#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৫
,
,
আজ ১ টা মাস আকাশের কোন খোজ নাই। সেদিন আরিয়ানের রুম থেকে বের হওয়ার পরে আর সে ফিরেনি।সবাই অনেক খোজা খুজি করেও পায়নি।কিন্তু নওশিন একটা বার ও জানতে চায়নি আকাশ কোথায় না খুজার কোন চেষ্টা করেছে।এমন কি আরিয়ান বিয়েতে স্থগিত করতে চায়লেও এক প্রকার জোড় করেই বিয়েটা দিয়েছে।
নওশিন ব্যালকনিতে দাড়িয়ে এক মনে চাঁদ টাকে দেখছিলো।পেটে এক হাত রেখে আলতো করে হাসে।এটা তাচ্ছিল্যের হাসি নাকি অন্য কিছু বুঝা উঠা মুশকিল।চোখে জমে থাকা পানি স্পষ্ট বলে দিচ্ছে সে কষ্টে আছে ভিষন কষ্টে।কিন্তু ঠোঁটের হাসি সেটা মানতে দিতে নারাজ।
নওশিনঃচলে গেলেন আপনিও খুব কি দোষ হয়ে যেতো থেকে গেলে।একটু বুকের মাঝ খান টাই ঠাই দিলে। আচ্ছা আমি কি খুব স্বার্থপর হ্যা হয়তো একটু বেশিই স্বার্থপর তাই তো বলতে পারিনি অতীত তুমিও আটকে দিলে আমিও আটকে গেলাম। আজ কে না নিজেকে বড্ড একা লাগছে হ্যাপি বার্থডে মাই প্রিন্স।
(হুট করে নওশিনের চোখের কোনা দিয়ে এক ফোটা জ্বল)
হুট করে একটা শিতল স্পর্শ নিজের গালে পেয়ে চমকে উঠে নওশিন। হাত অনুসরণ করে পাশে তাকায়ে দেখে আকাশ দ্বারায়ে আছে তার খুব কাছে খুব।। নওশিন মুচকি হেসে আকাশ এর হাত টা নিবিড় ভাবে জরায় ধরে বুকে নিজের মাথা ঠেকায় দেয়।
নওশিনঃআজ আসতে বড্ড দেরি করে ফেললেন যে। এতোটা দূরত্ব যে সহ্য হয়না।জানেন না আপনাকে ছাড়া আমার একটা মহূর্ত চলেনা। তবুও কেনো কষ্ট দেন মিস্টার হাসবেন্ড (আকাশের গালে নিজের ঠোঁট ছোয়ায়ে)
আকাশঃভালো লাগে যখন তুমি আমাকে কাছে পাওয়ার জন্য নিজের চোখের পানি ফেলো আকুল হয়ে আমার আসার রাস্তা দেখো উফফ সুইটহার্ট বলে বুঝাতে পারবোনা কতোটা সুখের জোয়ারে ভাসে এই হৃদয় (বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে)
নওশিনঃআমি সহ্য করলেও আমার ভিতরে বেড়ে উঠা জান টা যে পারেনা। সে তো চায় বাকি দের মতো তার বাবাই ও তাকে ভালোবাসুক আদর করুক নিবিড় ভাবে তার মা কে নিজের বুকে আগলে রাখুক আমার আর আমার সন্তানের নিরাপদ স্থল তো আপনি।
আকাশঃআর আমার ভালো থাকার কারণ যে তুমি।
নওশিনঃতাহলে কেনো চলে আসেন না আপনি। এই দূরত্ব আর সহ্য হয়না আমি আপনাকে চায়। কতো শত কথা আছে আপনাকে জানাতে চায় ফিরে আসুন(হাটু মুরে ফ্লোরে বসে চিৎকার করে কেদে উঠে)
আকাশ ততোক্ষনে দৃষ্টি থেকে বাহিরে চলে যায়।এই ভাবেই চলছে তার দিন রোজ রাতে কল্পনাই নিজের কষ্টের ঝুড়ি খুলে ধরে নিজের কল্পনার আকশের কাছে।সারাদিন নিজের বেবির জন্য যতোই নিজেকে কঠিন রাখুক দিন শেষে ঠিক একা আর নিঃশ্ব হয়ে যায়।
নওশিন প্রেগন্যান্ট। সেদিন রাতে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরে আরিয়ান চেক আপ করার পরে ওর কিছুটা সন্দেহ হয়। তার পরে একজন মহিলা গাহিনী কে ডেকে চেক আপ করানোর পরে তারা সিউওর হয়ে যায় সত্যি নওশিন মা হতে চলেছে।খবর টা সবাই জানলেও জানতে পারেনি সে যার সন্তান যার নিশানি নওশিন নিজের গর্ভে পরিবহন করছে।
,
,
,
,
,
২ মাস পরে,,
বেডে বসে কাতরাচ্ছে এক যুবক।হাতে ব্যান্ডেজ মাথায় ব্যান্ডেজ। অচেতন অবস্থায় শুধু একটাই শব্দ তার মুখ দিয়ে বের হচ্ছে তার মায়া তারপরের শব্দ টা অস্পষ্ট।
নার্স রা ডাক্তার কে ডেকে নিয়ে আসে। ডাক্তার রা অবাক হয়। আজ প্রথম এই যুবোক টা রেসপন্স করছে।কে এই কোথায় থাকে কিছু জানে না। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় একে পাওয়া যায় রাস্তায়। সেখান কার কিছু লোক তাকে এই হস্পিটালে ভর্তি করে দিয়ে যায়।এই হস্পিটালের ওনার নিজ খরচে এই ১ টা মাস যুবকটির টির্টেমেন্ট চালিয়েছে।
ডাক্তারঃইটস আ মেরিকাল। ছেলেটার জ্ঞান ফিরছে।যার বাচার সম্ভাবনা ছিলো শুধু মাত্র ২% আজকে সে রেসপন্স করছে।(অবাক হয়ে)
নার্সঃডক্টর স্যার কে কি ডেকে আনবো
ডাক্তারঃহ্যা অবশ্যই স্যার কে জানাতে হবে। তিনি নিশ্চয় খুব খুশি হবে।
ডাক্তারের অনুমতি পেতেই নার্স দৌড়ে এই হস্পিটালের মালিক মিস্টার নিহান মজুমদার এর কাছে যায় তিনি একটা ফাইল চেক করছিলেন নার্স এর বিনা নক করে ভিতরে প্রবেশ করায় ভ্রু জোড়া কুচকে ফেলে
নিহানঃএনি প্রবলেম নার্স
নার্সঃসরি স্যার বিনা অনুমতি তে প্রবেশ করলাম আসলে ২০৪ নাম্বার পেশেন্ট এর জ্ঞান ফিরেছে
নিহান কথাটা শুনেই বিনা কিছু ভেবেই দৌড় দেয়। নার্স অবাক হয় শুধু মাত্র একটা পেশেন্ট এর জন্য কারো এতোটা আগ্রহ এর আগে সে দেখেনি এটা কি শুধুই পেশেন্ট এর জন্য নাকি এখানে কোন অন্য কথা লুকিয়ে আছে যেটা সবার অজানা।।।
__________
আরিয়ানঃবনু বনু(দরজায় নক করে)
নওশিনঃহ্যা ভাই বল (দরজা খুলে)
আরিয়ানঃব্যাগ প্যাক করে নে
নওশিমঃমানে ব্যাগ প্যাক করবো কেন
আরিয়ানঃকারন আমি বলছি তাই
নওশিনঃতুই পাগল হয়ে গেছিস এটা তোর হানুমন গো এন্ড ইঞ্জয় এখানে আমাকে টানছিস কেনো
আরিয়ানঃস্টপ নোট এ মোর সিংগেল ওয়ার্ডস আর এটা আমার না আরুশির ইচ্ছা
নওশিনঃসরি ভাই আমি যেতে পারবোনা
আরিয়ানঃঠিক আছে আমিও যাবোনা
নওশিনঃঠিক আছে
আরিয়ানঃদ্যাটস নোট ফেয়ার। আরুর মন ভেংগে যাবে
ঈশান আর রামিসাঃআর আমাদের ও (একসাথে)
~~~~~~~~~
আরিয়ান আর ঈশান সব ব্যাগ গুলো গাড়িতে তুলছে৷ শেষ মেষ সব গুলোর ব্ল্যাকমেইল এ নওশিন যেতে রাজি হয়। তার মাঝে কোন এক্সাইটমেন্ট কাজ করছে না কারন ৬ বছর আগের সে এক্সিডেন্ট এর পর থেকে সে কোথাও ঘুরতে যায়না।
নওশিনঃ৬ বছর আগেও ঠিক এর আগের দিনেই আমি অনেক কিছু হারিয়ে নিশ্ব হয়ে গেছিলাম জানিনা এবার কি হারাবো। কি হারায়ে নিঃশ্ব হয়ে ফিরবো অবশ্য এবার আর কিছু হারানোর নাই আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি যাকে ভালোবাসলাম সে মানুষ টাই তো নাই হয়তো বেচে আছি আমার মাঝে বেড়ে উঠা আমাদের নিশ্বানীর জন্য আকাশ(পেটে হাত দিয়ে মনে মনে কথা গুলো বলে সিটে নিজের মাথা এলিয়ে দেয়।
_________
ঃহ্যালো। হ্যা তাদের গাড়ি বের হয়ে গেছে। সবাই এক গাড়িতেই আছে টার্গেট কোন ভাবেই যেনো মিস না হয়।
ঃঠিক আছে।
ঃএক্সিডেন্ট টা এমন ভাবে হওয়া চায় যাতে ওদের বডি পর্যন্ত কেউ উদ্ধার করতে না পারে ঠিক যেনো আকাশের মতো অবস্থা হয়।
ঃজ্বি ঠিক আছে স্যার
ফোন কাটতেই অট্টহাসিতে ফেটে পরে লোকটি। তার সামনে একটা ব্লাক বোর্ড যার উপরে আরিয়ান আরুশি আকাশ ঈশান আহান আর নওশিনের ছবি।আহান আর আকাশের ছবি তে রেড মার্ক করা
ঃওহ সো সরি মাই বয়েজ অকালে তোমাদের প্রান গেলো বাট কি করতাম টাকার মোহ সবচেয়ে বড়। এই মোহ কাটানো উহু এতোটা সহজ নয় তাইতো দেখো পারিনি। অবশ্য এই বিষয় নিয়ে আই এম নোট সো গিলটি। কে না চায় টাকা আমিও চায় তো কি অন্যায় করে ফেলেছি সেদিন আকাশ কে মেরেছি আজকে তোমাদের মারবো।ইশ বেচারী রামিসা ওর কোন দোষ নাই বাট তাকেও মরতে হবে (রামিসার ছবি এড করে)
আরিয়ানঃএই বনু একটা গান বল না অনেক দিন তোর গান শুনিনা
আরিয়ান এর কথায় সবাই সম্মতি জানায় এবং নওশিন কে জোড় করতে শুরু করে। নওশিন ও আনমনে গেয়ে উঠে
ছন্নছাড়া মনে, এসেছ গোপনে
মুখে বলেছি যে, নিয়ো না তো টেনে
অজানাকে ভুলে সাজা খেটে চলি
জানি শোধরানো হবে না কখনো
তবু গভীরে, সে থাকে গভীরে
যার আঁকা ছবি রে, সে ছিল গভীরে
গভীরে গভীরে, সে থাকে গভীরে
যার আঁকা ছবি রে, সে ছিল গভীরে
সে পাশে নাই, কী জানি নাই
সে পাশে নাই, কী জানি নাই
গানটা বলতে বলতে নওশিনের চোখ বেয়ে পানি গরিয়ে পরে।
চলবে!