আমার তুমি পর্ব-২৫

0
1613

#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২৫
,
,
,
,
,
আকাশঃআমরাও বাহিরে থাকবো নাকি
নিলিমাঃযার যার বউ কে কোলে তুল তাড়াতাড়ি (গম্ভির সুরে)

নিলিমার এমন কথায় রামিসা মিটি মিটি করে হাসে আর এদিকে আরু আর নওশিন ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। তারা দুইজন বুঝার চেষ্টা করে আসলে নিলিমা কি এটা মজা করে বললো নাকি সত্যি সত্যি। ওরা ফলাফল পাওয়ার আগেই আকাশ আর আরিয়ান ওদের দুইজন কে কোলে তুলে নিলো।নিলিমা কাজের মেয়েকে ইশারা করে কি যেনো আনতে বলে।

রামিসা ঈশানের দিকে তাকায় সে একমনে ফোন স্ক্রোল করছে।রামিসা হাসে।সে ভেবে পায়না কি করে ভালোবেসে ফেললো এমন একটা ছেলেকে যে কি না তার সম্পূর্ণ বিপরীত।তার মনে পরে যায় সেদিন হস্পিটালের কথা।আরু আরিয়ানের রুমে গেলেও ঈশান রামিসা কে নিয়ে যায় অন্য কোন ডাক্তারের কাছে কারন রামিসার ব্যাথা টা বেশি ছিলো।

রামিসার হাত থেকে রক্ত পরিষ্কার করার সময় প্রচন্ড জ্বালা করছিলো এমনিতে শক্ত হলেও কাটা জায়গায় সেভলোন লাগানোর সময় যেই টুকু জ্বালা করে সে জ্বালা টা ওর সহ্য হয়না। ব্যাস সামান্য একটু তুলা ঠেকাতেই রামিসা চিৎকার দিয়ে উঠে। কোন রকমেই তার চিৎকার থামানো যাচ্ছিলোনা। এদিকে ডাক্তার ও অসহ্য হয়ে গেলেন। শেষে বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে গেলেন রুম থেকে। এদিকে ঈশান রাগী চোখে তাকায় রামিসার দিকে। কিন্তু সেদিকে রামিসার কোন খেয়াল থোরি না আছে সে ব্যাথা পা নিয়েই বেড থেকে নামতে নিলেই ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসায় দেয়।রামিসা তব্দা খেয়ে যায়।তারপর ডাক্তার না ডেকে নিজেই রক্ত পরিষ্কার করে এদিকে রামিসাও রেগে ব্যাথায় ঈশানের হাত খামচে ধরে। হালকা বড় নক গেধে রক্ত বের হয়ে যায় কিন্তু ঈশান সামান্য উহ অব্দি করেনা। তার কিছু সময় পরেই ডাক্তার রুমে প্রবেশ করে সবার আগে তার চোখ যায় ঈশানের হাতে সে ঈশানের হাত টা নিজের হাতে নিতেন ঈশান নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়। ডাক্তার খানিকটা অপমান বোধ করলেও কিছু বলেনা

ডাক্তারঃআপনার হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে তো মিস্টার ঈশান আমি ক্লিন করে দিবো
ঈশানঃনো নিড যে করেছে সে করে দিবে আপনি রামিকে দেখেন। ওর রক্ত ক্লিন করে দিয়েছি
ডাক্তারঃপাগল ছাগল কে আর কি দেকবো সামান্য সেভলন লাগানো তে যা ঢং করলো(বিরবির করে)

ডাক্তার বিরবির করে বললেও কাছে থাকায় ঈশান আর রামিসা ঠিক শুনতে পেলো। রামিসা মাথা নিচু করে নিলো। এতো অপমান সে এর আগে কখনো হয়নি।রামিসার মাথা নিচু দেখে ঈশান রেগে গেলো।

ঈশানঃএই মেয়ে তুই মাথা নিচু করলি কেন হ্যা।একটা বাহিরের মানুষ যা না তাই বলবে আর তুই বেচারীর মেয়েদের মতো মাথা নিচু করবি এক পা ভেংগে ছে না এবার আমি ঘাড় মটকাবো অসভ্য

কথাটা বলেই ঈশান রামিসাকে কোলে তুলে বেরিয়ে আসে।রামিসা মনে সেদিন ভালোবাসার প্রজাপতি গুলো আরেকটু হাওয়া পেয়ে আকাশে বাতাসে উড়ে বেরাছিলো। সেদিন যখন ঈশানের বুকের বা পাশ টাই মাথা রেখেছিলো তার মনে হয়েছিলো এই বুকের স্পন্দন বুঝি তারই কিন্তু আজ মনে হচ্ছে যে বামুন হয়ে সে চাঁদ ছোয়ার চেষ্টা করছিলো

রামিসার চোখ জোড়া আর ভিজে উঠেনা। কেন কান্না করবে সে এই চোখের পানির মূল্য তো নেই মানুষ টার কাছে তাহলে কেনো কান্না করবে সে।

নিলিমার হাতে বরন ডালা ধরায় দেয় কাজের মহিলা টা। নওশিন আর আরুর আর কিছু বুঝতে বাকি থাকেনা কিসের জন্য মিসেস নিলিমা এমন করছিলেন। নিলিমা দুইজন কে বরণ করে নিতেন ২ জোড়া ভিতরে ঢুকে কিন্তু ঈশান আর রামিসা ভিতরে ঢুকতে নিলেই তিনি বাধা দেন

নিলিমাঃআরে আরে দ্বারা। তোরা কই যাস।এতো বছর পরে আমার কলিজার টুকরা টা এলো আমার পিচ্চি মামনি টা এলো তোদের দুইটারে বিনা বরণে ঘড়ে ঢুকাবো বুঝি।এই রামিলা এই মরিচ পোড়া নিয়ে আই তো

নিলিমা রামিসা আর ঈশান কে পাশাপাশি দার করায়ে দুইজন কে বরণ করে নিলো।রামিসার মনের অনূভুতি গুলো ডানা মেলতে চাইলো কিন্তু তা কি সম্ভব উহু মৌটেও না। দুইজন এক সাথে পা ফেলে ভিতরে প্রবেশ করলো।

সবাক সোফার উপরে বসলো এরই মাঝে একজন মেয়েলি কন্ঠে সবাই উপরে সিড়ির দিকে তাকাই।আরু আর নওশিনের মুখ টা হা হয়ে যায় ঈশান আর আরিয়ান চোখ নামিয়ে নেয়

নওশিনঃছি কি জামা পড়ার ছিড়ি
আরুঃসেটাই তো দেখছি রামি ও লন্ডনেই বড় কিন্তু তার ড্রেস আপ অনেক শালীন বাট এই মেয়ে কি ভাবে এই রকমের জামা পরে।
(নাক মুখ কুচকে)

সিড়ি দিয়ে হেলতে দুলতে অতান্ত সুন্দর একটা মেয়ে হাটু অব্দি সিলিভলেস ড্রেস পরে নিচে নামছে।এটা হলো রামিসার বড় বোন রাহি।আধুনিকতার ছোয়া তে ভরপুর।

রাহিঃআকাশ হোয়াট এ সাপ্রাইজ তুমি আসবা আগে বলোনি কেনো। (আকাশ আর নওশিনের মাঝে অনেকটা ফাকা ছিলো নওশিন বড়দের দেখে সরে বসেছিলো সে মাঝখানেই বসে পরলো রাহি।)

রাহি কথা বলার মাঝে মাঝেই আকাশের দিকে ঢলে পরছে আকাশে নাক আর কান লাল হয়ে উঠেছে রাগে এদিকে নওশিনের ও সহ্য হচ্ছেনা কিন্তু চাচী শাশুড়ীর সামনে কিছু বলতেও পারছেনা নিলিমা বুঝতে পারলেন ছেলে আর কিছুক্ষণ এখানে থাকলে মহাভারত শুরু হয়ে যাবে

নিলিমাঃতোরা যা ফ্রেশ হয়েনে
রাহিঃনাহ ছোট চাচীমা আমার কথা আছে আকাশে সাথে কতো মাস পরে আসলো
নীহারিকাঃওই কোথাও হারায় যাচ্ছেনা ফ্রেশ হয়ে আসলে তুই কথা বলে নিস

সবাই উপরে চলে গেলো।আকাশের পিছন পিছনে নওশিন যেতে নিলে নীহারিকা ভ্রু কুচকে ফেলে। এতোক্ষণে সে নওশিন কে খেয়াল করেনি।

নিলিমাঃরেগে আছিস ছোটো(নীহারিকার কাধে হাত রেখে)
নীহারিকাঃনাহ আপু রেগে থাকবো কেন(লাঞ্চ এর জন্য টেবিল সাজাতে সাজাতে)
নিলিমাঃআমি জানি ছোটো তুই নীহারিকা কে আকাশের বউ করতে চেয়েছিলি কিন্তু আকাশ যে নওশিন কে বিয়ে করবে আমি ভাবিনি
নীহারিকাঃআমার মেয়েটার মন ভেংগে যাবে যখন সে এই কথাটা শুনবে আমি ভেবে পাচ্ছিনা কি করে তাকে সামলাবো
নিলিমাঃআমি বুঝি রে। কিন্তু যার যেখানে জুড়ি লিখা থাকে।কি করতে পারি উপরে যে বসে আছে সেই তো জুড়ি ঠিক করে রাখে।।

নীহারিকা কিছু না বলে কিচেনের দিকে এগিয়ে যায়।নিলিমা হতাশ নিশ্বাস ত্যাগ করে ছোট ছেলের কাছে যায়।।

_______
নওশিন রুমে প্রবেশ করতেই আকাশ তেরে এসে নওশিনের চুল মুঠ করে ধরে। নওশিন হতবাক হয়ে যায়।
আকাশঃকি সমস্যা তোর হ্যা কি সমস্যা বল আমাকে ড্যাম ইট(রেগে চিৎকার করে)
নওশিনঃকি করলাম(কাপা কাপা গলায়)
আকাশঃআমার পাশে বসতে তোর প্রবলেম কোথায়
নওশিনঃনা মানে ইয়ে আসলে(আমতা আমতা করে)
আকাশঃস্পিক আপ ড্যাম ইট
নওশিনঃআমি ভাবলাম বড় রা আছে তাই একটু সরে বসেছিলাম কিন্তু আমি কি জানতাম এই চিকন মেয়ে ওইটুকু জায়গায় একদম ফিট হয়ে বসে যাবে(কাদো কাদো কন্ঠ)
আকাশঃতুই ওকে সরতে বললি না কেন
নওশিনঃছোট আম্মু ছিলো সেজন্য
আকাশঃতুই বলতি ছোট মা কে আমি সামলে নিতাম তুই বললি না কেন
নওশিনঃ(চোখ নামায় নেয়)
আকাশঃখুব শখ না আমাদের মাঝে ৩য় জন কে ঢুকানোর এবার দেখ আমি কি করি

নওশিন কে ছেড়ে দিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো।নওশিন হাফ ছেড়ে বিছানায় বসে পরলো।কিছুক্ষন মন ভার করে হুট করে পেটের উপর হাত দিয়ে হেসে উঠলো

নওশিনঃদেখলে বেবি তোমার বাবাই রেগেও তোমার মাম্মা কে হার্ট করেনি সফটলি চুল টা আকড়ে ধরেছিলে বুঝিনা তোমার বাবাই এতো ভালোবাসা এতো কেয়ার রাখে কই।।।

নওশিন বেবির সাথে কথা বলছিলো এমন সময় দরজায় বিনা নক করে প্রবেশ করে,,,,,,,,

চলবে!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে