#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২৪
,
,
,
,
,
এয়ারপোর্টে বসে আছে রামিসা।চোখ ভর্তি পানি নিয়ে অপেক্ষা করছে যদি একটা বার প্রিয় মানুষ টার মুখ দেখতে পায়।সে জানে একটু বেশি না অনেকটাই চেয়ে ফেলেছে সে কিন্তু অবুজ মনটা যে মানে না।
রামিসাঃএকটা বারের জন্য আসবেন না আপনি।আচ্ছা এতোটাই কি খারাপ আমি।
রামিসা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে ট্রলি টা শক্ত করে আকড়ে ধরে৷
রামিসাঃভালো থাকিয়েন। ভালোবাসি প্রিয়।হতে পারলাম না আপনার তো কি হয়েছে আপনার সান্নিধ্যে তো পেয়েছি সেটাই বা কম কিসে। আসি (হাতে থাকা ঈশানের ছবির দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলার সময় চোখ বেয়ে এক ফোটা পানি ছবির উপর পরে)
রামিসা পিছনে ফিরে একবার তাকিয়ে সামনের দিকে হাটা ধরতেই পা দুইটা থমকে যায়।সে কি দেখলো এটা কি শুধুই তার মনের ভুল। রামিসা পুনরায় পিছনে তাকিয়ে দেখে তার প্রিয় মানুষ টা তার দিকেই এগিয়ে আসছে।ব্লাক জিন্স ব্লাক শার্ট এর উপর ব্লু লেদার জ্যাকেট। হাতে ট্রলি নিয়ে সামনে এগুচ্ছে।রামিসার সময় যেনো সেখানেই থমকে যায়।ইচ্ছা করছে দৌড়ে যেয়ে ওই প্রসস্থ বুকে নিজের চোখের পানি বিসর্জন দিতে।।।
রামিসার ধ্যান ভাংগে আরুর কন্ঠে।রামিসা ভালো করে তাকায় দেখে শুধু ঈশান না পুরো পল্টোন তার সামনে দ্বারায় আছে।।
আরুঃকি ম্যাডাম আমাদের উপরে এতোটাই বিরক্ত হয়ে গেছিলেন না বলে চলে যাচ্ছেন (রামিসাকে সাইড থেকে জরায় ধরে)
রামিসাঃতেমন কিছুনা ভাবি আসলে মাম্মি হঠাৎ ফোন করে ওইখানে যেতে বললো তার উপরে কতোদিন থাকবো বলো ঘুরতে এসেছিলাম ঘুরা শেষ ফিরে যাচ্ছিলাম চাচীমা(নিলিমা)তো অনেক আগেই চলে গেছে। (নিচু স্বর)
নওশিনঃতুমি না এখানে একেবারের জন্য এসেছিলা(ভ্রু কুচকে)
রামিসাঃসব কিছু চাইলেই হয়না ভাবি। সব ইচ্ছা সবার পূরণ হয়না সব ইচ্ছা যদি পূরন হতো তাহলে দুঃখ নামক জিনিস টা আর থাকতোনা।(মুচকি হেসে)
আকাশঃবড্ড কথা বলা শিক্ষেছিস দেখছি
ঈশানঃঅকালে পেকে গেলে যা হয়
রামিসাঃহুম আপনার মতো আর যায় হোক বুড়ো না হলেই হবে(ভেংচি কেটে)
আরিয়ানঃএই যে পকপকানি গণ চলেন এবার প্লেন আপনাদের কথার জন্য থেমে থাকবেনা
রামিসাঃমানে তোমরাও আমার সাথে যাচ্ছো(অবাক হয়ে)
ঈশানঃনাহ ট্রলি ব্যাগ গুলো এয়ার্পোরটের মানুষদের আমাদের পছন্দ হয়েছে তাই নিয়ে নিয়েছি(বিরক্ত হয়ে)
রামিসাঃনিম পাতার রস খালি তিতা তিতা কথা বলে। আকাশ ভাইয়া এই লোকটা সত্যি তোমার ভাই তো
ঈশানঃথাপ্পড় দিয়ে বুঝাবো আমি আকাশের ভাই কি না
রামিসাঃআই হ্যাট ইউ
রামিসা কথাটা বলেই হাটা ধরে।ঈশান মুচকি হেসে মাথা চুলকায়ে রামিসার পিছনে হাটা ধরে। সে ভেবে পায়না সে পায় টা কি এই পিচ্চিটাকে রাগায়ে।একে জ্বালাতে এর এই রাগী রুপ দেখলে বুকের মাঝে কেন প্রশান্তি অনুভব হয়।
আরুঃওই আরিয়ান(আরিয়ানের জ্যাকেট টেনে ধরে)
আরিয়ানঃকি হলো(ভ্রু নাচিয়ে)
আরুঃট্রেনে গেলে হয়না (কাদো কাদো স্বরে)
আরিয়ানঃহ্যা ঢাকা থেকে লন্ডন আমার শশুড় ট্রেন চালিয়ে নিয়ে যাবে তো(রাগী স্বরে)
আরুঃএমন করো কেন যানো না ভয় লাগে
আরিয়ানঃদিবো থাপ্পড় আমি তো বলেছিলাম যাবোনা।তুই তো কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করছিলি হানিমুনে যাবেন ম্যাডাম তো চলেন যাচ্ছিতো
আরুঃতো সবাই যাচ্ছিলো আমি একা কি করবো ওইখানে
আরিয়ানঃআমার সাথে রোমাঞ্চ করবেন আবার কি
আরুঃএহ আইসে হস্পিটাল থেকে ফিরেই না খেয়ে ঘুম দেয় উনি করবে রোমাঞ্চ সারাদিন আমাকে একা একা পরে থাকতে হতো।
আরিয়ানঃআচ্ছা হানিমুন থেকে বাচ্চা নিয়ে ফিরবো
আরুঃআমরা বাচ্চা এডপ্ট করবো ইয়াহ আমি শুনেছি লন্ডনের বাচ্চা গুলো আল্ট্রা লেভেলের কিউট হয়
(খুশিতে লাফিয়ে উঠে)
আরিয়ানঃদিবো এক থাপ্পড় খালি আজায়রা বুঝে
আরু কিছু বলতে নিলেই আরিয়ান ধমক দিয়ে উঠে
আরিয়ানঃচুপ একটা শব্দ বের করলে তুলে একটা আছাড় দিবো
আরুঃহু বদ লোক(মুখ বাকিয়ে)
আরিয়ানঃআবার কথা(রাগী চোখে)
আরু সাথে সাথে ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে দেয়।আরিয়ান আরুর বাচ্চামো দেখে হাসে।আরু আশেপাশে একবার মানুষ দের দেখে ফোট করে আরিয়ানের গালে কিস করে সামনের দিকে পালায়। আরিয়ান এবার জোড়েই হেসে দেয়।সামনে যেয়ে আরুও হেসে ফেলে।
________
নওশিনঃআকাশ দেখেন মেঘ ঘুলোকে কতো সুন্দর লাগছে
(আকাশের বাহু খামছে)
আকাশ একবার নওশিনের দিকে তাকায় একবার মেঘের দিকে।আকাশ
নওশিনের দিকে তাকায়ে বলে এর আগে দেখোনি।নওশিন মাথা নারায় মানে নাহ আজকে প্রথম সে দেখছে। আকাশ জোড়ে শ্বাস নেই।সে বুঝে পায়না কি করে একজন বাবা নিজের এক মেয়েকে রানির হালে রাখে আরেক মেয়েকে সহ্যেও অব্দি করতে পারেনা
আকাশঃএক মিনিট এই সব কিছুর পিছনে নাহিদ আর নওরিন খান এর হাত নেই তো কারন নানুর উইল এ সবার নাম থাকলে নওরিন খানের মেয়ের নাম নেই। কিন্তু নাহিদ খান শুধু নওশিন এর সাথেই বাজে ব্যবহার করে কই আমাদের কারো সাথে তো করে না বরং আরু আর আরিয়ান কে তো অনেক বেশিই ভালোবাসে এমন কি ঈশান কেও আর সে তো এটা অব্দি জানতোনা যে আমি আসলে কার ছেলে। কোথাও তো একটা কিন্তু আছে যেটা সকলের আড়ালে (মনে মনে)
নওশিনঃওই কি ভাবেন(রাগী স্বরে)
আকাশঃআমার শান্ত শিষ্ট বউ টা কই হারায়েছে সেটা ভাবছি
নওশিনঃওই কি বললেন আপনি আমি শান্ত শিষ্ট না
(রাগে লাল হয়ে)
আকাশঃআরে শান্ত শিষ্ট না মানে একদম মিষ্টি ঝাল মরিচ(চোখ মেরে)
নওশিনঃওই মিষ্টি ঝাল মরিচ মানে কি হ্যা
আকাশঃমানে হলো আমার টক ঝাল মিষ্টি মায়াবতী(কপালে কিস করে)
_________
ঃতুই এখানে শান্ত হয়ে বসে আছিস ওইখানে ওই আকাশ আবিদ বাবাই এর কি অবস্থা করেছে আমরা কেউ জানিনা
মেয়লি কন্ঠ শুনে মাথা তুলে তাকায় আসাদুজ্জামান শেখ। নিজের বোন কে দেখে অবাক হয়না সে জানতো তার বোন আসবে
আসাদঃআমার ছেলে এখন আকাশের কুকুরের পেটের খাবার হয়ে আছে
মহিলাঃকিহ বলছিস এই সব
আসাদঃওই আকাশ কে আমি ছারবোনা এতোদিন শুধু সম্পত্তির জন্য ওকে শেষ করতে চাইলেও এবার আমার ছেলের প্রানের শুধ তুলতে হবে। আমার ছেলের এক একটা ব্যাথায় করা চিৎকারের শোধ তুলবো
মহিলাঃসব হয়েছে ওই নওশিনের জন্য ওই মাথা নষ্ট করেছে সব গুলোর।
আসাদঃসব গুলোর রক্ত দিয়ে গোসল না করে শান্তি পাবোনা।তুই দেখেনিস বোন।।
মহিলাঃহুম চল ভাবি কান্না করতে করতে অস্থির হয়ে পরেছে।
আসাদ শেখ চেয়ার থেকে উঠে নিজের বউ এর রুমের দিকে পা বারায়৷।।৷
________
সবাই মিলে চৌধুরী ভিলাই প্রবেশ করতেই নিলিমা আর নীহারিকা(রামিসার না)তাদের কাছে এগিয়ে আসে। রামিসা তার মাম্মিকে জরায় ধরে।।
রামিসাঃমিসড ইউ সো মাচ মাম্মি
নীহারিকাঃএতোদিন পরে বুঝি মাম্মির কথা মনে পরলো। আসবি জানালি না যে।
নীহারিকা বেগমের কথায় সবার ভ্রু কুচকে যায় কারন রামিসা সবাইকে বলেছিলো যে নীহারিকা বেগম ওকে ফোন করে আসতে বলেছে সেজন্য সে এসেছে।
রামিসা আমতা আমতা করে কথা কাটানোর জন্য বলে উঠে
রামিসাঃএতো দিন পরে আসলাম আর প্রশ্ন উত্তর শুরু করে দিয়েছো পরে সব হবে আগে এদের দেখো রামিসা একটু সরে দাড়াতেই নওশিন আর আরুকে দেখতে পায়।
নীহারিকাঃএরা কে রে তোর ফ্রেন্ড
রামিসাঃউহু তোমার আদরের ছেলের বউ আর ওটা আরিয়ান ভাইয়ার বউ
আদরের ছেলের বউ শুনে নীহারিকা কিছুক্ষনের জন্য মুখটা অন্ধকার করে নিলেও সাথে সাথে ঠোঁটের কোণে অমায়িক একটা হাসি টেনে আরু আর নওশিনের মাথায় হাত বুলায় দেয়।
নীহারিকাঃআসো সবাই ভিতরে আসো
নিলিমাঃখবরদার কেউ যদি বাড়ির ভিতরে একটা পা অব্দি রেখেছিস
(মুখ টা গম্ভির করে)
নিলিমার এমন কথা শুনে আরু আর নওশিন ঘাবড়ে যায় তারা মনে করে তাদের আসা উনার পছন্দ হয়নি।।।
চলবে!