#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২১
,
,
,
,
,
আহত অবস্থায় পরে আছে ফ্লোরে আবিদ।সারা শরীর থেকে রক্ত পরছে। শরীরে জরানো শুভ্র শার্ট টাও রক্ত বর্ণ ধারন করেছে।আবিদ এর রক্তাক্ত শরীরের সামনে বসে আছে আকাশ।চোখ মুখে ফুটে উঠেছে হিংস্রতা।সে পারছেনা আবিদ কে এই মহূর্তে জানে মেরে ফেলতে কারন আবিদ একা নয় তার সাথে আরও দুইজন লোক আছে একজন মহিলা একজন পুরুষ কিন্তু তারা কে এটা আকাশের বোধ গম্য হচ্ছেনা প্রথমে ভেবেছিলো হয়তো আবিদ কে সাপোর্ট করছে আরিয়ান এর বাবা মা। কিন্তু সেদিন যখম এট্যাক করা হয়েছিলো গাড়িতে আরিয়ান এবং আরুশি উভয় ছিলো। কোন বাবা মা নিজের ছেলের আর ছেলের বউ এর জীবন ঝুকিতে ফেলবে না।
কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আকাশের মাথা ধরে যায়।গায়্ব্র সর্বচ্চ শক্তি দিয়ে বড় লোহার হাতুড়ি দিয়ে আবিদ এর মাথায় বাড়ি মারে।আবিদ এর নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে আসে।কান আর বাম পাশের মুখ একবারে থেতলে গেছে।।।
আকাশঃতোকে এতো তাড়াতাড়ি মারার একটুও ইচ্ছা ছিলোনা ভেবেছিলাম তোর সাথী দের ধরে তাদের কে তোর সামনে শেষ করবো তার পরে তোকে মেরে ফেলবো কিন্তু নাহ তুই সেটা হতে দিলিনা আমার সামনেই আমার মায়ারানীর দিকে হাত বারালী হা একটা বার ভাবলী না আকাশের মায়াবতীকে ছোয়া এতোটা সোজা।এতো সহযে তুই রহমান মঞ্জিলে ঢুকে গেলি আমার মায়াবতীর দিকে হাত বারালী আর আমি জানতেও পারলাম না (ভয়ংকর হাসি দিয়ে)
আবিদ কিছু বলতে পারছেনা তার শরীরে ব্যাথায় আহ বলে শব্দ বের করার ও শক্তি অবশিষ্ট নেই। সে শুধু ফ্লোরে নিজের শরীর টাকে ছেড়ে দিয়ে নিজের মৃত্যু কামনা করছে নিজের করা পাপ গুলো তার চোখের চসামনে ভাসছে
আকাশঃহ্যালো আরিয়ান বল
আরিয়ানঃতাড়াতাড়ি হস্পিটালে চলে আয়৷ মিষ্টু বাচ্চা প্রচন্ড ভয় পেয়ে আছে খালি তোকেই খুজছে। আমাদের দাড়া সামলানো সম্ভব হচ্ছেনা।
আকাশঃআমি আসছি।
ফোন রেখে গার্ড দের কিছু ইশারা করে সেখান থেকে চলে গেলো।গাড়িতে বসে স্টেয়ারিং এ হাত দিতেই হাত দুইটা কাপতে থাকে। কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছেনা হাতের কাপুনি বন্ধ করা শুধু হাতেই না ধীরে ধীরে আকাশের সমস্ত শরীর যেনো আসাঢ় হয়ে আসছে।অনেক কষ্টে ড্রাইভার কে গাড়ি চালাতে বলে সে পিছনে যেয়ে বসে।সিটে শ্রীর এলিয়ে দিয়ে ঢুব দেয় কিছু ঘন্টা আগে।
আকাশ নওশিন কে নিয়ে লেকের ধারে আসে নিরিবিলি জায়গায়।এও জায়গা টা নওশিনের অনেক পছন্দের। এখানে তারাএর আগেও অনেক বার এসেছিলো।দুইজনার অনেক মিষ্টি মিষ্টি সৃতি জরায় আছে।কিন্তু এবার শুধু লেক নেয় বরং লেক টা কে অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ফুল ফেরি লাইট কার্টেন্স পিলারস আর তার ঠিক মাঝখানে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে লেখা ওয়েলকাম টু মাই ওয়ার্ল্ড সুইটহার্ট।
নওশিন এর চোখ মুখ জুড়ে ছেয়ে যায় এক রাশ মুগ্ধতা। তার চোখ জোড়ায় পানি টলমল করছে।নওশিন এর ডান হাত নিজের হাতে নিয়ে তাকে নিয়ে যায় লাভ সেপের উপরে। সেখানে একটা দোলনা আছে ফুল দিয়ে ডেকোরেট করা।নওশিন কে সেটাতে বসাতেই নওশিনের উপরে ফুলের বর্ষণ শুরু হয়ে যায়।দোলনা টা সামান্য উপরে উঠে একদম আসতে আসতে ঘুরতে থাকে।নওশিন দুই হাত দুই দিকে ছড়ায়ে খিলখিল করে হেসে উঠে।আকাশের বুকের স্পন্দন যেনো মহূর্তে কয়েশ গুন বেরে যায়।এই হাসির মায়ায় তো জড়িয়ে ছিলো সে বহু বছর আগে। যে মায়া এখনো কাটেনি বরং দিন দিন বেরেই চলেছে।
ফুলের বর্ষণ শেষ হতেই আকাশ নওশিন কে নিচে নিয়ে আসে।
আকাশঃআমি বাকিদের মতো হাটু গেড়ে প্রপোজ করতে পারি না। আর না আমি করতে চায়।কারন না আমি তোমার ছোট না তুমি আমার ছোট।আমরা দুইজন সমান সমান। এই সম্পর্কতে দুইজনের সম্মান থাকবে সমান সমান। আর আমি এই হাটু গেড়ে প্রপোজ করার ফর্মুলাই বিশ্বাসী না। আকাশ সব কিছু নিজের স্টাইলে করে। এটাও নাহয় আমার নিজের স্টাইলেই করলাম কি বলো সুইটহার্ট (চোখ টিপ মেরে)
আকাশের কথায় নওশিনের ঠোঁটের কোণে হাসি থাকলেও চোখে পানি টোলমল করছিলো কিন্তু আকাশের বলা শেষের কথা শুনে ফিক করে হেসে দেয়।
আকাশ নিজের পকেট থেকে একটা কোমরের বিছা নিয়ে সেটা নওশিন কে পড়ায় দেয়
আকাশঃএটা আমার বেবির জন্য। বেবি মাম্মামের টামিতে এজন্য মাম্মাকে দিলাম রাগ করেনা বাবাই টা আচ্ছা (জামার উপরেই নওশিনের পেটে চুমু দেয়। নওশিন খানিকটা কেপে আকাশের কাধ খামছে ধরে)
আকাশ এবার একটা ক্রাউন বের করে।।
আকাশঃজানিনা নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করা আর জানি ঠিক কতোটা তোমাকে ভালোবাসি বলবোনা তোমার জন্য সব করতে রাজি কারন আমার সাধ্যে মতো সব এনে তোমার পায়ের কাছে থাকবে। ঠিক সে ছোট নিস্বপাপ নওশিন থেকে বড় মায়াবিনী নওশিন কে ভালোবেসে এসেছি।হ্যা কষ্ট দিয়েছি তার জন্য ক্ষমা চাবোনা কারণ ক্ষমা নামক ছোট শব্দ আমার মায়াবতীর অমূল্য চোখের পানির শোধ তুলতে পারবেনা। কিন্তু হ্যা নিজের ভালোবাসা দিয়ে আমার রাজ্যের রাজ রানী করতে চায় পুরানো অতীত কে বহুদূরে ঠেলে দিতে চায় আমার রাজ্যের রানী হবে তো আমার মায়াবতী
আকাশের চোখের কোণে পানি স্পষ্ট। নওশিন ও কান্না করছে গলা ধরে আসছে । ঠোঁট কামড়ে অনেক কষ্টে হু বলে উঠে। আকাশ মুচকি হেসে নওশিন কে ক্রাউন টা পড়ায় দেয়।নওশিন আকাশের বুকে মাথা ঠেকায়ে কেদে উঠে।আকাশ ও নিশ্বব্দে নিজের চোখের পানি ফেলছে এই পানি কষ্টের না সুখের ভালোবাসাকে নিজের বুকে আগলে রাখার খুশি।
খাওয়াদাওয়া করে নওশিনকে নিয়ে আকাশ বাড়ির উদ্দেশ্য যেতে নিলে নওশিন বলে উঠে সে নাকি তার মামার বাসাতে যাবে। কালকে নাহয় নিজের বাসায় যাবে।মামাকে তো বলতে হবে।আকাশ ও রাজী হয়।কিন্তু কেন জেনো তার মন মানছিলোনা। সে নওশিনের সাথে থাকতে চাইলে নওশিন মানা করে দেয়।সে আজকের রাত টা তার মামা মামীর সাথে কাটাতে চায় আকাশ মনের সাথে যুদ্ধ করে রাজি হয়।
আকাশ নওশিনের কপালে ছোট একটা কিস করে গাড়ি নিয়ে চলে যায়।আকাশ যেতেই নওশিন ভিতরে যাওয়ার জন্য পা বারাতেই পিছন থেকে আবিদের হাসি শুনে স্তব্ধ হয়ে যায়।।
আবিদঃহেয় বেবি গার্ল।লালে তো একদম হট লাগছে উফফফ কাতিলানা(বিচ্ছিরি ভঙ্গিতে)
নওশিনের ইচ্ছা করছে দৌড়ে সেখান থেকে চলে যেতে কিন্তু পারছেনা। তার পা যেনো আটকে গেছে ভয়ে শরীর টা আর এগুচ্ছেনা। ভয় করছে তার মনে মনে বলে উঠে।
নওশিনঃআকাশ কই আপনি। আই নিড ইউ আকাশ প্লিজ। আমি চায়না পুনরায় সে কালো রাত্রি। আকাশ হেল্প মি।
আবিদ ততোক্ষনে নওশিনের কাছে চলে আসে। নওশিন এবার নিজের মাঝে সাহস জোগায়। সে যে এখন একা না তার মাঝে বেরে উঠছে আরেকটা প্রান সে প্রান কে রক্ষা করার দ্বায়িত্ব তার।
আবিদ নওশিন কে ছুতে যাবে এর আগেই নওশিন ঘিরে আবিদ কে থাপ্পড় মেরে দেয় কিন্তু এতে যেনো আবিদের কিছুই যায় আসেনা সে হো হো করে হেসে উঠে।নোংরা সে হাসি দেখে নওশিনের গা গুলায় উঠে
আবিদঃতুই কি মনে করেছিস তোর এই নরম হাতের থাপ্পড় আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে উহু উলটা তোর এই নরম নরম হাত টা কষ্ট পাবে
(আবিদ ক্ষপ করে নওশিনের হাত ধরে নিজের গালে ছোয়াতে লাগে)
নওশিন এবার ভয়ে চিল্লায় উঠে।গার্ড রা নওশিনের চিল্লানো শুনে আসতে নিলেই দেখে গেট বাহির দিয়ে লোক করা। তারা প্রাচীর এর উপর দিয়ে উঠতে নিলে কারেন্ট এর তার দেখতে পায় সব গুলো পিছিয়ে যায়।একজন গার্ড তাড়াতাড়ি আকাশ কে ফোন করে তারা রায়হান কে ফোন করেনা কারন তারা যেখানে বের হতে পারছেনা রায়হান ও পারবেনা
নওশিন এবার নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আবিদ কে ধাক্কা মারে। আবিদের রাগ উঠে যায়। সে ঠাস করে নওশিনকে থাপ্পড় মেরে দেয় চড় এর শক্তিটা এতটাই প্রখোর ছিলো নওশিন এর মাথা যেয়ে পিলারের সাথে বারি খায়।
ততোক্ষণে নিহান আর আকাশ সেখানে পৌঁছে যায়।নিহান কে দিয়ে আবিদ কে নিজের গোডাউনে পাঠায় দেয় আর নিজে চলে যায় নওশিন কে নিয়ে চলে যায় হস্পিটালে।
যেহেতু নওশিন প্রেগন্যান্ট আর পিলারের সাথে ধাক্কা খাওয়াই পেটেও চাপ পড়ে। ডাক্তার রা তাড়াতাড়ি নওশিনকে এডমিট করে নেয়। আকাশ এর চোখ ছিলো নওশিনের গালে আর হাতে থাকা আঙুলের ছাপে।নিহান আরিয়ান ঈশান আরু আর রামি আসার পরেই আরিয়ান কে নওশিনের খেয়াল রাখতে বলে বেরিয়ে যায়।
আবিদ এর উপরে সমস্ত রাগ ঝেড়ে তাকে জিজ্ঞেস করে তার সাথে বাকি দুইজন কে কে সে বলে উঠে ড্যাড কিন্তু মহিলার নাম বলে না। আকাশের প্রথমে বিশ্বাস করে নিলেও পরে সব হিসাব নিকাশ করে মনে করে নেয় যে আবিদ মিথ্যা বলছে।
তারপরের ঘটনা তো আপনার জানা আছে।
বর্তমানে,,,,
নওশিন ভয়ে নিজের আশেপাশে কাউকে আসতে দিচ্ছেনা আকাশ আকাশ করছে। হুট করে একটা ট্রে ছুড়ে মারে আর সেটা যেয়ে লাগে আকাশের মাথায়।নওশিন বিচলিত হয়ে যায় ছুটে আসে নওশিনের কাছে।।।
চলবে!