আমার তুমি পর্ব-১২

0
1926

#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১২
,
,
,
,
,
পুরোন এক তালা ব্লিডিং টাই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আর বিল্ডিং থেকে ভেসে আসছে কতোজনার আত্নচিৎকার। আকাশের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি ভয়ংকর হাসি।।

ঈশান নিউজ চ্যানেল দেখার জন্য সোফায় বসে ছিলো হঠাৎ করে নিউজ চ্যানেলে ভেসে উঠলো একটা নিউজ

ঃআজকে গুলশান এর ৪ নাম্বার রোডের পুরানো একটা এক তালা ব্লিডিং এ লাগলো ভয়াবহ আগুন সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৮ জনার মৃত দেহ।৮জনার মাঝে একজন ছিলো মেয়ে।খোজ খবর করে পাওয়া যায় সে ৮ জনার ছবি যেটা আপনারা স্ক্রীনে দেখতে পাচ্ছেন।(রিপোটার)

নওশিন গ্রীন টি করে ঈশানকে দিতেই যাচ্চিলো।কাজের মেয়ে টা অন্য কাজে ব্যাস্ত দেখে সে পা বারায়েছিলো ডাইনিং রুমের দিকে।কিন্তু টিভির চোখ পড়তেই তার হাত কেপে উঠলো রেয়ানার ছবিটা দেখে।

রিপোটারঃএছাড়াও গোপনে সুত্রে জানা গেছে মেয়েটা নারী পাচার ড্রাগস পাচার এর সাথেও যুক্ত রয়েছে।আর এরা তার ড্রাগ ডিলার এমনকি রেয়ানা নামক মেয়েটা বেশির ভাগ নারী এদের কাছেই পাচার করে।

নওশিনের হাত থেকে গ্রীন টির মগটা পড়তে নিলেই আকাশ এসে ধরে ফেলে।
আকাশঃসুইটহার্ট এতো ভয় পাচ্ছো কেন হুম তোমার ডেভিল আছেনা(নওশিনের কপালে ঠোঁট ছোয়ায়ে)আমার জন্য একটা স্ট্রোং কফি নিয়ে আসো ওকে।
নওশিনঃহুম(মৃদু মাথা নাড়িয়ে সেখান থেকে চলে গেলো)

আকাশ এসে ঈশানের সামনে মগ টা ধরলো। ঈশান টিভির দিকে চোখ রেখেই গ্রীন টি টা নিলো।

ঈশানঃতুই মেরেছিস না ওদের (শান্ত স্বরে টিভির দিকে তাকিয়ে)

ঈশানের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বাকা হাসি দিয়ে সোফায় হাত পা ছড়িয়ে বসে পড়লো।ঈশান জোড়ে নিশ্বাস নিলো

ঈশানঃতো লুকানো জানোয়ার ধীরে ধীরে বের হচ্ছে।এই রুপের কথা যানে ভাবি(হতাশ সুরে)

আকাশঃআমি তার কাছে সেটাই যেটাকে ওই ভালোবাসে।ওর জন্য আমার রুপ একটাই আর সে ওইটাই চিনবে আর কোন সত্য নাই

ঈশানঃযেদিন তোর আসল রুপ ওর সামনে আসবে সেদিন ভালোবাসা না ঘৃণা পাবি দেখে নিস(সোফা থেকে উঠে)
আকাশঃঘৃণা করুক বা ভালোবাসুক সে শুধু আমার।সে চাইলেও ওকে আমার সাথে থাকতে হবে না চাইলে বন্দী করে রাখবো কিন্তু আমার কাছেই রাখবো(মুখ টা শক্ত করে)

ঈশানঃআই নো ভাই ইউ লাভ হিম লাইক এ মেড। কিন্তু এই ভালোবাসা যে নওশিনকেই শেষ করে দিবে তোর পাগলামী তোর এই উম্মাদ এর মতো ব্যবহার এর ভয়েই তো আরিয়ান তোকে শর্ত দিয়েছিলো যে তুই ততোক্ষন ওর সামনে যাবিনা যতক্ষন না ওই নিজ থেকে তোর সামনে আসে।আমিও ঠিক সেটাই করছিলাম আর তুইও মা কে নিয়ে চলে গেলি লন্ডনে। কিন্তু নিয়তি করলো কি তোকে সেই ওর সাথে আনে বাধে দিলো। তুই কি মনে করেছিস আমি জানিনা তুই আমাকে কেন এখানে এনেছিস।
(মনে মনে খানিকটা হাসে কথা গুলো আওড়ে)তুই নওশিনের দিকে যে তাকায় তাকেই তুই শেষ করে দিস। আমাকেও ঠিক এই কারনেই আনার উহু জানে মারার জন্য না আমাকে প্রতি নিয়ত তোর আর নওশিনের ঘনিষ্ঠতা দেখানোর জন্য (মনে মনে কথা গুলো আওড়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো)

নওশিনঃআরে ঈশান কই গেলো(কফির মগটা টি টেবিলের উপর থুয়ে)
আকাশঃরুমে গেছে(নওশিনের হাত টেনে নিজের কোলে বসায় নিলো)
নওশিনঃআরে কি করছেন মামনি রামি ঈশান সবাই বাসায়(আকাশের বাধন থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে)
আকাশঃও কাম ওন সুইটহার্ট ইউ নো আমি যতোক্ষন তোমাকে না ছাড়বো তুমি এক চুল ও নড়তে পারবা না(নওশিনের চুল গুলো ঘাড় থেকে আলতো হাতে সরায় দিলো)
নওশিনঃকি করছেন (কাপা কাপা কন্ঠে)
আকাশঃহুস আমার একদম পছন্দ না রোমান্স এর সময় ডিস্টার্ব করা(গম্ভির কন্ঠে)
নওশিনঃমামনি
আকাশঃমামনি আর রামি গেছে শপিং এ।সো কেউ নেই
নওশিনঃঈশান
আকাশঃঈশান না ঈশান ভাইয়া(চোখ মুখ কুচকে)
নওশিনঃসে এক সময় আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো। যার কারনে বড় হওয়ার স্বর্তেও ভাই বলা হয়নি তাকে কোন দিন
আকাশঃভালোবাসো ওকে
নওশিনঃএজ এ বেস্টফ্রেন্ড খুব ভালোবাসি। বাট সে হয়তো আমাকে ঘৃণা করে(হতাশ নিশ্বাস ফেলে)
আকাশঃকেন মনে হয় সে তোমাকে ঘৃণা করে
(ভ্রু কুচকে)
নওশিনঃঠিক সেই কারনে যার জন্য আপনি আমাকে ঘৃণা করতেন
আকাশঃ,,,,,,,(নিশ্চুপ)
নওশিনঃএখনো এটাই মনে করেন তাই না যে আমি আপনার ভাইকে মেরে ফেলেছি(তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে নওশিনের ঠোঁটের কোনায়)

আকাশ কিছু বলতে যাবে তার আগেই কলিং বেল বেজে উঠে৷ নওশিন আকাশ কে ছেড়ে দরজা খুলতে যায়।

নওশিনঃভাইয়ু(আরিয়ান কে জরায় ধরে)
আরিয়ানঃকেমন আছিস পিচ্চু(নওশিনকে বুকে আগলে নিয়ে)
নওশিনঃতোমাকে দেখে একদম ঠিক আছি
আরুশিঃআর আমি বুঝি কেউ না(আরিয়ান এর পিছন থেকে মাথা বের করে)
নওশিনঃকে আপনি আপা (মাথা বেকায়ে)
আরুশিঃতোর ভাবি
নওশিনঃকিহ(চিল্লায়ে)

নওশিনের চিল্লানোর আওয়াজে আকাশ আর ঈশান দৌড়ে আসে মেন দরজার সামনে।
আরুশিঃএই চুন্নি গলা ফারস কেন
নওশিনঃভাই তুই শিউর তো তুই এই পেত্নি রে বিয়ে করবি
আরুশিঃওই ওই আমি পেত্নি তুই কি হ্যা
আরিয়ানঃচুপ। শুরু হয়ে গেছে দুইজনার বিল্লি দের মতো চুলাচুলি
(ধমক দিয়ে)
ঈশানঃকেমন আছিস(আরিয়ান কে এর দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে)
আরিয়ানঃতুই কবে আসলি
ঈশানঃকালকেই(আরিয়ান কে হাগ করে)
আরিয়ানঃএতো বছর কই ছিলি না কোন যোগাযোগ না কোন কিছু।আর হঠাৎ কি করে।
ঈশানঃআসতে আসতে থাম একটু ভিতরে চল সব বলছি

এতোক্ষন চুপচাপ সব কিছু শুনছিলো আকাশ।কোন উত্তর দেয়নি।

_________

নওশিনঃতোদের বিয়ে ঠিক হলো কি করে(ভ্রু কুচকে)
আরিয়ানঃঅনিমার সাথে আমাকে না বলেই বাসার সবাই বিয়ে ঠিক করেছিলো ব্যাস মহারানী রেগে মেগে ঢাকায় চলে এসেছিলো পরে মানায় টানায় নিয়ে গেলাম সেখানে যায়ে শুনি বিয়ের তোরজোড় ওলরেডি শুরু করে দিয়েছে।ব্যাস মহারানীর মাথা টা ঘুরলো আর নিজের হাতের রোগ এটে দিলো তখন যা রাগ উঠছিলো মনে হচ্ছিলো ওই অবস্থায় ৩ ৪ টা থাপ্পড় লাগায় দি
(রেগে গজগজ করতে করতে)
আরুশিঃএহ মনে হচ্ছে মারেনি থাপ্পড় জ্ঞান ফিরার সাথে সাথে দুই গালে দুইটা লাগায়েছে
(কাদো কাদো কন্ঠে নওশিনের হাত জরায় ধরে)
আরিয়ানঃআল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় কর যে আর মারিনি
ঈশানঃএটা কিন্তু ঠিক করিস নি বাচ্চা মেয়েটাকে তোর মতো ধামড়া হাতের থাপ্পড় খাইলে থাকে
আরুশিঃদেখো তো ভাইয়া শুধু তুমিই বুঝো আমার কষ্ট হা(ঈশান কে সাইড থেকে জরায় ধরে
আরিয়ানঃআদরের আহ্লাদী মেয়ে যেহেতু বাড়ির তাই কারো আর তার কষ্ট সহ্য হয়নি আর তাই আমার কাধে সবাই মিলে এই তুফান কে তুলে দিয়েছে(আহত কন্ঠে)

নওশিনঃআমি আসছি হ্যা(কাপা কাপা কন্ঠে)

সবাই নিজেদের আড্ডায় ব্যাস্ত থাকলেও আকাশ ঠিক খেয়াল করেছে তার মায়াবিনীর কন্ঠের কষ্ট।সেও পিছু পিছু উঠে চলে গেলো। সেটা দেখে ঈশানের বুক টা ভারি হয়ে গেলো।তবুও মুখে মিথ্যা হাসি ঝুলিয়ে সবার সাথে আড্ডা দিতে লাগলো

নওশিন নিশ্চুপে চোখের পানি ফেলছিলো বুকের বাম পাশে আলাদা এক ব্যাথা করছে। কারো আসার শব্দ শুনে নিজের চোখের পানি মুছে ফেললো

আকাশঃসুইটহার্ট আমার থেকে নিজের চোখের পানি আড়াল করছো(নওশিন কে সামনে ঘুরিয়ে)

নওশিন আকাশ এর শার্ট পিছন দিক থেকে খামচে ধরে কেদে দিলো শব্দ করে

নওশিনঃকেনো আমি কারো ভালোবাসা পেলাম না, আমার বেলাতেই সবার ভালোবাসার দাম বেরে গেলো কেনো আমি পরিবারের আহ্লাদী হতে পারলাম না কেন৷ আমাকে ভালোবাসার জায়গায় ঘৃণা করে

আকাশঃহুস কারো ভালোবাসার দরকার নাই আমার সুইটহার্ট এর আমি একাই আমার সুইটহার্ট এর জন্য ইনাফ(নওশিনের ঠোটে নিজের ঠোঁট ডুয়ায় দিয়ে)

,
,
,

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে