#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং: আট
আমার প্রিয় আল্লাহ্,
তুমি তো সবই জানো, কিছুই তোমার অজানা নয়। আমি কতগুলো প্রশ্ন নিয়ে ঘুরেঘুরে মরছি। আর এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কেবল তোমারই কাছে আছে। ইয়া রব্বুল আলামিন তুমিই বলো তোমার প্রতি একটা মুসলমানের ঈমান, ভক্তি আর শ্রদ্ধা কি অন্য একটা মুসলমানকে যাচাই করার অনুমতি তুমি দিয়েছো?
যেই জবাবদিহি তোমার কাছে করার কথা ছিল, সেই জবাবদিহি টা কেন মানুষ হয়ে অন্য একজন মানুষের কাছে করতে হয়? প্রতিটি পদে পদে কেন নিজেকে প্রমাণ করতে হয়, কেন? কেন এতো প্রশ্ন আসে, এতো বাঁধা আসে?
তবে কি এগুলোও তোমার পক্ষ থেকে আমার জন্য পরীক্ষাস্বরূপ কিছু…
আমি যখন তোমার প্রদর্শিত পথে চলার জন্য চেষ্টা শুরু করলাম তখন চারপাশ থেকে বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া আসা শুরু হলো…
“এই বয়সে আবার নতুন কইরা আরবি শিখতে মাদ্রাসায় ভর্তি হইসো”
“তুমি যে পর্দা মেইনটেইন করো তোমার পর্দা তো হয়না। তোমার হিজাবে সমস্যা আছে।”
“আগে কি করছে জানি না নাকি! সারাজীবন স্কুলে গান গাইছে এখন পর্দাশীল নারী হইছে। ঢং!”
“পর্দা মেনে চলে, নতুন নাটক!”
এরকম অনেক কথা আমাকে শুনতে হয়েছে। এখন ওদের কিভাবে বোঝাবো,
“শিখতে গেলে শিখে শেষ করা যাবে না।কারণ যেকোনো বিষয়ের ই শিখার ক্ষেত্রে কোন শেষ নেই।”
আমার পরিবারের কেউ পর্দা মেইনটেইন করে চলেনা সেজন্য। আমার পর্দা সম্পর্কে ধারণা খুবই স্বল্প। আমার জন্য ব্যাপারগুলো খুবই জটিল, তাই আমার সময় লাগবে, ধিরে ধিরে সব শিখতে হবে আমাকে। আমি তো শুরুতেই সব পারবোনা। কিন্তু ওদের এটা কে বোঝাবে! শুধু মুখের উপর এসব কটু কথা বলে দিয়েই সবাই নিজেকে বড় মনে করে।
ওরা কিভাবে বুঝবে একটা মেয়ে যে বড় হয়েছে বেপরোয়া ভাবে। চুল ছেড়ে বাইরে যাওয়া, কপালে টিপ দেওয়া, বেপর্দা অবস্থায় বাইরে যাওয়া একটা মেয়েকে এসবকিছু বাদ দিয়ে, ত্যাগ দিয়ে দীনের পথে প্রবেশ করতে কতটুকু সাহস দেখাতে হয়েছে এইটা এই সমাজের মানুষ কিভাবে বুঝবে!
কিন্তু তুমি মন পড়তে পারো ইয়া রব্বুল আলামিন। তুমি তো সবই দেখতে পাচ্ছ। তোমার কাছে জবাবদিহি না করে সমাজের মানুষের কাছে কেন জবাবদিহি করতে হয়? এই সমাজ টা এমন কেন? প্রত্যেকেই শুধু অপরের দোষ খুঁজে বেড়ায় কেনো…
সবশেষে বলবো, আমার প্রিয় আল্লাহ আমাকে তুমি ধৈর্য্য দাও। আমি যেন এইসব কিছু সহ্য করতে পারি এবং নিজেকে একজন প্রকৃত মুসলিমা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।
ইতি
তোমার পাপী বান্দা
(বিঃদ্রঃ এই চিঠি মাধ্যমে সবার কাছে একটাই অনুরোধ করতে চাই, যদি আশেপাশের কাউকে হঠাৎ করে ইসলামের দিকে অগ্রসর হতে দেখেন তাহলে নেগেটিভ কিছু না বলে তাকে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করবেন।)