আমার তুমি পর্ব-১৬

0
1816

#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৬
,
,
,
,
,
গান টা বলতে বলতেই নওশিনের চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরে।আরিয়ান কিছু বলতে যাবে তার আগেয় আরুশি চিল্লায়ে উঠে।আরুশির চিল্লানোতে সবাই হতদম্ভ হয়ে যায় আরুশি হাতের ইশারায় সামনে আঙ্গুল দিয়ে দেখায় সামনে ফুল ফর্সে দুইটা গাড়ি তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে।ঈশান বুঝছে না সে কোন দিকে যাবে কারন দুইটা গাড়ি পুরো রাস্তা ব্লোক করে রেখেছে।আরিয়ান এক হাত দিয়ে আরুশিকে জরায় ধরে। রামিসাও ভয়ে জোড়সর হয়ে ঈশানের বুকে মাথা রাখে ভয়ে বেচারী কেদেই দিয়েছে।ঈশান অনিচ্ছা থাকার সর্তেও এক হাত দিয়ে আগলে নেয় রামিসা কে।

নওশিনঃআকাশ প্লিজ কাম। আপনার মায়াবতী আর প্রিন্সেস এর আপনাকে প্রয়োজন প্লিজ আকাশ (মনে মনে কথা গুলো বলে এক হাত পেটে দেয় নওশিন)বেবি ডোন্ট বি স্কের তোমার বাবাই তাড়াতাড়ি আসবে তোমার বাবাই আমাদের কিছু হতে দিবেনা।

ঈশান গাড়ি রিভার্স এ নিতে শুরু করে।এরই মধ্যে পর পর দুইটা বুলেট ট্রাক এর জানালা ভেদ করে যেয়ে ড্রাইভার এর মাথাতে যেয়ে লাগে একদম হেড সোট।

গুলির আওয়াজে সবাই সামনে তাকায় আর তাকাতেই অবাক হয়ে যায় পিছনে ঘুরে আছে দুইজন যুবোক দুইজনার হাতেই এক বন্দুক। সবাই গাড়ি থেকে নেমে পরে।

তাদের মধ্যে একজন যুবক ঘুড়ে দাড়াতেই আরিয়ান বলে উঠে

“নিহান”

আরিয়ান এর কথা শুনে ঈশান অবাক হয়ে যায়।কারন এই নামটা তার শুনা মানুষ টা কে না চিনলেও এর কথা সে শুনেছে

ঈশান এর মুখ ফোশকে বের হয়ে গেলো
“আকাশের সবচেয়ে বড় শত্রু”

ঈশানের কথা শুনে নিহান হেসে উঠলো। নওশিন কেবল ওদের দিকে এক পা এক পা করে এগুচ্ছিলো কিন্তু নিহান এর পাশে দাঁড়ানো মানুষ টিকে দেখে আর তার পা চললো না আর পা যেনো ভেংগে আসতে নিলো।হাটু গেড়ে বসে পড়লো রাস্তায় এতোদিন চোখের মাঝে যে অশ্রু জল সবার আড়ালে রেখেছিলো আজ সেগুলো উমুক্ত হলো।

আকাশ নওশিনের দিকে এগুতে নিলে নওশিন হাত দিয়ে মানা করে দিলো।নিজের কাছে আসতে দিলোনা আকাশ করুন চোখে নওশিনের দিকে তাকালো।

নওশিনঃআমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না মিস্টার চৌধুরী ভুলেও না। আমার কাছে আসার অধিকার আমাকে ছোয়ার অধিকার আপনি হারিয়ে ফেলেছেন। আই জাস্ট হেট ইউ মিস্টার আকাশ চৌধুরী শুনলেন আপনি সো আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না।
(চোখের পানি মুছে উঠে পরে নওশিন)

পাশে যাওয়া একটা সিএনজি তে উঠে পরে নওশিন।চলে যায় অজনা গন্তব্যেতে।

আকাশ পরে যেতে নিলেই আরিয়ান এসে আকাশ কে ধরে।ঈশান ও ভাই এর কাধে হাত রাখে।এতোক্ষনে নিহান ও নিজের গাড়ি নিয়ে চলে আসে।সবাই মিলে আকাশের বাড়িতে যায় তারা মনে করেছিলো যে নওশিন হয়তো এখানেই এসেছে কিন্তু সবার ধারণা ভুল প্রমান করে ফেলে নওশিন। কারন এখানে কোথাও নওশিন নেয়।

আকাশের বুঝতে বাকি নেই তার মায়াবতীর এতোটাই অভিমান হয়েছে যে একটাবার তাকে নিজের পক্ষে কোন কথা অব্দি বলতে দিলোনা। নোট ইভেন এ সিংগেল ওয়ার্ড।

আকাশ মেঝেতে বসে চিৎকার করে উঠে মায়াবতী প্লিজ কাম ব্যাক একটাবার ফিরে এসো একটাবার আমাকে বুঝাতে দেও নিজের দিকটা রাখতে দেও প্লিজ(কান্না করতে করতে)

আরিয়ান ঈশান আকাশ সব জায়গাতে নওশিন কে খুজে কিন্তু কোথাও তাকে পায়না। আকাশ এর পাগল প্রায় অবস্থা

,
,
,
,

অন্ধকার রুমে নওশিনের ছবি বুকে জরায়ে বসে আছে আকাশ।চুল গুলো উস্কোখুস্ক। চেহারা শুকিয়ে গেছে।পরনের জামা কুচকে গেছে আজ ১ টা সপ্তাহ দিন রাত এক করে খুজছে কিন্তু কোথাও কোন চিহ্ন অব্দি পায়নি তারা।

আরিয়ান তখন এক্সট্রা চাবি ইউজ করে রুমে প্রবেশ করে হাতে তার খাবার। আকাশ সেটা দেখে বলে উঠে
“আমি খাবোনা নিয়ে যা এই খাবার।যতোক্ষন না আমি ছোয়ার খোজ পাচ্ছি ততোক্ষন আমি খাবারের একটা দানাও মুখে নিবোনা

আরিয়ানঃমিষ্টিবাচ্চার খোজ পেয়ে গেছি
আকাশঃসত্যি সত্যি কোথায় কোথায় আমার মায়াবতী আমাকে নিয়ে চল প্লিজ আমি আমি আমার মায়াবতী কে দেখতে চায় আমার প্রিন্স কে দেখতে চায় প্লিজ।
আরিয়ানঃএতোটা সহজ না কারন মিষিবাচ্চা এখন যার কাছে আছে তার কাছ থেকে মিষ্টিবাচ্চার অনুমতি ছাড়া নিয়ে আসা সম্ভব না

কথাটা শুনতেই আকাশের ভ্রু কুচকে যায়।আকাশ এর এই রিয়েকশানের মানে যানে আরিয়ান সে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করে

আরিয়ানঃরায়হান রহমান শামসুর রহমানের বড় ছেলে। একদম শামসুর রহমানের মতো তেমন তেজী৷ জেদী বাবার সব গুন যেনো তার মধ্যে রয়েছে।তোকে যে কম্পানি বার বার মাত দেয় সে টা রায়হান রহমানের। সকল পাওয়ার তার হাতে।আর নওশিনের যেহেতু সব মনে ছিলো তাই সে গেছিলো তার নানা ভাই এর কাছে ব্যাস সব শুনে মামার রাগ সপ্তম আকাশে চড়ে আছে।

আকাশঃতুই জানলি কি করে নওশিন উনার কাছেই আছে।

আরিয়ানঃআমাদের সকল কাজের উপরে রায়হানের নজর আছে।ব্যাস সে জানে যায় আমরা হাত ধুয়ে তার ভাগ্নিকে খুজচ্ছি তাই ফোন দিয়ে বলে আমার ভাগ্নিকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেও। এতো বছর তোমাদের হাতে রেখেছিলাম আমার ভাগ্নিকে কিন্তু তোমরা তার খেয়াল রাখনি তাই এখন সে আমার কাছেই থাকবে

আকাশঃতাহলে এতোবছর কেন নওশিন কে নিয়ে যায়নি কেন যখন ওই পরিবারের তার উপরে অত্যাচার হচ্ছিলো।

আরিয়ানঃতখন নিয়ে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু নওশিন যেতে নারাজ ছিলো ছোট বেলায় রহমান নিবাসেই থাকতো সে কিন্তু সৃতি হারানোর পরে আর যায়নি মামা চেষ্টা করেছিলো অনেক কিন্তু সে কিছু তেই আমাকে আর ঈশান কে ছাড়তে প্রস্তুত ছিলোনা।আর আরু তো আছেই দুইজন যতোই মারামারি চুল টানাটানি করুক একে অপরের জান তারা।

আকাশঃআমি যাবো আমার মায়াবতীকে আনতে
আরিয়ানঃএতো সহজ না
আকাশঃতুই ভুলে যাচ্ছিস আমি কে (বাকা হেসে)
ঈশানঃতুমি কতোবড় পাগল সেটা সবাই জানে কিন্তু রায়হান কতোবড় সাইকো সেটার অনুমান নাই তোর।রায়হান কোন নদীর থাকা হিংস্র মাছ না সে সমুদ্রের রাজার মতো হিংস্র।তার হাত কতোদূর তোর অনুমান অব্দি নাই তার একটা ছোট নমুনা দেখে নে (হাতে থাকা ট্যাব টা আকাশের সামনে তুলে ধরে)

ভিডিওঃবিশাল একটা এড়িয়া জুড়ে ফাইটিং হচ্ছে।১০ ১২ জন ঘিরে রেখেছে একটা লোক কে। চোখ তার কাপড় দিয়ে বাধা।প্রথমে এক জন এক জন করে আসলেও পরে এক সাথে সব গুলো আসে আর সবাইকে এক সাথে ঢেড় করে দেয় রায়হান রহমান।

চারিদিকে কড়তালির রোল পরে যায়।

ভিডিও শেষ হতেই আকাশ হাহা করে হেসে উঠে।আরিয়ান আর ঈশানের ভ্রু কুচকে যায়

ঈশানঃঅতি শোকে মাথাটাথা নষ্ট হয়ে গেলো নাকি রে
আরিয়ানঃআমার ও তো তাই মনে হয়

দুইজনার ফিসফিস করে কথা বলার আওয়াজ ঈশানের কানে গেলেও ঈশান রিয়েক্ট করেনা বরং ওয়াসরুমে চলে যায় নিজের জামা কাপড় নিয়ে

ঈশানঃভাইয়ের হাসিটা দেখেছিলি
আরিয়ানঃহুম নিশ্চয় সাইকোর মাথায় কোন সাইকোগিরি চলছে
ঈশানঃআমার ও তাই মনে হয়
আরিয়ানঃবাই দা ওয়ে এই নিহান টা কই দেখেছিস ওরে।
ঈশানঃসে তো আরেকটা তার মতিগতি বুঝার উপায় নাই প্রথমে নিজের সবচেয়ে বড় শত্রুকে বাচালো এখন আবার বেশির ভাগ ই গায়েব থাকে। দুইটা এক
আরিয়ান/ঈশানঃহ্যাসটেগ সাইকো
,
,
,
,
,
নওশিন নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে তার ৩ মাস চলছে।কিন্তু এই ৩ মাসের মাথায় নওশিনের খালি ঘুম আর ঘুম আর আর খালি খাই খাই মিনিট ২ এক পরেই এটা ওটা খেতেই হবে ওর। মাঝেমধ্যে ওর মনে হয় সে রাক্ষস হয়ে গেছে।

হঠাৎ হুডি পরা একটা ছায়া নওশিনের রুমে প্রবেশ করে।হুডির মাথাটা নামিয়ে আগে রুমের সিসিটিভির কাছে যায়

আকাশঃ সম্মানীয় মামা শশুড় এখন আপনার ভাগ্নি জামাই আর ভাগ্ন রোমান্স করবে সো ডোন্ট ডিস্টার্ব।

রায়হান রহমান হেসে উঠে।সে ক্যামেরা ওফ করে বেড রুমে চলে যায়।

রাইশা(রায়হানের বউ)ঃব্যাপার কি আজকে এতো খুশি
রায়হানঃভাগ্নে জামাই পাইসি একবারে মনের মতো
রাইশাঃমানে(অবাক হয়ে)

রায়হান সব বলে রাইশা কে সব শুনে রাইশাও হাসতে শুরু করে।
রাইশাঃতুমি ইচ্ছা করেই সেদিন আরিয়ান কে ফোন দিয়েছিলা তাইনা(রায়হানের বুকে মাথা রেখে)

রায়হানঃহুম
রাইসাঃকিন্তু কেন
রায়হান ঃইটস সিক্রেট ওয়াইফি(লাইট ওফ করে)

_______

আকাশঃসুইটহার্ট(স্লো ভয়েজ এ)

নওশিন যেনো কেপে উঠে। বালিশ টাকে আরেকটু শক্ত করে বুকের সাথে জরায় ধরে ঘুম দেয়
আকাশঃউফফ সুইটহার্ট এমন ভাবে বাচ্চাদের মতো ঘুমালে তোমাকে যা লাগেনা উফফ ফুল চকলেট (নওশিনের গলাতে ঠোঁট ছোয়ায়)

আকাশের ঠোঁটের ছোয়া পেতেই নওশিন এর সর্বাঙ্গে যেনো শিহরণ বেয়ে যায়।আকাশ এর গলা থেকে মুখ তুলে আকাশ নওশিনের পেটের কাছে যায়।নওশিনের পরনের লেডিস শার্টের পেটের কাছের কয়েকটা বোতাম খুলে পেটে কিস করে

আকাশঃহেই বার্বি আমি তোমার বাবাই। আমাকে শুনতে পারছো নাকি মাম্মাম এর মতো আমার উপর রাগ করে আছো হুম সরি না বাবাই টা (পেটে অসংখ্য কিস করে)

নওশিন এর ঘুম এবার ভেংগে যায়। সামনে আকাশ কে দেখতেই,,,,,,

চলবে!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে