েশা নিচে আসলো আর নিজের একটা বই বের করে পড়তে লাগলো। কারণ সামনেই আয়েশার বার্ষিক পরীক্ষা আর ১ মাসের মত সময় আছে তার হাতে। আজ আবার নাকি খালামনিদের বাসায় ও যেতে হবে। যাই হোক পরে দেখা যাবে ভেবে আয়েশা মনোযোগ দিয়ে পড়তে লাগলো। পড়তে পড়তে কখন ৮ টা বেজে গেলো আয়েশা বুঝতেই পারলো না। নীলিমা রহমান ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ড্রইংরুমে আসতেই দেখলো আয়েশা সেখানে বসে পড়াশোনা করছে। তাই তিনি আয়েশাকে জিজ্ঞেস করলো,,
কি ব্যাপার আয়েশা তুমি এত সকালে এখানে আর আসিফ কই? – নীলিমা রহমান
হুম মা নামাজ পরে আর ঘুমাইনি।উঠে পড়তে লাগলাম আর কয়েকদিন পরই তো ফাইনাল এক্সাম তাই না।আর আসিফ ভাই রুমে ঘুমোচ্ছে – আয়েশা
ঠিক আছে। কিন্তু শোন আয়েশা আসিফ এখন তোর স্বামী। তাই আসিফ ভাই কথাটা বলা বাদ দে।বুঝতে পেরেছিস আমার কথা – নীলিমা রহমান
হুম – আয়েশা
এখন রুমে গিয়ে আসিফকে উঠা ঘুম থেকে আর তোরা একেবারে তৈরি হয়ে নিচে আয়। সকালের নাস্তা করেই তোরা ওদের বাসায় যাবার জন্য বের হবি আর হ্যা ওই বাসায় গিয়ে আফা আর রিয়া যা যা বলে তাদের সব কথা শুনবি। কোনরকম চালাকি করার চেষ্টা করবি না। এখন যা আসিফকে ডাক গিয়ে – নীলিমা রহমান
আয়েশা বইটা হাতে নিয়ে উঠে রুমে চলে গেলো। গিয়ে দেখলে আসিফ ঘুমিয়ে আছে। আয়েশা অনেকক্ষণ ভাবাভাবি করে আসিফের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে তাকে ডাকতে লাগলো।আসিফের ঘুম ভেঙে গেলো। আসিফ বিরক্তি নিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসলো। আয়শাকে বললো,,
কি হয়েছে সমস্যা কি এত সকালে ডাকছো কেন ? – আসিফ
মা বলেছে আপনাকে ডাকতে। তারপর রেডি হয়ে নিচে গিয়ে নাস্তা করে আপনাদের বাসায় যাবার জন্য বের হতে। – আয়েশা
আচ্ছা ঠিক আছে তুমি রেডি হয়ে নাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি – বলে আসিফ ওয়াশরুমে চলে গেলো।
একটা শাড়ি হাতে নিয়ে বিছানার উপর বসে আছি। কি করব মা তো এখন রান্না ঘরে। আর আয়েশাও শাড়ি পরতে পারেনা।তাই মুখের বারোটা বাজিয়ে সে বিছানায় বসে আছে।তখনই ওয়াশরুমের দরজা খুলে বের হয়ে আসলো আসিফ । আয়েশা আসিফকে দেখে শাড়িটা দিকে নিজেকে ঢেকে নিলো। আসিফ বললো,
যা দেখার আমি আগেই দেখে নিয়েছি। তা এরকম করে বিছানায় বসে আছো কেন? শাড়ীটা পরে তারাতাড়ি তৈরি হয়ে নাও – আসিফ
আসলে – আয়েশা
আসলে নকলে আবার কি বলার সোজাসুজি বলো – আসিফ
আমি শাড়ি পরতে পারিনা – আয়েশা
তো কালকে কিভাবে শাড়ি পরেছিলে? -আসিফ
কালকে তো মা পরিয়ে দিয়েছিল – আয়েশা
তো আজকেও মামনিকে বলো শাড়ি পরিয়ে দিতে। এরকম বসে থাকার কোনো মানে হয়না – আসিফ
আরে মা কাজ করছে। এখন আমি কি করবো ? – আয়েশা
আমিও তো পারি না। আচ্ছা দাড়াও দেখি কি করা যায়।তারপর আসিফ ইউটিউব থেকে একটি শাড়ি পরানোর ভিডিও দেখে আয়েশাকে শাড়ি পরিয়ে দিলো। প্রথমবার ভাল না হলেও দ্বিতীয় বার মোটামুটি ভালই হয়েছে শাড়ি পরানো। তারপর আসিফ আর আয়েশা তৈরি হয়ে নিচে চলে গেলো। নাস্তা করে তারা বেরিয়ে পরলো আসিফদের বাড়ির উদ্দেশ্য। বাড়িতে প্রবেশ করতেই আয়েশা দেখলো,
চলবে,🥰🥰