আমার তুমি পর্ব-২০

0
1946

#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২০
,
,
,
,
,
আকাশ নওশিনের মামা বাড়িতে ঢুকতে যেয়ে অবাক হয় কারন গার্ড এর মাত্রা দ্বিগুন আর কেউ তাকে ভিতরে যেতে দিতে রাজি না।আকাশের মেজাজ এবার চওড়া হয়। তাকে নাকি নিজের মামা শশুড় বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা। নিজের বউ এর কাছে যাইতেও এদের পার্মিশান লাগবে নাকি

আকাশঃলাস্ট বার বলছি ঢুকতে দিবে কি না (চিৎকার করে)
বডিগার্ডঃসরি স্যার আমাদের কিছু করার কিছু নাই ছোট মেম সাহেবের অর্ডার যেনো আপনাকে ঢুকতে দেওয়া হয়না
আকাশঃছোট ম্যাম সাহেব মানে। আমার জানা মতে আমার মামা শশুড়ের ১টাই ছেলে তাহলে এই ছোট ম্যাম ও সিট নওশিন(মনে মনে)

আকাশ পিছন ফিরে যেতে নিলেই বডিগার্ড মনে করে আকাশ চলে যাচ্ছে একজন বডিগার্ড নওশিন কে ফোন দিয়ে জানায় আকাশ চলে যাচ্ছে।

নওশিনঃউল্লুকের ঘরে ভাল্লুক আমারে প্রথমে না বলে গেলি এখন আবার সামান্য বডিগার্ড এর জন্য এই ভাবে চলে যাচ্ছিস।ভিতুর আন্ডা কোথাকার। হ্যা কি জানি বলেছিলো ওর ভাই কোল্ড ব্লাডি মাডারার সে নাকি নিজের শত্রুদের উপর কোন দিন ও দোয়া মায়া করেনা।যে জিনিস পছন্দ করে সেটা নাকি যে ভাবে হোক ছিনিয়ে নেয়।হা আইসে যতোসব ঢোপ(বিরক্তি রাগে নওশিনের সারা শরীর রি রি করছে।হাতে থাকা ফলের প্লেট টা আছাড় মারে)

রাইশা নওশিনের পাশে দাড়িয়েই কফি মেক করছিলো নিজের আর নওশিনের জন্য হুট করে আওয়াযে ভয় পেয়ে যায় সে।

রাইশাঃকি হলো মামনি হঠাৎ এতো রাগ কেন দেখি দেখি তাকাও তাকাও(আদ্রিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে)
নওশিনঃজানিনা মামি মনি আজকাল একটুতেই মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে।ভালো লাগেনা কিছু।মনে হয় মাথার ভিতর রাগ রা কিলবিল করছে।এই কান্না পায় এই আবার ভাংচুর করতে মন চায়(কাদো কাদো কন্ঠে)
রাইশাঃএরকুম হয় বাচ্চা টা প্রেগ্ন্যাসির সময় কিন্তু এখন কার রাগ টা পিচ্চি বাবাইয়ের জন্য তো নয়(পেটে হাত দিয়ে)
নওশিনঃআকাশ চলে গেছে আমার সাথে দেখা না করেই (মাথা নিচু করে)

রাইশা কিছু বলতে যাবেই তার আগেই ফায়ারিং এর আওয়াজ পেয়ে দুইজনে ভয় পেয়ে যায়।রাইশা তাড়াতাড়ি রায়হান কে কল করে। নওশিন বাহিরের দিকে ছুটে যায়। রাইশাও নওশিন কে আটকাতে ওর পিছে যায় কিন্তু তার আগেই নওশিন গেট পেরুয়ে যায় আর বাহিরে দিকে তাকাতেই তার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে।

নওশিন গাড়ির উপরে সানগ্লাস পরে আরামসে বসে থেকে পেপসি খাচ্ছে।আর তার কিছু কিছু গার্ডস রায়হানের গার্ডস দের কপালে বন্দুক ঠেকায় রেখেছে বাকি রা হাওয়াতে ফায়ারিং করছে।

নওশিনঃহায় মেরা এটিটিউড বয়। আপনার সব লুক একদম কিলার খালি মন চায় গিলে ফেলি উফফ(বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে)

_________
নওশিনঃস্টপ বন্ধ করো এই সব (চিল্লায়ে)
আকাশঃস্টোপ গাইজ।

আকাশের কথায় ফায়ারিং বন্ধ হয়ে যায়।ততোক্ষনে রায়হান ও পৌছে যায়।রায়হান আকাশ কে দেখে তার আর বুঝতে বাকি নেই যে কাজ টা কার হতে পারে।রায়হান নিজের কপাল চাপড়ায়।

রায়হানঃলে এবার ঠেলে সামলা সব সময় দোয়া করতি যাতে কেউ ট্যারা আসে বাবাই এর জীবনে যে তাকে সব সমস্যা থেকে প্রটেক্ট করবে। এবার নে একদম সাইকো তোর চেয়েও এক লেভেল উপরে।

আকাশঃআরে মামা শশুড় যে আসসালামু আলাইকুম

রায়হান সামনা সামনি সালামের উওর না নিলেও মনে মনে ঠিক উওর দেয় সে।
আকাশঃমা,,,,,,,মা আমার বউ টা মানে আপনার ভাগ্নি টা না অভিমান করেছে ওরে নিয়ে একটু ঘুরে আসি
রায়হানঃএকদম না বাবাই কোথাও যাবেনা। তোমার সাথে তো একদম ই না
আকাশঃথ্যাংঙ্ক ইউ মা,,,,,,,মা। সুইটহার্ট চলো মামা শশুড় পার্মিশান দিয়ে দিয়েছে (নওশিনকে কোলে তুলে নিয়ে)
রায়হানঃআরে ওই ব্যাটা থাম। যা চলেই গেলো(হেসে দিয়ে)
রাইশাঃতুমি আটকালা না কেনো
রায়হানঃদুইজনের একা সময় কাটানো টা দরকার।
রাইশাঃহুম।না জানি কি আছে দুই বাচ্চার ভাগ্যতে.(চিন্তিত হয়ে)
রায়হানঃঅফিস থেকে তো তাড়াতাড়ি চলেই আসলাম আর যাইতেও ইচ্ছা করছেনা (দুষ্টু হেসে)
রাইশাঃএই অফিস যাও
রায়হানঃউহু এখন যাবো বেডরুমে (রাইশার দিকে এগুতে এগুতে)
রাইশাঃআরে কি করছো গার্ডস রা দেখছে তো(ঢোক গিলে)
রায়হানঃবয়েজ আইজ ক্লোজ

রায়হানের কথায় সবাই চোখ বন্ধ করে নেয়। আকাশের গার্ড রাও চলে গেছে।রায়হান রাইশাকে কোলে তুলে নিলো রাইশা ছুটাছুটি করছে কিন্তু রায়হান কোন মতেই ছাড়তে প্রস্তুত না।

রাইশাঃবুড়ার কান্ড দেখলে মনে হয় ২২ বছরের যুবক(রাগী কন্ঠে)
রায়হানঃএতো সুন্দর বউ থাকলে ৮০ বছরের বুড়ার ও নিজেকে ২৩ বছরের তাগড়া যুবক মনে হয় সেখানে তো হামতো আভি যাবান (জোয়ান)হে
রাইশাঃঅসভ্য

__________

আরিয়ানঃআর ম্যডাম সরি তো আর কতো রেগে থাকবেন বেচারীকে তো দুইটা থাপ্পড় দিয়েছেন আরও দেওয়ার ইচ্ছা আছে নাকি।

(আরুকে নিজের চেয়ারে বসায়ে চেয়ারের দুই হ্যান্ডেলের উপর হাত রাখে)
আরুঃচুপ একদম চুপ।কথা বলবিনা তুই আমার সাথে। সুন্দররী সুন্দরী এসিস্ট্যান্ট রেখে এইজন্য বাসায় যেতে ইচ্ছা করেনা এই জন্য আজকাল আমার জন্য সময় হয়না আমার ছোয়াও এই জন্য খারাপ লাগে এই জন্যই বুঝি কালকে রাতে আমার ছোয়াতে এতোটা বিরক্ত হয়েছিলেন (নিজের চোখের পানি মুছে)

আরিয়ানের মাথায় হাত মেয়ে কোথাকারা কথা কথায় নিয়ে গেলো আল্লাহ।

আরিয়ানঃএকটা বার বলবা তো কি হয়েছে এখানে। না বললে বুঝবো কি করে রে

আরুঃকিছু হয়নি ভাইয়া। (মুচকি হেসে)
আরিয়ানঃভাইয়া(অবাক হয়ে)
আরুঃহুম এটাই তো আমার পরিচয় তাই না আমি তোমার বোন তোমার ফুফির মেয়ে।আজকে থেকে নাহয় এটাই আমার পরিচয় হলো।কথায় আছেনা জোড় করে কোন কিছুই টিকে না। এজন্য হয়তো আমার ভালোবাসাও টিকলোনা (আলতো হেসে আরিয়ান কে পাশ কেটে চলে গেলো)

আরিয়ান চেয়েও পারলোনা নিজের অভিমানী প্রিয়সীর হাত ধরতে।আরু দরজা খুলতে যাবে তার আগেই আরিয়ান পিছন থেকে আরুকে জরায় ধরে

আরিয়ানঃবার বার যে বলছিস জোড় করে জোড় করে।আচ্ছা ১০ টা বছর তোকে আগলে রেখেছি। কোন ছেলেকে তোর আশেপাশে ঘেষতে দি নাই এক টা ফুলের টোকা তোর শরীরে পড়তে দি নাই।তোর সব শখ আহ্লাদ যাতে আমি নিজে পূরন করতে পারি এজন্য ১৮ বছর বয়সে পার্ট টাইম জব নিয়েছিলাম যাতে নিজের পিচ্চি বউ এর আহ্লাদ মিটাতে পারি। আমি ছাড়া সে যেনো কারো কাছে নিজের আবদার না রাখে। তার দুনিয়া জুড়ে যেনো আমি থাকি সে জন্য আমার দুনিয়া জুড়ে শুধু তাকে।রেখেছি বিদেশে যেয়েও কোন মেয়েকে নিজের আশেপাশে ঘেষতে দি নাই যাতে আমার অভিমানী রাজ কন্যা টা কষ্ট না পায়।আমার মনে রানিকে আমি কি করে জোড় করে বিয়ে করি বলতে পারিস। যাকে পাওয়ার এতো সাধনা এতো অপেক্ষা কি করে পারি তাকে অবহেলা দিতে।।। (আরুকে নিজের দিকে ফিরিয়ে কপালে ভালোবাসার পরশ একে দেয়)

আরুশি হাউমাউ করে কেদে উঠে আরিয়ানকে জরায় ধরে।আরিয়ান এর বুকের মাঝে আগলে নেয়।

আরুশিঃআমি ভয় পেয়ে গেছিলাম তোমাকে হারানোর। সে সে যখন বলেছিলো আরিয়ান আমার হবু স্বামি আমার বাগদত্তা তোমরা একে অপরকে ভালোবাসো তখন পারিনি নিজেকে সামলাতে মেরে দিয়েছি চড়

আরিয়ানঃকি বলেছে ফার্স্ট টু লাস্ট সব আমাকে বলবা একটা ওয়ার্ড ও যেনো মিস না যায়।

ফ্ল্যাশব্যাক,,,,,

ঈশান রামিকে নিয়ে অন্য ডাক্তারের কেবিনে যায় যেহেতু রামিসার ব্যাথা বেশি এজন্য আরিয়ানের জন্য ওয়েট করেনা আরুকেও বলে কিন্তু সে জানায় সে আরিয়ানের কাছেই ব্যান্ডেজ করে নিবে সেজন্য সে আরিয়ানের কেবিনে যেয়ে দেখে একটা স্টাইলিশ মেয়ে মর্ডান ড্রেস আর ভারি মেক আপ করে সোফার উপরে বসে আছে। আরু বুজে যায় হয়তো এটা আরিয়ানের এসিস্টেন্ট সে কিছু না বলে আরিয়ানের ছেয়ারে বসে আরিয়ানের ফোন হাতে নেয়। হুট করে মেয়েটা এসে আরুর হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নেয়

সায়রাঃহ্যা মেয়ে তোমার মাঝে ম্যানারস বলতে কোন শব্দ নাই তাই না এভাবে বিনা নক না করে ঢুকেছো আবার আরিয়ান এর চেয়ারে বসে ওর ফোন হাতে নেওয়ার সাহস করেছো (রাগী গলায়)

আরুঃআপনি মেই বি জানেন না আমি কে আমি আসফিয়া আরুশি আরিয়ান খান। উর্ফে আরিয়ান খানের ওয়াইফ

সায়রাঃওহ তো তুমি আরিয়ানের বোন ফুফাতো স্টাফের কাছে শুনেছিলাম তুমি নাকি ওলোয়েজ ওর পিছনে পরে থাকো।রাইট

আরুঃহোয়াট আমি ওর বউ
সায়রাঃস্টোপ আর একবার আমার আরিয়ান কে নিজের বললে এমন অবস্থা করবো নিজেকে চিনতে পারবা না
আরুঃতো তোমার আরিয়ান
সায়রাঃইয়েস আরিয়ান আর আমার এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে অবশ্য বাড়ির কাউকে এখনো আরিয়ান জানায় নি।খুব ভালোবাসে আমাকে অনেক দ্রুত বাসায় জানাবে তারপরে আমাদের বিয়ে।

ব্যাস আরু আর সহ্য করতে না পেরে ঠাস ঠাস করে সায়রার দুই গালে থাপ্পড় মারে।সায়রা বুঝতেও পারেনা আরু এমন কিছু করবে। সায়্রা রাগে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরু আরিয়ানের ফোনের ওয়ালপেপার সায়রার সামনে তুলে ধরে যেখানে আরিয়ান বর বেসে আর আরু বধু বেশে আরিয়ানের বুকে মাথা রেখে আছে। সায়রা বুঝতে পারে সে আসলে কি ভুল টা করেছে।গালে হায় দিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়ায় যায় আর সে মহূর্তে আরিয়ান রুমে প্রবেশ করে।।।।।।

বর্তমানে,,,

আরিয়ান রাগে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রেখেছে।রাগে তার কপালের রোগ গুলো ফুলে উঠেছে।।।

চলবে!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে